Friday, October 9, 2009

মাইকেল জ্যাকসন

0 comments
মাইকেল জোসেফ জ্যাকসন (আগস্ট ২৯, ১৯৫৮– জুন ২৫, ২০০৯) একজন মার্কিন সঙ্গীতশিল্পী ও সঙ্গীত ব্যবসায়ী। জ্যাকসন পরিবারের ৭ম সন্তান মাইকেল মাত্র ১১ বছর বয়সে ১৯৬৪ সালে পেশাদার সঙ্গীত শিল্পী হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি তখন জ্যাকসন ফাইভ নামের সঙ্গীত গোষ্ঠীর সদস্য হিসাবে গান গাইতেন। ১৯৭১ সাল থেকে মাইকেল একক শিল্পী হিসাবে গান গাইতে শুরু করেন। মাইকেলের গাওয়া ৫টি সঙ্গীত অ্যালবাম বিশ্বের সর্বাধিক বিক্রিত রেকর্ডের মধ্যে রয়েছে - অফ দ্য ওয়াল (১৯৭৯), থ্রিলার (১৯৮২), ব্যাড (১৯৮৭), ডেঞ্জারাস (১৯৯১) এবং হিস্টরি (১৯৯৫)। মাইকেলকে পপ সঙ্গীতের রাজা বলা হয়ে থাকে।

১৯৮০র দশকে মাইকেল পপ সঙ্গীত শিল্পীদের মধ্যে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌছান। তিনি প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিন সঙ্গীতশিল্পী যিনি এমটিভিতে এতো জনপ্রিয়তা পান। বলা হয়, তাঁর গাওয়া গানের ভিডিওর মাধ্যমেই এমটিভির প্রসার ঘটেছিলো। গানের তালে তালে মাইকেলের নাচের কৌশলগুলোও ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। মাইকেলের জনপ্রিয় নাচের মধ্যে রবোট, ও মুনওয়াক (চাঁদে হাঁটা) রয়েছে।
মাইকেল জ্যাকসন ২ বার রক অ্যান্ড রোল হল অফ ফেইমে নির্বাচিত হন। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুসারে মাইকেল সর্বকালের সবচেয়ে সফল শিল্পী -- ১৩টি গ্র্যামি পুরষ্কার, ১৩টি ১নম্বর একক সঙ্গীত, এবং ৭৫ কোটি অ্যালবাম বেচার রেকর্ড মাইকেলের রয়েছে। শিল্পী হিসেবে পুরো বিশ্বে তাঁর খ্যাতি ছিলো। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি নানা কেলেংকারিতে জড়ালেও প্রায় ৪০ বছর ধরে সারা বিশ্বে বিখ্যাত হয়ে ছিলেন।
জীবনাবসানঃ ইংরাজী ২০০৯ সালের ২৫ শে জুন রাত্রি ২ প্রহরে মাইকেল জ্যাকসন ইহলোক ত্যাগ করেন।এই সংবাদে সঙ্গীত বিশ্বে গভীর শোক নেমে আসে।
উপরের লেখাটি নেয়া হয়েছে উইকিপিডিয়া থেকে......
*********************************************************************************
*********************************************************************************
‘‘স্টার'' খুঁজছে যারা, তারা দেখবে স্টেজে এবং ভিডিও'য় জ্যাকসনের মূর্তি৷ সেই সঙ্গে তার উদ্ভট সাজপোষাক, আচার-ব্যবহার, সুবিশাল সব শো৷ নেভারল্যান্ড এবং পিটার প্যান৷ আধুনিক পপ কিংবদন্তীর সব উপাদানই জুগিয়ে দিয়ে গেছেন মাইকেল৷ কোনো গ্রীক ট্র্যাজেডীর ওয়াল্ট ডিজনী কিংবা মিকি মাউস সংস্করণ৷ কিন্তু গান-বাজনার জগতের মানুষদের সঙ্গে কথা বলুন: তারা বলবে ‘বিলি জীন'-এর গিটার রিফ'টার কথা৷ বলবে, মাইকেলের গানে যেন বীট'কে চোখে দেখা যায়৷ এই সদ্য চলে যাওয়া শিল্পীটি যে তার যুগের সবচেয়ে সৃজনীশীল সিংগার-সংরাইটারদের মধ্যে একজন, সে-বিষয়ে কোনো প্রশ্নই উঠতে পারে না৷

নয়তো ট্র্যাজেডীর হিসেবে কেউ তাকে ফেলছে এলভিস প্রেসলি, মেরিলিন মনরো এবং জেমস ডীনের পর্যায়ে৷ চিত্রপরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ তাকে ফেলছেন – অরিজিনালিটি বা মৌলিকতার বিচারে - ফ্রেড এ্যাস্টেয়ার, চাক বেরি কিংবা এলভিসের পর্যায়ে৷ সোনি মিউজিকের প্রাক্তন প্রধান টমি মোটোলা'র চোখে আবার সিনাট্রা, এলভিস, মাইকেল মিলে পপ আইকনদের এক চিরকালের ত্রয়ী৷
চাঁদের গায়ে হাঁটা

কিন্তু মাইকেলের সুবিখ্যাত মুনওয়াকের ইতিহাসটা পর্যালোচনা করলেই বোঝা যাবে, কতো গভীর সাংস্কৃতিক শিকড় এবং উপলব্ধি থেকে উঠে এসেছে এই নাচের ভঙ্গিমাটি৷ মার্সেল মার্সো ছিলেন এক ফরাসী মাইম বা মূকাভিনেতা৷ বিশ্বজোড়া নাম কিনে ২০০৭ সালে বিদায় নেন ৮৪ বছর বয়সে৷ এই মার্সো ছিলেন মাইকেলের সপ্রশংস অনুরাগী, যেমন মাইকেল ছিলেন মার্সোর সপ্রশংস অনুরাগী৷ মার্সো আমেরিকায় বহু প্রোগ্রাম করতেন এবং মাইকেল ১৩-১৪ বছর বয়স থেকেই সে'সব প্রোগ্রাম দেখতে যেতো৷
মাইকেল তার পিছন দিকে হাঁটার মুনওয়াক প্রথম দেখায় ১৯৮৩ সালে টেলিভিশনে ‘বিলি জীন' গাইতে গিয়ে৷ কিন্তু পরে নাকি মাইকেল মার্সোকে কোনো এক সময়ে – ব্যাকস্টেজে – বলেছিল যে তার মুনওয়াকের প্রেরণা হল মার্সোর ‘ওয়াকিং এগেনস্ট দ্য উইন্ড' অথবা ‘বাতাসের বিরুদ্ধে হাঁটা'৷ মাধ্যাকর্ষণকে নস্যাৎ করে মার্সোর সেই হাঁটা মাইকেলকে মুগ্ধ করেছিল৷ বস্তুত মাইকেল এবং মার্সো একটি যুগ্ম মূকাভিনয়ের ফিল্মও করেছিলেন, যদিও প্রকল্পটা তার বেশী আর এগোয়নি৷

ওদিকে মাইকেল পরে একাধিকবার ব্যাখ্যা করেছে যে এই সামনে যাওয়ার ভঙ্গিতে পেছন দিকে যাওয়াটা নাকি আবিষ্কার করে হারলেমের ছেলেমেয়েরা, সত্তরের দশকের শেষে অথবা আশীর দশকের গোড়ায়৷
সাদা-কালো

মাইকেলের বিরুদ্ধে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অভিযোগ হয়তো হবে যে তিনি কৃষ্ণাঙ্গ হয়ে জন্মে শুধু শ্বেতাঙ্গ নয়, শ্বেতাঙ্গ মহিলাদের মতো অবয়ব কামনা করেছিলেন৷ অর্থাৎ তাঁর মুখের ধাঁচ এবং গায়ের রং বদলানোর পিছনে কাজ করছে এক চরম হীনমন্যতা৷ কিন্তু খোদ ভ্যাটিকানের কাগজ ‘‘অস্সারভাতোরে রোমানা'' এবার লিখেছে যে জ্যাকসন তার বিভিন্ন প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে কোনো জাতিগত নয়, বরং একটি ব্যক্তিগত নূতন সংজ্ঞা খুঁজছিল৷ পত্রিকাটি লিখছে যে মাইকেল শুধু শ্বেতাঙ্গ হতে চায়নি, সে চেয়েছিল সব সীমানা ছাড়িয়ে যেতে, এমনকি জাতি ও বর্ণ যে ধরণের সীমানা আরোপ করে, সেগুলিকেও৷
মজার কথা, ফরাসী ইলেকট্রনিক মিউজিকের পথিকৃৎ জাঁ-মিশেল জারে'ও একই কথা বলেছেন৷ বলেছেন যে সব বড়ো মার্কিন সঙ্গীতশিল্পীরাই কৃষ্ণাঙ্গ এবং শ্বেতাঙ্গ সঙ্গীতের মধ্যে এই যোগাযোগটি সৃষ্টি করেছেন৷ এবং মাইকেল ঐ ‘বর্ণ পরিবর্তনের' জন্য পাগল ছিল, যেমন শারীরিকভাবে, তেমনই সঙ্গীতের আঙ্গিকে৷
জ্যাকসন ফাইভের সোল, ডিসকো এবং মোটাউন ফাংকের সঙ্গে শ্বেতাঙ্গ পপ এবং রক সঙ্গীতের উপাদান মিশিয়ে একটি সম্পূর্ণ নতুন সাউন্ড তৈরী করেন যে জাদু রসায়নবিদ, তাঁরই নাম মাইকেল জ্যাকসন৷
প্রতিবেদক: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী; সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম
উপরের লেখাটি নেয়া হয়েছে ডয়চে ভেলে  থেকে......
********************************************************************************
********************************************************************************
মাইকেল জ্যাকসন থেকে মিকাঈল
২৯শে আগস্ট ১৯৫৮ সালে আমেরিকার ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের গেরেতে মাইকেল জ্যাকসন জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম যোসেফ ও মায়ের নাম ক্যাথরিনা। নয় ভাইবোনের মধ্যে মাইকেল হল পঞ্চম। তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্য সঙ্গীতের সাথে জড়িত। মাত্র সাত বছর থেকে জ্যাকসন গান গাওয়া শুরু করেন। ১৯৭২ সালে তার প্রথম অ্যালবাম প্রকাশ পায়। এরপর আশির দশকে জ্যাকসন নাম্বার ওয়ান পপ তারকা হিসেবে দুনিয়া জোড়া খ্যাতি অর্জন করেন। মাইকেল জ্যাকসন একজন পপ তারকা হিসেবে যত খ্যাতি অর্জন করেছেন তার চেয়ে অনেক বেশী সমালোচিত হয়েছেন তার কর্মকান্ডের দ্বারা। নিজের চেহারা বদল করে তিনি বিশ্বে হৈ চৈ ফেলে দেন। সঠিক মূল্যবোধের অভাবে তিনি অনেক সময় বিতর্কিত কাজের সাথে জড়িত হয়েছেন। অবশেষে সব বিতর্ককে দুমড়ে-মুচড়ে জ্যাকসন ইসলামের ছায়াতলে নিজেকে বিলীন করে দিলেন। শান্তির সুশীতল ছায়ায় নতুন করে তার জীবন আবার শুরু করলেন।

ইসলাম গ্রহণের ব্যাপারে তার প্রযোজক বন্ধু ও গীতিকার ডেভিড ওয়ার্নসবি ও ফিলিপ বুবাল তাকে সহায়তা করেন। তারা তাকে বুঝাতে সক্ষম হন তারা ইসলাম গ্রহণ করে কিভাবে সুন্দর জীবন যাপন করছেন। সান পত্রিকার বরাত দিয়ে জানা যায় একজন স্থানীয় মসজিদের ইমামকে বাসায় ডেকে কলেমা তাইয়েবা ও কলেমা শাহাদাৎ পড়ে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। তার প্রযোজক ও গীতিকার বন্ধু ডেভিড ওয়ার্নসবি এবং ফিলিপ বুবালের অনুপ্রেরণায় ‘দ্যা ওয়ে ইউ মেইক মি ফিল’ শীর্ষক গান রেকর্ড করার সময় তিনি নতুন ধর্ম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন। মিকাঈল বা মোস্তফা যে কোন একটি নাম তাকে গ্রহণ করতে বলা হয়। তিনি মিকাঈল নাম গ্রহণ করেন। মিকাঈল হল পবিত্র চার ফেরেশতাদের মধ্যে একজন। জ্যাকসনের ভাই জেরমেইন ১৯৮৯ সালে ইসলাম গ্রহণ করেন। ইসলাম হল শান্তির ও সুন্দরের ধর্ম। ২০০৮ সালের ২১ শে নভেম্বর তার ইসলাম গ্রহণের খবর পাওয়া যায়।
জ্যাকসন ১৯৯৪ সালে লিসা মেরি প্রিসলিকে বিয়ে করেন। লিসা মেরী বিখ্যাত গায়ক এলভিস প্রিসলির মেয়ে। ১৯৯৬ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপর ডেভোরা রয়ে কে বিয়ে করেন ১৯৯৬ সালে। ১৯৯৯ সালে তার এই বিয়ে বিচ্ছেদে রূপ নেয়। জ্যাকসনের তিন ছেলে-মেয়ে। পুত্র প্রিন্স মাইকেল জন্ম নেয় ১৯৯৭ সালে। মেয়ে ক্যাথরিনা ১৯৯৮ সালে। প্রিন্স মাইকেল টু নামে তার একটি পুত্র আছে যে ২০০২ সালে জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু তার মায়ের ব্যাপারে কোন কিছু জানা যায় না।
২০০৫ সালে তাকে সবচেয়ে খারাপ সময় অতিবাহিত করতে হয়। এ সময় আদালতে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা হয়। তাকে নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিতে হয়। সেই কঠিন সময়কে পিছনে ফেলে মাইকেল জ্যাকসন নতুন এক জীবনের সন্ধান পেলেন। যা তাকে দিয়েছে শান্তি ও নিরাপত্তা। ইসলাম যে মানুষকে শান্তি ও নিরাপত্তা বিধান করে তার জ্বলন্ত প্রমাণ মাইকেল জ্যাকসন ওরফে মিকাঈল।
ইন্টারনেট অবলম্বনে
-মুহাম্মদ আজিজুর রহমান
*********************************************************************************
*********************************************************************************

0 comments:

Post a Comment