Sunday, December 13, 2009

Living to tell the Tale

0 comments
লিখেছেন: jotil
গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের আত্মজীবনীমূলক বই " Living to tell the tale "
২০০৪ সালে পড়েছিলাম , মজার বিষয় হচ্ছে এই প্রখ্যাত লেখকের কুমারত্ব বিসর্জনের ঘটনাটি ঘটেছিল একজন পতিতার কাছে , ভদ্রভাবে যাদের আমরা যৌনকর্মী বলি । ঘটনাটি এরকম যে , মার্কেজের বাবা ডাক্তার এবং তার কিছু পাওনা টাকা বাকী ছিল সেই বিশেষ যৌনকর্মীর কাছে । তো তিনি মার্কেজকেই পাঠালেন , বয়সে তখন প্রায় কৈশোরে পড়েছেন তখন মাত্র । তো সেখানে গিয়েই ঘটনাচক্রে নিজেকে অভিজ্ঞ প্রমাণ করতে গিয়ে কুমারত্ব বিসর্জন দেন । আর অভিজ্ঞ যৌনকর্মী ঠিকই বুঝে ফেলেন যে এটাই ছিল সেই অবুঝ কিশোরের প্রথমবার ।
মজাটা অন্যখানে , সেই মহিলা জানিয়েছিলেন মার্কেজের ছোটভাই এ কাজ অনেক আগেই করেছেন এবং সেই ছোটভাই এর প্যান্ট দেখিয়ে বললেন সে যেন তা নিয়ে যায় ।
আমি এই অংশটি পরে অনেক হেসেছিলাম বেচারীর মনের অবস্থা বুঝে ।
এরপর দিন গড়িয়েছে , বেড়েছে সচেতনতা । আর আমার বাস্তবতার পালকেও জুটেছে সেরকম কিছু অভিজ্ঞতা তার মধ্যে আজকের অভিজ্ঞতাটা লিখব যৌনকর্মীদের নিয়ে ।
প্রথমে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি একজন ডাক্তার আপুকে , যিনি বয়সে অনেক বড় , আর তার সাথে প্রথম দেখা দেশের বাইরে আমার এক আত্মীয়ার সাথে তিনি ছিলেন এক বিশেষ ট্যুরে । আমি সেদিন তেমন সময় দিতে না পারলেও যোগাযোগ রয়েছে এরপর থেকেই ।
পাবলিক হেলথ এর উপর এক জরিপ এবং এক NGO এর সাথে তার বর্তমান কাজের সুবাদে আমি বলেছিলাম যেন পরবর্তিতে কোন প্ল্যান থাকলে আমাকে ডাকেন , অবশেষে সেই সুযোগ এসেছিল ।
হঠাৎ এক কলেই জানান যে স্বল্প সময়ের ট্যুর কয়েকটি নিষিদ্ধ পল্লীতে , সাথে থাকবেন তার সহকর্মী , দুজনেই ডাক্তার এবং বিশেষভাবে জড়িত STD প্রতিরোধমূলক কর্মকান্ডে । আমি যাব বলেছিলাম জন্যে আমার জন্যেও বিশেষ কার্ড এর ব্যাবস্থা ছিল , যাতে আইনত আমি সেই NGO এর একজন হয়ে গিয়েছিলাম ।
তো মাথা উঁচু করে নিষিদ্ধ পল্লীতে যাবার একটা মওকা পেয়ে যাওয়াতে আমি অনেক উৎফুল্ল হয়ে গিয়ে রাজী হবার কারণে দেখলাম বিশাল আর একটা ভ্রমনের ধাক্কা পোহাতে হল ।
তো এবার মূল প্রসঙ্গে আসা যাক ,
নিষিদ্ধ পল্লীভ্রমন
টার্গেটেড স্পটগুলোর মাথা কয়েকজনের সাথে আগেই সব ঠিক করা ছিল বলে কোন সমস্যা হয়নি । প্রথমেই যাওয়া হয় মহাখালী । বিশেষ একটি আবাসিক হোটেল এ প্রথম যাওয়া । আমি ভেতরে ভেতরে একটু অবাক হবার মত অবস্থায় ছিলাম , তবে এটা ছিল নির্দ্বিধায় একটা চরম সুযোগ বাস্তবতাকে প্রত্যক্ষ করার ।
ঢোকার সময় সব স্বভাবিকই মনে হল , কিন্তু তৃতীয়তলায় গিয়ে বুঝলাম ভেতরের আসল অবস্থা । চাপা গুমোট পরিবেশ , সেখানে আবার সিকিউরিটি চেক আপ হচ্ছে যারা নতুন যাচ্ছে । আমরা কোনকিছু ছাড়াই ভেতরে গেলাম এবং যা দেখলাম তাতে অবাক হয়ে যাওয়ার পালা । প্রথম দেখায় মনে হবে একটা রুমে সারিবেধে মেয়েরা বসে আছে কোন কনফারেন্স এর জন্যে । কিন্তু দেখলাম যে কাস্টমার বা খদ্দেরবেশীরা সেখানে গিয়ে শুধু ইশারা দিয়েই ডেকে নিচ্ছে । এটাই সেখানের বৈশিষ্ট্য , যে কাউকে পছন্দ করে নিলেই হল , যৌনকর্মীদের এখানে কোন বলার কিছু নেই । তারা শুধু চুপ করে বসে থাকে । বিষয়টি আমাকে পরিষ্কার করে দিয়েছে গাইড পরবর্তিতে ।
সেখানে গিয়েই একটা বসার ব্যাবস্থা করা হল শর্ট কনফারেন্সের । আপু আর ভাইয়া তাদের পেপারস দিয়েদিলেন উপস্থিত সব যৌনকর্মীদের এবং এইডসের উপর সচেতনতা ছাড়াও আরো এই সংশ্লিষ্ট রোগ এবং সম্ভাবনার কথা বলা শুরু করলেন । আমি প্রথমে তাদের চেহারা গুলো আর গঠন এবং নিজেকে সাজানোর ধরন একনজর দেখলাম এরপর গাইড কে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে এলাম । জানতে চাইলাম এখানের নিয়মগুলো , সে আমাকে মোটামুটি বিষদ্ভাবেই জানালো সব এবং আমার নম্বর টিও নিয়ে নিল এইফাঁকে ।
জানতে পারলাম , বয়সভেদে আলাদা আলাদা রুম আছে সবরকমের যৌনকর্মীদের , এবং সে যেভাবে চোখ টিপে বলল অল্প বয়সের মেয়েও আছে , আমি একটু অবাক হলাম । বয়স জানতে চাইলে বলল , ১২-১৫ ক্যাটাগরীর মেয়েরাও আছে আর ১৮-২৪ এর মেয়েদের ক্যাটাগরীও আছে । উলেখ্য যারা দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে শুধু তারাই আছে কনফারেন্স এ আর বাকীরা দেহ বিলিয়ে দিতে ব্যাস্ত । হাতে সময় আছে ১৫ মিনিটের মত । আমি পরখ করার জন্যে বললাম দেখব আমি ।
সে বলল একটু পাশের একটা রুমে যেতে , যাবার সময়েই দেখলাম একটা পিচ্চি মেয়ে একজন যুবক কে নিয়ে রুমে গেল আর দরজা বন্ধ করে দিতে দিতে আমাদের কে তাকিয়ে একনজর দেখল । তার বয়স ১৫ এর উপরে কখনোই নয় ।
রুমে যেতেই সেই গাইড ওরফে অন্যতম দায়িত্ববান দালাল কাকে যেন ডাক দিয়ে বলল একজন কে আনতে । একটু পরই যাকে নিয়ে এল তার বয়স বড়জোর ১৪-১৬ । ফুটফুটে এরকম একজন কে এই পরিবেশে দেখতে হবে এটা আমার মাথাতেও ছিল না । আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলল একদম ফ্রেশ তথা নতুন আমদানী , আমি এইকথার উত্তর দেবার ও প্রয়োজন বোধ করলাম না । অবাক বিস্ময়ে দেখতে থাকলাম সেই মেয়েটিকে ।
ভাবতে চাইলাম আসলেও এটা বাংলাদেশ কি না !! পরে নিজেকে বুঝালাম এটা চরম বাস্তবতা ।
ইচ্ছে হল পিচ্চির সাথে কথা বলতে । তাকে বললাম এবং সেটা বলতেই দালাল মিয়া পিচ্চিকে ধমকের মত বলল ... স্যার যা বলবে ঠিকমত শুনবি ... বলেই তাকে বাইরে যেতে বলে কথা বলতে বলতে দরজা ভেজাতে গিয়ে উঠলাম , ফেরত হতেই উলটো দিকে তাকিয়ে দেখি পিচ্চি ততক্ষনে কাপড়খুলে বিছানায় জুবুথুবু হয়ে বসে আছে !!!
মাথা নিচু করা , কৈশোর তখনো ভালকরে দেখা হয়নি তার , এই বয়সে কিভাবে সম্ভব এসব তা আমার মাথায় ঢুকল না !! তবে অবস্থা দেখে বুঝলাম ট্রেনিং এরমধ্যেই কিছু দেয়া হয়ে গিয়েছে ।
তার সামনে চেয়ার টেনে বসতেও নিজেরই অপ্রস্তুত বোধ হচ্ছিল , মাথা গরম , কান দিয়ে ধোয়াও বের হচ্ছিল মনে হচ্ছিল !! নগ্ন দেহ অপরিচিত নয় কিন্তু এই বয়সের টা অবশ্যই অপরিচিত । তার ন্যুড পোর্ট্রেট আঁকাটাও পাপের পর্যায়ের চিন্তাভাবনা , আর অতখানি পেডোফাইল ও নই যে তাকে দেখেই আমার হার্ড অন হয়ে যাবে । আর যদি ভাবা হয় তার মাল্টিপল অর্গাসমের কথা !!! অসম্ভব ।
শুধু জিজ্ঞেস করেছিলাম বাসা কোথায় , উত্তর পেয়েছিলাম কাজীপাড়া । মাথানিচু করে ছিল , আমি মোটামুটি ধাক্কা কাটিয়ে উঠেছি । মনে পড়ল পকেটে একটা চকোলেট বার আছে , যা কিছুক্ষন আগে যাত্রাপথে আপু দিয়েছিল । সেটাই এগিয়ে দিলাম ।
তার দিকে কাপড় এগিয়ে দিয়ে বলেছিলাম বাসায় যেতে , কোন কিছু না ভেবেই । সে একটু অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিল । সেই প্রথম তার চোখের দিকে ভাল করে তাকানোর সুযোগ হয় । আর থাকতে পারিনি । দ্রুত বের হয়ে গিয়েছিলাম সেই রুম থেকে ।
আমি জানি , এই মেয়ে হয়ত কোনদিন ব্রিটিশ চকোলেট আর চোখেও দেখবে না , হয়ত একের পর এক নিষ্পেষিত হবে সেখানে , হয়ত সেদিনই সে হয়েছে , হয়ত ভবিষ্যতেও হতে হবে , হয়তবা এই বাস্তবতার খেলায় হারিয়ে যাবে এক কৈশোর , সেখানে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকবে কঠোর যৌনকর্মীর প্রতিমূর্তি যে নিজের দেহকে বিলীন করতে শিখে যাবে অন্যসবার মতই , রংমাখা ঠোঁটে বসে থাকবে আর সবার মত আর এই বয়সেও তোতাপাখির মত বলে যাবে যে " আমার বয়স আঠারো " !!
এখন যেটা মনে হয় এদের কে নিয়ে কবিতা লেখাটা তাদের প্রতি অসম্মান স্বরুপ , এবং তাদের মহৎ করতে গিয়ে দুইপক্ষই ছোট হয়ে যায় ।
এর একটু পরেই আপু আর ভাইয়াও বের হয়ে আমাকে নিয়ে আবার বের হল । একদিনে মোট চারটা স্পটে যাওয়া হল । আমি কোন কথা বলিনি তেমন এরপর , আর এটা দেখে আমাকেও আপু সেরকম কিছু জিজ্ঞেস করেননি । আমি আড়ালে বলেছিলাম ভাইয়াকে যেন যৌনকর্মীদের কে ফেলাশিও করতে নিষেধ করা হয় , মুখমেহনের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে রোগ যদি মুখে ক্ষত থাকে ।
অন্যসব স্পটের মাঝেও প্রায় একই চিত্র , কোথাও ভীড় বেশি কোথাও কম । তবে এক্ষেত্রে আমার প্রাপ্তি কয়েকটা ফোন নম্বর , অবশ্যই তা গাইডরুপী দালালদের এবং একজন যৌনকর্মীর নম্বর ও আছে এর মাঝে ।
আসল কথা কিছুই বলা হয়নি এখনো , তবে মনে হচ্ছে পোস্ট অনেক বড় হয়ে যাচ্ছে , তাই পরবর্তীতে আর একটা পোস্ট দিব এই নিয়ে । সেখানে এসব যৌনকর্মীদের ক্লাসিফিকেশন , সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ে থাকার দরুন তাদের ধরন , স্মার্ট কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কিছু এরকম এবং অনলাইনে তাদের কিছু কার্যক্রম নিয়ে তথ্য থাকবে ।
বলা যেতে পারে এটা একটা ট্রিভিয়া এর মত হবে ,
বিষয়টা নিয়ে নিজের মতই লিখছি এবারও , কারণ এখানে পেশাদার লেখিয়েদের মত অত কিছু লেখার নেই । হয়তবা আমি লিখতেও পারিনা সেভাবে ।
আর এসবের পেছনে মানবিক , ব্যাবসায়িক , জমজমাট অনেক গল্প থাকলেও সেসব নিয়ে সব লেখা হয়ত সীমিত পরিসরে একদমই সম্ভব নয় ।
একটু দেরীতে লেখার জন্যে ক্ষমা চাচ্ছি , তবে জানিনা কতটুকু চাহিদা পূরণ করতে পারব ।

সেফ থেকে জেনারেল , জেনারেল থেকে ওয়াচ , এরপর আবার জেনারেল আবার কখন হয়ত ব্লকড হয়ে যাব , কোন না কোন ইশারায় , অন্ততঃ একটু আগেও এরকম খেলা দেখলাম আমার এই ব্লগ জীবনে দ্বিতীয় বারের মত ।
তাই লিখেই শেষ করি ।
বাচ্চাদের মত মডুদের প্রতি একটু হলেও ঘৃণা আছে ভেতরে সেটাকে সেখানেই পুষে রাখি ।

................................

এই পেশা বা পল্লী আইনত কি বৈধ !! ??

উত্তরটা , হ্যাঁ সূচক ।
মার্চ এর প্রথমার্ধে , ২০০০ সালেই বাংলাদেশে এই পেশাটাকে বৈধ বলে ঘোষণা দেয়া হয় ।

ছবিটা জুলাই ১৯৯৯ সালের যেদিন টানবাজারের কর্মীরা মাঠে নেমে প্রতিবাদ করেছিলেন তাদের উচ্ছেদের বিষয়ে । সেদিন পথে নেমেছিলেন প্রায় ৩,৫০০ যৌনকর্মী !!

আর এই ব্যাপারে অনেক আলোচনা করেছিলেন সিগমা হুদা একটি প্রবন্ধে আর এখানেই বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে তিনি তার মতামত ব্যাক্ত করেছিলেন

উল্লেখ্য , ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দে টানবাজারের গোরাপত্তন হয়েছিল ।
আর শুরু সালের একটা ছোটখাট সংখ্যাতত্বের হিসেব করি ফাজলামী হিসেবে ...
১+৮+৮+৮=২৫ ; ২+৫=৭ , অর্থাৎ শুরুর নম্বরটা যেহেতু ৭ তাই এর প্রভাব নিজস্ব ক্ষেত্রে শুভই হবার কথা !!
কিন্তু অনেক প্রতিকূলতা পেরিয়েও ১৯৯৯ এর সেদিন তারা আর পারেনি , উচ্ছেদ হয়ত হয়েছিল , কিন্তু আইনতঃ বৈধকরনের জন্যে হয়তবা এই প্রতিষ্ঠানের সেইসব কর্মীদের জোর গলারই অবদান রয়েছে ।
আর এখানে , ১+৯+৯+৯=২৮ ; ২+৮= ১০ । অর্থাৎ ১ যার মান সংখ্যাতত্বে সবকিছুর উর্দ্ধে !!!

অফটপিক তথ্যঃ খ্রিস্টপূর্ব ৫৯৪ সনে গ্রীসের এথেন্সে প্রথম নিষিদ্ধপল্লীর তথ্য পাওয়া যায় , যা লিপিবদ্ধ আছে ।

আর , বাংলাদেশে রেজিস্টার্ড রেডলাইট এই অঞ্চল আছে ১৮ টি গত বছরের শুরুর দিকের হিসেবে , এবং অ-রেজিস্টারকৃত এর সংখ্যা ছোট ছোট ক্ষেত্র হিসেবে ধরলেও ঢাকাতেই শতকের আশেপাশেই ।

দেশের বৃহত্তম রেজিস্টার্ড নিষিদ্ধপল্লী হচ্ছে দৌলতদিয়ায় , যেখানে ১৬০০ মহিলা প্রতিদিন প্রায় ৩০০০ জনের প্রয়োজন মিটিয়ে থাকেন । প্রায় ২০ বছর আগে উন্মোচিত এই নিষিদ্ধ পল্লীর উপর একটি প্রতিবেদন যদি শুনতে ইচ্ছে করে তাহলে এখানে ক্লিক করে শুনে নিন । রিপোর্ট টি ১৪ই জানুয়ারী ২০০৮ এর ।

....................................................

এবার কিছু কথাঃ

সংখ্যায় যদিও সঠিক তথ্য জানা সম্ভব নয় , তবে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫,০০০ শিশু যৌনকর্মী সারাদেশে বিদ্যমান ।
কি !
সংখ্যাটা দেখে তাজ্জব না হয়ে জেনে রাখা দরকার প্রায় ২০,০০০ শিশুর জন্ম ১৮ টি রেজিস্টার্ড নিষিদ্ধপল্লীতে আর অজানা অচেনা গুলোতে ...
নিষিদ্ধপল্লীতে জন্ম নেয়া মেয়ে শিশুরা বয়স ১২ হতে না হতেই মায়ের দেখা দেখি এই পেশাতে জ়ড়াতে বাধ্য হয় আর ছেলেরা হয়ে ওঠে দালাল তথা খদ্দের শিকারী । হয়ত মেনে নেয়াটা অনেক কষ্টকর কিন্তু বাস্তবতা এটাই ।

যেখানে ২০০০ সালেই NGO দের হিসেবে ১,৫০,০০০ যৌনকর্মী ছিল বর্তমানে কত তা আমি অনুমান করে লিখতে পারছিনা ।
আর তাদের জীবনের ছন্নছাড়া গল্পগুলো কিভাবে লেখা যায় সেটাও হয়ত একটা গবেষণার বিষয় হতে পারে ।

...............................

যারা অডিও ক্লিপটি শুনেছেন তারা ইতিমধ্যে হয়ত বেশ কিছু শুনলেন ।
তবে এটা ঠিক যে অধিকাংশ যৌনকর্মীর ইতিহাসই এখন শুরু হয় , অতি নিম্নবিত্তের পরিবার থেকে , যেখানে খাওয়া পরার চিন্তা নিয়ে বেড়ে উঠতে গিয়ে তাদের বাবা অথবা মা কে ভালকাজের লোভ দেখিয়ে পরে নিয়ে যাওয়া এবং পাচার করে দেয়া হয় নিষিদ্ধপল্লীগুলোতে ।

আমি ব্যক্তিগতভাবে যে দালাল এর সাথে কথা বলেছিলাম , সে আফসোস করছিল নতুন অল্পবয়সী মেয়েদের চাহিদার তুলনার স্বল্পতার কথা ভেবে । দ্রুত কিভাবে আনা হবে সেই ব্যাবস্থা করতেই সে ব্যস্ত ।
মাত্র ১০,০০০ থেকে ৫০,০০০ এর মধ্যে মেয়ে বিক্রী হয়ে যায় , আর এখানে তাদের দৈনিক গড় আয়ের পরিমান তুলনামূলকভাবে অনেক কমই ।

গার্মেন্টস এর কর্মীদের কে সেখানে এখন সহজলভ্যভাবেই পাওয়া যায় , যা রীতিমত আশঙ্কাজনক হারে শুধু বাড়ছেই ।
অর্থনৈতিক মন্দা যদি সেভাবে আরো বৃদ্ধিপায় , এই সংখ্যা যে আরো বেড়ে যাবে সেটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই ।

তবে , এটা ঠিক যে এখন স্বাধীনভাবে অনেকেই এই পেশায় পার্টটাইম হিসেবে চলে আসে !!! শুধু অর্থাভাবই হয়ত মূল কারণ নয় , অনেকে শুধু মজার জন্যেই একাজ করে থাকেন । স্কুল-কলেজের মেয়েদেরকেও দেখা যায় , কোননা কোন ভাবে ম্যানেজ করে ফেলতে , আর তারা সকালে এসে সকালেই চলে যায় মোটামুটি মানের নিষিদ্ধপল্লীগুলোতে ।

আর , ভিন্নপরিস্থিতিতে দেখা যায় অনেকে ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে খরচ যোগাড়ের জন্যে এই পথে নেমে আসে । তারা ক্লাস মেইন্টেইন তথা নিজেদের অবস্থানকে একটু রেখে ঢেকে চলতে পারে কিন্তু দূর্লভ নয় , চেনার চোখ থাকলেই চেনা যায় এদেরকে ।

এরকম একজন মেয়ের সাথে পরিচয় হয়েছিল । প্রথমে সবই ঠিক , তবে খেয়াল করেছিলাম যে সে যেভাবেই হোক না কেন একটা নির্দষ্ট সময় অনলাইনে থাকত । নক করলে কিছু বলত না ।
এরপর হঠাৎ একদিন জানিয়েছিল তার একটা সিচুয়েশনের কথা যেখানে মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখলে সাহায্য করাটাই খুব স্বাভাবিক ছিল ।
অনেক কথা বলার পর বেরিয়ে এসেছিল বেশ কিছু অনাকাংখিত তথ্য ।
সত্য মিথ্যার সংমিশ্রনে আর তার চটুল অবস্থানের কারণে একটু উদ্ভটভাবে পরবর্তীতে আসল তথ্য জানাটা ছিল বেশ হতাশার ।

মাঝখানে একটা ওয়েবসাইট পেয়েছিলাম গতবছর , এস্কর্টসদের নিয়ে ।
সেখানে থাকা প্রোফাইল দেখে ভূয়া ভেবেছিলাম প্রথমে ।
মনে করেছিলাম , হয়ত ফাজলামী করে কেউ করেছে এসব ।
তো দেশের বাইরে থেকেই প্রথম কয়েকটা নম্বরে কল দিয়েছিলাম , এবং এরপর যা হয়েছিল সেটা আমাকে আসলেও বেশ অবাক করেছিল সেদিন , মিষ্টি অভিবাদন জানিয়ে সাড়া দেয়া ... এরপর বলেছিলাম " কোথায় পাওয়া যাবে ? " সে উত্তরে বলেছিল ঢাকা চট্টগ্রাম দু'জায়গাতেই সম্ভব আর তাকে কত দিতে হবে এই প্রশ্নের জবাবে সে বলেছিল আলোচনা সাপেক্ষ ।

এরপর অনলাইনে যাদের কে এ্যাড করেছিলাম , এরমধ্যে বেশ কয়েকটি খুব ভাল রেস্পন্স করেছিল ।
একজন ঢাকার বাইরে নিয়ে যেতে বলেছিল ।
গুলশানের গৃহবধু বলে নাকি এটাই তার জন্যে সবচেয়ে ভাল ব্যবস্থা ! প্রথমে আস্বস্ত হবার জন্যে একটু বাজিয়ে দেখেই পরে ঝটপট বলেছিল একটি নির্দিষ্ট মেইল এ্যাড এ মেইল দিতে তার প্রোফাইলের জন্যে ।
আমি মেইল দেবার আধা ঘন্টার মধ্যেই রিপ্লাই পেয়েছিলাম । $১০০ এর প্রোফাইল !!
উল্লেখ্যঃ এরা ছদ্মনাম ব্যাবহার করে এটাও যেমন ঠিক , আবার অনেকে একটু ফ্রী হলেই বিশ্বস্ততার উপরে নির্ভর করতে পারলে আসলটাও জানিয়ে দিতে দ্বিধা করেনা ।
মেইলের ভেতরে যে প্রোফাইল ছিল সেখানে কিছু কিছু শর্তাবলীও ছিল এরকম
মাইক্রোসফটের ওয়ার্ড ফাইলে একটা নাম পেলাম জনৈক মোঃ মজিবুর রহমান । হয়ত সেই ব্যক্তির কম্পিউটারে লেখা অথবা সেই লোকই রচয়িতা হয়তবা সেই লোকই দালাল !! কে , জানে !!

এভাবেই সমাজের বিভিন্ন স্তরেই রয়েছে এই এক বিশেষ গোষ্ঠী । জীবিকার তাগিদে তাদের ভারসাম্য আনতে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে ।
দেহের মূল্য কত এই প্রশ্নটি এখানে অবিবেচ্য ।
কারণ , এর চেয়ে অনেক বেশি কিছুই জড়িয়ে আছে এর সাথে ।

.............................................

ঢাকায় ঘোষিত নিষিদ্ধপল্লীগুলোতে ১৩ তারিখ পর্যন্ত পুলিশের চাঁদাজনিত আনাগোনায় ব্যাস্ত থাকে বলে কেউ যদি দেখার জন্যেও যেতে চান , একটা পরিচয় নিয়ে যাওয়া ভাল যাতে কেউই না থামিয়ে উলটো সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেয় ।

আর দেশে যে প্রচলিত আইন আছে তার তিনটি ধারা নিম্নরূপঃ
“ Section 364A - Whoever, kidnaps or abducts any person under the age of ten, in order that such a person may be or subjected to slavery or to the lust of any person shall be punished with death or with imprisonment for life or for rigorous imprisonment for a term which may extend to 14 years and may not be less than 7 years. ”
“ Section 366A - Whoever, by any means whatsoever, induces any minor girl under the age of eighteen years to go from any place or to do any act with the intent that such a girl may be or knowing that it is likely that she will be, forded or seduced to illicit intercourse with another person shall be punishable with imprisonment which may extend to 10 years and shall also be liable to fine. ”
“ Section 373 - Whoever buys, hires or otherwise obtains possession of any person under the age of eighteen years with the intent that such person shall at any age be employed or used for the purpose of prostitution or illicit intercourse with any person or knowing it likely that such person will at any age be employed or used for such purpose with imprisonment of either description for a term which may extend 10 years and fine. Any prostitute or any person keeping or managing a brothel, who buys, hires or otherwise obtains possession of a female under the age of 18 years, shall until the contrary is proved, be presumed to have obtained possession of such female with the intent that she shall be used for the purpose of prostitution. ”

আইন থাকলেও তার সুষ্ঠু প্রয়োগ এখনো হয়না , আর এরপরেও যে হারে সব তোয়াক্কা করে দেশে শিশু এবং নারী যৌনকর্মী এবং তাদের উপর অত্যাচার হচ্ছে তা নিজ চোখে দেখলেও হয়ত ভেতর টা অনুভব করা সম্ভব নয় ।

...................................................

Inside the slave trade শিরোনামের এই প্রামাণ্য প্রতিবেদনটি বেশ তথ্য সমৃদ্ধ
এখানে বাংলাদেশের পতিতাবৃত্তি নিয়ে কিছু হাল্কা গবেষণামূলক লেখা আছে
এখানেই আপাততঃ শেষ করছি ।
এই বিষয়টা নিয়ে আর কিছু লেখার থাকলেও , তা আর কোনদিন লিখবনা ।
এই লেখা লিখতে হয়তবা যত্নের ঘাটতি ছিল , সেজন্যে পাঠকের কাছে আগেই নিজে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি ।


ছবিটা জুলাই ১৯৯৯ সালের যেদিন টানবাজারের কর্মীরা মাঠে নেমে প্রতিবাদ করেছিলেন তাদের উচ্ছেদের বিষয়ে । সেদিন পথে নেমেছিলেন প্রায় ৩,৫০০ যৌনকর্মী !!
আর এই ব্যাপারে অনেক আলোচনা করেছিলেন সিগমা হুদা একটি প্রবন্ধে আর এখানেই বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে তিনি তার মতামত ব্যাক্ত করেছিলেন
উল্লেখ্য , ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দে টানবাজারের গোরাপত্তন হয়েছিল ।
আর শুরু সালের একটা ছোটখাট সংখ্যাতত্বের হিসেব করি ফাজলামী হিসেবে ...
১+৮+৮+৮=২৫ ; ২+৫=৭ , অর্থাৎ শুরুর নম্বরটা যেহেতু ৭ তাই এর প্রভাব নিজস্ব ক্ষেত্রে শুভই হবার কথা !!
কিন্তু অনেক প্রতিকূলতা পেরিয়েও ১৯৯৯ এর সেদিন তারা আর পারেনি , উচ্ছেদ হয়ত হয়েছিল , কিন্তু আইনতঃ বৈধকরনের জন্যে হয়তবা এই প্রতিষ্ঠানের সেইসব কর্মীদের জোর গলারই অবদান রয়েছে ।
আর এখানে , ১+৯+৯+৯=২৮ ; ২+৮= ১০ । অর্থাৎ ১ যার মান সংখ্যাতত্বে সবকিছুর উর্দ্ধে !!!
অফটপিক তথ্যঃ খ্রিস্টপূর্ব ৫৯৪ সনে গ্রীসের এথেন্সে প্রথম নিষিদ্ধপল্লীর তথ্য পাওয়া যায় , যা লিপিবদ্ধ আছে ।
আর , বাংলাদেশে রেজিস্টার্ড রেডলাইট এই অঞ্চল আছে ১৮ টি গত বছরের শুরুর দিকের হিসেবে , এবং অ-রেজিস্টারকৃত এর সংখ্যা ছোট ছোট ক্ষেত্র হিসেবে ধরলেও ঢাকাতেই শতকের আশেপাশেই ।

দেশের বৃহত্তম রেজিস্টার্ড নিষিদ্ধপল্লী হচ্ছে দৌলতদিয়ায় , যেখানে ১৬০০ মহিলা প্রতিদিন প্রায় ৩০০০ জনের প্রয়োজন মিটিয়ে থাকেন । প্রায় ২০ বছর আগে উন্মোচিত এই নিষিদ্ধ পল্লীর উপর একটি প্রতিবেদন যদি শুনতে ইচ্ছে করে তাহলে এখানে ক্লিক করে শুনে নিন । রিপোর্ট টি ১৪ই জানুয়ারী ২০০৮ এর
....................................................
এবার কিছু কথাঃ
সংখ্যায় যদিও সঠিক তথ্য জানা সম্ভব নয় , তবে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫,০০০ শিশু যৌনকর্মী সারাদেশে বিদ্যমান ।
কি !
সংখ্যাটা দেখে তাজ্জব না হয়ে জেনে রাখা দরকার প্রায় ২০,০০০ শিশুর জন্ম ১৮ টি রেজিস্টার্ড নিষিদ্ধপল্লীতে আর অজানা অচেনা গুলোতে ...
নিষিদ্ধপল্লীতে জন্ম নেয়া মেয়ে শিশুরা বয়স ১২ হতে না হতেই মায়ের দেখা দেখি এই পেশাতে জ়ড়াতে বাধ্য হয় আর ছেলেরা হয়ে ওঠে দালাল তথা খদ্দের শিকারী । হয়ত মেনে নেয়াটা অনেক কষ্টকর কিন্তু বাস্তবতা এটাই ।
যেখানে ২০০০ সালেই NGO দের হিসেবে ১,৫০,০০০ যৌনকর্মী ছিল বর্তমানে কত তা আমি অনুমান করে লিখতে পারছিনা ।
আর তাদের জীবনের ছন্নছাড়া গল্পগুলো কিভাবে লেখা যায় সেটাও হয়ত একটা গবেষণার বিষয় হতে পারে ।
...............................
যারা অডিও ক্লিপটি শুনেছেন তারা ইতিমধ্যে হয়ত বেশ কিছু শুনলেন ।
তবে এটা ঠিক যে অধিকাংশ যৌনকর্মীর ইতিহাসই এখন শুরু হয় , অতি নিম্নবিত্তের পরিবার থেকে , যেখানে খাওয়া পরার চিন্তা নিয়ে বেড়ে উঠতে গিয়ে তাদের বাবা অথবা মা কে ভালকাজের লোভ দেখিয়ে পরে নিয়ে যাওয়া এবং পাচার করে দেয়া হয় নিষিদ্ধপল্লীগুলোতে ।
আমি ব্যক্তিগতভাবে যে দালাল এর সাথে কথা বলেছিলাম , সে আফসোস করছিল নতুন অল্পবয়সী মেয়েদের চাহিদার তুলনার স্বল্পতার কথা ভেবে । দ্রুত কিভাবে আনা হবে সেই ব্যাবস্থা করতেই সে ব্যস্ত ।
মাত্র ১০,০০০ থেকে ৫০,০০০ এর মধ্যে মেয়ে বিক্রী হয়ে যায় , আর এখানে তাদের দৈনিক গড় আয়ের পরিমান তুলনামূলকভাবে অনেক কমই ।
গার্মেন্টস এর কর্মীদের কে সেখানে এখন সহজলভ্যভাবেই পাওয়া যায় , যা রীতিমত আশঙ্কাজনক হারে শুধু বাড়ছেই ।
অর্থনৈতিক মন্দা যদি সেভাবে আরো বৃদ্ধিপায় , এই সংখ্যা যে আরো বেড়ে যাবে সেটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই ।
তবে , এটা ঠিক যে এখন স্বাধীনভাবে অনেকেই এই পেশায় পার্টটাইম হিসেবে চলে আসে !!! শুধু অর্থাভাবই হয়ত মূল কারণ নয় , অনেকে শুধু মজার জন্যেই একাজ করে থাকেন । স্কুল-কলেজের মেয়েদেরকেও দেখা যায় , কোননা কোন ভাবে ম্যানেজ করে ফেলতে , আর তারা সকালে এসে সকালেই চলে যায় মোটামুটি মানের নিষিদ্ধপল্লীগুলোতে ।

আর , ভিন্নপরিস্থিতিতে দেখা যায় অনেকে ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে খরচ যোগাড়ের জন্যে এই পথে নেমে আসে । তারা ক্লাস মেইন্টেইন তথা নিজেদের অবস্থানকে একটু রেখে ঢেকে চলতে পারে কিন্তু দূর্লভ নয় , চেনার চোখ থাকলেই চেনা যায় এদেরকে ।

এরকম একজন মেয়ের সাথে পরিচয় হয়েছিল । প্রথমে সবই ঠিক , তবে খেয়াল করেছিলাম যে সে যেভাবেই হোক না কেন একটা নির্দষ্ট সময় অনলাইনে থাকত । নক করলে কিছু বলত না ।
এরপর হঠাৎ একদিন জানিয়েছিল তার একটা সিচুয়েশনের কথা যেখানে মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখলে সাহায্য করাটাই খুব স্বাভাবিক ছিল ।
অনেক কথা বলার পর বেরিয়ে এসেছিল বেশ কিছু অনাকাংখিত তথ্য ।
সত্য মিথ্যার সংমিশ্রনে আর তার চটুল অবস্থানের কারণে একটু উদ্ভটভাবে পরবর্তীতে আসল তথ্য জানাটা ছিল বেশ হতাশার ।

মাঝখানে একটা ওয়েবসাইট পেয়েছিলাম গতবছর , এস্কর্টসদের নিয়ে ।
সেখানে থাকা প্রোফাইল দেখে ভূয়া ভেবেছিলাম প্রথমে ।
মনে করেছিলাম , হয়ত ফাজলামী করে কেউ করেছে এসব ।
তো দেশের বাইরে থেকেই প্রথম কয়েকটা নম্বরে কল দিয়েছিলাম , এবং এরপর যা হয়েছিল সেটা আমাকে আসলেও বেশ অবাক করেছিল সেদিন , মিষ্টি অভিবাদন জানিয়ে সাড়া দেয়া ... এরপর বলেছিলাম " কোথায় পাওয়া যাবে ? " সে উত্তরে বলেছিল ঢাকা চট্টগ্রাম দু'জায়গাতেই সম্ভব আর তাকে কত দিতে হবে এই প্রশ্নের জবাবে সে বলেছিল আলোচনা সাপেক্ষ ।

এরপর অনলাইনে যাদের কে এ্যাড করেছিলাম , এরমধ্যে বেশ কয়েকটি খুব ভাল রেস্পন্স করেছিল ।
একজন ঢাকার বাইরে নিয়ে যেতে বলেছিল ।
গুলশানের গৃহবধু বলে নাকি এটাই তার জন্যে সবচেয়ে ভাল ব্যবস্থা ! প্রথমে আস্বস্ত হবার জন্যে একটু বাজিয়ে দেখেই পরে ঝটপট বলেছিল একটি নির্দিষ্ট মেইল এ্যাড এ মেইল দিতে তার প্রোফাইলের জন্যে ।
আমি মেইল দেবার আধা ঘন্টার মধ্যেই রিপ্লাই পেয়েছিলাম । $১০০ এর প্রোফাইল !!
উল্লেখ্যঃ এরা ছদ্মনাম ব্যাবহার করে এটাও যেমন ঠিক , আবার অনেকে একটু ফ্রী হলেই বিশ্বস্ততার উপরে নির্ভর করতে পারলে আসলটাও জানিয়ে দিতে দ্বিধা করেনা ।
মেইলের ভেতরে যে প্রোফাইল ছিল সেখানে কিছু কিছু শর্তাবলীও ছিল এরকম
মাইক্রোসফটের ওয়ার্ড ফাইলে একটা নাম পেলাম জনৈক মোঃ মজিবুর রহমান । হয়ত সেই ব্যক্তির কম্পিউটারে লেখা অথবা সেই লোকই রচয়িতা হয়তবা সেই লোকই দালাল !! কে , জানে !!

এভাবেই সমাজের বিভিন্ন স্তরেই রয়েছে এই এক বিশেষ গোষ্ঠী । জীবিকার তাগিদে তাদের ভারসাম্য আনতে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে ।
দেহের মূল্য কত এই প্রশ্নটি এখানে অবিবেচ্য ।
কারণ , এর চেয়ে অনেক বেশি কিছুই জড়িয়ে আছে এর সাথে ।

.............................................

ঢাকায় ঘোষিত নিষিদ্ধপল্লীগুলোতে ১৩ তারিখ পর্যন্ত পুলিশের চাঁদাজনিত আনাগোনায় ব্যাস্ত থাকে বলে কেউ যদি দেখার জন্যেও যেতে চান , একটা পরিচয় নিয়ে যাওয়া ভাল যাতে কেউই না থামিয়ে উলটো সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেয় ।

আর দেশে যে প্রচলিত আইন আছে তার তিনটি ধারা নিম্নরূপঃ
“ Section 364A - Whoever, kidnaps or abducts any person under the age of ten, in order that such a person may be or subjected to slavery or to the lust of any person shall be punished with death or with imprisonment for life or for rigorous imprisonment for a term which may extend to 14 years and may not be less than 7 years. ”
“ Section 366A - Whoever, by any means whatsoever, induces any minor girl under the age of eighteen years to go from any place or to do any act with the intent that such a girl may be or knowing that it is likely that she will be, forded or seduced to illicit intercourse with another person shall be punishable with imprisonment which may extend to 10 years and shall also be liable to fine. ”
“ Section 373 - Whoever buys, hires or otherwise obtains possession of any person under the age of eighteen years with the intent that such person shall at any age be employed or used for the purpose of prostitution or illicit intercourse with any person or knowing it likely that such person will at any age be employed or used for such purpose with imprisonment of either description for a term which may extend 10 years and fine. Any prostitute or any person keeping or managing a brothel, who buys, hires or otherwise obtains possession of a female under the age of 18 years, shall until the contrary is proved, be presumed to have obtained possession of such female with the intent that she shall be used for the purpose of prostitution. ”

আইন থাকলেও তার সুষ্ঠু প্রয়োগ এখনো হয়না , আর এরপরেও যে হারে সব তোয়াক্কা করে দেশে শিশু এবং নারী যৌনকর্মী এবং তাদের উপর অত্যাচার হচ্ছে তা নিজ চোখে দেখলেও হয়ত ভেতর টা অনুভব করা সম্ভব নয় ।
...................................................
Inside the slave trade শিরোনামের এই প্রামাণ্য প্রতিবেদনটি বেশ তথ্য সমৃদ্ধ
এখানে বাংলাদেশের পতিতাবৃত্তি নিয়ে কিছু হাল্কা গবেষণামূলক লেখা আছে

এখানেই আপাততঃ শেষ করছি ।
এই বিষয়টা নিয়ে আর কিছু লেখার থাকলেও , তা আর কোনদিন লিখবনা ।
এই লেখা লিখতে হয়তবা যত্নের ঘাটতি ছিল , সেজন্যে পাঠকের কাছে আগেই নিজে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি ।
মন্তব্য:
তামিম ইরফান বলেছেন, : আমি আমার ব্যক্তিগত একটা অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করি। জার্নালিজম কোর্স করার সময়(আমাদের ইংলিশে ডিপার্টমেন্টের এইটা বাধ্যতামুলক কোর্স) আমার এ্যাসাইনমেন্ট টপিক ছিলো প্রষ্টিটিউশন।তখন কাজ কারার সময় বিভিন্ন পতিতাদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছিলো।

একজন নীচের লেভেলের পতিতার আয় গড়ে প্রতিদিন ১৫০-২০০ টাকা(রেট ৩০০ টাকা।এখান থেকে ১০০ টাকা যায় হোটেল মালিকের কাছে,৫০ টাকা দালালের কমিশন,৫০ টাকা পুলিশ ও অন্যান্য,প্রতিদিন ৫-৮ জন গ্রাহক)
এর একটু উপরের লেভেলের আয় ৩৫০-৪৫০ (রেট ৭০০-১৫০০)....।এদের বিভিন্ন রেস্ট হাউজে দেখা যায় বিশেষ করে বারিধারা।
হাই লেভেলের রেট (৩ জনের সাথে কথা বলার সুযোগ হইছিলো।এদের মধ্যে একজন ছিলো বিশিষ্ট একজন শিল্পপতির মেয়ে.....টাকার অভাব নাই তার কিন্তু সে পেশায় আসছে কারন এটা কে একটা এ্যাডভেন্জ্ঞার মনে করে.....তার বোরিং লাইফে এইটা একটা বিনোদন)৫০০০-১০০০০০।এখানে বাংলা সিনেমার নায়িকা,মডেলও আছে।
১২০ পেজের একটা এ্যাসাইনমেন্ট ছিলো।কাজটা করতে গিয়ে এমন সব অভিজ্ঞতা হইছে যে আমার সারাজীবনও এমন অভিজ্ঞতা হবে কি না সন্দেহ আছে।

0 comments:

Post a Comment