Friday, April 9, 2010

পুণ্যস্নান

0 comments
সাধারণত চৈত্র মাসের শুক্লাষ্টমী বা অশোকাষ্টমী তিথিতে পুণ্যস্নান শাস্ত্রমতে নির্ধারিত। এ সময় নারায়ণগঞ্জ জেলার লাঙ্গলবন্দের আদি ব্রহ্মপুত্র নদে সনাতন ধর্মাবলম্বী কয়েক লাখ পুণ্যার্থী স্নান করেন। তাঁরা এই আদি ব্রহ্মপুত্র নদে নেমে ‘হে মহাভাগ ব্রহ্মপুত্র, হে লোহিত্য, তুমি আমার পাপ হরণ করো’ এই মন্ত্র উচ্চারণ করেন। সঙ্গে ফুল, বেলপাতা, ধান, দূর্বা, হরীতকী, ডাব, আমের পল্লব প্রভৃতি সহযোগে পুণ্যস্নান করে থাকেন। এই স্নান উপলক্ষে লাঙ্গলবন্দের নদীতীরে সেখানকার ঐতিহ্যবাহী বাসন্তী মেলা বসে। এই মেলায় বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, মিয়ানমার থেকে কয়েক লাখ মানুষের সমাগম ঘটে। প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যে বর্ণিল মেলা জমে ওঠে, তার পাশেই বসে সারা দেশ থেকে আগত সাধু-সন্ন্যাসীদের আস্তানা। মেলার প্রকৃত অলংকার দেশি-বিদেশি বিচিত্র সব শখের সামগ্রীর পসরা, যেমন—কাঠের ঘর সাজানোর উপকরণ, মাটি-কাঠ-ঝিনুক দিয়ে তৈরি গয়না, শাখা, নকশি জুতা-স্যান্ডেল। এর বাইরে পুণ্যার্থীদের পূজার উপকরণ ও বাহারি খাবারের দোকান তো আছেই।
দেশ-বিদেশের পুণ্যার্থীরা পাপ মোচনের আশায় লাঙ্গলবন্দ ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে গান্ধীঘাট, রাজঘাট, ললিত সাধুর ঘাট, অন্নপূর্ণা মন্দির ঘাট, জয়কালী মন্দির ঘাট, দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ী ঘাট, আকরী সাধুর ঘাটসহ মোট ১৪টি ঘাটে স্নান সম্পন্ন করে ফিরে যাওয়ার পথে পুণ্যস্নান মেলা থেকে স্মৃতিস্বরূপ কিছু না কিছু কিনে নিয়ে থাকেন। এ ছাড়া ময়মনসিংহ জেলার শহরের গাঙ্গিনার পাড়সংলগ্ন শম্ভুপুরের ব্রহ্মপুত্র নদেও হয় পুণ্যস্নান। সেখানেও নদীর পাড়ে মেলা বসে। ময়মনসিংহ ছাড়াও সুনামগঞ্জ ও দিনাজপুরের পার্বতীপুরসহ আরও কয়েকটি জেলায়ও জাঁকজমকভাবে পুণ্যস্নান মেলা বসে।

0 comments:

Post a Comment