Thursday, May 27, 2010

নওগাঁ

0 comments
প্রাচীন সভ্যতা ও ঐতিহাসিক নিদর্শনে ভরপুর নওগাঁ জেলার ইতিহাস গৌরবে গাঁথা। এখানে রয়েছে পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ বৌদ্ধ বিহার পাহাড়পুর। বহু পুরাতন ঐতিহাসিক স্মৃতিচিহ্নে সমৃদ্ধ ইতিহাসের এক নীরব সাক্ষী নওগাঁ জেলা রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত।

নামকরণের ইতিহাস

নওগাঁ জেলার নামকরণে বিভিন্ন মতভেদ রয়েছে। নওগাঁ গ্রামের নাম থেকে সম্ভবত নওগাঁর উৎপত্তি। ধারণা করা হয়, বর্তমান জেলা সদর প্রাথমিক পর্যায়ে নয়টি গ্রামের সমন্বয়ে একটি মৌজার অন্তর্গত ছিল। প্রচলিত আছে যে, ইংরেজি Nine-এর বাংলা রূপ Nao অর্থাৎ নয় এবং village-এর বাংলা রূপ Gaon অর্থাৎ গাঁ। জেলাটির নামকরণ সম্ভবত Nao এবং Gaon -এর সম্বয়েই Nao gaon বা নওগাঁ নামে রূপান্তরিত হয়। মতান্তরে সন্নিহিত নয়টি চক বা জনবসতির সমন্বয়ে গঠিত হয় নয়গাঁ। এই নয়গাঁ-ই কালক্রমে নওগাঁ নামে রূপান্তিরত হয়।

আয়তন ও অবস্থান

আয়তনের ভিত্তিতে নওগাঁ জেলা বাংলাদেশের ১৩তম বৃহত্তম জেলা। এই জেলার মোট আয়তন ৩৪৩৫.৬৭ বর্গ কিমি, যা সমগ্র বাংলাদেশের মোট আয়তনের ১.৯৩%। ভোগোলিকভাবে নওগাঁ জেলা ২৪০৩র্২ উত্তর অক্ষাংশ থেকে ২৫০১র্৩ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮০২র্৩ পূর্ব দ্রাঘিমা থেকে ৮৯০১র্০ পূর্ব দ্রাঘিমার মধ্যে অবস্থিত। জেলাটির উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য; দক্ষিণে নাটোর ও রাজশাহী জেলা; পূর্বে জয়পুরহাট ও বগুড়া জেলা এবং পশ্চিমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য অবস্থিত।

নদ-নদী
আত্রাই, পুনর্ভবা, ছোট যমুনা, চিড়ি, তুলসীগঙ্গা।
প্রশাসনিক পটভূমি
১৮৬৬ সালের ৭ ডিসেম্বর রাজশাহী জেলার অধীনে নওগাঁ মহকুমা গঠিত হয়। প্রথমে নুরুল্লাবাদ সদর দপ্তর স্থাপিত হলেও ১৮৮২ সালের ৯ জুন এক আদেশবলে মহকুমা নওগাঁয় স্থানান্তরিত হয়। ১৯৮৪ সালে নওগাঁ মহকুমা জেলায় রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে ১১টি উপজেলা, ২টি পৌরসভা, ৯৯টি ইউনিয়ন, ২৫৬৫টি মৌজা, ২৭৯৫টি গ্রাম রয়েছে। উপজেলাগুলো হচ্ছে ধামইরহাট, সাপাহার, পতœীতলা, পোরশা, বাদলগাছি, মহাদেবপুর, নিয়ামতপুর, নওগাঁ সদর, মান্দা, রানীনগর ও আত্রাই।
জলবায়ু
সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রা ৩৭.৮০ সে এবং সর্বনিম্ন ১১.২০ সে। মোট বৃষ্টিপাত ১৮৬২ মিমি।
দর্শনীয় স্থানসমূহ
উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানসমূহের মধ্যে রয়েছে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার, জগদ্দল বিহার, দুবলহাটি রাজাড়ি, বলিহার রাজবাড়ি, কাশিমপুর রাজবাড়ি, বালুভার মন্দির, পাল আমলের স্মৃতিস্তম্ভ, দিব্যক স্মৃতিস্তম্ভ, কুশুম্বা মসজিদ, রবীন্দ্রনাথের কাছারিবাড়ি, ভীমের পাল্টি ইত্যাদি। এছাড়া নওগাঁর নির্জন, নিরিবিলি, মনোরম পরিবেশে প্রকৃতির সৌন্দর্যকে খুঁজে পাওয়া যায়।
যোগাযোগ ব্যবস্থা
সড়কপথে ঢাকা থেকে নওগাঁয় যাওয়ার জন্য দূরপাল্লার পরিবহন আছে। হানিফ, কেয়া, শ্যামলী, এসআর প্রভৃতি পরিবহন চলে এ পথে। ঢাকা থেকে নওগাঁর দুরত্ব ২৩৩ কিমি। সময় লাগে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা।
এস এম রাজু

0 comments:

Post a Comment