Thursday, June 3, 2010

কেনিয়া

0 comments
সোমালিয়া ও তাঞ্জানিয়ার মধ্যবর্তী স্থানে এবং ভারত মহাসগরের সীমান্তে অবস্থিত পূর্ব আফ্রিকার প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র এবং মালভূমি ও উঁচু পর্বতে পূর্ণ দেশটি হলো কেনিয়া।
নামকরণের ইতিহাস: কেনিয়া শব্দটি এসেছে মাউন্ট কেনিয়া’র নামানুসারে। শব্দটির ইংরেজি অর্থ ঈশ্বরের বিশ্রামের স্থান। কিফুয়ু, এম্বু ও কাম্বা এই তিন ভাষাভাষীর লোকজনই বিশ্বাস করে এই পর্বতটি পবিত্র স্থান।
ঐতিহাসিক পটভূমি: ১৬ শতকের পূর্বে পূর্ব আফ্রিকার সমুদ্র তীরাঞ্চল আরবদের অধিকারে ছিল। তবে ১৬ শতকের পর তা পর্তুগিজদের দখলে চলে যায়। মাসাইজাবি ১৮ শতকে মধ্য আফ্রিকায় বসতি গড়ে তোলে। ১৯ শতকে ইউরোপীয় মিশনারিরা কেনিয়ায় প্রবেশ করে। এরপর কেনিয়া ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয়। ১৯৫০ সালে ইউরোপীয় উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে মাও মাও বিদ্রোহ শুরু হয়। ১৯৬৩ সালে দেশটি পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন করে। ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত জোমে কেনিয়াট্টা কেনিয়ার শাসনক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি ছিলেন কেনিয়ার প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট ও স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রবাদপুরুষ। ১৯৭৮ সালে শাসনক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকাকালীন সময়ে কেনিয়াট্টার মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুর পর ড্যানিয়েল টোরিটিচ আপমোই ক্ষমতা গ্রহণ করেন। ১৯৬৯ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত কেনিয়ার একদলীয় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত ছিল, যার নাম কেনিয়া আফ্রিকান ন্যাশনাল ইউনিয়ন (KANU)। ১৯৯১ সালের শেষদিকে রাজনৈতিক উদারীকরণের জন্য অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক চাপের সৃষ্টি হয়। ফলে ১৯৯২ ও ১৯৯৭ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে বিরোধী দল KANU দলটিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ব্যর্থ হয়। তবে এ নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি ও সংঘর্ষ হয়েছিল। পরবর্তীকালে ২০০২ সালে একটি শান্তিপূর্ণ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং প্রেসিডেন্ট সোই অপসারিত হন। মোওই কাবাকি বহুজাতিক বিরোধী দল ‘রেইনবো’ কোয়ালিশনের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে ‘কানু’ প্রার্থী ইউরু কোনিয়াট্রাকে পরাজিত করেন।
অবস্থান ও আয়তন: ১০ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৩৮০ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। দেশটির উত্তরে সুদান ও ইথিওপিয়া, পূর্বে সোমালিয়া ও ভারত মহাসগর, দক্ষিণে তাঞ্জানিয়া এবং পশ্চিমে ভিক্টোরিয়া হ্রদ ও উগান্ডা।
দেশটির আয়তন প্রায় ৫,৮২,৬৪৯ বর্গকিলোমিটার। আয়তনের দিক থেকে এটি বিশ্বের ৪৭তম বৃহত্তম দেশ।
প্রশাসনিক ব্যবস্থা: ৮টি প্রদেশ রয়েছে। প্রদেশগুলো আবার বিভিন্ন জেলায় বিভক্ত। এখানে ৬৯টি জেলা রয়েছে। যেগুলোকে ৪৯৭টি উপবিভাগে বিভক্ত করা হয়েছে।
উচ্চতম ও নিম্নতম স্থান: দেশটির উচ্চতম স্থান হচ্ছে-মাউন্ট কেনিয়া, যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৭০৫৮ ফুট উঁচুতে অবস্থিত। নিম্নতম স্থান হচ্ছে- ভারত মহাসগরের সমুদ্রপৃষ্ঠ সমতল।
জলবায়ু: দেশটির উপকূলীয় অঞ্চলে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং অভ্যন্তরভাগে শুষ্ক আবহাওয়া অনুভূত হয়। ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ হচ্ছে উষ্ণতম মাস এবং জুলাই থেকে আগস্ট হচ্ছে শীতলতম মাস।
প্রধান নদী: গালানা, টানা।
প্রাকৃতিক সম্পদ: স্বর্ণ, চুনাপাথর, সোডা ছাই, লবণ, রুবি, গার্নেট।

এক নজরে
রাষ্ট্রীয় নাম: রিপাবলিক অব কেনিয়া।
রাজধানী: নাইরোবি জাতীয়তা: কেনিয়ান আয়তন: ৫,৮২,৬৪৯ বর্গ কিমি। আন্তর্জাতিক সীমান্ত: স্থল সীমান্ত ৩৪৭৭ কিমি এবং সমুদ্র উপকূলীয় ভূমি ৫৩৬ কিমি। জনসংখ্যা: ৩ কোটি ৯৮ লাখ।
ধর্ম: মুসলমান ১০%, প্রটোস্ট্যান্ট ৪৫%, রোমান ক্যাথলিক ৩৩%, স্থানীয় ধর্ম বিশ্বাসী ১০%, অন্যান্য ২%। মুদ্রা: কেনিয়ান শিলিং (KES)
স্বাধীনতা লাভ: ১৯৬৩ সালে ১২ ডিসেম্বর (যুক্তরাজ্য হতে)
জাতিসংঘের সদস্য পদ লাভ: ১৬ ডিসেম্বর ১৯৬৩ জাতীয় দিবস: ১২ ডিসেম্বর ভাষা: সোয়াহিলি সরকার পদ্ধতি: রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার প্রধান: রাষ্ট্রপতি

0 comments:

Post a Comment