Sunday, June 6, 2010

বিস্ময় জ্যোতিষ্ক কোয়াসার

0 comments
মহাকাশ, যেখানে এখনো এমন অনেক কিছুই আছে যা মানুষের কল্পনাশক্তির বাইরে। বর্তমান যুগটা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগ। আশা করা যায়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সহায়তায় ভবিষ্যতে মহাকাশের আর কোনো কিছুই মানুষের অজানা থাকবে না। কোয়াসার দূর মহাকাশের এক বিচিত্র ও বিস্ময়কর জ্যোতিষ্ক বিশেষ যা খালি চোখে দেখা অসম্ভব। কোয়াসার শব্দটি এসেছে Quasi-star কিংবা Quasi steller object থেকে। যার নামের বুৎপত্তিগত অর্থ দাঁড়ায় কিছুটা তারার মতো আবার কিছুটা নয়। অর্থাৎ এরা হচ্ছে তারার মতো কিন্তু তারা নয়। আকাশের অসংখ্য তারার মধ্যেও বহুযুগ থেকেই সম্ভবত কোয়াসার পরিলক্ষিত হচ্ছিল।

কিন্তু অতি সম্প্রতি স্বতন্ত্র বিজ্ঞানীরা একে পরিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন। ১৯৬৩ সালে সর্বপ্রথম বিজ্ঞানীরা স্বতন্ত্রভাবে একটি কোয়াসার আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছিলেন। সর্বপ্রথম আবিষ্কৃত এ কোয়াসারটির নাম দেয়া হযেছিল ৩ঈ৪৮। তবে এটি আবিষ্কার হওয়ার পরও বিজ্ঞানীরা এদের প্রকৃত পরিচয় এখনো বুঝতে পারেননি। মহাকাশের বহু দূর-দূরান্তের বিন্দু তারার মতো এদের দেখা যায়। কিন্তু যতই শক্তিশালী দূরবীন বা টেলিস্কোপ ব্যবহার করা হোক এদের কৌণিক আকৃতি বৃদ্ধি পায় না। তাই এরা কত দূরে আছে তা অনুমান করাও অসাধ্য। ১৯৬৩ সালেই আবিষ্কৃত হয় আরেকটি কোয়াসার, যার নাম দেয়া হয় ৩ঈ২৭৩। এক একটি কোয়াসার এত উজ্জ্বল যে, বেশ কয়েক হাজার কোটি তারা একত্র করলেও এত উজ্জ্বল হবে না। অথচ এটি আকৃতিতে খুব বড় দেখায় না। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে তাহলে কোয়াসারের এত আলো সৃষ্টির মূল রহস্য কি? তারা বা নক্ষত্র আপন অঙ্গের হাইড্রোজেন পুড়িয়ে যে কায়দায় অলোক সৃষ্টি করে কোয়াসারের মতো এত আলোকশক্তি সৃষ্টি করা সে পদ্ধতিতে অসম্ভব। কোয়াসার শুধুই যে অকল্পনীয় আলোর সৃষ্টি করে তা নয়, এরা বেতার তরঙ্গও সৃষ্টি করে।

অবশ্য আকাশের প্রতিটি তারাই কমবেশি বেতার তরঙ্গ সৃষ্টি করে, কিন্তু কোয়াসারের মতো এত তীব্র বেতার তরঙ্গ অন্য কোনো তারা তৈরি করতে পারে না। পৃথিবী থেকে আমাদের সবচেয়ে কাছের কোয়াসারটি হলো_ ৩ঈ২৭৩। এর থেকে পৃথিবীতে আলো আসতে প্রায় ১৫০,০০,০০,০০০ বছর সময় লাগে। এ পর্যন্ত প্রায় হাজারখানেক কোয়াসার আবিষ্কৃত হয়েছে তবে এদের প্রকৃত রহস্যটি এখনো উদঘাটিত হয়নি। সবচেয়ে দূরের কোয়াসারটি থেকে পৃথিবীতে আলো আসতে সময় লাগবে প্রায় এক হাজার কোটি বছর।

0 comments:

Post a Comment