Tuesday, August 31, 2010

বিএনপি

29 comments
১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহি-জনতার বিপ্লবে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আসা জেনারেল জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর এই দল প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৭ সালের ৩০ এপ্রিল তার শাসনকে বেসামরিক করার উদ্দেশ্যে ১৯ দফা কর্মসূচি শুরু করেন। জেনারেল জিয়া যখন সিদ্ধান্ত নিলেন, তিনি রাষ্ট্রপতি পদের জন্য নির্বাচন করবেন তখন তার নেতৃত্বে ১৯৭৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) প্রতিষ্ঠিত হয়। এই দলের সমন্বয়ক ছিলেন বিচারপতি আবদুস সাত্তার।
১৯৭৮ সালের ফেব্রুয়ারিতেই জাগদলের নেতৃত্বে ছয়টি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে 'জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট' নামে একটা নির্বাচনী জোট গঠন করা হয়। জোটভুক্ত দলগুলো হলো_ জাগদল, মুসলিম লীগ, ন্যাপ (ভাসানী), ইউনাইটেড পিপলস পার্টি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি ও বাংলাদেশ তফসিলী সম্প্রদায় ফেডারেশন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এই ফ্রন্টের প্রার্থী ছিলেন জিয়াউর রহমান। অপরদিকে, আওয়ামী লীগ, ন্যাপ (মোঃ), জাতীয় জনতা পার্টি, পিপলস লীগ, গণআজাদী লীগসহ ১০ দলের সমন্বয়ে গঠিত হয় 'গণতান্ত্রিক ঐক্যজোট' নামে আরেকটি নির্বাচনী জোট। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এ জোটের প্রার্থী ছিলেন জেনারেল (অব.) এমএজি ওসমানী। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জিয়াউর রহমান বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন এগিয়ে এলে জেনারেল জিয়া জাগদলের ফ্রন্টভুক্ত দলগুলোকে একীভূত করে '৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর গঠন করেন 'বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল' (বিএনপি)। রাষ্ট্রপতি জিয়া এই দলের সমন্বয়ক এবং দলের প্রথম চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ছিলেন দলের প্রথম মহাসচিব। জিয়ার এই দলে বাম, ডান, মধ্যপন্থি সব ধরনের লোক ছিলেন।
জিয়াউর রহমানের ১৯ দফা কর্মসূচির মধ্যে খালকাটা কর্মসূচিটি দেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। তবে জেনারেল জিয়া বেশি দিন সরকার ও দলের হাল ধরে রাখতে পারেননি। ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কিছু উচ্ছৃঙ্খল সেনাসদস্যের হাতে নিহত হন। এরপর ভাইস প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবদুস সাত্তার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হলেও অসুস্থতার কারণে দল ও সরকারের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারছিলেন না।
এ পরিস্থিতিতে দলের নেতাকর্মীদের অনুরোধে অনেকটা আকস্মিকভাবে শোকার্ত গৃহবধূ বেগম খালেদা জিয়া ওরফে পুতুল রাজনীতিতে এলেন। ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি তিনি বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ লাভ করেন। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বিচারপতি সাত্তারের কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেন। এ অবস্থায় সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে যান বেগম জিয়া। '৮৩ সালের মার্চ মাসে নেতাকর্মীদের সমর্থনে খালেদা জিয়া বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। স্বৈরশাসকবিরোধী আন্দোলনের একপর্যায়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিলেন খালেদা জিয়া। ১৯৮৪ সালের ১০ মে খালেদা জিয়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিএনপির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
পিছু ছাড়েনি ভাঙন : অবশ্য প্রতিষ্ঠার পর থেকে দফায় দফায় ভাঙনের মুখে পড়ে বিএনপি। প্রথমে হুদা-মতিন, দ্বিতীয়বার শাহ আজিজ, তৃতীয়বার কেএম ওবায়দুর রহমান, চতুর্থবার অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, পঞ্চমবার কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ এবং ষষ্ঠবার আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার নেতৃত্বে ভাঙনের মুখে পড়েছিল দলটি।

29 comments:

Post a Comment