Tuesday, August 17, 2010

শেয়ার বাজারে আসতে হলে

0 comments
রাতারাতি বড়লোক হওয়ার আশায় অনেকেই না জেনে না বুঝে নিজের কষ্টার্জিত জমানো টাকা শেয়ার বাজারে বিনোয়োগ করে থাকেন। তারা ভাবে শেয়ারে বিনোয়োগ করলেই তো অনেক লাভ। পরিশেষে যখন শেয়ার বাজার থেকে নিঃস্ব হয়ে ফিরে আসে তখন বুঝতে পারে বিনোয়োগ ঠিকমত হয়নি। নিজের জমানো টাকা লাভের আশায় বিনিয়োগ করে শেষ করে ফেলছেন অনেকেই । আবার অনেকেই বিনিয়োগ করে লাভবানও হচ্ছেন। তাই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ শুরুর আগে পুরো বিষয়টি বুঝে নিতে হবে ভালো করে। কাদের জন্য এই শেয়ারবাজার তাও জানতে হবে।

পুঁজিবাজারের চিত্রঃ  বর্তমানে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীর সংখ্যা প্রায় ২৬ লাখ। সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, প্রায় পাঁচ থেকে ছয় লাখ লোক নিয়মিত শেয়ার বেচাকেনা করে থাকেন। আর প্রতিটি কার্য দিবসে প্রায় দুই লাখ ৫০ হাজার বিনিয়োগকারী বেচাকেনার কাজ করেন। প্রতিদিনের লেনদেনের পরিমাণও অনেক। এখান থেকে কেউ লাভ করছেন, কারও আবার বিনিয়োগ করা টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে।

শেয়ার ব্যবসা কাদের জন্যঃ  শেয়ার ব্যবসা কি সবার জন্য? পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে চাইলে কেউ আপনাকে বাধা দিতে পারবে না। তবে এ ব্যবসায় আপনার প্রবেশ করাটা ঠিক হবে কি না, তা আপনাকেই বুঝতে হবে। পুঁজিবাজার আসলে সবার জন্য নয়। বর্তমানে দেখা যায়, ন্যূনতম জ্ঞান নেই এমন অনেক লোক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এ ব্যবসা সত্যিকার অর্থে নির্বাচিত কিছু লোকের জন্য। যাঁদের পুঁজিবাজার সম্পর্কে জ্ঞান আছে, যাঁরা ব্যবসায় ঝুঁকি নিতে পারেন, কেবল এমন পেশাদার শিক্ষিত লোকেরই উচিত এখানে বিনিয়োগ করা।

শেয়ার বাজার হতে আপনার পেশাঃ পুঁজিবাজারে সাধারণত দুই ধরনের বিনিয়োগকারী থাকেন। এক. ব্যক্তিগত পর্যায়ে বিনিয়োগকারী।

দুই. প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিনিয়োগকারী। আবার পুঁজিবাজারের ব্যক্তিগত পর্যায়ে বিনিয়োগকারীদের বেশির ভাগ বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকেন। তাঁদের কেউ চাকরিজীবী, কেউ ব্যবসায়ী, কেউ শিক্ষিত বেকার, কেউ বা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়-য়া। কেউ চাইলে এটাকে রীতিমতো পেশার ক্ষেত্র হিসেবেও নিতে পারেন। বিনিয়োগে হতে হবে কৌশলী অনেকেই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকে লটারির মতো মনে করে থাকে। তবে শেয়ার ব্যবসা কোনো লটারির খেলা নয়। এখানে বিনিয়োগ করে লাভবান হতে হলে তাকে কৌশলী হতে হবে। বাজারের ধারাকে বুঝতে হবে। বিনিয়োগের আগে বিনিয়োগকারীকে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অর্থনৈতিক তথ্য যথাযথভাবে বিশ্লেষণ করতে হবে। তা ঠিকভাবে না করতে পারলে আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি।

বিনিয়োগ করতে হবে বিভিন্ন খাতেঃ আপনি যদি শেয়ারে বিনিয়োগ করে লাভবান হতে চান, তবে বিনিয়োগ করার সময় একটি বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। মূলধনের টাকাকে খাত অনুযায়ী ভাগ করে নিতে হবে। বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের ফলে কোনো একটি বিশেষ খাতের বিনিয়োগ যদি ক্ষতির মধ্যেও পড়ে যায় তা অন্য খাতের মাধ্যমে পুষিয়ে নিতে পারবেন। আর পুরো টাকা একটি খাতে বিনিয়োগ করে ফেললে সে সুযোগ আর থাকে না। বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের সিকিউরিটিকে ১৭টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। সেগুলো হলো ব্যাংকিং, বিনিয়োগ, করপোরেট বন্ড, বিমা, প্রকৌশল খাত, খাদ্য ও সমজাতীয় পণ্য, জ্বালানি, ওষুধ, কাগজ ও মুদ্রণ, সেবা, পাট, টেক্সটাইল, সিমেন্ট, তথ্যপ্রযুক্তি, সিরামিক, পর্যটন এবং বিবিধ। আপনি যদি শেয়ার ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে চান, তবে আপনাকে এসব খাত ধরে বিনিয়োগ করতে হবে।

শেয়ারের শ্রেণীঃ শেয়ারবাজারে যেসব কোম্পানির শেয়ার আছে সেগুলোকে আবার এ, বি, এন এবং জেড শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়েছে। এ শ্রেণীতে রয়েছে ওই সব কোম্পানির শেয়ার, যারা নিয়মিত বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করে এবং শেয়ার লভ্যাংশও দেয় ১০ শতাংশের ওপর। নিয়মিত বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করলেও লভ্যাংশ দেয় ১০ শতাংশের কম তারা পড়ে বি শ্রেণীতে। এন শ্রেণীতে আছে এক বছরের কম সময় আগে নিবন্ধিত কোম্পানির শেয়ার। আর জেডে রয়েছে যারা নিয়মিত লভ্যাংশ দেয় না এবং এজিএমও করে না। জহিরুল ইসলাম বলেন, যাঁরা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে সাবধানতা মেনে চলেন, তাঁরা সাধারণত এ শ্রেণীর শেয়ার কিনে থাকেন।

0 comments:

Post a Comment