Sunday, September 5, 2010

অশ্বখুরাকৃতি হ্রদ

0 comments
যখন কোনো নদী তার সুগঠিত দুটি বাঁকের মধ্যবর্তী অংশ ছেদ করে সরলপথে প্রবাহিত হয় তখন এ ধরনের অর্ধচন্দ্রাকৃতি হ্রদের সৃষ্টি হয়। সাধারণত নদীর প্রবাহ পথে প্লাবনভূমি অঞ্চলে এ ধরনের হ্রদ দেখা যায়। বন্যার সময় বাঁকের ভাজগুলো বেশি পরিমাণে ক্ষয়প্রাপ্ত হয় এবং এক সময় স্বাভাবিকভাবেই নদীটি একটি সংক্ষিপ্ত সরলপথ সৃষ্টি করে নেয়। আর সে সময় বাঁকা পরিত্যক্ত পথটি অশ্বখুরাকৃতি হ্রদ হিসেবে গড়ে ওঠে। প্রাথমিক অবস্থায় অশ্বখুরাকৃতি হ্রদ ও জলপ্রবাহের সংযোগমুখ পলি জমে বন্ধ হয়ে যায় এবং পরে ধীরে ধীরে ভরাট হতে হতে হ্রদটি নদী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বাংলাদেশের পুরনো প্লাবনভূমি এলাকায় অনেক অশ্বখুরাকৃতি হ্রদ দেখতে পাওয়া যায়। এই ভূমিরূপটি আঞ্চলিকভাবে কোথাও কোথাও বিল, বাঁওর বা ঝিল নামেও পরিচিত। জলপ্রবাহের এই পরিত্যক্ত বাহুগুলো প্রচুর জলজ উদ্ভিদের উপস্থিতির কারণে জৈব উপাদান এবং সেই সঙ্গে কাদা বা মিহি পলিকাদা জাতীয় অবক্ষেপ ইত্যাদিতে সমৃদ্ধ থাকে। এ হ্রদগুলো বর্ষার সময় বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। এই বন্যা কখনো স্থানীয় বৃষ্টিপাত ও পৃষ্ঠ জলনিকাশের কারণে, আবার কখনো নদীতে বন্যার কারণেও সংঘটিত হতে পারে। বন্যার পানি নেমে গেলে এই হ্রদগুলোর প্রান্ত ভাগের জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়ে থাকে। যখন গোটা হ্রদ পলি দিয়ে ভরাট হয়ে যায় তখন সম্পূর্ণ হ্রদই ধান চাষের উপযোগী হয়ে যায়। এই হ্রদগুলো বিভিন্ন প্রকারের জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদের আবাসস্থল।

কিছু কিছু অশ্বখুরাকৃতি হ্রদ মিঠা পানির মৎস্য ক্ষেত্র হিসেবে যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে যেগুলোকে স্থানীয় ভাষার জলমহাল বলা যায়। বর্ষার সময় এই হ্রদগুলো স্থানীয় জলধারা হিসেবে কাজ করে এবং স্থানীয় বন্যার প্রমোজ নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে হ্রদগুলো শুষ্ক মৌসুমে সেচের উৎস হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
**আমিন রহমান নবাব
**শামীম রহমান রিজভী  

0 comments:

Post a Comment