Wednesday, October 20, 2010

পরকীয়ার দ্বন্দ্বেই খুন হয়েছেন জালালাবাদ গ্যাসের ব্যবস্থাপক

0 comments
সিলেটে পরকীয়ার দ্বন্দ্বে খুন হন জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমস লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (ক্রয়) আনোয়ারা বেগম চৌধুরী। কথিত প্রেমিক কিল-ঘুষি মেরে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করে তাকে। গত শুক্রবার সিলেটের বিচারিক হাকিম আবদুল মোমেনের কাছে এরকম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে ঘাতক উসমান গনি। সে সুনামগঞ্জ জেলা সদরের জানিগাঁওয়ের মৃত জহুর আলীর ছেলে।

ঘাতক উসমান গনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানায়, চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে সিলেট নগরীর চৌহাট্টায় হোটেল আলপাইনে আনোয়ারা চৌধুরীর সঙ্গে তার দেখা হয়। হোটেলে পরিচয় হওয়ার পর রাত সাড়ে ৯টার দিকে আনোয়ারা চৌধুরী তাকে লামাবাজার পুলেরপাড়ের তার বাসায় নিয়ে যান। ওই রাতেই আনোয়ারা চৌধুরী তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। এরপর থেকে আনোয়ারার কথামতো সে প্রতি মঙ্গল ও শুক্রবার বাসায় যেত এবং তার সঙ্গে মিলিত হতো।

উসমান জানায়, ফ্যাশন সচেতন হওয়ায় আনোয়ারা তাকে খুব পছন্দ করতেন। কয়েক দিন পর আনোয়ারা তাকে লামাবাজারের কাছাকাছি বাসা নিতে বলেন। বাসা ভাড়াও তিনি দেবেন বলে জানান উসমানকে। আনোয়ারার কথা মতো শেখঘাট জিতু মিয়া পয়েন্ট সংলগ্ন রুবেল ভিলা ৫২ নম্বর বাসায় উঠে সে। ১ নভেম্বর আনোয়ারা তাকে তার পাঁচতলা বাসার নিচতলায় নিয়ে যান। সেখানে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই উসমান আনোয়ারার বাসায় যেত। এক পর্যায়ে পাঁচতলা বাসার অন্যান্য ফ্ল্যাটের ভাড়াটেরা উসমানকে সন্দেহ করা শুরু করেন। আনোয়ারার বাসার কাজের মেয়ে সুজিনার সঙ্গে উসমানের সম্পর্ক রয়েছে এমনটা সন্দেহ করতেন সবাই। এ নিয়ে আনোয়ারার সঙ্গেও উসমানের মনোমালিন্য হয়। কিন্তু বুঝিয়ে বলার পর আনোয়ারা উসমানকে সন্দেহ করা বাদ দেন। তবে কাজের মেয়ে সুজিনাকে বাসা থেকে বিদায় দেন তিনি।

উসমান গনি আরও জানায়, আনোয়ারা চৌধুরী তাকে পাওয়ার জন্য এতই ব্যাকুল ছিলেন যে, তাকে বাড়ি যেতেও দিতেন না। আনোয়ারা তাকে ৫ ডিসেম্বর তার সঙ্গে ঢাকায় যেতে বলেন। তিনি বলেন, ঢাকায় তার ট্রেনিং তাই ৫ থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত তার সঙ্গে উসমানকে ঢাকায় থাকতে হবে। এতে উসমান রাজি না হওয়ায় আনোয়ারা ক্ষিপ্ত ছিলেন। আনোয়ারার ট্রেনিংয়ের সময় পর্যন্ত উসমান তার গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা বললে এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ নিয়ে ২ ডিসেম্বর তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। পরদিন ৩ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৮টায় আনোয়ারার ডাইনিং রুমে নাস্তা খাওয়ার সময় আনোয়ারা আবারও তাকে ঢাকা যাওয়ার জন্য চাপ দেন। এতেও সে অস্বীকৃতি জানালে আনোয়ারা তাকে গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে আনোয়ারা উসমানকে তার মা নিয়ে কটুক্তি করলে সে কিল-ঘুষি মারে। এতে আনোয়ারার দাঁত ভেঙে রক্ত বেরোতে থাকে। মেঝেতে পড়েও আনোয়ারা অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকলে নিজেকে নিয়ন্ত্রিত রাখতে না পেরে সে পাশের রুম থেকে গরু জবাই করার একটি ছোরা নিয়ে আনোয়ারার মাথায় ও পায়ে কোপ দেয়। পরে মুখে কাপড় গুঁজে সে পালিয়ে যায়। এই হত্যাকাণ্ড একাই ঘটিয়েছে বলে জবানবন্দিতে উসমান গণি উল্লেখ করে।

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন, শাহ দিদার আলম নবেল, সিলেট

0 comments:

Post a Comment