Thursday, October 28, 2010

আফ্রিদি

0 comments
বিশ্বে ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে অতি প্রিয় একটি নাম শহীদ আফ্রিদি। মূলত আফ্রিদি হলো পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের ওয়াজিরিস্তানের উপজাতি। বিশ্ব বিখ্যাত ইতিহাসবিদ হিরোডেটাসের মতানুসারে আফ্রিদি নামক উপজাতির উদ্ভব প্যাক্টিয়ানস জাতিগোষ্ঠী থেকে, যারা বেশক'টি ভাগে বিভক্ত। অ্যাপারথিয়া, অ্যাপারটাই তাদের মধ্যে অন্যতম। অধিকাংশ ইতিহাসবিদ ও নৃবিজ্ঞানীরা মনে করেন অ্যাপারটা জাতিগোষ্ঠীই বর্তমানে আফ্রিদি উপজাতি হিসেবে স্বীকৃত। খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতকে মধ্যপ্রাচ্যের তিরা নামক স্থান থেকে আফ্রিদি উপজাতি পাকিস্তানের ওয়াজিরিস্তানে এসে বসতি স্থাপন করে। পাকিস্তানের আফ্রিদিরা আজ থেকে ১০০ বছর আগেও সভ্য জাতি হিসেবে স্বীকৃত ছিল না। তারা শিক্ষা-দীক্ষায়, পোশাক-পরিচ্ছদে অন্যান্য লোকজনের চেয়ে অনেক পিছিয়ে ছিল। ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ বিভক্ত হওয়ার পর পাকিস্তান সরকার, উপজাতিদের উন্নয়নের জন্য ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নেয়। সরকারের পূর্ণ সহযোগিতায় ধীরে ধীরে শিক্ষিত হতে থাকে আফ্রিদি উপজাতি, বর্তমানে অধিকাংশ আফ্রিদিই শিক্ষিত ও কর্মঠ। আগে মধ্যপ্রাচ্যে চলাচল করার জন্য আফ্রিদিরা খাইবার গিরিপথ ব্যবহার করত। কিন্তু বর্তমানে সরকারি সুযোগ-সুবিধার কারণে খাইবার পথ ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না। শুধু পাকিস্তানেই নয়, আফগানিস্তানের কাবুল, সংযুক্ত আরব আমিরাত এমনকি ইরাকেরও কিছু কিছু অঞ্চলে আফ্রিদি জাতির বসতি রয়েছে। গবেষক হারুন রশিদ বলেন, আফ্রিদিরা উপজাতি হলেও এদের কথাবার্তা, চালচলনে মনেই হয় না এরা উপজাতি। আফ্রিদিরা অতি নম্র-ভদ্র, সবার সঙ্গে সদয় ব্যবহার করে, কারও কোনো ক্ষতি করে না। শতকরা ৯৯ ভাগ আফ্রিদি উপজাতিই মুসলমান। যদিও অষ্টাদশ শতাব্দীতে আফ্রিদিরা যুদ্ধবিগ্রহ করত, তবে বর্তমানে তারা যুদ্ধবিগ্রহকে অপছন্দ করে। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সাধারণ জনগণ আফ্রিদি উপজাতিদের পশতুন উপজাতি বা (ঞৎরনব) বলে সম্বোধন করে। ইতিহাসবিদরা মনে করেন আফ্রিদিদের আগমন ঘটেছে মধ্যপ্রাচ্যের ইসরায়েল, ইউরোপের দেশ গ্রিক ও আফগানিস্তান থেকে। ধারণা করা হয়, মহাবীর আলেকজান্ডারের শাসনামলে গ্রিক থেকে আফ্রিদি উপজাতি বিতাড়িত হয়ে এশিয়া মহাদেশের আফগানিস্তানে আশ্রয় গ্রহণ করে। সেখান থেকেই আস্তে আস্তে এদের বিস্তৃতি ঘটে। ২০১০ সালের এক রিপোর্টে দেখা গেছে, আফগানিস্তানের পশতুন, ভারতের পাঠান ও পাকিস্তানের আফ্রিদি উপজাতিরা একই জাতিগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত।



মো. রিয়াজুল ইসলাম

0 comments:

Post a Comment