Sunday, October 24, 2010

সিনাই

0 comments
প্রাচীন মিসরের সবচেয়ে নামকরা মরুভূমি হলো সিনাই মরুভূমি বা সিনাই মরু অঞ্চল। আরবীয়দের কাছে সিনাই পিনিসুলা বা ত্রিভুজ সিনাই নামে অধিক পরিচিত। সিনাই মরু অঞ্চলের উত্তরে রয়েছে ভূমধ্যসাগর, দক্ষিণে লোহিত সাগর। পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র হিসেবে আছে সুদান, জর্ডান ও ইসরাইল। প্রায় ৬০ হাজার কি. মি. আয়তনের এই মরুভূমিটি দেখতে উঁচু-নিচু, আঁকা-বাঁকা ও সর্পিল প্রকৃতির। এটি এশিয়া মহাদেশের অন্তর্ভুক্ত মিসরে অবস্থিত। এর বিপরীত দিকে রয়েছে আফ্রিকা মহাদেশ। অধিকন্তু এটি মিসরের অন্তর্ভুক্ত একটি মরুভূমি হলেও একে 'ল্যান্ড অব ফাওয়ারোজ' বলা হয়, যার মূলভিত্তি প্রাচীন মিসরীয় ডুমাক ক্যাট। মজার কথা হলো ফাওয়ারোজ ও ডুমাক ক্যাটের অর্থ প্রায় সমমানের। সিনাই পিনিসুলা মরু অঞ্চলটি বিভক্ত হয়েছে দুইজন মিসরীয় শাসক দ্বারা। তাদের মধ্যে একজন হলো মাহমুদ আলী ড্রাইনেসটি, আরেক হলো মামলুক। সিনাই মরু অঞ্চল নিয়ে দীর্ঘদিন রাজনীতি, ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এর প্রধান কারণ হলো সিনাই মরু অঞ্চল হলেও ভৌগলিক দিক দিয়ে অত্যন্ত ভালো জায়গায় এর অবস্থান। সিনাই মরুভূমির চারপাশে শুধু ধু-ধু বালুচর। লোকসংখ্যা ৯.৬ মিলিয়ন। অধিকাংশ সিনাইবাসী উট পালন ও খেজুর চাষ করে জীবনযাপন করে। তবে অনেক সিনাইবাসীই ব্যবসা বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। সিনাই মরু অঞ্চলের পাশেই ইসরাইল সীমান্ত। যার হুমকিতে মাঝে মাঝে সিনাইবাসী আতঙ্কিত ও ভীত হয়ে পড়ে। তবে সম্প্রতি ইসরাইলের কাছ থেকে সিনাইবাসীকে রক্ষার জন্য মিসরীয় সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা মহাদেশের দেশ হলেও সিনাই মরু অঞ্চলটির অবস্থান এশিয়া মহাদেশের ইসরাইলের কোলঘেঁষে। সিনাইবাসী ফলমূলের চেয়ে রুটি বেশি পছন্দ করে। সিনাই অঞ্চলে বহির্বিশ্ব থেকে যারা উটযোগে ব্যবসা বাণিজ্য করতে আসে পানির অভাবে তাদের অনেকে মারা যায়। যেকারণে কোনো ব্যবসায়ী অতিরিক্ত পানি ছাড়া সিনাই অঞ্চলে আসে না। ইসরাইল ও আরব বিশ্বের মধ্যে যতগুলো যুদ্ধ হয়েছে তার অধিকাংশই সিনাইকে কেন্দ্র করে যেমন : ১৯৫৬, ১৯৬৭ ও ১৯৭৩ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধ। কেননা এই মরু অঞ্চলে রয়েছে বড় বড় তেলের খনি, যা রক্ষার্থে আরববিশ্ব বদ্ধপরিকর।



-মো. রিয়াজুল ইসলাম

0 comments:

Post a Comment