Thursday, October 21, 2010

আতশবাজি কাহিনী

0 comments
রাসায়নিক দ্রব্য দিয়ে তৈরি বাজি বিশেষ করে বিভিন্ন উৎসবে প্রজ্বলন করা হয়। আতশ প্রদর্শনীকে আতশবাজি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন জাতি-ধর্ম-গোষ্ঠীর মধ্যে বিজয়োৎসব ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আতশবাজি প্রদর্শনের রীতি চলে আসছে। আতশবাজি প্রস্তুত ও ব্যবহারের কোনো সঠিক ইতিহাস জানা যায়নি। তবে নবম শতকে চীনারা আতশবাজি তৈরির জন্য বারুদ ব্যবহার করত এবং তারা এই আতশবাজি শিল্পের যথেষ্ট উন্নতি সাধন করে। বিভিন্ন প্রকার দাহ্য ও বিস্ফোরক রাসায়নিক দ্রব্যের দক্ষতাপূর্ণ মিশ্রণের মাধ্যমে আতশবাজির শব্দ, ঔজ্জ্বল্য এবং রংয়ের বৈচিত্র্যও তৈরি করা হয়। যেমন গতিবেগ ও স্ফুলিঙ্গ সৃষ্টিকারী আতশবাজির প্রধান উপাদান হলো_ পটাসিয়াম নাইট্রেট, সালফার (গন্ধক), লৌহচূর্ণ এবং কাঠ কয়লার মিহি গুঁড়া। বিস্ফোরণের তীব্রতার জন্য প্রয়োজনমতো বারুদের গুঁড়াও যোগ করা হয়। আবার আলোর ঔজ্জ্বল্যের জন্য নাইট্রেট অব লেড এবং বেরিয়াম ও অ্যালুমিনিয়ামের সূক্ষ্ম চূর্ণ আতশ মসলার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়। আর রঙিন ঘূর্ণায়মান তারকা অথবা মনোমুঙ্কর দৃশ্য সৃষ্টিকারী বিশেষ ধরনের আতশবাজি তৈরির জন্য পটাসিয়াম ক্লোরেট বা পারক্লোরেটের সঙ্গে নানারকম ধাতব লবণ মিশানো হয়। প্রদর্শনের জন্য আতশবাজির ব্যবহার বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বিশ্বের বহু দেশেই জাতীয় দিবসে যেমন স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস প্রভৃতি দিবস উদযাপন উপলক্ষে আতশবাজি প্রদর্শন হয়। বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক ও জাতীয় দিবসে তারাবাজি, তুবড়ি, চরকিবাজি, কদমঝাড়, ফুলঝুড়ি প্রভৃতি আতশবাজি অত্যন্ত জনপ্রিয়। আতশবাজি তৈরিতে পুরান ঢাকার বিশেষ ঐতিহ্য রয়েছে। সাধারণত কাগজের মোড়ক বা খোলের মধ্যে প্রয়োজনীয় মসলা ঢুকিয়ে আতশবাজি তৈরি করা হয়। তবে বিশেষ কোনো গুরুত্বপূর্ণ উৎসবে বিদেশ থেকে আতশ আমদানি করা হয়। সংকেতদানের কৌশল হিসেবেও আতশবাজির ব্যবহার রয়েছে। যেমন_ আগুনের লাল শিখা ও ধূমায়িত গ্রেনেড ছুড়ে বিপদগ্রস্তের অবস্থান অথবা সামরিক অভিযানে লক্ষ্যবস্তুর অবস্থান চিহ্নিত করা হয়।



-মো. আশিফ হোসেন

0 comments:

Post a Comment