Sunday, November 28, 2010

'বিল বাওয়া' উৎসব

0 comments
শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে শুকিয়ে আসে গ্রামবাংলার হাওর, বাঁওড়, ছোট নদী-নালা ও খাল-বিল। এ সময় খাল-বিল, নদী-নালায় একসঙ্গে মাছ ধরার হিড়িক পড়ে যায়। নির্দিষ্ট দিনে হাজার হাজার মাছ শিকারি পল, টাকজাল, জালি, ক্ষেতজাল, চাবিসহ বিভিন্ন রকম মাছ শিকারের সরঞ্জাম নিয়ে উপস্থিত হয় নির্দিষ্ট বিল বা ছোট নদীতে। এর আগে নির্দিষ্ট বিল বা ছোট নদীর আশপাশে হাটবাজার, গ্রামগুলোতে মাইকে বা ঢোল পিটিয়ে জানান দেওয়া হয় মাছ শিকারিদের। একসঙ্গে এরকম হাজার হাজার মাছ শিকারির নির্দিষ্ট বিল বা নদীতে মাছ শিকারকে 'বিল বাওয়া' আবার কোনো কোনো এলাকায় 'হাইত' বলা হয়। 'বিল বাওয়া'কে কেন্দ্র করে বিলের আশপাশে ১০ গ্রামে ৩/৪ দিন আগে থেকেই উৎসবের আমেজ আসে। বাড়ির ঝি, মহিলারা দল বেঁধে মসলা বাটার পাশাপাশি সংগীতের আয়োজন করে থাকে। 'বিল বাওয়ার' পর চলতে থাকে পাড়া প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে উপহার হিসেবে মাছ পাঠানো।

নানা কারণে এ 'বিল বাওয়া' বা 'হাইত' উৎসব এখন আর অতীত-ঐতিহ্য রক্ষা করতে পারছে না। বিল বা ছোট নদীকে এরই মধ্যে মৎস্য চাষের আওতায়, আধুনিক সেচ ব্যবস্থার আওতায় আনায় এখন ধীরে ধীরে এ উৎসব হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রামাঞ্চল থেকে।

ইদানীং মাছশূন্য খাল-বিলে বিল বাইতে এসে হতাশ হয় মাছ শিকারিরা। তবে গফরগাঁও, নান্দাইলসহ ময়মনসিংহ জেলার কোনো কোনো অঞ্চলে এখনো 'বিল বাওয়া' বা 'হাইত' উৎসব দেখা যায়।

আজহারুল হক, গফরগাঁও

0 comments:

Post a Comment