Monday, December 6, 2010

ব্যাবিলনের ঝুলন্ত উদ্যান

0 comments
ক্যালডীয় সভ্যতার অপর নাম হলো নতুন ব্যাবিলনীয় সভ্যতা। সভ্যতায় ক্যালডীয়দের সবচেয়ে বড় অবদান ঝুলন্ত উদ্যান। বর্তমানে ব্যাবিলনের উদ্যানটির অবস্থান ইরাকের আল-হিরা ব্যাবিল নামক স্থানে। তৎকালীন ব্যাবিলনের রাজা নেবুচাঁদ নেজার ৬০০ খ্রি. পূর্বাব্দে এ ঝুলন্ত উদ্যানটি তৈরি করেন। মজার ব্যাপার হলো, নেবুচাঁদ নিজের সুনামের জন্য উদ্যানটি তৈরি করেননি। তিনি তার স্ত্রীকে খুশি করার জন্যই এই ঝুলন্ত উদ্যানটি তৈরি করেন। নেবুচাঁদের স্ত্রী বাগান ও ফুলকে খুবই পছন্দ করতেন, আর নেবুচাঁদও জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসতেন প্রিয় পত্নীকে। তাই পত্নীর একান্ত ইচ্ছাতেই নেবুচাঁদ নেজার তৈরি করেন পৃথিবীর অন্যতম আকর্ষণীয় এই ঝুলন্ত উদ্যান। ৬০০ খ্রি. পূর্বাব্দে নেবুচাঁদ নেজার উদ্যানটি তৈরি করেছিলেন। তার কিছু অংশ পরিবর্তিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগে নষ্ট হয়ে যায়। ৭১২ সালের দিকে ব্যাবিলনীয় সরকার নেবুচাঁদের উদ্যানটি নতুনভাবে আবার সংস্কার করেন। উদ্যানটি দেখতে বৃহৎ দালানের মতো মনে হলেও এর ধাপে ধাপে রয়েছে অসংখ্য ফল ও ফুলের বৃক্ষ। পুষ্পিত শোভায় উদ্যানটি চতুর্দিকে অত্যন্ত সুচারুভাবে সজ্জিত। বাগানটি যতবার দেখা যায় ততবারই ভালো লাগে, প্রকৃতি যেন তার অপার মহিমায় সাজিয়েছে উদ্যানটিকে। উদ্যানটি ঝুলন্ত বললেও আসলে কিন্তু পুরোপুরি ঝুলন্ত নয়। তবে কেন ঝুলন্ত উদ্যান বলা হয়? এর কারণ মানুষ দালানকোঠা তলাভিত্তিক তৈরি করে বিভিন্ন তলায় বিভিন্ন কক্ষে বসবাস করে, তেমনি উদ্যানটিকে বিভিন্ন তলায় বিভক্ত করে একেক তলায় সাজানো হয়েছে নানা প্রজাতির বৃক্ষ। আর প্রত্যেক তলায় ওঠা-নামার জন্য রয়েছে ধাপে ধাপে সিঁড়ি। এ জন্যই উদ্যানটিকে ঝুলন্ত বলা হয়। তৎকালীন গ্রিক শাসক নেবুচাঁদ নেজার উদ্যানটি তৈরি করার সময় সেখানে রোপণ করেছিলেন ক্যাকটাস, ক্যামিলিয়া ও ক্রিসমাস নামক বৃক্ষ। এ ছাড়া রয়েছে কয়েক হাজার বিভিন্ন ধরনের ফুল ও ফলের গাছ। পূর্বে পৃথিবীর সাতটি আশ্চর্যজনক প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের মধ্যে ঝুলন্ত উদ্যানটি অন্যতম। প্রাচীন ঐতিহ্যের সাক্ষী এই ঝুলন্ত উদ্যানটি দেখতে প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থীর আগমন ঘটে ইরাকের আল-হিরা শহরে। এই উদ্যানটি শুধু ইরাকের নয়, বরং সমগ্র এশিয়ার ঐতিহ্য হিসাবে স্বীকৃত।

-মো. রিয়াজুল ইসলাম

0 comments:

Post a Comment