Saturday, December 25, 2010

নাইজেরিয়া

0 comments
নাইজেরিয়া পশ্চিম আফ্রিকার একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র। এর রাজধানীর নাম আবুজা। তেলসমৃদ্ধ নাইজেরিয়া আফ্রিকার সবচেয়ে জনবহুল দেশ। এর পশ্চিমে বেনিন, পূর্বে শাদ ও ক্যামেরুন, উত্তরে নাইজার এবং দক্ষিণে গিনি উপসাগর অবস্থিত। নাইজেরিয়া ১৯৬০ সালের ১ অক্টোবর ব্রিটেন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। বর্তমানে দেশটি ৩৬টি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় রাজধানী এলাকা নিয়ে গঠিত। ১৯৬৬ থেকে ১৯৯৯ সালের আগ পর্যন্ত দেশটি সামরিক শাসনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়েছে। ১৯৯৯ সালের দিকে নাইজেরিয়ায় গণতন্ত্র প্রবর্তিত হয়। নাইজেরিয়া সম্পর্কে মজার তথ্য হলো, দেশটির ভেতর দিয়ে প্রবাহিত নাইজার নদীর নামানুসারে। বিশ্বের জনবহুল দেশগুলোর মধ্যে নাইজেরিয়ার অবস্থান অষ্টম। মজার ব্যাপার হলো, অধিবাসীদের অধিকাংশেরই গায়ের রঙ কালো। আড়াইশ নৃতাত্তি্বক গোষ্ঠীর মধ্যে মোটামুটি চার হাজার রকম ভাষা প্রচলিত আছে। তবে গোষ্ঠী সংখ্যা আড়াইশ' হলেও প্রধান আদিবাসী গোষ্ঠী তিনটি। দেশটির সরকারি ভাষা ইংরেজি হলেও নাইজেরিয়ানরা প্রধানত আড়াইশ' ভাষায় কথা বলে থাকে। দেশটির উত্তরাঞ্চল আধা মরুভূমি। দেশটি আফ্রিকার অন্যতম অপরিশোধিত তেল উৎপাদক। প্রায় ২৫০-এর অধিক উপজাতি গোষ্ঠী অধু্যষিত এই দেশটির অধিকাংশ লোকই কৃষ্ণাঙ্গ।

ঐতিহাসিক পটভূমি

৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ২০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এ অঞ্চলে নক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছিল। ১৫ শতকে নাইজেরিয়ায় ইউরোপীয়রা প্রবেশ করে। তারা এখানে দাস ব্যবসা শুরু করে। ১৯৬১ সালে অঞ্চলটি ব্রিটিশদের অধিকারে চলে আসে। ১৯৬০ সালে নাইজেরিয়া স্বাধীনতা লাভ করে এবং ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠা করে রিপাবলিক। ১৬ বছর সামরিক শাসনের পর ১৯৯৯ সালে এক নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে বেসামরিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়। পেট্রোলিয়াম নির্ভর অর্থনীতি পুনর্গঠন করতে প্রেসিডেন্ট কিছুটা ঝুঁকির মুখে পড়েন। কারণ, রাজস্ব ক্ষেত্রে তখন চলছিল দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা। গণতন্ত্র পুনর্গঠনের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরিও ছিল কষ্টকর। পরবর্তীকালে বাসনেজো প্রশাসন দীর্ঘকালের জাতিগত এবং ধর্মীয় চাপা উত্তেজনাকে প্রশমনে সক্ষম হয়। কারণ, এটিই ছিল অর্থনৈতিক উন্নতি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ভিত্তি। পরবর্তীতে ২০০৩ সালের এপ্রিল মাসের নির্বাচনের মাধ্যমে নাইজেরিয়ার ইতিহাসে প্রথম নির্বাচিত বেসামরিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।

অবস্থান ও আয়তন :এটি ১০০০র্০ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮০০র্০ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। দেশটির উত্তরে নাইজার, পূর্বে চাদ ও ক্যামেরুন, দক্ষিণে গিনি উপসাগর এবং পশ্চিমে বেনিন।

দেশটির আয়তন প্রায় ৯,২৩,৭৬৮ বর্গকিলোমিটার। আয়তনের দিক থেকে এটি বিশ্বের ৩২তম বৃহত্তম দেশ।

প্রশাসনিক ব্যবস্থা :দেশটিতে ৩৬টি স্টেট ও ১টি ফেডারেল ক্যাপিটাল টেরিটরি আছে।

উচ্চতম স্থান :দেশটির উচ্চতম স্থান হচ্ছে_চাপ্পাল ওয়াদি, যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৭,৯৩৬ ফুট উঁচুতে অবস্থিত।

জলবায়ু :দেশটির আবহাওয়া গ্রীষ্মপ্রধান। তাই সর্বত্র তাপমাত্রা প্রখর থাকে। এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সাধারণত বর্ষাকালে সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় এবং উপকূল থেকে দূরবর্তী এলাকাগুলোতে বৃষ্টিপাত কম হয়। বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ৫৪-৯৮ ইঞ্চি।

প্রধান নদী :নাইজার, বেনিউ।

প্রাকৃতিক সম্পদ :প্রাকৃতিক গ্যাস, পেট্রোলিয়াম, টিন, আকরিক লৌহ, কয়লা, চুনাপাথর, সীসা ও দস্তা।



এ ক ন জ রে

রাষ্ট্রীয় নাম : ফেডারেল রিপাবলিক অব নাইজেরিয়া।

রাজধানী : আবুজা

জাতীয়তা : নাইজেরিয়ান

আয়তন : ৯,২৩,৭৬৮ বর্গ কিমি

আন্তর্জাতিক সীমান্ত : স্থল সীমান্ত ৪,০৪৭ কিমি এবং সমূদ্র উপকূলবর্তী ভূমি ৮৩৫ কিমি।

জনসংখ্যা : ১৫,৪৭,২৯,০০০

ধর্ম : মুসলমান ৫০%, খ্রিস্টান ৪০%, আদি ধর্মে বিশ্বাসী ১০%।

মুদ্রা : নাইরা (ঘঘে)

স্বাধীনতা লাভ : ১ অক্টোবর ১৯৬০

জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ : ৭ অক্টোবর ১৯৬০

জাতীয় দিবস : ১ অক্টোবর

ভাষা : ইংরেজি, হাউনো, ইবো

সরকার পদ্ধতি : রাষ্ট্রপতি শাসিত

সরকার প্রধান : রাষ্ট্রপতি।

0 comments:

Post a Comment