Tuesday, November 30, 2010

পোস্টমর্টেম

40 comments
পত্রিকায় প্রায় প্রতিদিনই আমরা শুনতে পাই পোস্টমর্টেমের কথা। যে কোনো অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটন করতে দরকার হয় এই পোস্টমর্টেমের। আসুন জানার চেষ্টা করি কি এই পোস্টমর্টেম।

পোস্টমর্টেম কি?

পোস্টমর্টেমের আরেক নাম অটপসি। অটপসি শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ অটপসিয়া থেকে। যার মানে 'To See For One Self'। সাধারণভাবে অটপসি হলো আইনানুগভাবে মৃতদেহ পরীক্ষা করে মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটন করা।

কবে শুরু হলো পোস্টমর্টেম?

খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ অব্দে মিসরীয়রা মমি তৈরির জন্য মৃতদেহকে ব্যবচ্ছেদ করত। তবে তারা শুধু ধর্মীয় কারণেই তা করত। মূলত মৃত্যুর কারণ জানার জন্য মৃতদেহ ব্যবচ্ছেদের কথা জানা যায় খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ অব্দে গ্রিসে। রোমান সম্রাজ্যে এটি চালু হয় খ্রিস্টপূর্ব ১৫০ অব্দে। ইতিহাস থেকে জানা যায়, জুলিয়াস সিজারের মৃত্যুর পর তার অফিসিয়াল পোস্টমর্টেম হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব ৪৪ অব্দে। এ ছাড়া আরবদের মধ্যে আন নাফিসের কথা উল্লেখযোগ্য। আধুনিক অটপসি চালু করেন Renaissance. এ iovanni Morgagni-কে বলা হয় Father of anatomical pathology.

কত ধরনের পোস্টমর্টেম হতে পারে?

অটপসি সাধারণত ৩ ধরনের হয়ে থাকে_

- মেডিকোলিগাল : অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে করা হয়।

- ক্লিনিক্যাল : এটি অসুস্থতাজনিত মৃত্যুর ক্ষেত্রে করা হয়।

- একাডেমিক : এনাটমি পড়ানোর জন্য মেডিক্যাল কলেজে করা হয়।

কারা পোস্টমর্টেম করেন?

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে_

১। সরকারি মেডিক্যাল কলেজের প্রফেসর এবং লেকচারার।

২। জেলা হাসপাতালের সিভিল সার্জন।

৩। সিভিল সার্জনের তত্ত্বাবধানে আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার।

কি কি লাগে পোস্টমর্টেমের জন্য?

- চালান (পুলিশ কর্তৃক)

- সুরতহাল রিপোর্ট (পুলিশ কর্তৃক)

- হাসপাতালে মৃত্যুর ক্ষেত্রে ডেথ সার্টিফিকেট

- পুলিশ কর্তৃক লাশ শনাক্তকরণ

- অবশ্যই দিনের আলো। (ভূতের গল্পে রাতে পোস্টমর্টেমের কথা বলা হলেও তা ভুল। আমাদের দেশে সব পোস্টমর্টেমই দিনে হয়)।

- অনুমোদিত মরচুয়ারি

কিভাবে করা হয়?

১। যে ডাক্তার পোস্টমর্টেম করবেন তিনি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পরীক্ষা করেন।

২। সুরতহাল রিপোর্ট পড়েন।

৩। মৃতদেহের বাহ্যিক পরীক্ষা করেন।

৪। মৃতদেহকে ব্যবচ্ছেদ করা হয় (সাধারণত ডোমরা এটি করে থাকে) এবং অভ্যন্তরীণ অঙ্গ পরীক্ষা করা হয়।

মস্তিষ্ক পরীক্ষার জন্য করোটি খোলা হয়। আর গলা, বুক, পেট পরীক্ষার জন্য তিন ধরনের ইনসিসন দেওয়া হয়। 'I' 'Y' এ es modified 'Y'।

কি কি ভিসেরা সংরক্ষণ করা হয়?

স্টমাক এবং ইনটেস্টাইন, কিডনি, হার্ট, লাংস, লিভার, ব্রেইন ইত্যাদি।

সবগুলোই সাধারণত সম্পৃক্ত লবণ পানিতে সংরক্ষণ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়।

তারপর? পোস্টমর্টেম শেষে ব্যবচ্ছেদকৃত অংশ সেলাই করে দেওয়া হয়।

পোস্টমর্টেমের প্রয়োজনীয়তা কি?

পোস্টমর্টেম বিচারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পোস্টমর্টেমের ভুলের কারণে একজন নিরপরাধ লোকের শাস্তি হতে পারে, আবার একজন অপরাধী ছাড়াও পেতে পারে। তাই খুব সতর্কতার সঙ্গে এই রিপোর্ট তৈরি এবং আদালতে উপস্থাপন করা হয়। পোস্টমর্টেমের রিপোর্ট প্রদানকারী ডাক্তারকেও সাক্ষ্য দিতে হয়।

-আমিন রহমান নবাব

শিয়াংচির স্ত্রীর মাথার খুলি

0 comments
চীনের সর্বশ্রেষ্ঠ বীরযোদ্ধা হিসেবে শিয়াংচির সুখ্যাতি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে আছে। তার শৌর্যবীর্যের সঙ্গে তৎকালীন সময় কারো তুলনা চলত না। শিয়াংচি যখন চীনের সেনাপতি ছিলেন সে সময় চীনের কেউ তার সমকক্ষ ছিল না। চীনের সবাই তার প্রতি প্রচণ্ড সম্মান প্রদর্শন করতেন। কিন্তু শিয়াংচির স্ত্রীকে নিয়ে ছিল যত সমস্যা। সাধারণত একজন বীরযোদ্ধার স্ত্রীর প্রচণ্ড নির্ভীক ও সাহসী হওয়ার কথা। কিন্তু শিয়াংচির স্ত্রী ছিল ঠিক তার উল্টো। যুদ্ধের নাম শুনলেই তিনি প্রচণ্ড ভয় পেতেন। শিয়াংচি যখন যুদ্ধের পোশাক পরা অবস্থায় থাকতেন তখন তিনি স্বামীর মুখ দর্শন পর্যন্ত করতেন না। তিনি শিয়াংচিকে সবসময়ই বলতেন যুদ্ধের চাকরি ছেড়ে কোনো সাধারণ চাকরি করতে। কিন্তু স্ত্রীর প্রতি শিয়াংচির বক্তব্য ছিল- একজন সৈনিকের চাকরি অনেক সম্মানের। দেশের মানুষের আমার প্রতি যে আস্থা, যে সম্মান এবং যে বিশ্বাস এর মূল্য অনেক। অন্য চাকরি করলে এরকম সম্মান আমাকে কেউ করত না। তাছাড়া নিজের দেশের জন্য তো একটু ঝুঁকি নিতেই হবে। কিন্তু শিয়াংচির স্ত্রী তবুও নাছোড় বান্দা। তিনি শিয়াংচিকে বলেন, তোমাকে যুদ্ধের সাজে দেখলেই আমার ভয় হয়। মনে হয় আমি দম বন্ধ হয়ে মারা যাব। এগুলোকে নিছক মনের ভয় ভেবে শিয়াংচি এড়িয়ে যেতেন। কিন্তু তার স্ত্রীর মনের ভয় ক্রমশ বিকট আকার ধারণ করতে শুরু করল। ধীরে ধীরে তার মনের ভয় মানসিক ব্যাধিতে রূপ নিল। এ মানসিক ব্যাধিই তার জীবনে কাল হয়ে দাঁড়াল। মারা গেলেন তিনি। শিয়াংচি তার স্ত্রীকে নিজের প্রাণের চেয়ে বেশি ভালোবাসতেন। স্ত্রীকে তিনি নিজের সব কাজের প্রেরণা মনে করতেন। সে স্ত্রী এখন থেকে আর তার পাশে থাকবে না_ একথা তিনি ভাবতে পারলেন না।

এরপর হঠাৎ তিনি এক অদ্ভূত কাজ করে বসলেন। স্ত্রীর কবর খুঁড়ে তার মাথার খুলি তুলে নিয়ে আসলেন শিয়াংচি। তিনি স্ত্রীর মাথার খুলিটি তার কোমরের সঙ্গে বেঁধে নিলেন। বাকি জীবন নিজের সঙ্গেই তিনি স্ত্রীর খুলিটি রেখেছিলেন। স্ত্রীর মৃত্যুর পর তিনি আরও ৩১ বছর বেঁচে ছিলেন এই দীর্ঘদিন এক মুহূর্তের জন্য। তিনি খুলিটি কাছছাড়া করেননি। যুদ্ধে গেলেও তিনি এটিকে তার সাথে নিয়ে যেতেন। মৃত্যুর পর তার মৃতদেহের কবর দেওয়া হয়। আজব হলে ও ঘটনাটি সত্যি। আসলেই চীনের ইতিহাসে এটি একটি অপূর্ব ভালবাসার নিদর্শন।

-প্রীতম সাহা সুদীপ

ফকিরচাঁদ গোঁসাই আশ্রম, লালপুর

0 comments
সরকারি নিয়ন্ত্রণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে দুই শতাব্দীরও বেশি স্মৃতিবাহী লালপুরের শ্রী ফকিরচাঁদ গোঁসাই আশ্রম ধ্বংস হতে চলেছে। দেশ-বিদেশ থেকে আসা দর্শনার্থীদের কোলাহলে মুখরিতটি আশ্রমটি আজ অনেকটাই জনমানবহীন নিস্তব্ধ হয়ে গেছে। বিলুপ্ত হতে চলেছে এ ঐতিহাসিক নিদর্শনটি। নাটোরের লালপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৮ কি. মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে দুড়দুড়ীয়ার নওপাড়া (রামকৃষ্ণপুর) গ্রাম। এ গ্রামের গহিন অরণ্যে একটি বটগাছ। বাংলা ১২১৭ সালে বটগাছের নিচে আস্তানা স্থাপন করেন ফকিরচাঁদ বৈষ্ণব। এখানেই সাধু ধ্যান-তপস্যা ও বৈষ্ণব ধর্ম প্রচার আরম্ভ করেন। প্রতি বছর দোল পূর্ণিমা, গঙ্গাস্নান ও নবান্ন উৎসব উপলক্ষে দেশ-বিদেশের হাজার হাজার ভক্ত সাধক। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে অনুষ্ঠানে সমবেত হন। সাধু ফকিরচাঁদ বৈষ্ণবের মৃত্যুর পর নওপাড়া জমিদার তারেকশ্বর তার স্মরণে সমাধিটি পাকা করে দেন এবং ভক্তদের সুবিধার্থে ৬৮ বিঘা জমি ও শান বাঁধানো বিশাল দুটি পুকুর দান করেন। আশ্রমের প্রবেশ পথে রয়েছে ময়ূর, বাঘ ও বিভিন্ন প্রাণীর মূর্তি এবং লতাপাতাসহ কারুকার্যখচিত সুবিশাল ফটক। প্রধান দ্বার পার হয়েই ডান পাশে রয়েছে ভক্ত সাধু ও সাধু মাতাদের আবাসন। বাম পাশে রয়েছে ছয়জন সাধুর সমাধি মন্দির। একটু সামনেই রয়েছে শ্রী ফকির চাঁদ বৈষ্ণবের চারকোণা প্রধান সমাধিস্তম্ভ। বর্গাকৃতির ৪০ ফুট সমাধিসৌধের পাশে রয়েছে আরেকটি ৩০ ফুট গৃহ। এর একটি দরজা ছাড়া কোনো জানালা নেই। মূল মন্দিরে শুধু প্রধান সেবাইত প্রবেশ করেন। কথিত আছে মন্দিরের মধ্যে সাধু ফকির চাঁদ স্বশরীরে প্রবেশ করে ঐশ্বরিকভাবে স্বর্গলাভ করেন। তার শবদেহ দেখা যায়নি। তার পরিধেয় বস্ত্রাদি সংরক্ষণ করে সমাধিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে। গম্বুজ আকৃতির সমাধির উপরিভাগ গ্রিল দিয়ে ঘেরা রয়েছে। ঘরের দেয়াল ও দরজায় বিভিন্ন প্রাণী, গাছ, লতাপাতাখচিত কারুকার্য শোভা পাচ্ছে। ভেতরে রয়েছে ঝাড়বাতি ও দেব-দেবীর মূর্তি। সোনা, রুপা ও কষ্টিপাথরের তৈরি মূল্যবান কারুকার্যগুলো চুরি হয়ে গেছে।

-আবদুল বারী, লালপুর (নাটোর)

Sunday, November 28, 2010

রানী রাশমনির কাচারি বাড়ি, দিনাজপুর

0 comments
Dinajpur, Bangladesh
পার্বতীপুর উপজেলা শহর থেকে ৮ কি.মি দক্ষিণে পার্বতীপুর-ফুলবাড়ি রাস্তার পাশে হাবড়ায় প্রাচীন আমলের ধ্বংসপ্রাপ্ত বেশকিছু দালানকোঠা, বৃক্ষরাজি চোখে পড়ে। এসব হাবড়ার প্রাচীন আমলের কীর্তি। সম্ভবত ১২২১ বঙ্গাব্দে অর্ধ বঙ্গেশ্বরী নামে খ্যাত রানী রাশমনি এখানে বিশাল জমিদারি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তখন স্থানটি যথেষ্ট চাকচিক্য ও জাঁকজমক ছিল। জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর রূপলাবণ্য হারিয়ে হাবড়ার আজ মলিন ও শ্রীহীন অবস্থা। বর্তমানে এখানে সপ্তাহে দু'টি হাট বসে। রাস্তা পাকা হওয়ায় যোগাযোগ সহজ হয়েছে। বর্তমানে দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার ক্ষুদ্র একটি ইউনিয়ন হলেও ১৮০০ ইংরেজি সালের দিকে হাবড়া থানার প্রশাসনিক হেড কোয়ার্টার ছিল।

মন্টোগোমারি মার্টিনের ইস্টার্ন ইন্ডিয়া (প্রকাশকাল, লন্ডন ১৮৩৬) গ্রন্থের বিবরণ, কবি জামাল উদ্দিনের প্রেমরত্ন কাব্য (১২৩০ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত) সর্বোপরি পুরনো দলিল দস্তাবেজে হাবড়া থানার পরিচয় মেলে। এখানে ৮/১০ বর্গ কিলোমিটারজুড়ে স্তূপ ও প্রাচীন ঘরবাড়ির ধ্বংসাবশেষ দৃষ্টিগোচর হয়। তবে তা থানা প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ের নয়। তার ইতিহাস অতি প্রাচীন।

-মঞ্জুরুল হক, পার্বতীপুর; দিনাজপুর

আকাশ কেন নীল

0 comments
রংধনুর যত রং সবটাই রয়েছে সূর্যরশ্মিতে। এ সূর্যের আলো যখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে পৃথিবীমুখী হয়, তখন গ্যাস কণা এবং অন্যসব উপাদান এদের রং ছড়ায়। যে রঙের ওয়েভলেংথ যত কম সেটি তত দ্রুত এবং সহজে ছড়ায়। যেহেতু সূর্যের আলোস্থিত রং সমূহের মধ্যে নীলের ওয়েভলেংথ সবচেয়ে কম তাই এটিই দ্রুত ও সহজে ছড়ায়, এজন্য আমরা আকাশ নীল দেখি।

আমেরিকা

41 comments
আজকের দুনিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সেরা ধনী আর শক্তিশালী দেশ বলে চিনতে পারলেও এর ইতিহাস আরম্ভ হয়েছে মাত্র ২০০ বছর আগে। আমাদের জানা আছে যে, উত্তর আমেরিকা আর দক্ষিণ আমেরিকা দুটি স্বতন্ত্র মহাদেশ হলেও আমেরিকা মহাদেশের আবিষ্কারক ক্রিস্টোফার কলম্বাস। কিন্তু কলম্বাসের নামে মহাদেশ দুটোর একটারও নাম হলো না কেন? আমেরিকার নামকরণ এক মজার কাহিনী। কলম্বাস ছিলেন সে আমলের একজন বিখ্যাত ইতালীয় নাবিক। ভারতবর্ষের ঐশ্বর্যের কথা ইউরোপে কিংবদন্তি হয়ে দাঁড়িয়েছিল বলেই অনেকেই চাইছিল স্থলপথ ছাড়াও সমুদ্রপথের সন্ধান করতে। তাই কলম্বাস জাহাজ নিয়ে ভারতবর্ষের খুঁজে বের হয়ে ১৪৯২ খ্রিস্টাব্দের ১২ অক্টোবর একটা দ্বীপে গিয়ে পেঁৗছান। দ্বীপটা বাহামা দ্বীপপুঞ্জের অন্তর্গত, আগে নাম ছিল সান সালভেদর। বর্তমান নাম ওয়াটলিং আইল্যান্ড। কলম্বাস স্পেনের রাজা ফার্ডিনান্ড ও রাণী ইসাবেলার সম্মানে এই দ্বীপের নাম রাখেন সান সালভেদর। কলম্বাস এই দ্বীপকে ভারত বলে ভেবেছিলেন। বর্তমানে আটলান্টিক মহাসাগরের এই তাবৎ দ্বীপপুঞ্জকে বলা হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর কলম্বাস জাপানের পথে পাড়ি দিতে গিয়ে সান সালভেদরের দক্ষিণে হিসপানিয়োলা আর তারপর কিউবায় গিয়ে পৌঁছান। ১৪৯৮ খ্রিস্টাব্দে তৃতীয় নৌযাত্রায় কলম্বাস প্রথমে ত্রিনিদাদ আর তারপর গিয়ে পৌঁছান দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের বর্তমান ভেনিজুয়েলাতে। এদিকে সমুদ্রপথে ভারতবর্ষ আবিষ্কারের যখন এতসব কাণ্ড চলছিল তখন এক স্পেনীয় নাবিক ঘোষণা করলেন যে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের মূল ভূখণ্ড তিনি ১৪৯৭ খ্রিস্টাব্দের ১৬ জুন আবিষ্কার করে এসেছেন। নাবিকটির নাম আমেরিগো ভেসপুচ্চি এবং বিশেষজ্ঞদের মত হলো_ তিনি ১৪৯৯ খ্রিস্টাব্দের আগে সমুদ্রযাত্রাই করেননি। কারণ সে বছরই আলন্সো দে ওখেদা ও ভেসপুচ্চি দক্ষিণ আমেরিকায় যান। কলম্বাস যেমন স্পেনের রাজার সাহায্যে সমুদ্রযাত্রা করেন, আমেরিগো ভেসপুচ্চিও তেমনি পর্তুগালের পতাকার নিচে ১৫০১ এবং ১৫০২ খ্রিস্টাব্দে যাত্রা করে দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিলে গিয়ে উপস্থিত হন। ভেসপুচ্চি এটা ঠিকই বুঝেছিলেন যে কলম্বাস যাকে ভারতবর্ষ ভেবে ভুল করেছিলেন সেটা আসলে একটা অনাবিষ্কৃত নতুন মহাদেশ। ভেসপুচ্চির নিজের সমুদ্রযাত্রার বিষয়ে লেখা এতই প্রসিদ্ধ লাভ করে যে, তাকেই দক্ষিণ আমেরিকার আবিষ্কারক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। জার্মানির ভূগোলবিদ ভাল্ডয়ে মুলার এমন চমৎকৃত হয়ে পড়েন যে ব্রাজিলকে তিনি ভেসপুচ্চির সম্মানার্থে আমেরিকা আখ্যা দেন। 'আমেরিকা' বলার কারণ হলো_ লাতিন ধরনে আমেরিগো ভেসপুচ্চি হয়ে যায় আমেরিকুস ভেসপুকিউস। নামটা এতই প্রচলিত হয়ে পড়ে যে, ব্রাজিল থেকে উত্তর আমেরিকা আর দক্ষিণ আমেরিকা দুই মহাদেশেরই নামকরণ হয় আমেরিকা।

-শামীম শিকদার

ইংরেজি ভাষার উৎপত্তি কথা

0 comments
যদিও পৃথিবীতে উত্তর চীনা বা মান্দারিন ভাষায় প্রায় ৬৭৫ মিলিয়ন (৬৭ কোটি ৫০ লাখ) লোক এবং ইংরেজি ভাষায় ৪০০ মিলিয়ন (৪০ কোটি) লোক কথা বলে, তবুও মান্দারিন থেকে ইংরেজি ভাষা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এর কারণ হলো_ মান্দারিন ভাষা শুধু চীনেই সীমাবদ্ধ। অন্যদিকে ইংরেজি হলো বিশ্বব্যাপী পরিচিত একটি ভাষা, যা প্রায় ৩৭টি দেশের সরকারি কাজকর্মে ব্যবহৃত হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ইংরেজি ভাষা ব্যবহৃত হয়। কোথাও জন্মগত সহজাত ভাষারূপে, কোথাও দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে আবার কোথাও বা প্রশাসনিক, পেশা কিংবা শিক্ষার উদ্দেশ্যে কার্যকরী ভাষারূপে। আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যার অনেক ধারণাকে একমাত্র ইংরেজিতেই লোককে জানানো হয়। এজন্য একদিক দিয়ে ইংরেজিকে পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান ভাষা বলা যেতে পারে। আধুনিক ইংরেজি মাত্র ৫০০ বছরের পুরনো। প্রায় ৫ হাজার বছর আগে ইউরোপীয় দেশগুলোতে লোকে ইন্দো-ইউরোপিয়ান ভাষায় কথা বলত। ইন্দো-ইউরোপিয়ান ভাষায় দক্ষিণ রাশিয়ার লোকেরা এবং রাইন নদী ও আরাল সাগরের মধ্যবর্তী অঞ্চলের যাযাবর উপজাতিরাও কথা বলত। প্রাচীন এ ভাষাভাষীর লোকেরা পরে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং তাদের ভাষাও তখন ভেঙে গিয়ে বিভিন্ন স্থানিক ভাষায় রূপ নেয়। ওইসব স্থানিক ভাষার একটি হচ্ছে প্রাচীন জার্মানিক বা টিউটোনিক  ভাষা, যা পরে খ্রিস্টাব্দের গণনা শুরুকালে আরও বিভিন্ন স্থানিক ভাষায় বিভক্ত হয়। ভাষাটি মূলত যে দুটি স্থানিক ভাষায় বিভক্ত হয় তা হলো পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানিক ভাষা। পশ্চিম জার্মানিক ভাষাটি পুনরায় আরও দুটি স্থানিক ভাষায় ভেঙে যায়। যাদের একটির নাম হলো উচ্চ জার্মান আর অপরটির নাম হলো নিম্ন জার্মান । উচ্চ জার্মান ভাষা থেকে আধুনিক জার্মান ভাষার উৎপত্তি। অন্যদিকে নিম্ন জার্মান ভাষা থেকে জন্মলাভ করেছে ডাচ ও ইংরেজি ভাষা। অবশ্য বহু বছর ধরে নিম্ন জার্মান ভাষার নানা পরিবর্তনের মাধ্যমে বর্তমান ইংরেজি ভাষার উদ্ভব ঘটেছে। এ ব্যাপারে নিম্ন জার্মান ভাষা থেকে প্রথম যে স্থানিক ভাষার উদ্ভব ঘটে তাকে প্রাচীন ইংরেজি বা এ্যাংলোস্যাক্সন ভাষা বলে। ৪৪৯ সালে ব্রিটেনে এই ভাষাটি চালু হয়। ভাষাটি ১১৫০ সাল পর্যন্ত অপরিবর্তিত অবস্থায় চলছিল। ১১৫০ থেকে ১৫০০ সালের অন্তর্বর্তী সময়ে এর কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। তখনকার ওই ভাষাকে বলা হতো মধ্য ইংরেজি। তারপর ১৫০০ সালের পর থেকেই আধুনিক ইংরেজির ব্যবহার শুরু হয়।

-প্রীতম সাহা সুদীপ

আনলাকি ১৩

0 comments
প্রাচীন রোমানরা ১৩ সংখ্যাটিকে মৃত্যু এবং ধ্বংসের প্রতীক বলে মনে করত।

১৯৭০ সালের ১৩ এপ্রিল এপোলো-১৩ মিশন ছোটখাটো দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছিল। এ ঘটনা ঘটেছিল ঠিক দিন দু'য়েক আগে বেলা ১টা ১৩ মিনিট বা ১৩.১৩-তে উৎক্ষেপণের পর।

১৩ সেপ্টেম্বর ১৯২৮ সালে আধুনিক আমেরিকার ইতিহাসে অন্যতম বড় হারিকেন ঝড়ে ২০০০ মানুষ মারা যায় এবং ২৫ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়।

পুরো প্যারিস শহরে ১৩ হোল্ডিং নম্বরবিশিষ্ট কোনো বাড়ি নেই।

ইতালির জাতীয় লটারি প্রতিযোগিতায় ১৩ সংখ্যা দিয়ে কোনো নম্বর রাখা হয় না। আমেরিকায় প্রত্যেক মাসের ১৩ তারিখ প্রায় ১০ কোটি ডলারের আর্থিক ক্ষতি হয় মানুষের ট্রেন ও বিমান যাত্রা বাতিল, কাজে যোগদান না দেওয়া এবং অপেক্ষাকৃত কম বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের কারণে।

রকমারি ডেস্ক

স্মৃতিশক্তি লোপ পায় কি করে

0 comments
বড় কোনো দুর্ঘটনার কবলে পড়লে বা খুব খারাপ কোনো খবর শুনলে অনেক সময় মানুষের স্মৃতিশক্তি লোপ পায়। এ রকম অবস্থায় পড়লে মানুষ তার অতীতের সবকিছু ভুলে যায়, এমনকি বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন কাউকেই চিনতে পারে না। নিজের নামও বেমালুম ভুলে যায়। মনোবিজ্ঞানে একে বলা হয়, অস্মার বা স্মৃতিভ্রংশ (ধসহবংরধ)। বিভিন্ন কারণেই স্মৃতিশক্তি লোপ পেতে পারে। যেমন_ মাথায় চোট লাগা, মনে কোনো বড় কষ্ট পাওয়া, অস্বাভাবিক ক্লান্তি, ওষুধপত্তরের কুফল, মাথার সার্জারি, মনের মধ্যে দারুণ টানাপড়েন, খুব বুড়ো হয়ে পড়া, বেশিরকম নেশা করা। এ রকম অনেক কারণেই স্মৃতিশক্তি লোপ পেতে পারে। কারণ যাই হোক, স্মৃতিভ্রংশ ঘটলে তার ফলাফল সব ক্ষেত্রেই এক রকম। মাথার মধ্যে নিউরন (হবঁৎড়হ) হলো সব ধরনের স্মৃতির এক হিসেবে ভাঁড়ার ঘর। যেভাবেই হোক, এই নিউরনরা যদি আক্রান্ত হয় তাহলে স্মৃতি লোপ পায়। মাথার মধ্যে এ নিউরনের কাজ হলো বিভিন্ন সময় যা কিছু ঘটে চলেছে তার হিসাব রাখা। তাই যদি কখনো নিউরনরা কোনো ঝামেলায় পড়ে তাহলে তাদের জমার হিসাব ভণ্ডুল হয়ে স্মৃতিভ্রংশ ঘটায়।

স্মৃতি লোপ পেলে ঘটনাটি ঘটার আগে বা পরের সবকিছুই একদম মুছে যায়। এরকম অবস্থা, এক-আধ সপ্তাহ, মাস বা বছর ধরে থাকতে পারে, আবার কখনোবা সারা জীবন। মজার কথা হলো পুরনো স্মৃতি যদি ফিরে আসে, তাহলে আবার স্মৃতিবিভ্রংশ অবস্থায় যা যা ঘটেছে তা আর কিছুই মনে পড়বে না। তবে এটাও ঠিক, স্মৃতিভ্রংশ একবার ঘটলে কিছু কিছু ফল থেকেই যায়, স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই এ রকম স্মৃতিভ্রংশ অবস্থা যদি কখনো ঘটে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার দেখানো উচিত। বুড়ো হলে অবশ্য স্মৃতিশক্তি একটু লোপ পায়। তবুও পেটে ঘা, হাই ব্লাডপ্রেসার, হাঁপানি, এরকম রোগের কারণেও গোলমাল দেখা দিতে পারে।

আমিন রহমান নবাব

'বিল বাওয়া' উৎসব

0 comments
শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে শুকিয়ে আসে গ্রামবাংলার হাওর, বাঁওড়, ছোট নদী-নালা ও খাল-বিল। এ সময় খাল-বিল, নদী-নালায় একসঙ্গে মাছ ধরার হিড়িক পড়ে যায়। নির্দিষ্ট দিনে হাজার হাজার মাছ শিকারি পল, টাকজাল, জালি, ক্ষেতজাল, চাবিসহ বিভিন্ন রকম মাছ শিকারের সরঞ্জাম নিয়ে উপস্থিত হয় নির্দিষ্ট বিল বা ছোট নদীতে। এর আগে নির্দিষ্ট বিল বা ছোট নদীর আশপাশে হাটবাজার, গ্রামগুলোতে মাইকে বা ঢোল পিটিয়ে জানান দেওয়া হয় মাছ শিকারিদের। একসঙ্গে এরকম হাজার হাজার মাছ শিকারির নির্দিষ্ট বিল বা নদীতে মাছ শিকারকে 'বিল বাওয়া' আবার কোনো কোনো এলাকায় 'হাইত' বলা হয়। 'বিল বাওয়া'কে কেন্দ্র করে বিলের আশপাশে ১০ গ্রামে ৩/৪ দিন আগে থেকেই উৎসবের আমেজ আসে। বাড়ির ঝি, মহিলারা দল বেঁধে মসলা বাটার পাশাপাশি সংগীতের আয়োজন করে থাকে। 'বিল বাওয়ার' পর চলতে থাকে পাড়া প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে উপহার হিসেবে মাছ পাঠানো।

নানা কারণে এ 'বিল বাওয়া' বা 'হাইত' উৎসব এখন আর অতীত-ঐতিহ্য রক্ষা করতে পারছে না। বিল বা ছোট নদীকে এরই মধ্যে মৎস্য চাষের আওতায়, আধুনিক সেচ ব্যবস্থার আওতায় আনায় এখন ধীরে ধীরে এ উৎসব হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রামাঞ্চল থেকে।

ইদানীং মাছশূন্য খাল-বিলে বিল বাইতে এসে হতাশ হয় মাছ শিকারিরা। তবে গফরগাঁও, নান্দাইলসহ ময়মনসিংহ জেলার কোনো কোনো অঞ্চলে এখনো 'বিল বাওয়া' বা 'হাইত' উৎসব দেখা যায়।

আজহারুল হক, গফরগাঁও

Saturday, November 27, 2010

Reality Show THE AMAZING RACE in Dhaka, Bangladesh

0 comments
Reality Show Shooting in Dhaka, Bangladesh. The upcoming episode of THE AMAZING RACE Season 17 Episode 9 “There’s a lot of Nuts and Bullets” (Dhaka, Bangladesh) which aired last night. Episode Synopsis: THE AMAZING RACE Season 17 Episode 9 “There’s a lot of Nuts and Bullets” (Dhaka, Bangladesh) – Tension among the teams runs high when, for the first time ever, two teams are U-turned and have to complete an extra task, jeopardizing their chances of making it to the final four.












THE AMAZING RACE, Sunday, Nov. 21 (8:00-9:00 PM, ET/PT) on the CBS Television Network. Photo: Best Possible Screen Grab/CBS

ভাষাণী নভোথিয়েটার

0 comments
আকাশ নিয়ে মানুষের ভাবনা সেই প্রাচীনকাল থেকেই। তখন মানুষ খালি চোখে আকাশ দেখত। আকাশের ভেতর তারা খুঁজে পেয়েছিল অনেক পৌরাণিক চরিত্র। মহাকাশের মোটামুটি গ্রহণযোগ্য একটি কাঠামো আমরা প্রথম পাই টলেমির কাছ থেকে। সেই কাঠামোর মাঝখানে ছিল নিশ্চল পৃথিবী, তাকে কেন্দ্র করে ঘুরছে বাকিসব গ্রহ-নক্ষত্র। বহু বছর পর এই ধারণা বদলে দেন নিকোলাস কোপার্নিকাস নামে এক জ্যোর্তিবিদ। মহাবিশ্বের কেন্দ্রস্থলে আমরা দেখি সূর্যকে। ব্রুনের এই ধারণা প্রচলিত বিশ্বাসের পরিপন্থী ছিল। এজন্য তাকে অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে। আজ আমরা জানি, পৃথিবী সূর্যের একটি গ্রহ। বুধ বা শুক্রের মতোই একটি গ্রহ। এ গ্রহগুলো ঘুরছে সূর্যকে কেন্দ্র করে। সূর্যের এ পরিবারকে আমরা বলি সৌরজগৎ। মহাকাশ সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ধারণা এখনও কুসংস্কারাচ্ছন্ন, ধোঁয়াটে। সম্প্র্রতি মহাবিশ্ব সম্পর্কে মানুষকে ভালোভাবে জানাতে একটি প্লানেটারিয়াম স্থাপিত হয়েছে। এ প্লানেটারিয়ামের নাম নভোথিয়েটার।

ও বায়োস্কোপওয়ালা...

ঢাকার বিজয় সরণিতে সামরিক জাদুঘরের পাশেই তৈরি হয়েছে এই নভোথিয়েটার। শো শুরু হওয়ার এক ঘণ্টা আগে থেকে টিকিট পাওয়া যায় টিকিট কাউন্টারে। টিকিটের দাম তুলনামূলক অনেক কম। একজন একসঙ্গে সর্বোচ্চ তিনটি টিকিট নিতে পারবেন। প্রতিদিন শো হয় চারটা। বেলা ১১টায়, দুপুর ১টায়, বিকাল ৩টায় ও ৫টায়। শুক্রবার রুটিন খানিকটা বদলায়। সকাল ১০টায় শো হবে একটা। এরপর বিকাল ৩টা, ৫টা ও ৭টায়। বুধবার বন্ধ।

নভোথিয়েটারের ভেতর-বাহির....

একশ তেত্রিশ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি করা বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটারের মোট আয়তন ৫.৪ একর। সামনে ছোট্ট লন ঘেরা। ইট আর কংক্রিট দিয়ে সাজানো হয়েছে নভোথিয়েটারের চারপাশ। ঢোকার মুখেই রয়েছে দু'টি সিম্বল। একটি ডানা মেলা বকের, অন্যটি আর্কিটেক্ট সিম্বল। প্লানেটারিয়ামের গঠনশৈলী বেশ নান্দনিক, জ্যামিতিক প্যাটার্নে বানানো। মাঝখানে মেটালিক নীল রঙয়ের ডোম। বাইরে থেকে গোল গম্বুজের মতো দেখায়। নভোথিয়েটারের ডিজাইন করেছেন স্থপতি আলী ইমাম। পুরো প্লানেটারিয়াম শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। টিকিট নিয়ে ভেতরে ঢুকলে চোখে পড়বে এক্সিবিশন হল। মোট চারটি লেভেলে সাজানো হয়েছে হলটি। হল অব দ্য ফেম নামে একটি আর্ট গ্যালারি আছে বাঁ দিকে। গ্যালারিতে রয়েছে বিশ্বনন্দিত বিজ্ঞানীদের আবক্ষ মূর্তি। এক্সিবিশন হলে রয়েছে একটি ত্রিমাত্রিক মডেল সোলার সিস্টেম, সূর্য, চাঁদ আর পৃথিবীর একটি মডেল, স্বচ্ছ খ-গোলক, সৌরজগৎ, তারাদের আকার, মহাকাশে তারাদের অবস্থান জানতে স্টার ফাইন্ডারসহ আছে ন্যাশনাল জিওগ্রাফির অনেক পোস্টার।

দেহঘড়ি চৌদ্দ তালা.....

প্লানেটারিয়ামের ঠিক মাঝখানে তৈরি হয়েছে থিয়েটার হল। এটি মূলত একটি এলুমিনিয়ামে বানানো ডোম। আমেরিকান একটি টিম এটা ইনস্টল করে দিয়ে গেছে। ডোমটির উচ্চতা পাঁচতলা বাড়ির সমান। ডোমের ভেতরে ঢুকলে আপনার মনে হবে, আপনি ঢুকে পড়েছেন আরেকটি ছোট্ট পৃথিবীতে। কারণ এটা বানানো হয়েছে একটি ভূগোলকের আদলে, যা সামনের দিকে হেলে আছে। ডোমের ঠিক অর্ধেকজুড়ে রয়েছে ২৩ মিটার ব্যাসের সুবিশাল থ্রি ডাইমেনশনাল পর্দা। পর্দার নিচে নীল রঙয়ের চেয়ার দিয়ে পুরো অডিয়েন্স সাজানো। চেয়ারগুলো পেছনে হেলানো যায়। এতে করে পুরো পর্দাটাই আপনি ভালো করে দেখতে পাবেন। এখানকার মোট আসন সংখ্যা ২৭৫ টি। বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে এ থিয়েটারে। পর্দায় ছবি ফুটিয়ে তোলার জন্য রয়েছে ৩২টি অতি শক্তিশালী প্রজেক্টর। ছবিতে স্পেশাল ইফেক্টের ব্যবহার রয়েছে। জীবন্ত শব্দের জন্য আছে ১০ হাজার ওয়াটের সাউন্ড সিস্টেম। পর্দায় একসঙ্গে দেখা যাবে ২৫ হাজারের অধিক নক্ষত্র। ছবি দেখার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে অ্যাস্ট্রোভিশন ফিল্ম।

বায়োস্কোপে চোখ রেখে....

মোট দুটো শো দেখানো হবে। এর মধ্যে প্রথমে দেখানো হবে একটি প্লানেটারিয়াম শো। এটার দৈর্ঘ্য ৩৭ মিনিট ৩৮ সেকেন্ড। শো শুরু হওয়ার আগে সব আলো নিভে যাবে। আকাশের মতো পর্দায় ধীরে ধীরে ভেসে উঠবে গোধূলিবেলার ঢাকা শহর। যেখানে সূর্য নেমে যাচ্ছে ক্রমশ, হারিয়ে যাচ্ছে আলো। কিছুক্ষণ পর আপনি মাথার ওপরে দেখবেন মেঘমুক্ত নির্মল কৃষ্ণপক্ষ রাতের নক্ষত্রখচিত আকাশ। এ আকাশ দেখে আপনার টাশ্কি লেগে যেতে পারে। আপনি সম্ভবত ভুলে যাবেন যে, আপনি বসে আছেন একটি ডোমের ভেতর। আপনি চিরচেনা আকাশকে কিছুতেই পর্দার এ আকাশ থেকে আলাদা করতে পারবেন না। আপনাকে বের হতে হবে একটি ট্যুরে যেখানে আপনি ছুটে যাবেন মহাকাশযানে করে সোলার সিস্টেমের দিকে। আপনি ক্রমশ জানবেন আকাশে কোন তারা কোথায় থাকে, জানবেন রাশিচক্রের বারোটি ছায়াপথের অবস্থান। নক্ষত্রগুলোর নামের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা গ্রিক মিথলজিগুলোও জানা যাবে। দেখানো হবে গ্যালাক্সিগুলো, আমাদের ছায়াপথ, এড্রোমিন্ডা নক্ষত্রপুঞ্জ। একে একে আরও জানা যাবে মিল্কিওয়ে, তারাদের জন্ম-মৃত্যু, বিগ ব্যাং, সুপার নোভা, ব্লাক হোলের কথা। সৌরজগতের একটি বেশ গোছানো পরিচয়ও পাবেন আপনি। একজন ভাষ্যকার বাংলায় আপনাকে বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করবেন। দেখতে দেখতে আপনার মনে হবে থিয়েটার হলটি আর স্থির নেই এক জায়গায়। এটা বদলে গেছে একটি মহাকাশযানে, যা আকাশের এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত ছুটে বেড়াচ্ছে আপনাকে নিয়ে। আপনি আকাশের ভেতর দিয়ে তারাদের মধ্যে উড়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা পাবেন। মাঝখানে ১০ মিনিটের বিরতি দিয়ে দ্বিতীয় শো শুরু হবে। এটা মূলত একটি ওয়াইল্ড লাইফ ডকুমেন্টারির নাম অভৎরপধ : ঞযব ঝবৎবহমবঃর. এটা দৈর্ঘ্যে ৪০ মিনিট। এখানে দেখানো হয়েছে জলের সন্ধানে ছুটে যাচ্ছে একদল প্রাণী। খুবই আকর্ষণীয় কিছু প্রাণীর জীবনযাত্রা জানা যাবে এই শো থেকে। আপনি দেখবেন শ্বাসরুদ্ধকর শিকারের দৃশ্য, তাড়া খাওয়া হরিণের দৃশ্য মনে করিয়ে দেবে আদিম সৌন্দর্যের সঙ্গে। এছাড়াও দেখানো হবে মাসাই নামে একটি ট্রাইবের জীবনপ্রণালী।

আকাশের ওই মিটিমিটি তারার সাথে কইব কথা....

বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার এদেশের মানুষের জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা। এত আধুনিক কোনো হল এর আগে বাংলাদেশে নির্মিত হয়নি। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই এরকম প্লানেটারিয়াম রয়েছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে রয়েছে মোট ২৯টি। এর মধ্যে ৪টি আছে পশ্চিমবঙ্গে। পাকিস্তানেও তিনটি প্লানেটারিয়াম রয়েছে।

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন

রাজা গাইজেসের মুদ্রা প্রচলন

0 comments
মুদ্রা বা টাকা-পয়সা ছাড়া বর্তমান সময়ে এক পা-ও চলা যায় না। জন্মের সময় টাকার দরকার। বেঁচে থাকার জন্য টাকার দরকার। এমনকি মারা যাওয়ার পরও মৃতদেহের সৎকার করার জন্য চাই টাকা। এক কথায় বলতে গেলে টাকা ছাড়া জগৎ সংসারের সবকিছুই ফাঁকা। টাকার দরকার নেই এমন একজন মানুষও হয়ত খুঁজে পাওয়া ভার। অনেকেই হয়ত আশ্চর্য হবেন মানব সভ্যতার প্রথমদিকেও মুদ্রা বা টাকা-পয়সার কোনো বালাই ছিল না। ছিল না কোনো চিন্তা-ভাবনা। প্রশ্ন উঠতে পারে যে, মুদ্রা বা টাকা-পয়সা ছাড়া একদম চলা যায় না, আগেকার মানুষ তাহলে কিভাবে চলত? দরকারি জিনিসপত্র যোগাড় করত কিভাবে? আজকের দিনে মানুষ যতসব পণ্যসমাগ্রী ব্যবহার করে থাকে আদিমকালে এতকিছু ছিল না। তাই এসবের জন্য কোনো হা-হুতাশেরও অবকাশ ছিল না। টাকা-পয়সা বা মুদ্রার কল্পনা ছিল একেবারেই চিন্তার বাইরে। তখনকার সময় প্রয়োজনীয়সব পণ্যসামগ্রীই যে সবাই উৎপাদন করত তা কিন্তু নয়। কেউ চাল উৎপাদন করলে অন্য কেউ হয়ত গমের চাষ করত। কেউবা এর কোনোটিই না করে ঘরে বসে বুনতো কাপড়। কেউবা অন্য আরো কিছু তারপর এক অভিনব পন্থায় যার যার দরকার অনুযায়ী একে অপরের মধ্যে পণ্য বিনিময় করত। যাকে আজকের আধুনিক অর্থশাস্ত্রে অভিহিত করা হয় বিনিময় প্রথা বা বার্টার সিস্টেম বলে। কিন্তু এ বিনিময় প্রথায়ও ছিল নানা অসুবিধা। ধরা যাক, একই গ্রামে ধান-চাল ও কাপড় উৎপাদন করে তিন কৃষক। ধানওয়ালা কৃষকের দরকার মুরগি। চাল ও কাপড়ওয়ালার দরকার যথাক্রমে কুড়াল ও কাস্তে। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও ধারেকাছে কোনো কুড়াল কাস্তেওয়ালা পাওয়া গেল না। যদিও বা পাওয়া গেল পার্শ্ববর্তী অন্য গ্রামে; কিন্তু সেখানেও দেখা গেল আরেক সমস্যা। কুড়ালওয়ালা চায় গরু। আর কাস্তেওয়ালার চাই মাছ। অর্থাৎ একেকজনের চাহিদা একেকরকম। তাই স্বাভাবিক বিনিময়-প্রথায় পণ্য বিনিময়ে দেখা দিল বড় ধরনের সমস্যা। অনেক ভেবে-চিন্তে মোটামুটি একটা পথ বের করা হলো। সোনা-রূপার বাঁট বা অংশের বদলে বিনিময় হতে লাগল নানা পণ্যসামগ্রী। তাতেও সমস্যার ঘোর কাটাল না। সোনা-রূপা সবসময় দরকার পড়ে না। সোনা-রূপার মাধ্যমে পণ্য বিনিময় করত তারাই যাদের অন্য কোনো পণ্যের দরকার হত না। তাই এমন পণ্য মালিকের সংখ্যা ছিল নিতান্তই কম। সোনা-রূপার নির্ভেজালত্ব নিয়েও ছিল সংশয়।

ফলে চিন্তা-ভাবনা চলল নতুন উপায় বের করার জন্য। সে চিন্তা থেকেই আনুমানিক ৫৫০ থেকে ৬০০ খ্রিস্ট-পূর্বাব্দে অর্থাৎ আজকের তুরস্কে রাজা গাইজেস সর্বপ্রথম 'ইরেকটাম' নামে এক ধরনের মুদ্রা চালু করেন। সেখান থেকেই শুরু হয় সর্বপ্রথম মুদ্রা প্রচলন। কালের বিবর্তনে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এই মুদ্রাই আধুনিক রূপে আমাদের হাতে পৌঁছেছে।
সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন

ভাষাসৈনিক মতিন উদ্দীন আহমদ স্মৃতি সংগ্রহশালা, সিলেট

0 comments
সিলেট নগরীর ব্যস্ততম এলাকা জিন্দাবাজার শুকরিয়া মার্কেটের চতুর্থ তলায় গড়ে তোলা হয়েছে 'ভাষাসৈনিক মতিন উদ্দীন আহমদ স্মৃতি সংগ্রহশালা'। দুর্লভ, দুষ্প্রাপ্য প্রত্নতাত্তি্বক নিদর্শনে সাজানো এ সংগ্রহশালার কথা নগরীর প্রায় সবাই জানেন। প্রতিদিন শুকরিয়া মার্কেটে অসংখ্য দর্শনার্থী এটি দেখতে আসেন। সংগ্রহশালাটি তৈরি হয়েছে মূলত ভাষাসৈনিক মতিন উদ্দীনের সংগ্রহে থাকা দুর্লভ প্রত্নতাত্তি্বক নিদর্শন দিয়ে। মতিন উদ্দীন আহমদ সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার আটগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ১৯০০ সালে। পড়াশোনা শেষে তিনি কিছুদিন আইন পেশায় যুক্ত থেকে, পরে যোগ দেন সিভিল সার্ভিসে। তিনি সিলেটের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। মহান ভাষা আন্দোলনে তার অগ্রণী ভূমিকা ছিল। তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে এবং বিদেশ ভ্রমণকালে শখের বসে দুর্লভ প্রত্নতাত্তি্বক দ্রব্যাদি সংগ্রহ করেন। এতদিন নিজ বাড়িতেই এসব দ্রব্য সংরক্ষিত ছিল। তিনি প্রয়াত হওয়ার আগে তার সংগ্রহ নিয়ে একটি সংগ্রহশালা প্রতিষ্ঠার জন্য নাতি ডা. মোস্তফা শাহজামান চৌধুরীকে তাগিদ দিয়ে যান। পরে ডা. মোস্তফা এই সংগ্রহশালা গড়ে তোলেন। এখানে সংরক্ষিত নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বদের ব্যবহৃত কলম, বার্মায় জাপানের স্বল্পকালীন শাসনামলের দুর্লভ একটি ব্যাংক নোট, প্রায় দেড়শ' বছরের পুরনো টাইপরাইটার, লেটার প্রেস, নেপালি কুড়কি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত কামানের শেলের খোসা, বন্দুক, নেপালের রাজা বিক্রম শাহ দেব কর্তৃক মতিন উদ্দীনকে দেওয়া হাতির দাঁতের তৈরি দাবার ঘুঁটি, ১৮শ' শতাব্দীর বেশ কয়েকটি ঘড়ি, লোহার তৈরি সিঁড়ি, প্রাচীন আমলের গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত নানা বস্তু ও দ্রব্যসামগ্রীসহ বিভিন্ন প্রত্নতাত্তি্বক নিদর্শন। এখানে রয়েছে সুলতান মাহমুদের শাসনামল, মুঘল আমল ও প্রাচীন ভারতের বিভিন্ন শাসনামলেরও মুদ্রাসহ শতাধিক দেশের মুদ্রা ও ডাকটিকিট। রয়েছে ১৮৭৪ সালে প্রকাশিত চেম্বার্স এনসাইক্লোপেডিয়া ডিকশনারির এক সেটসহ প্রায় ৫ হাজার দুর্লভ বইয়ের সংগ্রহ। এছাড়াও সোনার জরি খচিত কয়েকটি শাড়ি। রয়েছে আড়াইশ' বছর আগে মানুষ কেনাবেচনার একটি ঐতিহাসিক দলিল। মতিন উদ্দীনের ব্যবহৃত পোশাকও স্থান পেয়েছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এ রকম সংগ্রহশালা স্থানীয় পর্যায়ে ইতিহাস চর্চায় বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। এ প্রসঙ্গে এর তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোস্তফা জানান, সংগ্রহশালা নিয়ে আমাদের নানা পরিকল্পনা রয়েছে। একটি ক্যাটালগ তৈরি করব। আমাদের পর্যাপ্ত জনবলও নেই। চেষ্টা করছি এটিকে আরও সমৃদ্ধ করতে।

-শাহ্ দিদার আলম, সিলেট

রকস মিউজিয়াম, পঞ্চগড়

0 comments
ভূতাত্তি্বক বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় হিমালয়ের নিকটস্থ জেলা পঞ্চগড়। এখানকার ভূভাগে রয়েছে প্রচুর নুড়ি পাথর। ভূগর্ভের নুড়ি পাথরের কালানুক্রমিক নমুনা নিয়ে পঞ্চগড় সরকারি মহিলা কলেজে গড়ে তোলা হয়েছে রকস মিউজিয়াম। কলেজের অধ্যক্ষ ড. নাজমুল হকের ব্যক্তিগত উদ্যোগে ১৯৯৭ সালে এটি গড়ে ওঠে। এ অঞ্চলের ভূখণ্ডের বয়স নির্ণয়, ভূমি-বৈশিষ্ট্য, প্রাগৈতিহাসিক নমুনা সংগ্রহ, নৃতাত্তি্বক নিদর্শন সংগ্রহ ও গবেষণার জন্য এ মিউজিয়াম স্থাপন করা হয়।

রকস মিউজিয়ামে অভ্যন্তরীণ ও উন্মুক্ত দুই রকমের গ্যালারি রয়েছে। অভ্যন্তরীণ গ্যালারিতে রয়েছে_ ক. বিভিন্ন আকৃতি, রং ও বৈশিষ্ট্যের আগ্নেয়শীলা, পাললিক শীলা ও নুড়ি পাথর, সিলিকা নুড়ি ও সিলিকা বালি, হলুদ ও গাঢ় হলুদ বালি, খনিজবালি, সাদা মাটি, তরঙ্গায়িত চ্যাপ্টা পাথর, লাইমস্টোন, পলি ও কুমোর মাটি এবং কঠিন শীলা। এ গ্যালারিতে একটি জাতিতাত্তি্বক সংগ্রহশালাও স্থাপন করা হয়েছে। এখানে রয়েছে পঞ্চগড়ের আদিবাসীদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র এবং নদীর নিচে ও ভূগর্ভে প্রাপ্ত অশ্মীভূত কাঠ, তিনশ থেকে দুই হাজার বছরের পুরনো ইমারতের ইট-পাথরের মূর্তি এবং পোড়ামাটির নকশা। উন্মুক্ত গ্যালারিতে রয়েছে বিশাল আকৃতির বেলে পাথর, গ্রানাইট পাথর, কোয়ার্জাহিট, ব্যাসল্ট, শেল, মার্বেল বিভিন্ন নামের ও বর্ণের শিলা, সিলিকায়িত কাঠ বা গাছ থেকে পাথর, নকশা করা অলংকৃত খিলান ও বিভিন্ন রেখা, লেখা ও চিত্রাঙ্কিত শিলা এবং ধূসর ও কালো রঙয়ের কাদা। এখানে রয়েছে দুটি নৌকা। একটি শালগাছ কেটে বিশাল আকারের নৌকা দুটি তৈরি করা হয়েছে। নৌকার দৈর্ঘ্য ২২ ফুট ৬ ইঞ্চি। এর বয়স প্রায় তিনশ' বছর। এ ধরনের নৌকা প্রাচীনকালের আদিবাসীরা প্রশান্ত মহাসাগরের দীপপুঞ্জে ব্যবহার করত বলে সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন। একটি পাথরের নাম স্থানের নামেই ছিল 'পাথর ঠাকুর'। এখানে রয়েছে পাথরে খোদিত 'তীর-ধনুক' ও দেবীর চোখের চিত্র। একটিতে রয়েছে তিব্বতী, চাইনিজ বর্ণমালা। একটি পাঁচফুট লম্বা কোয়ার্জাইট পাথর স্থাপিত হয়েছিল সম্ভবত কোনো সমাধিক্ষেত্রে। পাথরগুলোর বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে অনেক বিশেষজ্ঞই বলছেন, পার্শ্ববর্তী দার্জিলিংয়ের সমকালে পঞ্চগড় অঞ্চলেও নব্য প্রস্তর যুগের সংস্কৃতি ও জীবনাচরণ ভালোভাবেই বিস্তার ছিল। বাংলাদেশে এখনো প্রত্ন ঐতিহাসিক ও প্রস্তর যুগের হাতিয়ার ও উপকরণ খুব বেশি একটা পাওয়া যায়নি। অনুসন্ধান অব্যাহত রাখলে পঞ্চগড় জেলায় হয়তো প্রস্তর যুগের প্রত্নবস্তু আবিষ্কৃত হতে পারে। আমাদের আদি ঐতিহ্যের প্রাচীন ইতিহাসকে জীবিত রাখতে দেশের দুর্লভ এই মিউজিয়ামটিকে সংরক্ষণ প্রয়োজন।

নুরুল হুদা বাবু, পঞ্চগড়

ভিটামিন

0 comments
খাদ্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ভিটামিন। আমাদের অনেকেরই অজানা এই ভিটামিনের আবিষ্কার কিভাবে? ১৯০৫ সালে প্রথম ইংরেজ বিজ্ঞানী উইলিয়াম ফ্লেচার গবেষণায় সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন, খাদ্যের অভাবে বিভিন্ন রোগ সংঘটিত হয়। তিনি গবেষণা করছিলেন, কিভাবে বেরিবেরি রোগ সংঘটিত হয়? তিনি গবেষণার সময় আবিষ্কার করলেন, পাতলা খোসাসহ চাল বেরিবেরি রোগ প্রতিরোধ করছে, অন্যদিকে খোসা ছাড়ানো চকচকে চাল বেরিবেরি রোগ প্রতিরোধ করছে না। সে কারণেই উইলিয়াম ফ্লেচার বিশ্বাস করলেন চালের খোসায় পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান রয়েছে।

১৯০৬ সালে ইংরেজ বায়োকেমিস্ট স্যার ফ্রেডরিক হপকিংসও আবিষ্কার করলেন ফ্রাঞ্জ, স্বাস্থ্যের জন্য কিছু খাদ্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এদিকে ১৯১২ সালে পোলিশ বিজ্ঞানী ক্যাশমির ফাঙ্ক বিশেষ পুষ্টি উপাদানের নাম দেন 'ভিটামিন'। 'ভিটা' শব্দের অর্থ জীবন। 'অ্যামাইন' শব্দের অর্থ যৌগিক উপাদান যা খুঁজে পাওয়া গেল থায়ামিনে, যা তিনি চাল থেকে পাতলা খোসা আলাদা করেছিলেন। পরবর্তীতে হপকিংস এবং ফাঙ্ক একত্রে প্রকাশ করলেন ভিটামিনের ঘাটতির ফলে রোগ সৃষ্টি হয়।

পর্যায়ক্রমে বিজ্ঞানীরা খাদ্যের ধরন অনুযায়ী তা আলাদা এবং বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন শনাক্ত করতে সক্ষম হন। আর এসবই হচ্ছে-ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই প্রভৃতি।

- মেহেদী হাসান বাবু

হিপনোটিজম বা সম্মোহনবিদ্যা

0 comments
সম্মোহনবিদ্যা (hypnotism) - বা হিপনোটিজম এক ধরনের কলাবিদ্যা। হিপনোটিজম শব্দের উৎপত্তি গ্রিক শব্দ হিপ্নস (hypnos) থেকে। এর মানে হলো 'ঘুম'। অবশ্য হিপ্নস (hypnos) হলো গ্রিক ঘুমের দেবতার নাম।

হিপনোটিজম-এর প্রভাবে একজন লোককে সম্মোহনকারী তার নিজের ইচ্ছামতো যেকোনো কাজ করিয়ে নিতে পারে। পালন করাতে পারে যেকোনো নির্দেশ। সম্মোহনবিদ্যার ইতিহাস বেশ প্রাচীন। তখন থেকেই মানুষ সম্মোহনবিদ্যাকে কাজে লাগাচ্ছে। তখন অবশ্য এর ব্যবহার ছিল আদিদৈবিক ক্ষমতা, জাদুবিদ্যা, অলৌকিক ঘটনা এসব ব্যাপারে। কিন্তু বর্তমানে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে সম্মোহনবিদ্যাকে জানার চেষ্টা চলছে।

হিপনোটিজম বা সম্মোহনবিদ্যা আরম্ভ করেন অস্ট্র্রিয়ার ভিয়েনা শহরের এক ডাক্তার। তার নাম আন্টন মেজমার (Fraû Anton Mesmer, ১৭৩৩-১৮১৫)। ডাক্তার মেজমারের নাম অনুযায়ী হিপনোটিজমকে বহুকাল পর্যন্ত মেজমারইজম বলা হতো। স্কটল্যান্ডের ডাক্তার জেমস ব্রেড (James Braid) ১৮৪০ খ্রিস্টাব্দে "হিপনোটিজম" শব্দটা প্রথম প্রবর্তন করেন। সম্মোহিত মানুষকে দেখলেই বোঝা যায়, সে একটা আচ্ছন্ন অবস্থায় রয়েছে। আর এই আচ্ছন্ন অবস্থায় সম্মোহনকারী তাকে দিয়ে নিজের মনমতো সব কাজ করিয়ে নিতে পারে। ইচ্ছে না থাকলে সম্মোহিত হওয়া যায় না বলে এর জন্য সহযোগিতা দরকার। তাই সম্মোহন করবার আগে সম্মোহনকারী ইচ্ছুক ব্যক্তিকে একটি অন্ধকার ঘরে বসিয়ে খুব মৃদুস্বরে তাকে বারবার খুব আরাম করে বসে শরীরকে শিথিল করতে বলে। এরপর তাকে যেকোনো একটা জিনিসের দিকে একদৃষ্টে চেয়ে থাকতে বলা হয়। বহুক্ষণ এভাবে চেয়ে থাকতে থাকতে তার চোখ যখন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন সম্মোহনকারী তাকে বলে চোখ বন্ধ করতে আর তখনই সে ঘুমে আচ্ছন্ন হয়। এরকম অবস্থায় তাকে সম্মোহনকারী নানা কথা বলে, নানা নির্দেশ দেয় আর সম্মোহিত অবস্থায় সে সবকিছুই করতে থাকে।

সম্মোহিত হওয়ার পর একজন লোক নিজেকে অন্ধ, কানা, বোবা সবকিছু ভাবতে পারে, ঠাণ্ডায় ঠকঠক করে কাঁপতে পারে। সম্মোহিত করে তাকে দিয়ে এমন সব কাজ করিয়ে নেওয়া যায় যা সে সদ্য অবস্থায় কখনোই করতে পারে না। সম্মোহিত অবস্থা থেকে জেগে ওঠার পর তার পক্ষে সে কী করেছে আর না করেছে কিছুই আর মনে করা সম্ভব হয় না।

বর্তমান সময়ে অনেক রকম রোগের চিকিৎসার জন্য হিপনোজম প্রয়োগ করা হয়। ইংল্যান্ডের ডা. এস ডেল অবেদকের (anaesthesia এনেস্থেসিয়া) পরিবর্তে সম্মোহিত করে তার রোগীদের দাঁত তুলতেন। এভাবে তিনি ফুসফুসের উপর অস্ত্রোপচারও করেছেন। মনের ওপর চাপ বা দুশ্চিন্তা হিপনোটিজম করে দূর করা যায়।

মেয়েদের দাড়ি-গোঁফ হয় না কেন

0 comments
প্রকৃতি কতগুলো নিজস্ব বিচিত্র নিয়ম মেনে চলে। কোনো জীবের সারা শরীরে রোম, কারো বা দুটো পাখা। মোটামুটি স্তন্যপায়ী জীবের শরীরে রোম আর পাখিদের হয় পাখা। একদিকে চুল যেমন শরীরের উষ্ণতাকে বজায় রাখে তেমনি আবার রোদের ঝলসানি থেকেও বাঁচায়। স্পর্শের অনুভবে সাহায্য করে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, পুরুষদের দাড়ি গোঁফ হয় কেন, আর মেয়েদের হয় না? এর উত্তরটা দেখা যাক। জন্মের সময় বাচ্চাদের শরীরের হালকা রোম থাকে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ তা কড়া হয়ে উঠে। ছেলেমেয়েদের যৌবনোদ্গম ঘটে এগারো থেকে ১৩ বছর বয়সের মধ্যে। এই বয়সেই দেহের বিভিন্ন যৌন গ্রন্থীগুলো বাড়তে দেখা যায়। পুরুষদের ক্ষেত্রে অণ্ডকোষ আর অন্যান্য যৌনগ্রন্থি এন্ড্র্রোজেন (androgen) নামে এক রকম যৌন হরমোন তৈরি করে শরীরে ছাড়তে থাকে। মেয়েদের বেলায় তাদের অণ্ডাশয় থেকে যে যৌন হরমোন বের হয় তার নাম এস্ট্রোজেন (oestrogen)। যৌবনোদ্গমে এন্ড্রোজেনের কাজ হলো মুখে, বুকে চুল দাড়ির জন্ম দেওয়া, কণ্ঠস্বর ভারি করে তোলা। আর এস্ট্রোজেনের কাজ হলো মেয়েদের স্তনের আকার বড় করা। স্ত্রী-পুরুষ উভয়েরই শরীরে এই হরমোনগুলো অনেক অদল-বদল ঘটায়। একদিকে মেয়েদের শরীর যেমন কমনীয় হয়ে উঠে, অন্যদিকে পুরুষদের ক্ষেত্রে হয় কিছুটা কর্কশ। এক ধরনের এস্ট্রোজেনের নাম হলো প্রোজেস্ট্রোজেন (progestrogen) যার কাজ হলো গর্ভ নিয়ন্ত্রণ করা। তাহলে দেখা যাচ্ছে, এন্ড্রোজেন ক্ষরণ না হওয়ার ফলে মেয়েদের দাড়ি গোঁফ হয় না।

প্রীতম সাহা সুদীপ

বগুড়া

18 comments
বগুড়া শহর থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তরে ঐতিহাসিক মহাস্থানগড় (পূর্ব নাম পুণ্ড্রুনগর) ছিল পুণ্ড্রবর্ধনের রাজধানী। খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতক থেকে অষ্টম শতকের মধ্যভাগে পালদের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় এবং দ্বাদশ শতক পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে পাল শাসন অব্যাহত থাকে। শেষ পাল রাজা মদনপালকে পরাজিত করে সেন রাজবংশের বিখ্যাত রাজা বিজয় সেন এ অঞ্চল দখল করেন। এরপর বখতিয়ার খিলজীর নদীয়া বিজয়ের মাধ্যমে বগুড়া অঞ্চল মুসলমানদের শাসনভুক্ত হয়। পরে ১২৮১-১২৯০ খ্রিস্টাব্দে দিলি্লর সুলতান গিয়াসউদ্দিন বলবনের দ্বিতীয় পুত্র সুলতান নাসিরউদ্দিন বগ্রা খান বাংলার শাসনকর্তা নিযুক্ত হন। তার নামানুসারে জেলার নামকরণ করা হয়েছে বগুড়া। ব্রিটিশ শাসন বিস্তারের সূচনা পর্বে বগুড়া অঞ্চলের ব্রিটিশবিরোধী ফকির ও সন্ন্যাসী বিদ্রোহ ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করেছিল। ফকিরদের নেতা মজনু শাহ ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। উনিশ শতকের মাঝামাঝি বগুড়ায় নীল বিদ্রোহ সংঘটিত হয়। বগুড়া জেলার আয়তন ২৯ হাজার ১৯৯ বর্গ কিলোমিটার। উত্তরে জয়পুরহাট ও গাইবান্ধা জেলা, দক্ষিণে ঐতিহাসিক চলনবিল, নাটোর ও সিরাজগঞ্জ জেলা, পশ্চিমে চলনবিলের অংশবিশেষ, নওগাঁ ও নাটোর জেলা। এ জেলার প্রধান নদী হলো_ করতোয়া, নাগর, বাঙ্গালি, ইছামতি। বার্ষিক গড় তাপমাত্রা ৩৪.৬ ডিগ্রি সর্বনিম্ন ১১.৯ সেলসিয়াস ডিগ্রি ; বার্ষিক বৃষ্টিপাত ১ হাজার ৬১০ মি.মি.।

বগুড়া শহরের গোড়াপত্তন হয় ১৮৫০ সালে ও বগুড়া পৌরসভা গঠিত হয় ১৮৮৪ সালে। উত্তরবঙ্গের শিল্পনগরী হিসেবে বগুড়ার পরিচিতি রয়েছে। বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু চালুর পর বগুড়ার ব্যবসা-বাণিজ্যে আরো গতি পেয়েছে। রাজশাহী জেলার ৪টি থানা (আদমদীঘি, বগুড়া, শেরপুর ও নওখিলা) দিনাজপুরের ৩টি থানা, রংপুরের ২টি থানাসহ (গোবিন্দগঞ্জ ও দেওয়ানগঞ্জ) মোট ৯টি থানা নিয়ে ১৮২১ সালে বগুড়া জেলা গঠিত হয়। পরবর্তীতে জেলার প্রাথমিক কাঠামো থেকে ৯টি থানা বাদ দিয়ে নতুন ৭টি থানা সংযোজন করে বৃহত্তর বগুড়া জেলা সৃষ্টি হয়। বগুড়াকে পরবর্তীতে ১৯৮৩ সালে বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলায় রূপান্তর করা হয়। বর্তমানে এখানে উপজেলা ১২, পৌরসভা ১১, ইউনিয়ন ১০৯, গ্রাম ২ হাজার ৭০৬, মৌজা ১ হাজার ৭৮২। উপজেলাগুলো হলো_ বগুড়া সদর, শাজাহানপুর, আদমদীঘি, দুপচাঁচিয়া, সোনাতলা, সারিয়াকান্দি, ধুনট, শেরপুর, কাহালু, নন্দীগ্রাম, শিবগঞ্জ ও গাবতলী। এর মধ্যে শাজাহানপুর উপজেলা বাদে সব উপজেলায় পৌরসভা রয়েছে। তবে আদমদীঘি পৌরসভার নাম সান্তাহার পৌরসভা।

বগুড়া জেলার লোকসংখ্যা ৩২ লাখ। এখানকার শিক্ষার হার ২৮.৪% উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলো_ বগুড়া সরকারি আযিজুল হক কলেজ, বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ, বগুড়া জিলা স্কুল, বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, জাতীয় বহুভাষী সাঁটলিপি প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমী (নেকটার)। শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথা। এটাকে জেলার জিরো পয়েন্ট বলা হয়। শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে সাতমাথার ইন্টারসেকশন তৈরি করে এর নাম দিয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ স্কোয়ার। এখানে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে মহান শহীদ ৭ বীরশ্রেষ্ঠের ছবি ও পবিত্র কোরআনের আয়াত লিখে রাখা হয়েছে। শিল্পের শহর হিসাবে খ্যাত বগুড়ার ভারী শিল্প-কারখানাগুলো এখন আর নেই। বর্তমানে নতুন করে কিছু ক্ষুদ্র ও মাঝারিশিল্প গড়ে উঠেছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া ভারী শিল্পের মধ্যে রয়েছে_ জামিল সাবান ফ্যাক্টরি, ভার্জিনিয়া টোব্যাকো কোম্পানি, কটন স্পিনিং মিল। এছাড়া তাজমা সিরামিক কারখানাটি বর্তমানে প্রতিযোগিতার বাজারে টিকতে না পেরে বন্ধ আছে। বর্তমানে এ জেলায় সংসদীয় আসন সংখ্যা ৭টি। এগুলো হলো_ সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলা নিয়ে বগুড়া-১, শিবগঞ্জ উপজেলা নিয়ে বগুড়া-২, আদমদীঘি ও দুপচাঁচিয়া উপজেলা নিয়ে বগুড়া-৩, কাহালু ও নন্দীগ্রাম উপজেলা নিয়ে বগুড়া-৪, ধুনট ও শেরপুর উপজেলা নিয়ে বগুড়া-৫, বগুড়া সদর-৬, গাবতলী ও শাজাহানপুর উপজেলা নিয়ে বগুড়া-৭।

-আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

কোলাপাথর সমাধিস্থল, আখাউড়া

0 comments
১৯৭১-এ কসবায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের অসংখ্য স্মৃতিচিহ্ন। যার মধ্যে রয়েছে টর্চারসেল, একাধিক গণকবর। কিন্তু সেসব থেকে একটু আলাদা কোলাপাথর সমাধিস্থল। কারণ এখানে জাতপাতের ধার না ধারে ৩৯ বছর ধরে পাশাপাশি ঘুমিয়ে আছেন হিন্দু-মুসলমান, কৃষক-বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র থেকে শুরু করে সেনাসদস্য। তারা আমাদের ৫১ জন বীর সন্তান। কোল্লাপাথরেই পাওয়া যাবে সেই আবহমান বাংলার সাম্যের প্রতিচ্ছবি। প্রকৃতি সেখানে আপন হাতে সাজিয়েছে নিজেকে।

সে সময় ২ নম্বর সেক্টরের ২নং সাব সেক্টরের অধীনে ছিল কোলাপাথার। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল করিম পালন করেছেন অন্যরকম অনন্য এক ভূমিকা। রচনা করেছেন ইতিহাসের আরেক অধ্যায়। এ অঞ্চলে যেসব মুুক্তিযোদ্ধা শহীদ হওয়ার খবর জেনেছেন সেখানেই ছুটে গেছেন আবদুল করিম ও তার বাবা আব্দুল মান্নান। কাঁধে মৃতদেহ বয়ে নিয়ে এসেছেন তার বাড়িতে। বাবা, মা আর সন্তান আবদুল করিম মিলে পরম মমতায় গোসলাদি সম্পন্ন করে কবর দিয়েছেন বাড়ির পাশে নিজ ভূমিতেই। তৎকালীন সিও এবং পরবর্তীতে এইচএম গাফফার (বীর উত্তম)-এর নেতৃত্বে যু্দ্ধ করেন এ আবদুল করিম এবং তার কথামতোই কবর দেওয়া হয়েছিল ৫১ জন বীর সেনানীকে। স্মৃতি আওড়ে আ. করিম জানান, ঢাকা বিশ্ব্যাবিদ্যালয়ের ছাত্র আবুল কাশেম (এমএসসি) সন্ধ্যায় ব্রিজ উড়ানোর জন্য তার কাছ থেকে বিদায় নিয়েছিল। ব্রিজ উড়াতে গিয়েই শহীদ হন তিনি। নায়েব সুবেদার বেলায়েত হুসেন সম্মুখযুদ্ধে মেশিনগান চালাতে চালাতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। যার শুরুটা ২২ আষাঢ় হাবিলদার তৈয়ব আলীকে দিয়ে। তিনি মইনপুর সীমান্ত ফাঁড়িতে পাকবাহিনীর আর্টিলার সেলের আঘাতে মৃত্যুবরণ করলে যথাযোগ্য মর্যাদায় তার পরিবার নিজ ভূমিতে তার দাফন সম্পন্ন করেন। আর তারপর একে একে আসতে থাকে ৫১ শহীদের মৃতদেহ। এরা সবাই ঘুমিয়ে আছে প্রাকৃতিক শোভামণ্ডিত এই কোলাপাথরে। ইতিহাস আপনাআপনি হাজির হয় না। তাকে জীবন্ত রাখতে হয়। আর এই জীবন্ত রাখার কাজটি ৩৯ বছর ধরে করে চলেছে আ. করিমের পরিবার।



-সমীর চক্রবর্তী, আখাউড়া

Tuesday, November 23, 2010

ফেসবুক ইমো

1 comments
বাংলায় ফেসবুক ইমো পেতে হলে এই লিংকে যান




smile smile :-) :) :] =)
tongue tongue :-P :P :-p :p =P
wink wink ;-) ;)
grin grin :-D :D =D
curly lips curly lips :3
kiss kiss :-* :*
grumpy grumpy >:( >:-(
glasses glasses 8-) 8) B-) B)
sunglasses sunglasses 8-| 8| B-| B|
upset upset >:O >:-O >:o >:-o
confused confused o.O O.o
shark shark (^^^)
gasp gasp :-O :O :-o :o
pacman pacman :v
squint squint -_-
devil devil 3:) 3:-)
unsure unsure :/ :-/ :\ :-\
frown frown :-( :( :[ =(
cry cry :'(
Putnam Chris Putnam :putnam:
robot robot :|]
heart heart <3
angel angel O:) O:-)
kiki kiki ^_^
penguin facebook emoticon penguin <(“)

Source: Facebook