Thursday, January 6, 2011

গাইবান্ধা

0 comments
প্রতিটি নামের রয়েছে একটি ইতিহাস। লোকমুখে যা নানা রূপ পায়। সেসব নিয়ে আমাদের এই আয়োজন। লিখেছেন সীমান্ত পারভেজ
জেলা শহরের বর্তমান নাম গাইবান্ধার নামকরণ ঠিক কবে নাগাদ হয়েছে তার সঠিক তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। রংপুরের কালেক্টর ইজি গ্লোজিয়ার ১৮৭৩ সালে যে রিপোর্ট প্রণয়ন করেছিলেন সে রিপোর্টে গাইবান্ধা নামটি ইংরেজিতে লেখা হয়েছে এণঊঘঅঘউঅও সেই এণঊইঅঘউঅ-এর অবস্থান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ঘর্ঘট পাড়ের কথা। এ ঘর্ঘটই যে ঘাঘট নদী সেটি বলা যায়। অন্য যে বিষয়টি তা হচ্ছে ১৭৯৩ সালে গাইবান্ধা নামটি উল্লেখযোগ্য ছিল না। ১৮৭৩ সালে ইজি গ্লোজিয়ার তার রিপোর্টে গাইবান্ধা নামটি উল্লেখ করেন। গাইবান্ধার নামকরণ সম্পর্কে দুটি কিংবদন্তি প্রচলিত আছে। একটি কিংবদন্তিতে বলা হয়েছে, ৫ হাজার বছর আগে মৎস্য রাজা বিরাটের রাজধানী ছিল গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানা এলাকায়। মহাভারতের বাহিনীতে বলা হয়েছে, এ রাজা বিরাটের রাজসভায় পঞ্চ পা-বেরা দ্রৌপদীসহ ছদ্মবেশে তাদের ১২ বছর নির্বাসনের ১ বছর অজ্ঞাত বাস করেছেন। অজ্ঞাত বাসকালে যুধিষ্ঠির কঙ্ক নামে বিরাট রাজার পাশাখেলার সাথী হয়েছিলেন। আর ভিমের দায়িত্ব ছিল পাচকের কাজ করা এবং ছদ্মনাম ছিল বল্লভ। বিরাট রাজার মেয়ে রাজকন্যা উত্তমার নাচ, গান ও বাদ্যযন্ত্র শিক্ষার দায়িত্ব নিয়েছিলেন অর্জুন বৃহন্নলা ছদ্মনামে। গোপালার দায়িত্বে ছিলেন সহদেব তন্তীপাল নামে এবং অন্তপালার দায়িত্বে ছিলেন নকুল। তার ছদ্মনাম ছিল গ্রন্থিকা। আর বিরাট রাজার রানী সুদেষ্ণার গৃহ পরিচারিকা হয়েছিলেন সৌরিন্দ্র নামে দ্রোপদী। বলা হয়ে থাকে, এ বিরাট রাজার-গো-ধনের কোন তুলনা ছিল না। তার গাভীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৬০ হাজার। মাঝে মধ্যে ডাকাতরা এসে বিরাট রাজার গাভী লুণ্ঠন করে নিয়ে যেত। বিরাট রাজা একটি বিশাল পতিত প্রান্তরে গো-শালা স্থাপন করেন। গো-শালাটি ছিল সুরক্ষিত এবং গাভীর খাদ্য ও পানির সংস্থান নিশ্চিত করতে তা নদী তীরবর্তী ঘেঁষা জমিতে স্থাপন করা হয়। সে নির্দিষ্ট স্থানে গাভীগুলো বেঁধে রাখা হতো। প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে এ গাভী বেঁধে রাখার স্থান থেকে এ অঞ্চলের কথ্যভাষা অনুসারে এলাকার নাম হয়েছে গাইবান্ধা।

0 comments:

Post a Comment