Tuesday, January 18, 2011

ঝালকাঠি

0 comments
প্রাচীন বাণিজ্যিক বন্দর, এক সময়ে উপমহাদেশের দ্বিতীয় কলকাতা নামে পরিচিত, সুগন্ধা নদীর তীরে অবস্থিত, সবুজ শ্যামলের জেলা ঝালকাঠি জেলা।

আয়তন ও অবস্থান

আয়তনের ভিত্তিতে ঝালকাঠি জেলা বাংলাদেশের ৬৩তম বৃহত্তম জেলা। এই জেলার মোট আয়তন ৭৫৮.০৬ বর্গ কিলোমিটার, যা সমগ্র বাংলাদেশের মোট আয়তনের ০.৫১%। ঝালকাঠি জেলা ২২০২র্০। উত্তর অক্ষাংশ থেকে ২২০৪র্৭ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০০০র্০ পূর্ব দ্রাঘিমা থেকে ৯০০২র্৩ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। জেলার উত্তরে বরিশাল জেলা, দক্ষিণে বরগুনা জেলা, পূর্বে বরিশাল জেলা এবং পশ্চিমে পিরোজপুর ও নড়াইল জেলা।

নামকরণের ইতিহাস

জেলার নামকরণের সাথে জড়িয়ে আছে এ জেলার জেলে সম্প্রদায়ের ইতিহাস। মধ্যযুগ পরবর্তী সময়ে সন্ধ্যা, সুগন্ধা, ধানসিঁড়ি আর বিষখালী নদীর তীরবর্তী এলাকায় জেলেরা বসতি স্থাপন করে। এর প্রাচীন নাম ছিল মহারাজগঞ্জ। মহারাজগঞ্জের ভূ-স্বামী শ্রী কৈলাশ চন্দ্র জমিদারি বৈঠক সম্পাদন করতেন এবং পরবর্তীতে তিনি এ স্থানটিতে এক গঞ্জ বা বাজার নির্মাণ করেন। এ গঞ্জে জেলেরা জালের কাঠি বিক্রি করতো। এ জালের কাঠি থেকে পর্যায়ক্রমে ঝালকাঠি নামকরণ করা হয় বলে ধারণা করা হয়। জানা যায়, বিভিন্ন স্থান থেকে জেলেরা এখানে মাছ শিকারের জন্য আসতো এবং যাযাবরের মতো সুগন্ধা নদীর তীরে বাস করতো। এ অঞ্চলের জেলেদের পেশাগত পরিচিতিকে বলা হতো 'ঝালো'। এরপর জেলেরা বনজঙ্গল পরিষ্কার করে এখানে স্থায়ীভাবে বসতি গড়ে তোলে। এভাবেই জেলে থেকে ঝালো এবং জঙ্গল কেটে বসতি গড়ে তোলার কারণে কাটি শব্দের প্রচলন হয়ে ঝালকাটি শব্দের উৎপত্তি হয়। পরবর্তীকালে ঝালকাটি রূপান্তরিত হয় ঝালকাঠিতে।

প্রশাসনিক পটভূমি

১৯৭২ সালে ১ জুলাই ঝালকাঠিকে বরিশাল জেলার অধীনে একটি মহকুমায় উন্নীত করা হয়। মহকুমা হিসেবে গঠন করার পর সমস্ত থানা পুনর্বিন্যাস করা হয়। দেশব্যাপী ব্যাপক প্রশাসনিক রদবদলের প্রাক্কালে ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৪ সালে ঝালকাঠি পূর্ণাঙ্গ জেলার মর্যাদা পায়। ঝালকাঠি জেলায় ৪টি উপজেলা, ৩২টি ইউনিয়ন, ৪৭১টি গ্রাম রয়েছে। উপজেলাগুলো হচ্ছে_ঝালকাঠি সদর, নলছিটি, রাজাপুর ও কাঁঠালিয়া।

জনসংখ্যা

জেলার মোট জনসংখ্যা ৬,৯৬,০৫৫ জন (২০০১ সালের হিসেবে), যা বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার .৫৬%, ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৯১৮ জন (প্রায়)। জনসংখ্যার ৪৯.৩৬% পুরুষ, ৫০.৬৪% মহিলা। ধর্মের ভিত্তিতে ৮৭.১১% মুসলিম, ১২.৬৪% হিন্দু, ০.০৫% অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।

নদ-নদী

প্রধান নদ-নদীগুলো হচ্ছে সুগন্ধা, বিষখালী।

জলবায়ু

বার্ষিক গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ১২.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বার্ষিক বৃষ্টিপাত ২,৫০৬ মিমি।

দর্শনীয় স্থানসমূহ

উলেস্নখযোগ্য দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে_সুজাবাদের কেলস্না, ঘোষাল রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ, নুরুলস্নাপুর মঠ, পৌরসভার পুরাতন ভবন, সিভিল কোর্ট ভবন, সুরিচোড়া জামে মসজিদ, শিবমন্দির, নাদোবর মসজিদ ইত্যাদি।

যোগাযোগ ব্যবস্থা

ঢাকা থেকে সড়ক পথে ঝালকাঠির দূরত্ব ১৯০ কিমি। এবং বাসে থেকে সময় লাখে ৬-৭ ঘণ্টা। সাকুরা, হানিফ প্রভৃতি পরিবহনের বাস নিয়মিত ঢাকা থেকে ঝালকাঠি যায়। এ ছাড়া নদীপথে লঞ্চেও ঢাকা থেকে ঝালকাঠি যওয়া যায়।

0 comments:

Post a Comment