Saturday, January 1, 2011

মুখের জ্বালাপোড়া এবং করণীয়

0 comments
বার্নিং মাউথ সিনড্রোম হলো একটি ব্যথাযুক্ত হতাশাজনক অবস্থা। যাতে জিহ্বা, ঠোঁট, তালু অথবা পুরো মুখেই জ্বালাপোড়া ও ব্যথা হতে পারে। পুরুষ-নারী উভয়েরই বার্নিং মাউথ সিনড্রোম পরিলক্ষিত হয়। বিশেষত মেয়েদের মেনোপজের সময় বা মেনোপজের পরে বার্নিং মাউথ সিনড্রোম বেশি দেখা যায়। রোগটি অল্প বয়সেও হতে পারে।

লক্ষণ : মুখ, গলা, ঠোঁট ও জিহ্বায় জ্বালাপোড়া অনুভূত হওয়া। মুখের অভ্যন্তরে পুড়ে যাওয়ার মতো অনুভূতি হতে পারে। শুষ্ক মুখ , তিক্ত বা ধাতব স্বাদে পরিবর্তন ,খাওয়ার অভ্যাসে পরিবর্তন।

যেসব কারণে বার্নিং মাউথ সিনড্রোম হতে পারে সেগুলো হলো_ প্রথমত, বার্নিং মাউথ সিনড্রোমের সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। দ্বিতীয়ত, রোগের বা অবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কারণগুলো মেনোপজের সময় হরমোনের তারতম্যের কারণে বার্নিং মাউথ সিনড্রোম হতে পারে। হরমোনের তারতম্যের কারণে লালার উপাদানের পরিবর্তন হতে পারে। ডায়াবেটিস। আয়রন, জিংক, ফলেট, থিয়ামিন, রিবোফ্লোভিন, পাইরিডক্সিন, কোবালামিন এসব উপাদানের অভাব হলে রক্তশূন্যতা হতে পারে এবং পাশাপাশি বার্নিং মাউথ সিনড্রোম বা মুখের জ্বালাপোড়া ভাব অনুভূত হতে পারে। ক্যান্সার চিকিৎসায় কেমোথেরাপি বা রেডিও থেরাপির পর বার্নিং মাউথ সিনড্রোম হতে পারে। তৃতীয়ত, শতকরা ৭০ ভাগ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হয় না। তবে যেসব ক্ষেত্রে বার্নিং মাউথ সিনড্রোম হতে পারে সেগুলো হলো_ শুষ্ক মুখ, ওরাল ক্যান্ডিডোসিস (একটি ফাংগাল সংক্রমণ) দাঁত কামড়ানো, যেসব স্নায়ু ব্যথা ও স্বাদ নিয়ন্ত্রণ করে তা কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলে কৃত্রিম দাঁত বা ডেনচার ঠিকভাবে স্থাপন করা না হলে, এলার্জিজনিত সমস্যা যেমন_ কোনো রোগীর খাবার বা মেটালিক ডেনচারের প্রতি এলার্জি থাকতে পারে , এসিড উদগিরণের কারণে িদুশ্চিন্তা বা হতাশার কারণে অর্থাৎ যে কোনো ধরনের মানসিক সমস্যা।

বার্নিং মাউথ সিনড্রোমের রোগীদের যা করা প্রয়োজন : অল্প অল্প করে প্রচুর পানি খেতে হবে, গলায় কোনো সমস্যা না থাকলে বরফকুচি চোষা যেতে পারে পরিমিতভাবে, গরম ও মসলাযুক্ত খাবার গ্রহণে বিরত থাকতে হবে, চিনিবিহীন চুয়িংগাম চোষা যেতে পারে, কৃত্রিম দাঁত ও ডেনচার (যদি থাকে) তবে তা সোডা ও পানি দিয়ে ব্রাশ করতে হবে, টুথপেস্টের ব্রান্ডের পরিবর্তন প্রয়োজন হতে পারে, কোল্ড ড্রিংকস, কফি, চা ১৫ দিনের জন্য বন্ধ করে দেখা যেতে পারে কোনো পরিবর্তন হয়েছে কিনা, অ্যালকোহল এবং ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে, উচ্চ রক্তচাপ যদি থাকে তাহলে এর ওষুধে পরিবর্তন প্রয়োজন হতে পারে। বার্নিং মাউথ সিনড্রোমের চিকিৎসা করতে হয় রোগের লক্ষণ এবং কারণ অনুযায়ী। অনুমানভিত্তিক চিকিৎসা তেমন ফলপ্রসূ হয় না। বর্তমানে বার্নিং মাউথ সিনড্রোমের জন্য উন্নত কিছু ওষুধ ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বার্নিং মাউথ সিনড্রোম বা মুখের জ্বালাপোড়া রোগে দুশ্চিন্তা না করে যথাযথ চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ থাকুন।

ডা. মো. ফারুক হোসেন, মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ

0 comments:

Post a Comment