Sunday, January 23, 2011

ওসমানী জাদুঘর

0 comments
ওসমানী জাদুঘর। সিলেট নগরীর নাইওরপুল নূর মঞ্জিলে এর অবস্থান। জাদুঘরের গেটের সামনে লেখা 'দি জুবেদা খাতুন ও খান বাহাদুর মফিজুর রহমানের সম্পত্তি'। সাইনবোর্ডে ইংরেজি-বাংলায় লেখা 'ওসমানী জাদুঘর' বা Osmani Museum। জাদুঘরটি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত জাতীয় জাদুঘরের একটি শাখা। এই বাড়িতে জেনারেল ওসমানী মাঝে-মধ্যে থাকতেন। এটা তার পৈতৃক নিবাস। প্রায় ২ বিঘা জমিতে অবস্থিত ওসমানী জাদুঘর ১৯৮৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। নূর মঞ্জিলের ওসমানী জাদুঘরের বাঁ-দিকে আছে সহকারী কিপারের অফিস। বাঁ-দিক দিয়ে প্রবেশ করলে প্রথমে দেখা যাবে ১ নং গ্যালারি। যেখানে জেনারেল ওসমানীর শয়নকক্ষ। ওই কক্ষে রয়েছে ওসমানীর আলোকচিত্র, তার ব্যবহৃত বিছানা, আলনায় থরে থরে সাজানো তার ব্যবহৃত দুটি শার্ট, একটি গেঞ্জি, দুটি পাঞ্জাবি, একটি টাওয়াল, দুটি পাজামা, সোয়েটার, চার সেট সাফারি, একটি ছাতা, একটি লাঠি। যে কেউ এই বীর পুরুষের শয়নকক্ষসহ অন্যান্য গ্যালারিতে প্রবেশ করলে হারিয়ে যেতে পারেন মুক্তিযুদ্ধের সেই অগি্নঝরা দিনগুলোতে। কেননা, জাদুঘরের দেয়ালে নিখুঁতভাবে আঁকা পোট্র্রেট টাঙানো বঙ্গবীর ওসমানীর ছবিসহ মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনের ছবি। গ্যালারি-২, বসার ঘর ছিল। এখানে সংরক্ষিত আছে সামরিক বাহিনীতে (পাকিস্তান আমলে) থাকা অবস্থায় বিভিন্ন আমলে পাওয়া ওসমানীর অসংখ্য ব্যক্তিগত পদক, ব্যাজ ও একটি পাসপোর্ট। এখানে আছে '৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের ১১ সেক্টর কমান্ডার ও সহকর্মীদের সঙ্গে ওসমানীর ছবি। আছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও রাষ্ট্রপতি মেজর জিয়াউর রহমানের সঙ্গে জেনারেল ওসমানীর ছবি। ১৯৭১-এ মুজিবনগরে সরকার প্রতিষ্ঠা ও শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের সঙ্গে ছবি। গ্যালারি-২ বা ওসমানী স্মৃতিবিজড়িত বৈঠকখানায় আছে জেনারেল ওসমানীর সময়কার বেতের চেয়ার, টেবিল। এছাড়া আছে বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত উপহারসামগ্রী। জেনারেল ওসমানী ১৯৮৫ সালে মরণত্তোর স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন। যার সনদ এখানে সংরক্ষিত আছে। উল্লেখ্য, মহান মুক্তিযুদ্ধের এই সর্বাধিনায়ক ১৯১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন, মৃত্যুবরণ করেন ১৯৮৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি। ৩নং গ্যালারিতে সংরক্ষিত আছে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ওসমানী যে মানচিত্রের মাধ্যমে যুদ্ধ পরিকল্পনা করেছিলেন সেই মানচিত্র। সংরক্ষিত আছে তার ব্যবহৃত খাট, জায়নামাজ, নামাজের চৌকি, টুপি, তৎকালীন সময়কার ওয়ারড্রোব, ফ্রিজ, ডাইনিং টেবিল, ছয়টি চেয়ার, ডাইনিং টেবিলে সাজিয়ে রাখা তার ব্যবহৃত চামচ, বাটি ইত্যাদি। মুক্তিযুদ্ধের বীর পুরুষ জেনারেল মোহাম্মদ আতাউল গনি ওসমানীর স্মৃতিবিজড়িত এই জাদুঘরটির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নিয়োজিত আছেন ১১ জন স্টাফ। জাদুঘরটির সহকারী কিপার এসএম জালাল উদ্দিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ৬ দিন জাদুঘরটি দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।

মাহফুজ আদনান, সিলেট

0 comments:

Post a Comment