Monday, February 21, 2011

দেশে বসেই পিএইচডি

0 comments
অনেকেরই স্বপ্ন থাকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের। অনেকেই বিদেশে বৃত্তি নিয়ে পিএইচডি করতে যান এবং বেশির ভাগ দেশেই করেন। স্বপ্ন যখন আকাশ পাড়ি দেওয়ার তখন প্রথমেই চলে আসে ভাগ্য, অর্থ, যোগ্যতা ইত্যাদি বিষয়াদি। তাই আর আকাশ পাড়ি দেওয়ার স্বপ্নটা বাস্তবে রূপ ধরতে পারে না। তবে আকাশ পাড়ি না দিতে পারলেও দেশে বসে কিন্তু স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব। দেশের বিখ্যাত চারটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের খবরাখবর নিয়ে আমাদের এবারের আয়োজন। লিখেছেন মুহম্মদ কবির
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাত্র দুই বছরেই এমফিল এবং চার বছর সময়ে পিএইচডি প্রোগ্রাম করা যায়। এমফিল ও পিএইচডি সম্পর্কিত তথ্য এবং এই দুটি প্রোগ্রামে ভর্তি সম্পর্কিত আবেদনপত্র রেজিস্ট্রার অফিসের এমফিল ও পিএইচডি শাখা থেকে গ্রহণ করা যায় সহজেই।

যোগ্যতা ও ফলাফল :এমফিল আগ্রহী শিক্ষার্থীরা এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য চার বছর মেয়াদি স্নাতক সম্মান, তিন বছর মেয়াদকালীন সম্মান ও এক বছর মেয়াদকালীন স্নাতকোত্তর অথবা দুই বছর মেয়াদি স্নাতক ও দুই বছর মেয়াদি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে। শুধু ডিগ্রি থাকলেই হবে না, সতর্ক থাকতে হবে ফলাফলের বিষয়েও। সব পরীক্ষায় কমপক্ষে দ্বিতীয় বিভাগ থাকতে হবে এবং আরো থাকতে হবে নূ্যনতম পঞ্চাশ ভাগ নাম্বার। বর্তমান গ্রেডিং পদ্ধতিতে মাধ্যমিক পরীক্ষা থেকে স্নাতক পরীক্ষা পর্যন্ত ফলাফল হতে হবে ৫ এর মধ্যে নূ্যনতম ৩.৫ এবং ৪ এর মধ্যে নূ্যনতম ৩। কেবলমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই না, যেকোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ণ আগ্রহী শিক্ষার্থীরা ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। অনেক সময় মেধাবী শিক্ষার্থীদেরকে ৩০০০ টাকা বৃত্তিমূলক সহযোগিতা দেওয়া হয়।

পিএইচডি :ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার জন্য আপনাকে হতে হবে এমফিল উত্তীর্ণ। শিক্ষাগত যোগ্যতাও থাকতে হবে এমফিল পড়ার যোগ্যতার অনুরূপ। এর সাথে বাড়তি থাকতে হবে কমপক্ষে স্নাতক পর্যন্ত পাঠদানের দুই বছরের অভিজ্ঞতা কিংবা দুই বছরের গবেষণা অথবা দুই বছর গবেষণা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার অভিজ্ঞতা। পিএইচডি গবেষকদের প্রতিবছর বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির সামনে বক্তব্য দিতে হয়। নূ্যনতম দুইটি সেমিনার রিপোর্ট ছাড়া পূর্ণাঙ্গ থিসিস জমা নেওয়া হয় না। প্রতিবছরই দুইবার আবেদনপত্র গ্রহণ করার জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

এমফিল করার জন্য আগ্রহী শিক্ষার্থীরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এই প্রোগ্রামে ভর্তি হতে পারেন সহজেই। তবে এ ব্যাপারে শিক্ষার্থীর চার বছরের স্নাতক সম্মান ও এক বছরের স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে এবং সকল শিক্ষা পর্যায়ে সর্বনিম্ন দ্বিতীয় বিভাগ থাকতে হবে। স্নাতকে থাকতে হবে শতকরা ৫৫ ভাগ এবং স্নাতকোত্তরে থাকতে হবে শতকরা ৫০ ভাগ নাম্বার।

পিএইচডি :ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এখানেও পিএইচডি করার জন্য এমফিল বা সমমান যোগ্যতা থাকতে হবে। তবে কারও যদি এমফিল ডিগ্রি না থাকে, সেক্ষেত্রে তাকে স্বীকৃত কোনো জার্নালে কমপক্ষে তিনটি গবেষণা প্রকাশ বা পাঁচ বছরের শিক্ষাদানের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। নতুবা কোনো গবেষণা প্রতিষ্ঠানে ছয় বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় সব বিভাগেই পিএইচডি করার সুযোগ আছে।

ভর্তি হওয়া যায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ-এ। এখানে দুই বছর মেয়াদি এমফিল এবং তিন বছর মেয়াদি পিএইচডি করা যায়। এমফিল ফেলোশিপে শিক্ষার্থী পাবেন এক হাজার ৫০০ টাকা এবং পিএইচডি ফেলোশিপে পাবেন দুই হাজার টাকা প্রতিমাসে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

যেসব আগ্রহী শিক্ষার্থী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীনে এমফিল করতে চান, তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতাও হবে পূর্বের দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই। থাকতে হবে তিন বছরের স্নাতক ও এক বছরের স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। আর শিক্ষাজীবনের সব ফলাফলেই থাকতে হবে নূ্যনতম দ্বিতীয় বিভাগ। তবে স্নাতকে থাকতে হবে শতকরা ৫৫ ভাগ এবং স্নাতকোত্তরে শতকরা ৫০ ভাগ নাম্বার। জিপিএ পদ্ধতিতে থাকতে হবে নূ্যনতম ৩.২৫ এবং অন্যটিতে নূ্যনতম ৩ থাকতে হবে, তবে যদি কারও স্নাতক পর্যায়ে তিন বছর শিক্ষাদানের অভিজ্ঞতা থাকে, তা হলে উলিস্নখিত নিয়মের যেকোনো একটি শিথিলযোগ্য হবে।

পিএইচডি :যারা পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি হতে চান, তাদের অবশ্যই এমফিল বা সমমান ডিগ্রি থাকতে হবে, অথবা থাকতে হবে, স্নাতক পর্যায়ের চার বছরের শিক্ষাদান অথবা স্বীকৃত গবেষণা প্রতিষ্ঠানে দুই বছরের গবেষণার অভিজ্ঞতা। ভর্তির সকল যোগ্যতা এমফিল-এর মতোই। এই প্রোগ্রামের আওতায় মেধাবী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান করা হয়।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিল করতে হলে আপনাকে হতে হবে যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। এ ক্ষেত্রে আগ্রহী শিক্ষার্থীর অবশ্যই সব ফলাফলে দ্বিতীয় বিভাগ থাকতে হবে এবং অবশ্যই ৫০ ভাগ নাম্বার পেতে হবে। জিপিএ নিয়মের আওতায় থাকতে হবে নূ্যনতম ৩। যেসব প্রার্থীর গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে পাঁচ বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে কিংবা কোনো স্বীকৃত জার্নালে কমপক্ষে দুটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে সেক্ষেত্রে একটি শর্ত শিথিলযোগ্য। প্রার্থীর শিক্ষাজীবনে কোনো তৃতীয় শ্রেণী বা বিভাগ থাকলে আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না।

পিইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি :এমফিল ডিগ্রি থাকতে হবে। এমফিল ডিগ্রি না থাকলে প্রার্থীকে ৪ বছরের স্নাতক (সম্মান)সহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং থিসিসসহ ৬০ ভাগ নাম্বার পেতে হবে। থিজিপিএ হলে তা ৩.৭৫ হতে হবে।

অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়

উপরোক্ত চারটি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও বাংলাদেশে আরও কিছু সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, সেগুলোতে পিএইচডি করার সুযোগ রয়েছে।

0 comments:

Post a Comment