Monday, February 21, 2011

প্রোটিন কেন খাবেন

0 comments
আমাদের দৈনিক খাদ্য তালিকার প্রধান গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদান হলো প্রোটিন বা আমিষ। অনেকগুলো এমাইনো এসিডের সমন্বয়ে প্রোটিন গঠিত হয়। এতে আছে গড়ে ১৬ ভাগ নাইট্রোজেন। সব বয়সের লোকেরই প্রোটিন প্রয়োজন হয় কোষের ক্ষয়পূরণের জন্য। অর্থাৎ জীবনের প্রতিটি স্তরে প্রোটিন প্রয়োজন। তবে এর মধ্যে শিশু, গর্ভবতী মাতা, স্তন্যদায়ী মাতা এবং বাড়ন্ত বয়সে অন্যান্যদের চাইতে প্রোটিন প্রয়োজন হয় বেশি। প্রোটিনের অভাবে শিশুদের কোয়ালিয়াকর ও ম্যারাসমাস নামক রোগ হয়ে থাকে।

সাধারণ হিসাবে প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের জন্য এক গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন। কিন্তু যাদের প্রোটিন বেশি প্রয়োজন তাদের প্রতি কেজি ওজনের জন্য ২ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন। অপর্যাপ্ত প্রোটিন দেহকে দুর্বল ও বৃদ্ধিকে ব্যাহত করে। দেহের বৃদ্ধি, প্রজনন ও বিপাকক্রিয়া এই তিনের সমন্বয় করাই প্রোটিনের কাজ।

খাবারে প্রোটিনের অভাব হলে শর্করা ও চর্বি জাতীয় খাদ্যের বিপাক ঠিকমত হয়না। প্রোটিন ও দু ধরনের হয়ে থাকে। প্রাণীজ প্রোটিন ও উদ্ভিজ প্রোটিন। প্রাণীজ প্রোটিন হলো- মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ইত্যাদি। উদ্ভিজ্জ প্রোটিন হলো- ডাল, বাদাম, সীমের বিচি, বরবটি, সয়াবিন, ছোলা, মটর শুটি ইত্যাদি। প্রাণীজ প্রোটিন হলো সম্পূর্ণ প্রোটিন। একে প্রথম শ্রেণীর প্রোটিন বলা হয়। কারণ এতে অত্যাবশ্যকীয় এমাইনো এসিডগুলো সমমাত্রায় রয়েছে। কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন বাদ দিয়ে প্রথম শ্রেণীর প্রোটিন গ্রহণ করতে বলা হয়। উদ্ভিজ্জ প্রোটিন হলো অসম্পূর্ণ প্রোটিন। এটিকে দ্বিতীয় শ্রেণীর প্রোটিনও বলা হয়। এতে সবগুলো এমাইনো এসিড থাকে না। তবে এর মধ্যে সয়াবিন একমাত্র ব্যতিক্রম।

প্রোটিনজাত খাদ্যে নিহ্নিত এমাইনো এসিডের তার তম্যের জন্য খাদ্যমূল্য ভিন্নতর হয়ে থাকে। চাল ও গমে লাইসিন ও ট্রিপটোফডান এই দুইটি অপরিহার্য এমাইনো এসিডের ঘাটতি রয়েছে। ডালে ঘাটতি আছে মেথিওনিন ও ট্রিপটোফওয়ানের। কোষ ও ট্রিসু্যর জন্য প্রয়োজন নাইসিন এবং লিভারের কোষ সক্রিয় রাখার জন্য প্রয়োজন সেথিওনিন। লাইসিস পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায় ডিম, দুধ ও ডালে। এছাড়া ট্রিপটোফডান দুধে ও মেথিওনিন আছে ডিমে। সুতরাং একটি প্রোটিন জাতীয় খাবার অন্যটির সঙ্গে মিলিয়ে খেলে সেই প্রোটিন জৈবমূল্যের দিক থেকে বেশ উন্নতর হবে। যেমন- চাল ও ডালের মিশ্রণে খিচুড়ী এবং চাল ও দুধের মিশ্রনে পায়েস একটি উত্তম প্রোটিনযুক্ত খাবার।

যারা আমিষ ভোজী তাদের খুব একটা সমস্যা না হলেও দেখা যায় নিরামিষ ভোজীদের দেহে প্রোটিনের অভাব হয়। যদি তাদের আহারে পর্যাপ্ত পরিমাণে ডাল-দুধ, পনীর ছানা থাকে তাহলে ঘাটতি মেটানো সম্ভব হয়। যে সমস্ত নিরামিষ ভোগীদের দুধ জাতীয় খাবার না খান তাদের দেহে ভিটামিন বি ১২ এর অভাব হয়, ফলে পার্নিসিয়াস এনিমিয়া হতে দেখা যায়। মাংস, দুধ, পনীর, কলিজা, ডিমের কুসুম ও মাছের মধ্যে এই ভিটামিন বিদ্যমান।

০০ আখতারুন নাহার, আলো প্রধান পুষ্টি কর্মকর্তা বারডেম।

0 comments:

Post a Comment