Monday, February 7, 2011

মাদারীপুরের ডেক রহস্য

0 comments
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের মগড়া পুকুরপাড় গ্রামের মৌলভী বাড়ির সম্পদ হিসেবে শতাব্দী ধরে আছে বিশাল আকৃতির একটি ডেক। সাধারণ ডেকের চেয়ে এই ডেকটির পার্থক্য অনেক। বর্তমান যুগে বিয়ে বা অনুষ্ঠানে রান্না করার যে কোনো পাত্রের চেয়ে অনেকগুণ বড় এই ডেকটি। তবে বিগত ৯০ বছরেও এই বড় পাত্রে কোনো কিছু রান্না করা যায়নি। বিশালাকৃতির এই ডেক সম্পর্কে এর রক্ষক মৌলভী বাড়ির লোকজন জানান, আধ্যাত্মিক শক্তিসম্পন্ন মাওলানা খবির উদ্দিন আহমেদ আল কাদেরী প্রায় ১০০ বছর আগে বাগদাদ থেকে এই ডেক এবং একটি উট এনেছিলেন। তখন উটটি জবাই করে এই ডেকে রান্না করা হয়েছিল। তারপর থেকে এখন আর এই ডেকে কোনো কিছু রান্না করা সম্ভব হয়নি। মাওলানা খবির উদ্দিন আল কাদেরী সম্পর্কে তার উত্তরসূরিরা বলেন, মাওলানা খবির উদ্দিন আহমেদ আল কাদেরী তৎকালীন সময়ে একজন ধর্মানুরাগী ছিলেন। ধর্ম শিক্ষার জন্য তিনি আরব দেশগুলোতে ঘুরেছেন। পরিণত বয়সে দীর্ঘদিন বাগদাদের হজরত আবদুল কাদের জিলানীর (রা.) মাজারে ছিলেন বলে জানা যায়।
সাধনা শেষে নিজ দেশে ফেরার আগে উপহার স্বরূপ এই ডেকটি তাকে দিয়েছিলেন ওই মাজারেরই একজন খাদেম। জনশ্রুতি আছে আধ্যাত্মিক ক্ষমতাসম্পন্ন মাওলানা খবির উদ্দিন আহমেদ আল কাদেরী ডেকের মধ্যে বসে নদীপথ পাড়ি দিয়ে নিজ বাড়িতে এসেছিলেন। তার মাজারের পাশে একটি খোলা ঘরে এই ডেকটি রাখা হয়েছে দর্শনার্থীদের জন্য। বিশাল এ ডেকটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে অনেক লোকজন আসে। ডেকটির ওপর খোদাই করে লেখা রয়েছে_ 'ডেক ওরুচে পিরানে পীর সৈয়দ আবদুল কাদের জিলানী... গোলাম ফকির ... শ্রী মৌলবি খবির উদ্দিন কাদেরী, সাং- উৎরাইল, সন- ১৩১৯'। বাকি লেখাটুকু অস্পষ্ট। এই লেখা দেখেই ধারণা করা হয় ডেকটি বাগদাদ থেকে আনা এমন মন্তব্য স্থানীয়দের। ডেকটির উচ্চতা ৩ ফুট ৬ ইঞ্চি। এর চারপাশের আয়তন ১৪৮ ইঞ্চি। ডেকের উপর দিকে কাঁধ বরাবর চারকোণে চারটি রিং রয়েছে। যার ওজন প্রায় ৪ কেজি করে। ডেকটি স্থানান্তর করার সময় এই রিংয়ের ভেতর বাঁশ জাতীয় কোনো কিছু দিয়ে ধরে সরাতে হয়। ডেকটি স্থানান্তরের জন্য পূর্ণবয়স্ক ১৪ থেকে ১৫ জন লোক লাগে এবং কমপক্ষে এগার মণ খিচুরি এই ডেকের মধ্যে রাখা যায় বলে স্থানীয়রা জানান। প্রায় ১০০ বছর আগে বাগদাদ থেকে এদেশে আনা হয় ডেকটি, কিন্তু বিশালাকৃতির এত বড় পাত্রটি কোন যুগের তৈরি তা জানা যায়নি।

ইমতিয়াজ আহমেদ

0 comments:

Post a Comment