Monday, November 28, 2011

২৭ বছর স্ত্রীর কবরের পাশে

0 comments
তাজমহল দেখে মনে হয়/যেন আজও সে প্রেম এসে কথা কয় ... হ্যাঁ, প্রেম চিরন্তন। দেশ-কাল ভেদে প্রেম-ভালোবাসা প্রকাশের প্রভেদ থাকলেও প্রেমের আকুলতায় প্রভেদ নেই। সম্রাট শাহজাহান যেমন তার প্রিয়তমা স্ত্রী মমতাজ মহলকে ভালোবেসে; শ্বেতমর্মরে গড়েছেন তাজমহল, গড়েছেন প্রেমের অমরগাঁথা। তেমনি পঞ্চগড়ের হাফিজউদ্দিন প্রিয়তমা স্ত্রীকে ভালোবেসে তার কবরের পাশে কাটিয়ে দিয়েছেন জীবনের ২৭টি বছর।
ভালোবাসার এই ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত গড়ে হাফিজউদ্দিন বনেছেন এ যুগের সম্রাট শাহজাহান।
পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার পাঁচপীর ইউনিয়নের বাকপুর গ্রামের মৃত বরকত আলী মিয়ার ছেলে বর্তমানে অশীতিপর মোঃ হাফিজউদ্দিন। ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান বিভক্তের দুই বছর পর বাড়ির পাশেই বিয়ে করেন ৬ বছরের শুকুরী বিবিকে। বিয়ের ৭-৮ বছর পর্যন্ত ছোট্ট
শুকুরী হাফিজউদ্দিনের মা সূর্যবানু বিবির সঙ্গেই থাকতেন। এরপর ১৯৫৬ সালের দিকে দু'জনের সংসার শুরু হয়। প্রেম-ভালোবাসায় ভালোই কাটছিল হাফিজ-শুকুরীর সংসার। বিয়ের ১৯ বছরের মাথায় স্ত্রী শুকুরী মারা যান। স্ত্রীর এভাবে চলে যাওয়াকে মেনে নিতে পারেননি নিঃসন্তান হাফিজ।
স্ত্রীর স্মৃতিচারণ করেন হাফিজ; বলেন, 'মৃত্যুর আগের রাতে বিবি আমার কাছে মিষ্টি খেতে চেয়েছিল, মিষ্টি এনে দিয়েছিলাম। রাতে দু'জনে মিলে মিষ্টি খেয়েছি। রাতভর দু'জনের অনেক কথা হলো। 'আমার জন্য কানবেন না, আমি থাকব না এমন কথা বলে পরদিন বিবি আমার হাঁটুতে মাথা রেখে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।'
স্ত্রীর এমন বিদায়ে শোকে কাতর হয়ে পড়েন হাফিজ। দাফনের পর ছুটে যান স্ত্রীর কবরে। ডাকতে থাকেন তার প্রিয় সঙ্গিনী বিবিকে। কিন্তু সেই আকুলতায় সাড়া দেননি শুকুরী বেগম। হাফিজ ভাবেন, 'আগের রাতে বিবি আমার সঙ্গে ছিল, কথা বলেছে, আজ কেন নেই। কোথায় গেল তার আত্মা।'
স্ত্রীর আত্মার খোঁজে গৃহত্যাগ করেন হাফিজ। হেটে রাঙামাটি, বান্দরবান, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন বন-জঙ্গলে ঘুরে বেড়ান। আহার ও নিদ্রাহীন ঘুরতে ঘুরতে কুমিল্লার সোনাকান্দা এলাকায় এক পীরের সানি্নধ্যে আসেন হাফিজ। আবদুর রহমান নামের ওই পীরের দরগায় শুরু করেন সাধনা আর তপস্যা।
পীরের দরগায় ৪১ দিন কবরের ভেতর এবং ১ বছর ভাত না খেয়ে দুধ আর কলা খেয়ে ছিলেন। একপর্যায়ে ১৯৭১ সালে শুরু হয় স্বাধীনতা যুদ্ধ। যুদ্ধের পর ১৯৭৮ সালের দিকে হাফিজউদ্দিন নিজ গ্রামে ফিরে আসেন। ওই সময়ের অগ্রহায়ণ মাসের ২ তারিখ হাফিজউদ্দিন স্ত্রীর কবরের পাশে আশ্রয় নেন। ২০০৫ সাল পর্যন্ত টানা ২৭ বছর স্ত্রীর কবরের পাশে ঘর তুলে বসবাস করেন হাফিজউদ্দিন। এ দীর্ঘ সময়ে বনজঙ্গলে ঘেরা নির্জনস্থানে ভয়ভীতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ তার ভালোবাসার কাছে পরাজিত হয়েছে।
২০০৬ সালে আত্মীয়-স্বজনদের চাপে বিবির কবরস্থান ছেড়ে আসতে হয় হাফিজউদ্দিনকে, সবাই মিলে জোর করে বিয়ে করান আরেকটি। কিন্তু কবরস্থান ছাড়লেও বাড়িতে ফেরেননি তিনি। বাড়ির বাইরে নিজের কবর খুঁড়েছেন তিনি। সেখানেই ঘর তুলে বাস করছেন এখনও। তার বর্তমান স্ত্রীর সন্তানরাও বিষয়টি মেনে নিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বাকপুর গ্রামে গিয়ে হাফিজউদ্দিনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তার জীবনকাহিনী। পুরনো স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে চোখ ভিজে আসে হাফিজউদ্দিনের। দুহাতে চোখ মুছতে মুছতে তিনি জানান, সংসার জীবনে আমরা একে অন্যকে ছেড়ে কখনও ছিলাম না। বিয়ের পর থেকে একাত্ম হয়ে দু'জন দু'জনকে অনুভব করতাম। কেউ কাউকে কষ্ট দিইনি।
হাফিজ জানান, স্ত্রীর কবরের পাশে ২ অগ্রহায়ণ বসবাস শুরু করার কারণে বর্তমানে প্রতি বছরের ওই তারিখে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন তিনি। মৃত্যুর পর পরকালে যেন বিবির সঙ্গে মিলিত হতে পারেন, বারবার এমন দোয়া কামনা করেন হাফিজউদ্দিন।

উৎসঃ UKBDNEWS (হ্যাঁ, প্রেম চিরন্তন: ২৭ বছর স্ত্রীর কবরের পাশে)

Monday, November 14, 2011

যা চায়

0 comments
পুরুষের কাছে নারী যা চায়ঃ পড়ে দেখুন...পুরুষ এবং নারী উভয়ের এর জন্য পড়া প্রয়োজন।। ♥
জীবনের পথে চলতে চলতে অজান্তেই হয়তো এসব বিষয় আমরা ভুলে যাই। কিন্তু একটু সচেতন হলেই এসব ছোটখাটো ভুলে যাওয়া কাজ দিয়েই খুশি করে তোলা সম্ভব সঙ্গিনীকে।
♥ যখন বান্ধবী বা স্ত্রী কথা বলবে, মনোযোগ দিয়ে শুনুন। বোঝার চেষ্টা করুন তার সমস্যা। এতে প্রমাণিত হয়, আপনি তাকে গুরুত্ব দেন। তার কথা ভাবেন।
♥ রাগকে প্রশমিত করতে হবে। কর্মক্ষেত্রের ঝামেলাগুলোকে বাড়িতে বা ব্যক্তিগত সম্পর্কের ক্ষেত্রে টেনে না আনাই ভালো।
♥ বান্ধবী বা স্ত্রী চান, সঙ্গী তাঁর সঙ্গে সবকিছু ভাগ করে নিন। তাই আবেগ বা উচ্ছ্বাস লুকিয়ে রাখবেন না। সুখ, দুঃখ যা-ই হোক না কেন, মনখুলে প্রকাশ করুন আপনার প্রিয় সঙ্গিনীর কাছে। এতে করে সেও আরও সহজ হবে আপনার কাছে। তাই সঙ্গিনীর সঙ্গে কথা বলতে হবে প্রাণখুলে।
♥ নারী সব সময় চান, তাঁর আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে সঙ্গী পুরুষটি যেন ভালো ব্যবহার করেন। তাই বান্ধবী বা স্ত্রীর স্বজনদের আপনার অপছন্দ হলেও তাঁদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করুন। এর কোনো বিকল্প নেই।
♥ নারী তাঁর সঙ্গীকে পছন্দের খাবার রান্না করে খাওয়াতে পছন্দ করেন, এটা সত্যি। তবে এটাও সত্যি যে রান্নাঘরের দৈনন্দিন কাজ বড্ড একঘেয়ে। নারীও মাঝেমধ্যে এ থেকে মুক্তি চান। বান্ধবী বা স্ত্রীর জন্য সবচেয়ে চমকপ্রদ উপহার হলো তাঁকে তাঁর পছন্দের খাবার রান্না করে খাওয়ানো। একটু কষ্ট হলেও মাঝেমধ্যে এটা করতে পারেন। দেখবেন, তাঁর বিষণ্ন মুখ হয়ে উঠবে ঝলমলে। কিংবা তাঁকে নিয়ে একদিন বাইরে ভালো কোনো রেস্তোরাঁয় খাবার খেলেন।
♥ গাড়ি চালানোর সময় মাথায় রাখতে হবে ঝোড়ো গতিতে গাড়ি চালানো আপনার সঙ্গিনীর পছন্দ না হওয়ারই কথা। তাই গাড়ি চালানোর সময় মাথা ঠান্ডা রাখুন। এতে আপনি যেমন নিরাপদে থাকবেন, তেমনি আপনার পাশে বসা সঙ্গিনীও থাকবেন স্বস্তিতে।
♥ নারীর প্রতি যত্নশীল হোন। তবে সেটি যেন কর্তৃত্ব না হয়ে দাঁড়ায়। আপনার অধিকারবোধ যেন এমন না হয়ে ওঠে, যাতে সঙ্গিনীর দম বন্ধ হয়ে আসে।
♥ মাত্র একটি ভুল বা মিথ্যের কারণেই আপনি আপনার সঙ্গিনীকে চিরতরে হারাতে পারেন। এ ব্যাপারে নারীরা ছাড় দেন না। তাই তাঁর প্রতি সত্ থাকতে হবে। তবেই জীবন হবে আনন্দময়।


সংগ্রহঃ ♥ দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া ♥ প্রথম আলো♥

Friday, November 4, 2011

ইসলামিক নিয়মে পশু জবাইয়ে পশুর যন্ত্রণা ?

0 comments
আপনার কি মনে হয় ইসলামিক পশু জবাই পদ্ধতিটি খুব নি…ষ্ঠুর?
আসুন দেখা যাক, বিজ্ঞান কি বলে :

western world এ পশু জবাইয়ের প্রচলিত নিয়ম(CPB Method):

Captive bolt pistol(CPB ) নামের এক ধরনের যন্ত্র দ্বারা পশুর কপালে প্রচন্ড আঘাত করা হয়……ধারনা করা হয় এতে পশু unconcious হয়ে পড়ে এবং জবাইয়ের পর ব্যথা অনুভব করে না ……

গবেষণা :
জার্মানির Hanover University এর প্রফেসর Wilhelm Schulze এবং তার সহযোগী Dr. Hazim এর নেতৃত্বে একটি গবেষণা পরিচালিত হয় …গবেষনার বিষয়বস্তু ছিল : ১.western world এ প্রচলিত নিয়মে(CPB Method) এবং ২.ইসলামিক নিয়মে পশু জবাইয়ে পশুর যন্ত্রণা এবং চেতনাকে চিহ্নিত করা……

Experimental Setup:
brain এর surface কে touch করে পশুর মাথার খুলির বিভিন্ন জায়গায় surgically কিছু electrode ঢুকিয়ে দেয়া হয় …… পশুকে এরপর সুস্থ হওয়ার জন্য কিছু সময় দেয়া হয়……তারপর পশুগুলোকে জবাই করা হয়……কিছু পশুকে ইসলামিক নিয়মে আর কিছু পশুকে western world এর নিয়মে…… জবাই করার সময় electroencephalograph (EEG) এবং electrocardiogram (ECG) করে পশুগুলোর brain এবং heart এর condition দেখা হয়……

Result:

ইসলামিক পদ্ধতিতে জবাইয়ের ফলাফলঃ

১. জবাইয়ের প্রথম ৩ সেকেন্ড EEG graph এ কোন change দেখা যায় না ……তারমানে পশু কোন উল্লেখযোগ্য ব্যথা অনুভব করে না …
২. পরের ৩ সেকেন্ডের EEG record এ দেখা যায় , পশু গভীর ঘুম এ নিমগ্ন থাকার মত অচেতন অবস্থায় থাকে…… হঠাৎ প্রচুর পরিমানে রক্ত শরীর থেকে বের হয়ে যাবার কারনে brain এর vital center গুলোতে রক্তসরবরাহ হয়না………ফলে এই অচেতন অবস্থার সৃষ্টি হয়……
৩. উপরিউল্লিখিত ৬ সেকেন্ড এর পর EEG graph এ zero level দেখায় …… তারমানে পশু কোন ব্যথাই অনুভব করেনা ……
৪. যদিও brain থেকে কোন সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না , তবুও heart স্পন্দিত হচ্ছিল এবং তীব্র খিঁচুনি হচ্ছিল (spinal cord এর একটা reflex action) । এভাবে শরীর থেকে প্রচুর পরিমানে রক্ত বের হয়ে যাচ্ছিল এবং এর ফলে ভোক্তার জন্য স্বাস্থ্যসম্মত মাংস নিশ্চিত হচ্ছিল ।

western world এ প্রচলিত পদ্ধতিতে(CPB Method) জবাইয়ের ফলাফলঃ

১. মাথায় প্রচন্ড আঘাত করার পরের মুহূর্তে পশুটিকে দৃশ্যত অচেতন মনে হচ্ছিল
২. কিন্তু EEG এর দ্বারা বোঝা যাচ্ছিল পশুটি খুব কষ্ট পাচ্ছে ।
৩. ইসলামিক পদ্ধতিতে জবাই করা পশুর তুলনায় CBP দিয়ে আঘাত করা পশুটির heart স্পন্দন আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল । যার ফলে পশুটির শরীর থেকে সব রক্ত বের হতে পারে নি । এবং ফলশ্রুতিতে, পশুটির মাংস ভোক্তার জন্য অস্বাস্থ্যকর হয়ে যাচ্ছিল ।

western world এর পদ্ধতি(CPB Method) এবং MAD COW রোগঃ

Texas A & M University এবং Canada এর Food Inspection Agency একটা পদ্ধতি(Pneumatic Stunning) আবিষ্কার করেছে যেটাতে একটা metal bolt পশুর brain এ fire করা হয় এবং এর ফলে brain এর টিস্যু পশুর সারা শরীরে ছড়িয়ে পরে । brain tissue এবং spinal cord হল Mad Cow আক্রান্ত গরুর সবচেয়ে সংক্রামক অংশ ।
এছাড়াও brain এবং heart এ electric shock এর মাধ্যমে পশুকে অচেতন করেও কিছু কিছু জায়গায় পশু জবাই করা হয় যেটা মাংসের quality এর উপর খুব খারাপ প্রভাব ফেলে ।

ভারতীয় পদ্ধতিঃ

ভারতে পশুর মাথা এক কোপে আলাদা করে ফেলা হয় । এতে করে ঐচ্ছিক পেশীগুলো হঠাৎ করে সঙ্কুচিত হয়ে পরে যা অনেক পুষ্টি সমৃদ্ধ তরল বের করে দেয় এবং heart হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শরীর থেকে রক্ত বের হতে পারে না , যা বের হওয়া স্বাস্থ্যকর মাংসের জন্য দরকার ।

এছাড়া ইসলামে spinal cord না কেটে শ্বাসনালী , এবং jugular vein দুটো কাটার
ব্যাপারে জোর দেয়া হয়েছে । এর ফলে রক্ত দ্রুত শরীর থেকে বের হয়ে যেতে পারে । spinal cord কাটলে cardiac arrest এর সম্ভাবনা থাকে যার ফলে রক্ত শরীরে আটকে যাবে যা রোগজীবানু এর উৎস ।

এখানে রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর একটি হাদীস মনে করিয়ে দেয়ার প্রয়োজন অনুভব করছিঃ “আল্লাহ সবাইকে দয়া করার হুকুম দেন । তাই যখন জবাই কর তখন দয়া কর । জবাই করার পূর্বে ছুরিতে ধার দিয়ে নাও যাতে পশুর কষ্ট কম হয়” । তিনি পশুর সামনে ছুরিতে শান দিতে বা এক পশুর সামনে আরেক পশুকে জবাই করতেও নিষেধ করেছেন । এই জিনিস্টা কুরবানীর সময় আমারা ভুলে যাই ।

সবশেষে , আমরা কি এই সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে পশু জবাই করার ইসলামিক পদ্ধতিটিই সবচেয়ে বিজ্ঞানসম্মত এবং পশু এবং পশুর মালিক উভয়ের জন্যই উপকারী?

সংগ্রহে: আলোকবর্ষ