Sunday, December 23, 2012

মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্য চিত্র

0 comments

মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্রগুলোর চারটি নির্মান হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়েই। পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা ও এ সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ের প্রতি গুরুত্বারোপ করে নির্মিত হয় বিভিন্ন প্রামাণ্যচিত্র। স্বাধীনতার পরপরই ১৯৭২ সালে আলমগীর কবির ‘ডায়েরিজ অব বাংলাদেশ’ নামে একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মান করেন। পাশাপাশি সরকারী প্রতিষ্ঠান চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর তৈরী করে ‘দেশে আগমন’। আলমগীর কবির ১৯৭৩ ও ১৯৭৪ সালে আরও দুটি ডকিউমেন্টারি নির্মান করেন। সৈয়দ শামসুল হকের পরিচালনায় সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ-র নামে একটি করে তথ্যচিত্র তৈরী হয় ১৯৮৩ ও ১৯৮৪ সালে। ১৯৯৫ সালে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভিন্ন ধারার প্রামাণ্যচিত্র ‘মুক্তির গান’ নির্মান করেন তারেক মাসুদ ও ক্যাথেরিন মাসুদ। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশী শিল্পীরা বিভিন্ন শরণার্থী শিবির ও রণাঙ্গনে  গান গেয়ে মানুষকে উজ্জীবিত করার যে বিশাল ভূমিকা পালন করেছিলেন তা উঠে এসেছে এই প্রামাণ্যচিত্রে। আবার এই ‘মুক্তির গান’সহ গণহত্যার ফুটেজ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে প্রদর্শন করে। তারেক ও ক্যাথেরিন মাসুদ দর্শকদের বিভিন্ন রকম অভিজ্ঞতা ইত্যাদি নিয়ে নির্মান করেন ‘মুক্তির কথা’। এছাড়া মানজারে হাসীনের ‘চারুকলায় মুক্তিযুদ্ধ’, কাওসার চৌধুরীর ‘সেই রাতের কথা বলতে এসেছি’, তানভীর মোকাম্মেলের ‘তাজউদ্দীন: নিসঙ্গ সারথি’ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ন প্রামাণ্যচিত্র।

ক্রম

চলচ্চিত্র

পরিচালক

মুক্তিরসন

ডায়েরিজ অব বাংলাদেশ

আলমগীর কবীর

১৯৭২

দেশে আগমণ

চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর

১৯৭২

পোগ্রাম ইন বাংলাদেশ

আলমগীর কবীর

১৯৭৩

লংমার্চ টুওয়ার্ডস গোল্ডেন বাংলা

আলমগীর কবীর

১৯৭৪

মুক্তিযোদ্ধা

চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর

১৯৭৬

বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ

সৈয়দ শামসুল হক

১৯৮৩

বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর

সৈয়দ শামসুল হক

১৯৮৩

বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান

সৈয়দ শামসুল হক

১৯৮৪

জেনারেল এম এ জি ওসমানী

চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর

১৯৮৪

১০

বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান

সৈয়দ শামসুল হক

১৯৮৪

১১

বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন

সৈয়দ শামসুল হক

১৯৮৪

১২

বীরশ্রেষ্ঠ মুনশী আবদুর রউফ

সৈয়দ শামসুল হক

১৯৮৫

১৩

বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল

সৈয়দ শামসুল হক

১৯৮৫

১৪

এক সাগর রক্তের বিনিময়ে

আলমগীর কবীর

১৯৮৫

১৫

মুক্তির গান

তারেক মাসুদ ও ক্যাথেরিন মাসুদ

১৯৯৫

১৬

চারুকলায় মুক্তিযুদ্ধ

মানজারে হাসীন

১৯৯৭

১৭

মুক্তির কথা

তারেক মাসুদ

১৯৯৮

১৮

কামালপুরের যুদ্ধ

চাষী নজরুল ইসলাম

২০০১

১৯

দেশ জাতি জিয়াউর রহমান

চাষী নজরুল ইসলাম

২০০১

২০

মৃত্যূঞ্জয়ী

সাজ্জাদ জহির

২০০১

২১

প্রতিকূলের যাত্রী

কাওসার চৌধুরী

২০০১

২২

সেই রাতের কথা বলতে এসেছি

কাওসার চৌধুরী

২০০২

২৩

স্বাধীনতা

ইয়াসমিন কবির

২০০২

২৪

ফিনিক্স

নিশাত জাহান রানা

২০০৩

২৫

প্রিয়ভাষিণী

মাহবুব আলম

২০০৩

২৬

মুক্তিযোদ্ধা আমরাও

সৈয়দ তারেক

২০০৩

২৭

তখন

এনামুল করিম নির্ঝর

২০০৪

২৮

তাজউদ্দীন: নিসঙ্গ সারথি

তানভীর মোকাম্মেল

২০০৭

২৯

আমি স্বাধীনতা এনেছি

সাগর লোহানী

২০০৭

৩০

অনেক কথার একটি কথা

আনন্দ

২০০৭

৩১

অন্য মুক্তিযোদ্ধা

লুৎফুন্নাহার মৌসুমী

২০০৭

৩২

কালরাত্রি

অশোক কর্মকার ও মানজারে হাসীন

২০০৭

৩৩

১৯৭১

তানভীর মোকাম্মেল

২০১১

*প্রামাণ্যচিত্রের এই তালিকাটিও অসম্পূর্ণ। ২০০৭ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত মুক্তিপ্রাপ্ত প্রামাণ্যচিত্রের পূর্ণাঙ্গ তথ্যাবলী সংগ্রহ করা সম্ভব হয় নি।

বিদেশীদের নির্মানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বহু বিদেশী সাংবাদিক সংবাদ সংগ্রহের জন্য এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ছুটে বেরিয়েছেন ক্যামেরা নিয়ে। সেইসব দুর্লভ ফুটেজের সমন্বয়ে তৈরী হয়েছে ডকিউমেন্টারী বা প্রামাণ্যচিত্র। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে এই মুক্তিযুদ্ধকে তুলে ধরা হয়েছে বিভিন্ন প্রামাণ্যচিত্রে। এর মাঝে ভারতের আই.এস.জহর পরিচালিত ‘জয় বাংলাদেশ’, উমা প্রাসাদ মৈত্রের ‘জয়বাংলা’, শুকদেবের ‘নাইন মান্হস টু ফ্রিডম’, ঋত্বিক কুমার ঘটকের ‘দুর্বার গতি পদ্মা’, দূর্গা প্রসাদের ‘দুরন্ত পদ্মা’, বিনয় রায়ের ‘রিফিউজি ‘৭১’, এইচএস আদভানী ও অন্যান্যদের ‘লুট অ্যান্ড লাস্ট’, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রবার্ট রজার্সের ‘দি কান্ট্রি মেড ফর ডিজাস্টার’, যুক্তরাজ্যের ব্রেন টাগের ‘ডেটলাইন বাংলাদেশ’, গীতা সায়গল ও ডেভিড বার্গম্যান এর  ‘ওয়ারক্রাইম ফাইলস’, তানিয়া কাউলের ‘মেজর খালেদ’স ওয়ার’, জাপানের নাগিসা ওসিমার ‘জয়বাংলা’ ও ‘রহমান: দি ফাদার অব নেশন’, ‘লিগেসি অব ব্লাড’,  বিবিসি’র ‘হাউ দি ইস্ট ওয়াজ ওয়ান’, গ্রানাডা টিভির ‘দি ওয়ার্ল্ড ইন অ্যাকশন’, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্মিত ‘দি কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’, মিডিয়া এন্টারটেইনমেন্টের ‘জেনোসাইড ফ্যাক্টর’, ম্যাকুম্বা ইন্টারন্যাশনালের ‘ওয়ার বেবিজ’, বাংলাদেশের সেন্টু রায় কর্তৃক বিদেশে নির্মিত ‘টিয়ারস অব ফায়ার’, আব্দুল গাফফার চৌধুরীর ‘পলাশী থেকে বাংলাদেশ’ ইত্যাদি।  (২০০৭ পর্যন্ত নির্মিত মুভির তালিকা)

লিখেছেন: নাজমুল হাসান দারাশিকো

মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র

0 comments
সিনেমা নির্মানের শুরুর দিকেই যুদ্ধ নিয়ে সিনেমা নির্মান হলেও প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে বিশ্ব সিনেমার তালিকায় ‘যুদ্ধ ভিত্তিক সিনেমা’ (War Films) আসন পাকা করে নিল। গত শতকে পৃথিবীতে যত যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছে তার প্রায় সব নিয়েই সিনেমা নির্মিত হয়েছে, এমনকি আরও অতীতের বিভিন্ন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ধরনের কাহিনীতে সিনেমা নির্মিত হয়েছে, হচ্ছে এবং হবে। ১৯৭১ সালে সংগঠিত বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সিনেমা নির্মান হওয়া তাই স্বাভাবিক এবং হয়েছে। বিজয়ের ৪১ বছরে এসে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নির্মিত সিনেমাগুলোর দিকে ফিরে তাকানো, আশা প্রত্যাশার হিসেব কষা যেতে পারে।

মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র

১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ থেকে শুরু করে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঘটে যাওয়া মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত ঘটনাবলী এবং এ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে যে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে তাই মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র। পূর্ণদৈর্ঘ্য, স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্যচিত্র – এই তিন ধারায় নির্মিত চলচ্চিত্রসমূহের আংশিক বা পূর্নাংশে যদি মুক্তিযুদ্ধ প্রতিফলিত হয় বা কোনভাবে প্রভাব বিস্তার করে তবে এ সকল চলচ্চিত্রকে মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র হিসেবে চিহ্নিত করেছেন গবেষকরা। এসকল সিনেমার মাঝে যে সকল সিনেমার দৈর্ঘ্য ৬০ মিনিটের কম তাকে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এবং ৬০ মিনিটের বেশী দৈর্ঘ্যের সিনেমাকে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হিসেবে গন্য করা হয়েছে। পূর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে মুক্তিযুদ্ধ তিন ভাবে এসেছে। প্রথমত, সরাসরি মুক্তিযুদ্ধ, দ্বিতীয়ত, মুক্তিযুদ্ধোত্তর পরিবেশের ঘটনাবলী  এবং তৃতীয়ত, ভিন্ন কোন প্রেক্ষাপটে রচিত কাহিনীচিত্রে ফ্ল্যাশব্যাক বা বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ। অন্যদিকে, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্রগুলোর কিছু তৈরী হয়েছে সরাসরি যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিকে তুলে ধরে। বাকীগুলো মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধকালীন নির্যাতিত মানুষ ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে নির্মিত হয়েছে।

যুদ্ধকালীন চলচ্চিত্র

মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে যে সকল চলচ্চিত্র তৈরী হয়েছে তার কিছু তৈরী হয়েছে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়েই। বাংলার সাহসী তরুন যুবারা যখন দেশকে স্বাধীন করার স্বপ্নে হাতে তুলে নিয়েছিল রাইফেল, তখনই দেশের এই দুর্দশা ও সংগ্রামকে বিশ্বের কাছে পৌছে দেয়ার ইচ্ছায় কিছু তরুন শক্ত হাতে ধরেছিলেন ক্যামেরা, জীবনকে বাজি রেখে যুদ্ধকালীন বিভিন্ন দৃশ্য সেই ক্যামেরায় ধারণ করে পৌছে দিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে, স্বাধীন একটি দেশের পক্ষে জনমত তৈরী করতে।
২৫শে মার্চ রাতের গণহত্যার ছবি তুলেছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নূরুল্লাহ। হত্যাযজ্ঞ শুরু হওয়ার পর জীবনের ঝুকি নিয়ে তার বাসায় পড়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নিচুমানের ভিডিও ক্যামেরা নিয়ে গণহত্যার দৃশ্য ধারণ করেছিলেন। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, ২৫শে মার্চের হত্যাকান্ডের একমাত্র ভিডিওচিত্রের ব্যবহারযোগ্য কোন প্রিন্ট কোথাও নেই।
মুজিবনগর সরকার গঠিত হওয়ার পর আবদুল জব্বার খানকে পরিচালক করে একটি চলচ্চিত্র বিভাগ খোলা হলেও মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত চলচ্চিত্র নির্মানের প্রথম সিরিয়াস প্রচেষ্টা হয় বেসরকারী উদ্যোগে ‘বাংলাদেশ লিবারেশ কাউন্সিল অব দি ইনটেলিজেনশিয়া’ এবং ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী কলাকুশলী সহায়ক সমিতি’র যৌথ উদ্যোগ ও আর্থিক সহায়তায়। নভেম্বর মাসের মধ্যেই বাংলাদেশর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে চারটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মিত হয়। এগুলো হল – জহির রায়হান পরিচালিত ‘স্টপ জেনোসাইড’ ও ‘এ স্টেইট ইজ বর্ণ’, আলমগীর কবির পরিচালিত ‘লিবারেশন ফাইটার্স’ এবং বাবুল চৌধুরীর পরিচালনায় ‘ইনোসেন্ট মিলিয়নস’।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়েই জহির রায়হান মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক পূর্নদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘ধীরে বহে মেঘনা’ নির্মানের পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু যুদ্ধ শেষ হওয়ার দেড় মাসের মধ্যেই জহির রায়হান নিখোঁজ হন। পরবর্তীতে আলমগীর কবির এই সিনেমাটি নির্মান করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে উল্লিখিত চারটি প্রামাণ্য চিত্র ছাড়াও দশমিনিটের একটি সংবাদচিত্র নির্মিত হয়।

মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র


মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়েই মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কিছু পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের পরিকল্পনা করা হয়। যুদ্ধপরবর্তী সময়ে অনেক চলচ্চিত্র নির্মাতাই এগিয়ে আসেন মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক চলচ্চিত্র নির্মানে। ১৯৭২, ১৯৭৩ এবং ১৯৭৪ সালে মোট দশটি মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক চলচ্চিত্র তৈরী হয়। ১৯৭৫ সালে এ ধারার কোন চলচ্চিত্র নির্মিত হয় নি। ২০০৪ সালে আবার একই বছরে তিনটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মিত হয়।
বিজয় অর্জনের পরে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মান করেন চাষী নজরুল ইসলাম, নাম ‘ওরা ১১ জন’। ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন মাসুদ পারভেজ, জাগ্রত কথাচিত্রের ব্যানারে। চাষী নজরুল ইসলামের এটিই প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনীচিত্র যার কাহিনীকার আল মাসুদ, চিত্রনাট্যকার কাজী আজিজ, সংলাপে এটিএম শামসুজ্জামান। অভিনয় করেছিলেন  খসরু, শাবানা, রাজ্জাক, নূতন, সুমিতা দেবী, রওশন জামিল, এটিএম শামসুজ্জামান সহ আরও অনেকে। ১৯৭১ সালে ১১জন মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে গঠিত গেরিলা দলের পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান এবং দেশ স্বাধীন নিয়ে এই চলচ্চিত্র নির্মিত। এই এগারোজনের দশজনই বাস্তবের মুক্তিযোদ্ধা, সিনেমা নির্মানে ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্র ও বুলেটের সবকটিই আসল। ১১ই আগস্ট ১৯৭২ এ মুক্তি পায় এই চলচ্চিত্রটি।
১৯৭২ সালের ৮ই নভেম্বর মুক্তি পায় মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র সুভাষ দত্ত পরিচালিত সিনেমা ‘অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’। কুসুমপুর গ্রামে পাকিস্তানি বাহিনীর নির্মম হত্যাকান্ড, নির্যাতন, নারী ধর্ষন এবং প্রতিবাদে বাঙালিদের মুক্তি সংগ্রামকে কেন্দ্র করে এই চলচ্চিত্র নির্মিত। যুদ্ধ শিশুর মত বিষয় বেশ গুরুত্বের সাথে ফুটে উঠেছে এই চলচ্চিত্রে। শতদল কথাচিত্রের প্রযোজনায় এই চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন আনোয়ার হোসেন, ববিতা, উজ্জ্বল প্রমুখ।
বিজয়ের ঠিক এক বছর পর ১৫ই ডিসেম্বর ১৯৭২ সালে মুক্তি পায় মুক্তিযুদ্ধের তৃতীয় ও চতুর্থ চলচ্চিত্র – ‘রক্তাক্ত বাংলা’ এবং  ‘বাঘা বাঙালী’। ‘রক্তাক্ত বাংলা’ পরিচালনা করেন মমতাজ আলী এবং ‘বাঘা বাঙালী’ পরিচালনা করেন আনন্দ। ১৯৭৩ সালে মুক্তি পায় আলমগীর কবির পরিচালিত ‘ধীরে বহে মেঘনা’, আলমগীর কুমকুম পরিচালিত ‘আমার জন্মভূমি’ এবং খান আতাউর রহমান পরিচালিত ‘আবার তোরা মানুষ হ’। ১৯৭৪ সালে মুক্তি পায় চাষী নজরুল ইসলামের ‘সংগ্রাম’, নারায়ন ঘোষ মিতার ‘আলোর মিছিল’ এবং আনন্দের ‘কার হাসি কে হাসে’।
১৯৭২ থেকে শুরু করে ২০১২ পর্যন্ত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রগুলোর একটি তালিকা দেয়া যেতে পারে।


ক্রম

চলচ্চিত্র

পরিচালক

মুক্তিরসন

ওরা ১১ জন

চাষী নজরুল ইসলাম

১৯৭২

অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী

সুভাষ দত্ত

১৯৭২

রক্তাক্ত বাংলা

মমতাজ আলী

১৯৭২

বাঘা বাঙালী

আনন্দ

১৯৭২

ধীরে বহে মেঘনা

আলমগীর কবির

১৯৭৩

আমার জন্মভূমি

আলমগীর কুমকুম

১৯৭৩

আবার তোরা মানুষ হ

খান আতাউর রহমান

১৯৭৩

সংগ্রাম

চাষী নজরুল ইসলাম

১৯৭৪

আলোর মিছিল

নারায়ণ ঘোষ মিতা

১৯৭৪

১০

কার হাসি কে হাসে

আনন্দ

১৯৭৪

১১

মেঘের অনেক রং

হারুনুর রশীদ

১৯৭৬

১২

কলমীলতা

শহীদুল হক খান

১৯৮১

১৩

আমরা তোমাদের ভুলবো না*

হারুনর রশীদ

১৯৯৩

১৪

একাত্তরের যীশু*

নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু

১৯৯৩

১৫

আগুনের পরশমনি

হুমায়ূন আহমেদ

১৯৯৪

১৬

সিপাহী

কাজী হায়াৎ

১৯৯৪

১৭

নদীর নাম মধুমতি

তানভীর মোকাম্মেল

১৯৯৬

১৮

হাঙর নদী গ্রেনেড

চাষী নজরুল ইসলাম

১৯৯৭

১৯

এখনো অনেক রাত

খান আতাউর রহমান

১৯৯৭

২০

ছানা ও মুক্তিযুদ্ধ*

বাদল রহমান

১৯৯৮

২১

’৭১ এর লাশ

নাজির উদ্দীন রিজভী

১৯৯৮

২২

ইতিহাস কন্যা**

শামীম আখতার

২০০০

২৩

একজন মুক্তিযোদ্ধা

বি.এম সালাউদ্দিন

২০০১

২৪

শিলালিপি**

শামীম আখতার

২০০২

২৫

মেঘের পরে মেঘ

চাষী নজরুল ইসলাম

২০০৪

২৬

শ্যামল ছায়া

হুমায়ূন আহমেদ

২০০৪

২৭

জয়যাত্রা

তৌকির আহমেদ

২০০৪

২৮

ধ্রুবতারা

চাষী নজরুল ইসলাম

২০০৬

২৯

খেলাঘর

মোরশেদুল ইসলাম

২০০৬

৩০

অস্তিত্বে আমার দেশ**

খিজির হায়াত খান

২০০৭

৩১

স্পার্টাকাস’৭১**

মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী

২০০৭

৩২

গহিনে শব্দ

খালিদ মাহমুদ মিঠু

২০১০

৩৩

নিঝুম অরন্যে

মুশফিকুর রহমান গুলজার

২০১০

৩৪

রাবেয়া

তানভীর মোকাম্মেল

২০১০

৩৫

গেরিলা

নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু

২০১১

৩৬

আমার বন্ধু রাশেদ

মোরশেদুল ইসলাম

২০১১

৩৭

মেহেরজান

রুবাইয়াত হোসেন

২০১১

৩৮

আত্মদান

শাহজাহান চোধুরী

২০১২

৩৯

কারিগর

আনোয়ার শাহাদাত

২০১২

৪০

খন্ড গল্প৭১

বদরুল আনাম সৌদ

২০১২

৪১

পিতা***

মাসুদ আখন্দ

২০১২

* বাণিজ্যিকভিত্তিতেকোনপ্রেক্ষাগৃহেমুক্তিদেয়াহয়নি

**ভিডিওফরম্যাটেনির্মিত

*** পিতা ১৪ ডিসেম্বর ২০১২তারিখে মুক্তির কথা থাকলেও শেষ মূহুর্তে পিছিয়েছে।

তালিকাটি লক্ষ্য কররে দেখা যাবে মুক্তিযুদ্ধ এসেছে এরকম সিনেমা তালিকায় স্থান পায় নি। চলচ্চিত্র গবেষকরা ২০০৭ সাল পর্যন্ত মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাকে তালিকাভুক্ত করেছেন এবং মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ আছে এমন বেশ কিছু ছবিকে এই তালিকার বাইরে রেখেছেন। এগুলো হল আবদুস সামাদের ‘সূর্যগ্রহণ’, মতিন রহমানের ‘চিৎকার’, এ জে মিন্টুর ‘বাঁধন হারা’, শহীদুল ইসলাম খোকনের ‘বিপ্লব’, ‘সন্ত্রাস’, ‘কমান্ডার’, ‘ঘাতক’, ও ‘লাল সবুজ’, দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর ‘বীর সৈনিক’, তারেক মাসুদের ‘মাটির ময়না’, গাজী জাহাঙ্গীরের ‘জীবন সীমান্তে’ প্রভৃতি। এই বিবেচনায় ২০০৭ সালের পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার কোন কোনটি হয়তো উপরোক্ত তালিকা থেকে বাদ পড়বে। (ধারণা করছি, এ সকল সিনেমায় মুক্তিযুদ্ধ উপজীব্য নয় অথবা কাহিনীতে প্রভাব বেশী নয়, তাই তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে – দারাশিকো)
 লিখেছেন: নাজমুল হাসান দারাশিকো

পাইলস, ফিস্টুলা না ক্যান্সার?

0 comments
পাইলস রোগটি আমাদের দেশের সাধারণ রোগীদের কাছে পরিচিত একটি রোগ। সর্বসাধারণের ধারণা, পায়ুপথের বিভিন্ন সমস্যা যেমন রক্ত যাওয়া, ব্যথা হওয়া, ফুলে যাওয়াÑ এসবই হয় পাইলস রোগের কারণে। কিন্তু আসলে এ ধারণা সঠিক নয়। উপরিউক্ত প্রতিটি উপসর্গই পায়ুপথে ক্যান্সার হলে হতে পারে। আবার ফিস্টুলা বা ভগন্দর রোগেও উপরিউক্ত উপসর্গগুলো দেখা দিতে পারে। আবার এমন হতে পারে যে, প্রথমত, পায়ুপথে ক্যান্সার হয়েছে সেটিও ফিস্টুলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে। যেমন ইতোমধ্যেই লেখক একজন রোগীর (৬৫) অপারেশন করেছেন ফিস্টুলা হিসেবে কিন্তু মাংস পরীক্ষা (বায়োপসি) রিপোর্টে দেখা গেল ক্যান্সার। এই ফিস্টুলা রোগীটির যে ক্যান্সারের কারণেই ফিস্টুলা হয়েছে তা অপারেশনের আগে কোনো পরীক্ষায় ধরা পড়েনি। ধরা পড়েছে শুধু অপারেশনের পর নিয়মিত মাংস পরীক্ষার রিপোর্টে। যদি ভুলক্রমে বা কোনোভাবে এ রোগীর বায়োপসি না করা হতো তাহলে তার ক্যান্সার ধরা পড়ত অনেক দেরিতে যখন চিকিৎসার অযোগ্য হতো। আশার কথা এই যে, লেখক মোটামুটি সব ফিস্টুলা রোগীর নিয়মিত মাংস পরীক্ষা করে থাকেন। এ রোগীর ইতিহাস নিয়ে দেখা যায় তিনি নিজে একজন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। চার বছর ধরে তার এই সমস্যা চলছে এবং তিনি নিজে চিকিৎসক বলে হোমিও ওষুধ খেয়ে  যাচ্ছেন। তার মলদ্বার থেকে দূরে একটি মুখ থেকে পুঁজ ও রক্ত পড়ত। এটিকে সাধারণ ফিস্টুলা মনে করে তিনি নিজে দীর্ঘ দিন ধরে ওষুধ খাচ্ছিলেন। বেশির ভাগ ফিস্টুলা রোগীর ক্যান্সার থাকে না। পায়ুপথের ক্যান্সার যখন দীর্ঘ দিন চিকিৎসাবিহীন থাকে তখন এটি মলদ্বারের পাশে ছিদ্র হয়ে বের হয়ে আসে এবং সেখান থেকে পুঁজ যায় আবার কখনো কখনো রক্ত যায়।
লেখকের দেখা অন্য একজন মহিলা রোগী (৫৫), যিনি রাজধানীর একটি কলেজের অধ্যাপক, গত দেড় বছর যাবৎ মলদ্বারে রক্ত যাচ্ছে। পায়খানা কিয়ার হয় না। নিজে নিজে ল্যাক্সিনা ট্যাবলেট খাচ্ছেন পেট পরিষ্কার করার জন্য। পায়খানার বেগ এলে কিছু তরল জিনিস বের হয়ে আসে কিন্তু পায়খানা অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে এরূপ ভাব। মাঝে মাঝে টয়লেটে রক্ত যায়। ইদানীং মলদ্বারে ও কোমরের নিচের দিকে ব্যথা। মলদ্বার থেকে পেছন দিকে ছড়িয়ে পড়া ব্যথা। এখানে উল্লেখ্য যে, ভেতরের ব্যথা কোমরে অনুভূত হতে পারে আবার ঊরুর দিকেও সম্প্রসারিত হতে পারে।
এই রোগিণীর প্রাথমিক ইতিহাস শোনার পর লেখকের স্বাভাবিকভাবেই একটু সন্দেহ হয়েছে। অতঃপর তার সিগময়ডস্কপি ও প্রকরস্কপি পরীক্ষায় ধরা পড়ে, তার রেকটামের ভেতর ক্যান্সার আছে। কিন্তু রোগীর বিশ্বাস, তিনি পাইলসে ভুগছেন। বিস্তারিত ইতিহাস না নিলে ভুল হতো। কারণ রোগীর সাদামাটা বক্তব্য, তার রক্ত যায় এবং পায়খানা কিয়ার হয় না। আরেকটি সমস্যা, রোগীরা মলদ্বারের ভেতর যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা করাতে চান না। ব্যথা হতে পারে এই ভেবে খুব ভয় পেয়ে যান। জিজ্ঞাসা করেন, এই পরীক্ষা করলে আমি আগামীকাল অফিসে যেত পারব কি না? এটি নিশ্চিত করেই বলা যায় যে, এ পরীক্ষায় সামান্য অস্বস্তি ছাড়া কোনোরূপ ব্যথা হয় না। বেশির ভাগ রোগীই এ পরীক্ষায় কোনোরূপ ব্যথা পান না। এ পরীক্ষার জন্য খুবই সামান্য সময়ের প্রয়োজন। সারা দিন না খেয়ে থাকার প্রয়োজন হয় না। মলদ্বারে তীব্র ব্যথা আছে এমন রোগীদেরও এ পরীক্ষা করা যায়।
রোগীদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই যে, উপরিউক্ত সমস্যা দেখা দিলে সবারই ক্যান্সার হয়েছে। তবে এ কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে, যেসব রোগে পায়খানার সাথে রক্ত যায় তার মধ্যে ক্যান্সার অন্যতম। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রক্ত যায় যেসব রোগে সেগুলো হচ্ছেÑ (১) এনাল ফিসার, (২) পাইলস, (৩) রেকটাল পলিস (শিশুদের বেশি হয়), (৪) ক্যান্সার, (৫) আলসারেটিভ কেলোইটিস, (৬) ফিস্টুলা ও অন্যান্য।
আমরা মফস্বল থেকে আসা অনেক রোগীকে দেখি, যাদের ক্যান্সার আছে অথচ হাতুড়ে চিকিৎসকেরা তাদেরকে ইনজেকশন দিচ্ছেন। কোনো কোনো হাতুড়ে চিকিৎসক আবার একধাপ এগিয়ে সেখানে অপারেশনেরও মহড়া দিচ্ছেন। আবার কখনো কখনো একই রোগীর পাইলস ও ক্যান্সার থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে আমরা যদি পাইলসের চিকিৎসা করি তাহলেও দেখা যায় যে, রোগীর সমস্যা যাচ্ছে না, তখন মলদ্বারের ভেতর লম্বা যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা (সিগময়ডস্কপি বা কোলনস্কপি) করলে ক্যান্সার ধরা পড়ে। এ জাতীয় সমস্যাও মাঝে মধ্যে দেখা যায়।
মোট কথা, মলদ্বারের মুখ থেকেও রক্ত যেতে পারে আবার অনেক ভেতর অর্থাৎ রেকটাম বা বৃহদান্ত্রর (Colon or large intestine) ভেতর থেকেও রক্ত যেতে পারে। কী কারণে যাচ্ছে তা বিশেষ ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে একজন উপযুক্ত চিকিৎসক বলে দিতে পারেন। কিছু কিছু রোগী বলেন, আমার পাইলস হয়েছে, আমাকে কিছু ওষুধ দেন খেয়ে দেখি, পরীক্ষা-নিরীক্ষার দরকার নেই। কিন্তু লেখক বিশেষ ধরনের পরীক্ষা না করে অনুমাননির্ভর পাইলস চিকিৎসার বিপক্ষে। কারণ এতে যে রোগীদের ক্যান্সার আছে তা শনাক্তকরণে বিলম্ব হবে। বিলম্বিত চিকিৎসায় ক্যান্সারে ভালো ফলাফল আশা করা যায় না।

লেখক : প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান (অব:) কলোরেক্টাল সার্জারি বিভাগ, বিএসএমএমইউ, ঢাকা
চেম্বার : জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল
৫৫, সাত মসজিদ রোড, ধানমন্ডি, ঢাকা
ফোন : ০১৭২৬-৭০৩১১৬, ০১৭১৫-০৮৭৬৬১

অনলাইন সাংবাদিকতা

0 comments
অনলাইন সাংবাদিকতা বলতে বোঝায় ইন্টারনেট পত্রিকা বা গণমাধ্যমে সাংবাদিকতা। বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়া এ ব্যাপারে বলা হয়েছে- Online journalism is defined as the reporting of facts produced and distributed via the Internet.
অনলাইন সাংবাদিকতার বৈশিষ্ট্য
১. তাৎক্ষণিকতা
যে কোনো ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই রেডিও টিভির মতো এতে প্রকাশ করা যায়। আবার মেইলে খবরের আপডেট পাঠানোরও সুবিধা আছে। গুগল ফিডবার্নারসহ বিভিন্নভাবে এটা করা সম্ভব।
২. স্থায়িত্ব
অনলাইনে প্রকাশিত রিপোর্টের স্থায়িত্ব অনেক বেশি। প্রকাশিত রিপোর্টগুলো আর্কাইভ করে রাখার ব্যবস্থা থাকায় তা যে কোনো সময় দেখা যায়। অন্য যে কোনো মিডিয়ার (প্রিন্ট, রেডিও ও টিভি) চেয়ে এটা খুঁজে বের করা অনেক সহজ।
৩. উপভোগ্য
অনলাইন সংবাদপত্রে লেখার পাশাপাশি গ্রাফিক্স, অডিও, গান, ভিডিও ফুটেজ ও অ্যানিমেশন সংযুক্ত করা সম্ভব। ফলে এটা উপভোগ্য হয়ে ওঠে।
৪. ইন্টার-অ্যাকটিভ (interactive)
অনলাইন সাংবাদিকতা একটি ইন্টার-অ্যাকটিভ প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে পাঠকের মতামত জানা ও পাঠককে নিজের মতামত দ্বারা প্রভাবিত করার সুযোগ বিদ্যমান। এখানে একটি লেখার সঙ্গে একই বিষয়ের অন্যান্য লিংক প্রদান করা যায়। ফলে পাঠক খুব সহজেই একই বিষয়ে অন্যান্য লেখা সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করতে পারে। তাছাড়া এতে লেখার সূত্র উল্লেখ করা যায় বিধায় পাঠক রিপোর্টের বা লেখার বস্তনিষ্ঠতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারে।
৫. পূর্ণাঙ্গ, সমৃদ্ধ ও সর্বশেষ সংবাদ পরিবেশনা
অনলাইন সংবাদপত্রে জায়গার কোনো সমস্যা নেই। কিংবা রেডিও টিভির মতো সময়েরও সীমাবদ্ধতা নেই। ফলে একজন অনলাইন সাংবাদিক তার স্টোরিকে বিভিন্ন তথ্যে সমৃদ্ধ করে প্রকাশ করতে পারেন। আবার প্রিন্ট মিডিয়ায় একবার প্রকাশিত হয়ে গেলে তা আর সংশোধন করার সুযোগ থাকে না। কিন্তু অনলাইনে এ ধরনের সমস্যা নেই। এ জগতের সাংবাদিকরা ঘটনা ঘটার সঙ্গেই তা আপডেট করে দিতে পারেন।
প্রিন্ট মিডিয়ায় সাংবাদিকতার ওপর ইন্টারনেটের প্রভাব
প্রিন্ট মিডিয়ার কর্মী, সাংবাদিক ও সম্পাদকদের কাছে ইন্টারনেট বর্তমানে সময় বাঁচানো গবেষণাসম্পদ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। বিশেষ করে কোনো বিষয়ের ব্যাকগ্রাউন্ড জানার ক্ষেত্রে এটি বিশেষ ভূমিকা রাখছে। ইন্টারনেটে প্রিন্ট ও সম্প্রচার মিডিয়ার বিভিন্ন প্রবন্ধ-নিবন্ধ, কলাম, ধারাবাহিক ফিচার পাওয়া যায়, যা জ্ঞানার্জনে অনেক সহায়ক হচ্ছে।
কিভাবে শুরু করবেন অনলাইন সাংবাদিকতা?
প্রথম স্তর
১. প্রথমেই আপনাকে সাংবাদিকতার প্রাথমিক ধারণা নিতে হবে। কীভাবে সংবাদ লিখতে হয়, সংবাদের উপাদানগুলোই বা কী ইত্যাদি। সেটা আপনি বই পড়ে জানতে পারেন। তাছাড়া এখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে কোর্সের আয়োজন করছে। সেখানেও অনেক কিছু জানার আছে।
২. আপনাকে অবশ্যই কম্পিউটার চালানো শিখতে হবে। এমএস ওয়ার্ডে বাংলা ও ইংরেজি লিখতে জানতে হবে। তাছাড়া ফটোশপ ও ইলাস্ট্রেটর সম্পর্কে ধারণা থাকলে ভালো।
৩. ইন্টারনেট সম্পর্কে ধারণা অর্জন করতে হবে। এক্ষেত্রে কিছু ওয়েব ব্যাসিক এবং প্রোগ্রামিং ভাষা শেখা থাকলে ভালো। তবে প্রোগ্রামিং ভাষা খুব বেশি দরকার নেই। যাদের বিভিন্ন ব্লগে লেখার অভ্যাস আছে তারা এক্ষেত্রে সামান্য হলেও এগিয়ে আছেন।
৪. লেখার দক্ষতা বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। এক্ষেত্রে কার্যকর উপায় হচ্ছে বিভিন্ন বিষয়ে বেশি বেশি লেখা এবং ভালো কোন লেখক বা সম্পাদকের দ্বারা সম্পাদনা করিয়ে নিজের ভুলগুলো চিহ্নিত করা।
২য় স্তর
১. প্রথমে আপনার লেখার (ফিচার, নিউজ, সাক্ষাৎকার ইত্যাদি) বিষয় নির্ধারণ করুন।
২. আপনার বাছাই করা বিষয়ে কিছু নমুনা লেখা লিখে ফেলুন। এক্ষেত্রে নিজের কোন ওয়েবসাইট থাকলে তাতে লেখাগুলো প্রকাশ করুন। নিজের ওয়েবসাইট না থাকলে হতাশার কিছু নেই। বর্তমানে অনেক ফ্রি ওয়েবসাইট (বিভিন্ন ব্লগ, ওয়ার্ডপ্রেস.কম ইত্যাদি) পাওয়া যাবে যেখানে আপনি চাইলেই লিখতে পাবেন।
৩. এবার ফ্রিল্যান্সারদের লেখার দায়িত্বে আছেন এমন দুয়েকজন সম্পাদক/সহ-সম্পাদক খুঁজে বের করুন।
৪. তাদেরকে আপনার পরিচয় প্রদান করে আপনি যে লিখতে ইচ্ছুক তা জানিয়ে চিঠি/মেইল করুন। তাদের কাছে অ্যাসাইনমেন্ট চাইতে পারেন। তবে অবশ্যই তাদের কাছে আপনার লেখার দুয়েকটি নমুনা কপি পাঠাবেন। তাছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে লেখার আইডিয়া নিয়ে সংশ্লিষ্ট সম্পাদকের সঙ্গে ফোনে বা মেইলে আলোচনা করতে পারেন।
৫. এসব কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আপনার যোগাযোগ বাড়ান এবং আপনাকে লেখার সুযোগ দিতে অনুরোধ করুন। একই সময়ে আপনার ব্লগ কিংবা সাইটে নিয়মিত লিখতে থাকুন।
উল্লিখিত উপায়ে কাজ করলে অবশ্যই আপনি লেখার সুযোগ পাবেন, একথা বলা যায় নির্দ্বিধায়।
তৃতীয় স্তর
এবার বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় আপনার সিভি পাঠান। সাথে সাথে হাউসগুলোতে আপনার যোগাযোগ অব্যাহত রেখে নিয়মিত সাংবাদিক হিসেবে নিয়োগ পেতে চেষ্টা করুন।
অনলাইন সাংবাদিকতা : নৈতিকতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা
অনলাইন সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে প্রত্যেক সংবাদকর্মীকে অবশ্যই দৃঢ় নৈতিকতাবোধ সম্পন্ন হওয়া উচিত। কারণ অনলাইন বর্তমানে একটি গবেষণা সম্পদ হিসেবে কাজ করছে। ফলে মিথ্যা ও বিকৃত তথ্য দিয়ে কোনো লেখা দিলে তা ইতিহাস বিকৃতির চরম পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে। এছাড়া একজন পাঠক একই সময়ে অনেকগুলো সংবাদপত্র পড়তে পারে। ফলে সঠিক তথ্য প্রদান না করলে সংশ্লিষ্ট সংবাদপত্র বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে এবং আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
লেখক: মো: বাকীবিল্লাহ

বিশ্বের সবচেয়ে পুরাতন বাল্ব

0 comments
পৃথিবীর সবচাইতে বয়স্ক বাতি। এটির বয়স প্রায় ১১১ বছর। Livermore-Pleas anton Fire Department- এ এটি ১৯০১ সাল থেকে জ্বলছে। যদিও এটার উজ্জলতা কম কিন্তু এটি এখনো জ্বলছে। এটা লাগানোর পর দুইটি বিশ্ব যুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে, গাড়ি এবং উড়জাহাজের  উন্নতি হয়েছে কিন্তু এটি এখন পর্যন্ত জ্বলছে। 

Saturday, December 22, 2012

সাংবাদিকতা

0 comments
ভূমিকা:
মিডিয়ার পাঁচটি কাজের মধ্যে একটি হলো মানুষকে শিক্ষিত করা। মানুষ সংবাদপত্রের মাধ্যমে প্রতিদিন হরেক রকম খবর জানার পাশাপাশি ভাষাও শেখে। একটি বিষয়কে ভালোভাবে, স্পষ্ট করে পাঠকের কাছে তুলে ধরতে শুদ্ধ ভাষায় না লিখলে চলবে না। আমরা জানি, বাক্যের গঠনে ভুল হলে, শব্দের প্রয়োগ ভুল হলে কিংবা বানানে ভুল হলে অর্থ বদলে যায়। এতে পাঠক বিভ্রান্ত হতে পারেন। তাই সংবাদপত্রে শুদ্ধভাবে লেখা উচিত।

সংবাদপত্রের প্রতিটি পর্যায়ের কাজ খুব ব্যস্ততার মধ্যে সম্পন্ন করতে হয়। অনলাইন পত্রিকায় তো বিষয়টি আরো দ্রুত। টেলিভিশনের টিকারের জন্যও শুদ্ধ বানান ও বাক্য প্রয়োজন। এ জন্য সবাইকে সদা সতর্ক থাকতে হয়। মূল কপিতে ভুল থাকলে সেই ভুল শেষ পর্যন্ত থেকে যাওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। তাই সংবাদ রচনার সময় একজন রিপোর্টারকে অন্যসব বিষয়ের পাশাপাশি শুদ্ধ ভাষায় লেখার দিকে সতর্ক ও মনোযোগী থাকতে হয়। অনেক রিপোর্টার ধরে নেন তথ্য ঠিক থাকলেই হলো। বাকি কাজ বার্তা সম্পাদক, শিফট-ইনচার্জ, সিনিয়র সহ-সম্পাদক অথবা সম্পাদনা সহকারী কেউ একজন ঠিক করে দেবেন। এই ধরনের ভাবনা একজন রিপোর্টারকে দু’দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এক. তার লেখা রিপোর্টটি ভুলভাবে ছাপা হতে পারে। দুই. এতে করে রিপোর্টারের যোগ্যতা নিয়ে অফিসে প্রশ্ন উঠতে পারে, যা তার ক্যারিয়ারের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে।

ধরুন একজন রিপোর্টার লিখলেন : ‘ধানমন্ডি থানা পুলিশ গতকাল একজন দোকানদারের কাছ থেকে জোর করে চাঁদা নেয়ার সময় নিউমার্কেট থেকে চুইল্ল্যা আনোয়ার (৩৮) নামের একজন সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেছে।’ এ বাক্যে মনে হয় পুলিশই বুঝি দোকানদারকে হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করছিল। বাক্যটি হতে পারত-‘গতকাল একজন দোকানদারের কাছ থেকে জোর করে চাঁদা নেয়ার সময় নিউমার্কেট থেকে চুইল্ল্যা আনোয়ার (৩৮) নামের এক সন্ত্রাসীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।’

আমরা কোনো কিছু লিখতে গেলেই শব্দের ব্যবহারের সাধুরূপ নিয়ে আসি। ‘কাছে’ না লিখে ‘নিকটে’ লিখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। এটা ঠিক নয়। সংবাদপত্রের ভাষা মুখের ভাষার যতো কাছাকাছি হয় তত বেশি কার্যকর বলে প্রমাণিত। সংবাদপত্র যেমন উচ্চশিক্ষিত লোকেরা পড়েন, তেমনি স্বল্পশিক্ষিত সাধারণ মানুষও পড়েন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের এক সিনিয়র শিক্ষকের বক্তব্য হলো- সংবাদের ভাষা এমন হওয়া উচিত যাতে অষ্টম শ্রেণী পাস একজন ব্যক্তি পড়ে বুঝতে পারে।

বানানের দিকে রিপোর্টাররা মনোযোগ দিতে আগ্রহী কম। কিন্তু বানানের হেরফেরে অর্থ একদম পাল্টে যায়। কয়েকটি উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। আভাষ অর্থ ভূমিকা। কিন্তু কেউ যদি আভাস লেখেন? আভাস অর্থ ইঙ্গিত। কৃতি অর্থ কার্য; কৃতী মানে কৃতকর্মা। হ্রস্ব ই-কার ও দীর্ঘ-ইকারের কারণে অর্থ বদলে যাচ্ছে। বাধা অর্থ প্রতিবন্ধক, আর ব’র ওপর চন্দ্রবিন্দু দিলে অর্থ দাঁড়ায় বন্ধন করা। সত্ব অর্থ সত্ত্বা, অসিত্ব। আর দন্তস্য’র নিচে ব দিলে অর্থ হয়ে যায় অধিকার।

লেখার ক্ষেত্রে একজন সাংবাদিককে এই বিষয়গুলো ছাড়াও হাউস স্টাইল অনুকরণ করতে হয়। পত্রিকাগুলোতে কিছু শব্দ ব্যবহারে এবং বানানে ভিন্নতা লক্ষ করা যায়।। পত্রিকাগুলো নিজস্ব বানান ও লেখারীতি অনুসরণ করে। এর জন্য বড় পত্রিকাগুলো নিজস্ব স্টাইল শিট তৈরি করে নেয়।

কিছু পত্রিকা বাড়ি, গুলি, পাখি লিখতে দীর্ঘ-ই-কার ব্যবহার করে। কোনো কোনো পত্রিকা ‘সাংসদ’ লিখলেও এমন পত্রিকাও আছে যারা ভুলেও এটি লিখবে না, লিখবে ‘সংসদ সদস্য’। এমন পত্রিকা আছে যারা, ‘উপাচার্য’ মরে গেলেও লিখবে না। লিখবে ‘ভাইস-চ্যান্সেলর’। একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা ক্রিকেট লেখে কৃকেট, ব্রিটেনকে বৃটেন ক্রিজ-এর বানান লেখে কৃজ। এই যে বানান ও শব্দের ভিন্নতা- এগুলোই হলো পত্রিকার নিজস্ব হাউস স্টাইল। একজন রিপোর্টারকে ভাষাবিদ হওয়ার দরকার নেই। কিন্তু যাতে শুদ্ধ ভাষা লেখা যায়, সে ব্যাপারে চেষ্টা করতে দোষ কী? এক্ষেত্রে নিজ পত্রিকার স্টাইল শিট বড় ধরনের সহায়ক ভূমিকা রাখে। কাজেই পত্রিকাগুলোর নিজস্ব স্টাইল শিট থাকা উচিত। এটি যেমন পত্রিকাটির মর্যাদা, নির্ভরযোগ্যতা বাড়িয়ে দেয়, তেমনি স্বাতন্ত্র্য প্রকাশেরও প্রতীক হয়ে ওঠে।  
বর্ণনা:
প্রথম অধ্যায়
সাধারন সাংবাদিকতা শিক্ষায় আপনাকে শিখানো হবে যে কোন ঘটনাকে পাঁচটি প্রশ্নের উত্তরে সাজাতে হবে। এই প্রচলনের উপর যথেষ্ট সম্মান রেখেই আপনাকে একই জিনিস মনে করিয়ে দিতে চাই। যে কোন ঘটনার উপর প্রতিবেদন করার আগে আপনাকে কি? কোথায়? কিভাবে? কখন? এবং কেন? এই পাচটি প্রশ্নের আলোকে সাজাতে হবে। আশা করি সেটা আপনার জন্য তেমন কঠিন কোন বিষয় নয়।


২য় অধ্যায়

এবারে আপনাকে কিছু গুরুত্ব পুর্ন শব্দ মালার সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি যেগুলো আপনার সফল সাংবাদিকতার অন্যতম চাবিকাঠি হিসেবে কাজ করবে। যেমন, প্রত্যক্ষদর্শি, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, নির্ভর যোগ্য সুত্র, এলাকা বাসী, গোপন সুত্র, সরেজমিনে দেখা যায়, অনেকেই মনে করেন, এলাকা বাসীর সাথে আলাপ কালে জানাযায়।

উপরোক্ত শব্দমালা গুলো আপনার চলার পথে যখন তখনই প্রয়োজন হবে তাই এগুলোর যথাযথ ব্যবহার রপ্ত করুন।

উদাহরন_ধরুন সাভারে দুই রাজনোইতিক দল সি এন জি এবং জি এম টি দলের সাথে সংঘর্ষ হয়েছে। এখন আপনাকে যদি বলা হয় সি এন জি দলকে ডূবাইতে হবে তাহলে এভাবে খবর লিখুন, গতকাল রাজধানীর সাভারে সি এন জি দলের কর্মিদের সাথে জি এম টি দলের সমর্থকদের ব্যাপক ধাওয়া পালটা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। (এবার এটা ওটা যা লেখার লিখুন এবং ক জন আহত হল এবং কজন নিহত হল তা লিখুন, এখানে খেয়াল রাখতে হবে নিহতের সংখ্যা সঠিক রাখতে হবে কিন্তু আহতের সংখ্যা আপনাকে যেন জি এম টি দলের অনুকুলে যায় সে অনুপাতে লিখতে হবে) এবার ঘটনার বর্ননায় আপনাকে এই শব্দমালার সাহায্য নিতে হবে।
উদাহরন - প্রত্যক্ষদর্শিদের সাথে কথা বলে যানা যায় যে জি এম টী দলের কর্মীরা তাদের নিজস্ব টেন্টে বসে আড্ডাদেয়ার সময় হঠাৎ করেই সি এন জি দলের এক কর্মি রাসেল ঐ পথ দিয়ে হেটে যাবার সময় জি এম টি দলের সদস্যদের উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করে। এতে জি এম টি দলের সদস্যরা ঐ কর্মিকে আদর করে বুঝাতে গেলে অদুরেই দাঁড়িয়ে থাকা সি এন জি দলের ক্যডার রা জি এম টি দলের কর্মিদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে।
এবার মনে করেন আপনাকে বলা হল সি এন জি দলের প্রধান জমির আলীকে ডুবাইয়া এক খান রিপোর্ট করতে হবে তাইলে আপনেকে উপরের শব্দমালার দারস্থ হইতেই হইবে

উদাহরন
শিরোনমটা অবশ্যই আকর্ষনীয় হতে হবে যেমন কিছুটা এই রকম “সিলেটের টেন মার্ডারের পেছনে কলকাঠী নেড়েছেন সি এন জি দলের প্রধান”

কৌশল
কেন সি এন জি দলের প্রধানের নাম না লিখে শুধু পদবীর কথা লেখবেন?
কারন হল একঢিলে একাধিক পাখি মারা হবে, এখানে সি এন জি দলের মান ইজ্জত ও ঐ দলের প্রধানের মান ইজ্জত নিয়া টানাটানি পড়ে যাবে। শিরোনামেই উদ্দেশ্য হাসিলের এই কৌশল ছাড় দিলেই আপনার ক্ষতি।

এবার দেখুন কিভাবে ঐ শব্দগুলো দিয়ে পর্নাঙ্গ একটা রিপোর্ট তৈরি করা যায়। 

ডেস্ক রিপোর্টঃ সিলেটের আলোচিত টেন মার্ডারের নেপথ্যের নায়কদের নাম বারিয়ে আসছে। গতমাসে গ্রেফতার হওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসী পাতলা জলিল কে জজ্ঞাসাবাদে জানা যায় সিলেটের টেন মার্ডারের পেছনে জড়িত আছেন সি এন জি দলের কতিপয় শীর্ষ নেতা। দু সপ্তাহ আগে পাতলা জলিলকে জিজ্ঞাসাবাদে এরকম তথ্য পাওয়া গ্যেছে বলে জানিয়েছেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা। পাতলা জলিলের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশের একটি গোয়েন্দা দল তৎক্ষনাৎ সিলেটে ছুটে যান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ডিবি কর্মকর্তার তরফ থেকে জানা যায় যে তদন্তকারীদল পাতলা জলিলের দেয়া তথ্যের পক্ষে কিছু আলামত পেয়েছেন। গত সপ্তাহের প্রথম দিকের সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের আই জি শিমুল কান্তি বলেছিলেন পাতলা জলিলের কাছ থেকে সিলেটের টেন মার্ডারের ব্যপারে কিছু গুরুত্ব পুর্ন তথ্য পাওয়া গেছে। ঐ সংবাদ সম্মেলনের পর গত কাল ডিবি পুলিশের ঐ কর্মকর্তা আমাদের প্রতিবেদক কে এমন তথ্য দিলেন। ঐ খবরের ভিত্তিতে আমাদের দৈনিক জমকালো পত্রিকার একদল সাংবাদিক সিলেটে যান এবং এলাকা বাসীর সাথে কথা বলে জানতে পারেন যে সি এন জি দলের প্রধান জমীর আলীর সেক্রেটারীর সাথে নিহত দশনেতার সাথে টেন্ডার সংক্রান্ত মতবিরোধ চলছিল। এদিকে কয়েকটি নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা গেছে যে পাতলা জলিলের এমন তথ্য প্রদানের এবং ডিবি পুলিশের এমন অগ্রগতির খবর সি এন জি দলের প্রধান জমির আলি সমমনা পুলিশের কর্মকর্তা ও আইনজীবিদের দারস্থ হচ্ছেন………………………… এভাবে লিখে ফেলুন কয়েক পৃষ্ঠা।

৩য় অধ্যায়
এবার উক্তি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কিছু মেধার পরিচয় দিতে হবে। ধরুন কোন রাজনৈতিক নেতার শাক্ষাৎকার নিচ্ছেন, শাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে তিনি বললেন, “রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে বাংলাদেশ আজ বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তাই এই দেশ কে নতুন করে গড়ে তুলতে হলে আমাদেরকে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বের তৈরীতে মনযোগী হতে হবে”

এখন আপনাকে যদি বলা হয় এই রাজনৈতিক নেতাকে যেভাবেই হোক জনগনের কাছে ঘৃণীত করে তুলতে হবে তাহলে আপনার প্রতিবেদনের শিরোনাম হবে এরকম “বাংলাদেশকে বসবাসের অযোগ্য বললেন অমুক নেতা” এই খবরকে আরও মুখরোচক করতে আরও একটি রিপোর্ট লিখে ফেলতে পারেন এই শিরোনামে “দেশকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করলেন অমুক নেতা” আবার অন্যভাবেও লিখতে পারেন যেমন “দেশ দ্রোহী মন্তব্য করলেন অমুক নেতা”

এর পর দেখুন কি হয়, বাঙ্গালী বলে কথা, হুজুগে পড়ে ঘৃনাতো আছেই ফাসীর কাষ্ঠে ঝুলানোর দাবীও উঠবে এই নেতার বিরুদ্ধে। আর আপনার পদবী? দেখুন না লাফিয়ে কোথায় উঠে!!

আবার যদি আপনাকে বলা হয় যে এই নেতাকে জনপ্রিয় করে তুলুন তাহলে শিরোনামটি এভাবে লিখতে পারেন, “নতুন করে দেশ গড়ার আহবান জানালেন অমুক নেতা” আবার এভাবেও শিরোনামটি লিখতে পারেন “সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বের তৈরীর শপথ ঝরে পড়লো নেতার কন্ঠে”।

লিখেছেন: শামীম শুভ্র

Wednesday, December 19, 2012

নেফারতিতি

0 comments
প্রাচীন মিসরীয় সভ্যতায় বিখ্যাত রানীদের মধ্যে নেফারটিটি ছিলেন অন্যতম। তিনি ছিলেন ফারা আখেনাটেন-এর স্ত্রী। মিসরীয়দের ধর্মীয় আচরণে আখেনাটেন যে পরিবর্তন ঘটিয়েছিলেন, তাতে নেফারতিতিরও সহযোগিতা ছিল। মিসরীয় সভ্যতার প্রধান দেবতা হিসেবে আমরা সূর্যকে জানলেও আগে মিসরে বহু দেবতা পূজা করার প্রচলন ছিল। আখেনাটেনও নেফারতিতির উদ্যোগেই মিসরীয়রা সূর্যকে একমাত্র দেবতা হিসেবে পূজা করতে শুরু করে। অর্থাৎ মিসরে বহু দেবতার বদলে এক ঈশ্বরের পূজা প্রচলিত হয়। তবে নেফারটিটি অন্য দেবতাদেরও শ্রদ্ধা করতেন। প্রাচীন মিসরীয় পুঁতিপত্রে নেফারতিতিকে খুশি, আনন্দ বা ভালোবাসার প্রতীক হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়েছে।

বার্লিনের নিউইস জাদুঘরে রাখা তার মূর্তিটি তৈরি করেছিলেন ভাস্কর থুটমোস। এই মূর্তিটি থেকে সে যুগের মিসরের শিল্পকলা সম্বন্ধে অনেক তথ্য জানা যায়।

Sunday, December 16, 2012

বলপয়েন্ট কলম

0 comments
Bolígrafo birome II editআজকার বাজারে যত ধরনের কলম পাওয়া যায় আজ থেকে মাত্র শ দুয়েক বছর আগেও কলমের মতো প্রয়োজনীয় বিষয়টা এতটা সহজলভ্য ছিল না। বরং কাগজে কলমের আঁক বসানোর জন্য আর সুন্দর করে কোনো একটা কিছু লেখার জন্য সে সময়ের মানুষকে বহু ঝক্কি পোহাতে হতো। এর একটা বড় কারণ ছিল কলমে কালি ভরা এবং সেই কালি অনিয়মিতভাবে বেরুনোর কারণে কাগজে অনিচ্ছাকৃত দাগ পড়ে যাওয়ার মতো বিষয়গুলো। আর সেদিনের সেই অবস্থা থেকে হালে বহুল ব্যবহূত বলপয়েন্ট কলম এর আবিষ্কারের পেছনে যেমন অবদান রয়েছে বহু আবিষ্কারকের তেমনি এর রয়েছে দীর্ঘ বিবর্তনের ইতিহাসও। এই কলমের যাত্রা শুরু ১৮৮৮ সালে। সে সময় জন লাউড নামে আমেরিকার এক চামড়া ব্যবসায়ী প্রথম এক ধরনের বলপয়েন্ট কলম উদ্ভাবন করে এর স্বত্ব নেন। সেই কলমের একটি ছোট খোপে তরল কালি রাখা হতো। সেখান থেকে কালি কলমের মাথায় নেমে আসত। মাথায় লাগানো ছিল রোলার বল টিপ। ওটা কালি সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করত। বলা চলে এই জন লাউডের হাত ধরেই প্রথমবারের মতো বলপয়েন্ট কলমের ধারণা পায় মানুষ। যদিও স্রেফ উদ্ভাবনে আটকে থেকে এর বাণিজ্যিক উত্পাদনের দিকে মনোযোগ দেননি লাউড। আর তাই আবিষ্কারের পর তা হাতে নেওয়ার সুযোগও হয়নি সে সময়কার মানুষের। জন লাউডের এই আবিষ্কারের পরের ত্রিশ বছরে আরও ৩৫০টি বলপয়েন্ট কলমের প্যাটেন্ট আবেদন গৃহীত হলেও সেগুলোর কোনোটাই খুব একটা কার্যকর ছিল না। বরং প্রতিটি কলমের জন্যই প্রধান সমস্যা হয়ে দেখা দিত কালি। কারণ কালি বেশি তরল হলে বলের ফাঁক দিয়ে তা চুঁইয়ে বেরিয়ে আসত। আবার কালি ঘন হলে লেখার সময় প্রয়োজনীয় পরিমাণে কালি নেমে আসত না। এ ছাড়া আবহাওয়ার তারতম্যের কারণেও কালির ঘনত্ব বেড়ে বা কমে যেত। তাই সে সব কলম কখনও ব্যাপকভাবে উত্পাদিত হয়নি। এ বাস্তবতায় বল পয়েন্টের ইতিহাসে যুক্ত হন হাঙ্গেরির জর্জ ও লেডিসলাস বিরো নামের দুই ভাই। ১৯৩৫ সালে তারা সত্যিকার অর্থে একটি উন্নতমানের বলপয়েন্ট কলম আবিষ্কার করেন এবং ১৯৪৩ সালে তারা আর্জেন্টিনায় বিশ্বের প্রথম বলপয়েন্ট কলমের কারখানা প্রতিষ্ঠা করেন। যদিও এই কলমেও থেকে যাওয়া কিছু ত্রুটি সারিয়ে সত্যিকারের কর্মক্ষম বলপয়েন্ট আবিষ্কারের কৃতিত্ব আমেরিকার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সিকাগোর অধিবাসী এবং পেশায় নাবিক মিল্টন রেনল্ডস আর্জেন্টিনা থেকে কয়েক ধরনের বিরো বলপয়েন্ট কলম আমেরিকায় নিয়ে আসেন এবং তার হাত ধরেই বিরো ভাইদের বানানো বলপয়েন্ট কলমের অবশিষ্ট ত্রুটিগুলো দূর হয়। আর সবদিক দিয়ে ত্রুটিমুক্ত একটি কলম প্রথম বাজারে আসে ১৯৪৫ সালে। যদিও প্রথমদিকের একেকটি বলপয়েন্টের জন্য ক্রেতাদের প্রায় সাড়ে বারো ডলারের মতো উচ্চমূল্যই পরিশোধ করতে হতো।

Friday, December 14, 2012

ই-মেইল মার্কেটিং

0 comments
ইমেইল মার্কেটিং বলতে সহজে বোঝায় ইমেইলের মাধ্যমে ক্রেতা বা গ্রাহক সংগ্রহ করা। ক্রেতা বলতে কোন পণ্য বিক্রি করবেন তার কাছে শুধু এমনটিই নয়। এফিলিয়েট প্রোগ্রাম ব্যবহার করে মেইলে দেয়া লিংক ক্লিক করলেও আপনি অর্থ পেতে পারেন। সাধারনত তিনভাবে ইমেইল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আয় করা সম্ভব।
১. Pay per sale : কোন ব্যক্তি যখন কিছু কেনে।
২. Pay per lead : কোন ব্যক্তি যখন ফরম পুরন করে ।
৩. Pay per click : এবং কোন ব্যক্তি যখন লিংকে ক্লিক করে।
এই ৩টির মধ্যে প্রথমটিতে সবচেয়ে বেশি অর্থ পাওয়া যায় এবং সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। তবে এই ইমেইল মার্কেটিংয়ে সাফল্য অর্জন করতে হলে কয়েকটি বিষয় খুবই গুরুত্বের সাথে পরিচালনা করতে হয়।

প্রথমত ইমেইল সংক্রান্ত তালিকা ব্যবস্থাপনা :
১. পরিচিত এবং রিলেটেড ইমেইলগুলো নিয়ে একটি দীর্ঘ এবং সুনির্দিষ্ট ইমেইলের তালিকা প্রস্তুত করা।
২. অনুসন্ধান যোগ করা, মুছে ফেলা হবে অথবা যে কোন সময়ে প্রয়োজনে আপনার পরিচিতিগুলি পরিবর্তন করা।
৩. প্রত্যেক গ্রাহকের জন্য কাস্টম ক্ষেত্র, এবং অন্যান্য যোগযোগ সরাসরি ইমেইলের ডাটাবেস থেকে করা।
৪. সহজে এক্সেল ফাইল থেকে আপনার তালিকা প্রয়োজন হলে এক্সপোর্ট করা।
৫. বিভিন্ন সঠিক প্রচারাভিযানের জন্য তালিকার অংশ নির্দিষ্টকরণ।

দ্বিতীয়ত ইমেইলের মাধ্যমে বিপণন প্রচারাভিযান :
১. ইমেইল প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে টেক্সট এডিটর ব্যবহার করা।
২. তালিকা একত্রীকরণ ট্যাগ ব্যবহার করে আপনার ইমেইল Personalizing করা।
৩. তালিকাভুক্ত ইমেইল অক্ষর (একটি প্রচারণা এবং তৈরি করার সময় এটি পাঠাতে পরে সময় সেট) পাঠানোর.
৪. স্বয়ংক্রিয় responders নির্মাণ এবং বিপণন প্রচারণা অনুসরণ করা।
৫. আপনার মেইলটি স্প্যাম হিসেবে ট্যাগ করে কিনা অনুধাবন করা।

তৃতীয়ত ইমেইল নিউজলেটারের ব্যবহার :
ইমেইল নিউজলেটার একটি ক্ষমতাশীল এবং শক্তিশালী মার্কেটিং কমিউনিকেশন টুল যার বিভিন্ন দরকারী ফাংশন আছে। এটি আপনার ব্যবহারকারীদের আপনার পণ্য সম্পর্কে অবগত করে এবং এটির সাহায্যে আপনি তাদের সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেন। এছাড়া আরো কিছু বিষয় আছে ইমেইল নিউজলেটার ব্যবহারের।
১. ই মেইলের আউটলুক ওয়েব ভিত্তিক না।
২. ই মেইল গুলি পড়তে সহজ হয়।
৩. সহজে স্বনির্ধারিত নিউজলেটার।
৪. চমৎকার ডিজাইন এবং বন্ধুত্বপূর্ণ ইমেইল টেমপ্লেট।
৫. মিডিয়া বন্ধুত্বপূর্ণ টেমপ্লেট।
৬. কাস্টমাইজডই মেইল তৈরি করা।

চতুর্থত নিয়মিত অনলাইন পরিদর্শনে থাকা :
অনলাইন সার্ভে এখন খুবই কার্যকর অনুশীলন। ক্লায়েন্ট প্রদর্শন করা, তাদের মতামত নেয়া এবং প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় তথ্য জড়ো করার ক্ষেত্রে Mailigen ইমেইল সার্ভে পাঠানোর জন্য নিম্নলিখিত ভূমিকাগুলি উপলব্ধ করা হয়:
১. আপনার ইমেইল মার্কেটিং ক্যাম্পেইন সার্ভে একীভূত করা।
২. স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইমেইল প্রত্যুত্তর প্রেরণ এবং ইমেইল অনুসরণ করা।
৩. সহজে নকশা ও রঙের স্কীম customizing।
৪. স্বয়ংক্রিয়ভাবে তালিকায় ডাটাবেসের মধ্যে উত্তর সংরক্ষণ করা।
৫. সার্ভে টেমপ্লেট এবং আপনার নিজস্ব টেমপ্লেট তৈরি করা।
এছাড়া মনে রাখতে হবে ইমেইলে সব সময় সংক্ষিপ্ত এবং গঠনমূলক বক্তব্যের সন্নিবেশ থাকতে হবে। হেডলাইন আকর্ষণীয় হতে হবে। প্রতিনিয়ত ধারাবাহিকভাবে ধৈর্যের সাথে এই মার্কেটিং পরিচালনা করলে আপনার সাফল্য সুনিশ্চিত।

যে যোগ্যতা প্রয়োজন
ইমেইল মার্কেটিংয়ের জন্য বিশেষ কোনো যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না। এখানে মূলত অন্যদের সাথে আপনি যতটা সখ্যতা গড়তে পারবেন সেটাই আপনার জন্য সহায়ক হবে। মার্কেটিংয়ের বিষয়গুলো মেনে চললেই আপনার সফলতা আসবে।

প্রশিক্ষণ যেখানে নিবেন
ইমেইল মার্কেটিং বিষয়ে ডেভসটিম ইনস্টিটিউট আয়োজন করেছে প্রায় দেড় মাসের প্রশিক্ষণ কোর্স (মোট ১০টি ক্লাস )। তাত্বিক ও বাস্তবভিত্তিক এ প্রশিক্ষণ করেই আপনি ইমেইল মার্কেটিংয়ে আপনার ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন।

DevsTeam, Suit# 1212, Level#12, Multiplan Complex, 69-71 Elephant Road, Dhaka-1205.
Phone: 01911-464710, 01711-267911

Wednesday, December 12, 2012

মুক্তিযুদ্ধের পোস্টার

0 comments
১৯৭১-উত্তাল দিনগুলোতে, মুক্তিকামী বাঙালিকে সাহস জোগাতে শিল্পীরা ক্যানভাস রাঙান প্রতিবাদী তুলিতে। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিপ্লবের পর পোস্টার প্রকাশনার বিস্তার ঘটে। ১৮৬৪ সালে কলকাতায় সরকারি আর্ট কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। তৎকালীন এ প্রতিষ্ঠানের প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন অন্নদা প্রসাদ বাগচী। ওই প্রতিষ্ঠানের লিথো গ্রাফ পদ্ধতিতে ছাপানো পোস্টার তৎকালীন সময় প্রচুর জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এসব পোস্টারে মূল বিষয় ছিল দেবদেবী, মনীষী ও পৌরাণিক কাহিনী। ভারত বিভক্তির পর ১৯৪৭ সালে পূর্ব পাকিস্তানে হাতেলেখা পোস্টারই বেশি চোখে পড়ে। উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রচারের পর পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন মিছিল, মিটিং ও সমাবেশে যেসব পোস্টার দেখা যেত তা মূলত হাতে লেখা পোস্টারই ছিল।

১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে সচিবালয়ের পাশে প্রথম হাতেলেখা পোস্টার নিয়ে মিছিল করতে দেখা যায়। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ৬৬ সালের স্বাধিকার আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে হাতেলেখা পোস্টারই চোখে পড়ে বেশি এবং এর ধারাবাহিকতা ছিল ১৯৭০ সালের নির্বাচন পর্যন্ত। এছাড়াও ১৯৭১ সালের অসহযোগ আন্দোলনের সময়ও এ ধরনের পোস্টার দেখা গেছে। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন পরবর্তী সময়ে নারায়ণগঞ্জে এক পোস্টার আঁকাকে কেন্দ্র করে মুস্তাফা মনোয়ার জেল খেটেছিলেন। ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে ইমদাদ হোসেনের আঁকা বেশকিছু পোস্টার জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। ১৯৭০-এর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে 'সোনার বাংলা শ্মশান কেন' শীর্ষক পোস্টারটি সাড়া জাগিয়েছিল। ৬০-এর দশকের শুরুতে এক রঙের অফসেট মেশিনে পোস্টার ছাপা হয়। তৎকালীন যে প্রেসগুলো পোস্টার ছাপানোর কাজ করত এগুলো হলো_ পাকিস্তান কো-অপারেটিভ বুক সোসাইটি প্রেস, রিগ্যাল প্রেস, আর্টপ্রেস। ১৯৭০ সালে বাঙালির নিরঙ্কুশ বিজয় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী মেনে নিতে পারেনি। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাতে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী অন্যায়ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে নিরীহ বাঙালিদের ওপর। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।

রং-তুলির আঁচড়ে ক্যানভাস রাঙিয়ে, সাত কোটি বাঙালীর মাঝে স্বাধীনতার আগুন ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সে সময়কার শিল্পীরা। পটুয়া কামরুল হাসানের, এই জানোয়ারদের হত্যা করতে হবে কিংবা নিতুন কুন্ডুর সদা জাগ্রত বাংলার মুক্তিবাহিনী শীর্ষক পোস্টার অন্যরকম সঞ্জীবনী শক্তিতে উদ্বুদ্ধ করেছিল মুক্তিপাগল বাংলার মানুষকে।


এই জানোয়ারদের হত্যা করতে হবে


পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট, মানুষরূপী হায়েনা ইয়াহিয়া খানের বীভৎসতা ভাষায় প্রকাশ অসম্ভব। শিল্পী কামরুল হাসান সাদা ক্যানভাসে, কালো তুলির আঁচড়ে, ফুটিয়ে তুলেন নরঘাতক ইয়াহিয়া’র স্বরূপ।

এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম


সাতই মার্চে, যার অগ্নিঝরা ভাষণে উথাল-পাথাল হয়ে ওঠেছিল ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল, সেই মহান নেতা, শতবর্ষের অবিসংবাদিত শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে এ পোস্টার।

বাংলার হিন্দু, বাংলার খ্রিস্টান, বাংলার বৌদ্ধ, বাংলার মুসলমান আমরা সবাই বাঙালি


যুগ যুগ ধরেই, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা বিধৌত গাঙ্গেয় এ ব-দ্বীপ, হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান নির্বিশেষে সাম্প্রাদিয়ক সম্প্রীতির অনন্য এক উদাহরণ। ৭১-এর রক্তঝরা দিনগুলোতেও, ব্যতয় ঘটেনি। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে, রণক্ষেত্রে ঝাঁপিয়ে পড়ে ধর্মের মানুষ।


বাংলার মায়েরা মেয়েরা সকলেই মুক্তিযোদ্ধা


লাখো মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে, অর্জিত হয় বাংলার স্বাধীনতা। যুদ্ধ ময়দানে, এদেশের নারীদের অবদানের কথা অনস্বীকার্য।

সদা জাগ্রত বাংলার মুক্তিবাহিনী


দিন-রাত, সকাল-সন্ধ্যা, শীত-গ্রীষ্ম-প্রকৃতির বৈরীতা কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে, বুকের রক্ত বিলিয়ে স্বাধীনতা এনেছে যারা, তাদের দৃঢ়, সংকল্প অনমনীয়তা ফুটে ওঠে নিতুন কুণ্ডুর এ পোস্টারে।





দেশের সীমানা পেরিয়ে, আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে, বিশেষ ভূমিকা রাখে সেদিনের সে পোস্টারগুলো। পাক হানাদারদের নৃশংস হত্যাযজ্ঞ নাড়া দিয়েছিল ভিনদেশী শিল্পীদেরও। তাদের আঁকা বেশ কিছু ছবি তখন প্রকাশিত হয় বিদেশী পত্র-পত্রিকায়। দ্রোহের আগুনে স্বাধীনতার চেতনা ছড়িয়ে, পোস্টারগুলো হয়ে ওঠে মুক্তিযুদ্ধের অসামান্য দলিল।
(C) Fazle Rezowan Karim Picture Source: Internet

Tuesday, December 11, 2012

ফাসিয়াখালী, চকোরিয়া, কক্সবাজার

0 comments
বাংলাদেশের যে কয়টি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য আছে সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হলো ফাসিয়াখালী। পর্যটন শহর কক্সবাজার থেকে প্রায় চল্লিশ কিলোমিটার উত্তরে চকোরিয়া উপজেলায় এ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যটির অবস্থান। আয়তনে খুব একটা বড় না হলেও এ অভয়ারণ্যের সর্বত্র জীব বৈচিত্র্যে ভরপুর। কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের চকোরিয়া এলাকার ফাসিয়াখালী রেঞ্জের অধীন এ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যটি। ১৯৭৪ সালের বন্যপ্রাণী আইনানুসারে ২০০৭ সালের এপ্রিলে এটিকে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ফাসিয়খালী ও ডুলাহাজারা ব্লকের প্রায় ১৩০২ হেক্টর এলাকাজুড়ে এ অভয়ারণ্যেও বিস্তৃতি। ফাসিয়াখালী বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যটির বেশিরভাগ এলাকাই পাহাড়ি বনাঞ্চল।

গ্রীষ্মমণ্ডলীয় চিরসবুজ এ বনাঞ্চলের প্রধান বৃক্ষ গর্জন। জঙ্গলের যে দিকেই চোখ যায় বিশাল বিশাল আকাশচুম্বী গর্জন গাছের দেখা মেলে। নানান গাছপালা আছে এ বনে। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সেগুন, শাল, বট, আকাশমণি, হারগোজা, হরিতকি, চাঁপালিশ, বহেরা, বাঁশ প্রভৃতি।

এশিয়ান হাতিসহ নানান প্রাণীরা অবাধ বিচরণ করে ফাসিয়াখালী বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে। বাংলাদেশের অতি বিপন্ন একটি বন্যপ্রাণী উল্লুক এ বনে কদাচিত্ দেখা মেলে। এ ছাড়াও এ জঙ্গলে সাধারণত দেখা মেলে লাল মুখ বানর, মুখপোড়া হনুমান, সজারু, খেঁকশিয়াল, মায়াহরিণ, বন্যশুকর, শিয়াল ইত্যাদি। এ ছাড়া এ বনের বাসিন্দার তালিকায় আছে নানান জাতের শাপ আর সরীসৃপ। নানান পাখিরও অভায়শ্রম ফাসিয়াখালী। এ অভয়ারণ্যে দেখা মেলে কাঠঠোকরা, ধনেস, টিয়া, বন মোরগ, লাল মৌটুসি, মথুরা, ঘুঘু, নীলকণ্ঠী, পাহাড়ি ময়না, ফিঙ্গে, বুলবুলি ইত্যাদি।

কীভাবে যাবেন

ফাসিয়াখালী বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে যেতে প্রথমে আসতে হবে কক্সবাজার। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশেই এ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যটি। ঢাকা থেকে কক্সবাজারের বাসে চড়ে অভয়ারণ্য এলাকায়ও নামতে পারেন। আবার কক্সবাজার থেকে লোকাল বাসে চড়েও আসতে পারেন। সড়কপথে ও আকাশপথে ঢাকা থেকে সরসরি কক্সবাজার আসা যায়। এ পথে গ্রিন লাইন, সৌদিয়া, সোহাগ, হানিফ, টিআর, বাগদাদ ইত্যাদি পরিবহন সংস্থার তাপনিয়ন্ত্রিত বিলাসবহুল বাস চলাচল করে। ভাড়া ১২৫০ টাকা ১৮৫০ টাকা। এ ছাড়া এস আলম, সৌদিয়া, শ্যামলী, ইউনিক, ঈগল, হানিফ ইত্যাদি পরিবহনের নন-এসি বাসও চলে এ পথে। ভাড়া ৭০০-৮৫০ টাকা। এ ছাড়া ঢাকা থেকে বাংলাদেশ বিমান, ইউনাইটেড এয়ার, জিএমজি এয়ার ও রিজেন্ট এয়ারের বিমানে সরাসরি যেতে পারেন কক্সবাজার।

কোথায় থাকবেন

ফাসিয়াখালী অভয়ারণ্য এলাকার সবচেয়ে কাছের থাকার ভালো জায়গা হলো চকোরিয়া উপজেলার হারবাংয়ে ইনানী রিসোর্ট। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে চলাচলকারী বাসগুলো সাধারণত এখানে যাত্রা বিরতি করে থাকে। এ ছাড়া কক্সবাজারে থাকার জন্য এখন প্রচুর হোটেল রয়েছে। ধরন অনুযায়ী এসব হোটেলের প্রতি দিনের কক্ষ ভাড়া ৮০০-২০০০০ টাকা। পাঠকদের সুবিধার জন্য নিচে কয়েকটি হোটেলের ফোন নম্বর দেওয়া হলো। কক্সবাজারে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের রয়েছে হোটেল শৈবাল (০৩৪১-৬৩২৭৪), মোটেল উপল (০৩৪১-৬৪২৫৮), মোটেল প্রবাল (০৩৪১-৬৩২১১), মোটেল লাবনী (০৩৪১-৬৪৭০৩)। পর্যটন কর্পোরেশনের ঢাকাস্থ হেড অফিস থেকেও এসব হোটেলের বুকিং দেওয়া যায়। যোগাযোগ :৮৩-৮৮, মহাখালী বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা। ফোন :৯৮৯৯২৮৮-৯১। এ ছাড়া অন্যান্য হোটেল হলো হোটেল সি-গাল (০৩৪১-৬২৪৮০-৯১), ঢাকা অফিস ০২-৮৩২২৯৭৩-৬; হোটেল ওশান প্যারাডাইস (০৩৪১-৫২৩৭০, ৫২৩৭৯), ঢাকা কার্যালয় ০২-৮৪১৫৩৯৭; হোটেল লং বিচ (০৩৪১-৫১৮৪৩-৬), ঢাকা কার্যালয় ০২-৯৫৫৭৫৪৫, ফ্যাক্স +৮৮০২-৭১৬৯৬৫৬; হোটেল কক্স টুডে (০৩৪১-৫২৪১০-২২), ঢাকা কার্যালয় ০২-৯৮৮২৬৩৮; হোটেল সি প্যালেস (০৪৩১-৬৩৬৯২, ৬৩৭৯২), ঢাকা কার্যালয় ০২-৯৬৭২৮৭৬; হোটেল কোরাল রিফ (০৩৪১-৬৪৭৪৪-৫); ইউনি রিসোর্ট (০৩৪১-৬৩১৮১); হোটেল সিলভার সাইন (০৩৪১-৬৪৮৯৩-৪); হোটেল মিডিয়া ইন্টারন্যাশনাল (০৩৪১-৬২৮৮১-৫); হোটেল সি ক্রাউন (০৩৪১-৬৪৭৯৫, ৬৪৪৭৪); হোটেল মিশুক (০৩৪১-৬৪৩২০)।

জঙ্গল ভ্রমণে কী করবেন

জঙ্গলে ভ্রমণে সব সময় হালকা কাপড় ও জুতা এবং কেমোফ্লাজ রঙের কাপড় পরিধান করবেন। রোদ চশমা, রোদ টুপি, ছাতা, পানির বোতল সঙ্গে নেবেন। বর্ষায় ভ্রমণে গেলে অবশ্যই রেইনকোট কিংবা পঞ্চ সঙ্গে নিন। পোকা-মাকড় ও মশার হাত থেকে বাঁচতে পতঙ্গনাশক ক্রিম সঙ্গে নিন। জোঁকের হাত থেকে বাঁচতে মোজার মধ্যে প্যান্ট গুঁজে নিন। দূরের বন্যপ্রাণী ও পাখি দেখতে দূরবিন নিতে পারেন। জঙ্গলে ভ্রমণকালীন সর্বোচ্চ নিরবতা অবলম্বন করুন। প্লাস্টিক জাতীয় প্যাকেট, বোতল, ক্যান সঙ্গে এনে বাইরে কোথাও ফেলুন।

জঙ্গল ভ্রমণে কী করবেন না

পিকনিক করতে জঙ্গলে যাবেন না। ভ্রমণে উচ্চ শব্দে মাইকে গান কিংবা কোনো কিছু বাজাবেন না। বন্যপ্রাণীরা বিরক্ত হয় এমন কোনো শব্দ কিংবা আওয়াজ করবেন না। ময়লা, প্লাস্টিক জাতীয় কোনো কিছু জঙ্গলে ফেলবেন না। বনে ধূমপান করবেন না।

লেখা মুস্তাফিজ মামুন
আলোকচিত্র সৈয়দ জাকির হোসেন

চরকুকরি মুকরি, ভোলা

0 comments
বাংলাদেশের একমাত্র দ্বীপ জেলা ভোলা শহর থেকে প্রায় ১২০ কিমি দূরে সাগর কোলের এক বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য চরকুকরি মুকরি। বঙ্গোপসাগরের তীরে মেঘনা ও তেতুঁলিয়া নদীর মেহানায় জেগে ওঠা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলা ভূমি এ অভয়ারণ্যে বেড়ানোর উপযুক্ত সময় শীতকাল।

জনশ্রুতি আছে প্রায় কয়েক শ বছর আগে এ দ্বীপের জন্ম। সে সময়ের জনমানবহীন এ জায়গাটিতে কুকুর আর ইঁদুর ছাড়া আর তেমন কিছুই দেখা যেত না। এ অঞ্চলে ইঁদুরের আরেক নাম মেকুর, নির্জন এ দ্বীপটি তাই পরিচিতি পায় চরকুকরি মুকরি নামে। ১৯৭২ ও ১৯৭৩ সালে চরকুকরি মুকরি এলাকায় বনায়নের কাজ শুরু হয়। মূলত এ চরাঞ্চলে শ্বাসমূলীয় গাছের চারা রোপণ করে বন তৈরি করা হয়। ঢালচর, পাতিলা এবং কুকরি মুকরি এ তিনটি বিটে বিভক্ত চরকুকরি মুকরি রেঞ্জ। বিটগুলো ১৮টি বিচ্ছিন্ন জঙ্গলের মধ্যে মূল কুকরি মুকরি বিটের অধীনে সাতটি জঙ্গল হলো—হলো চরদিঘল, চরজমির, চরসফি, চরপোটকা, চরপাতিলা, চরনিরালা, চরবদনা। এ চরের প্রধান আকর্ষণ এখানকার ম্যানগ্রোভ বা শ্বাসমূলীয় বনাঞ্চল আর প্রায় জনশূন্য পরিচ্ছন্ন সমুদ্র সৈকত। প্রায় ২০১৭ হেক্টর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত চরকুকরি মুকরি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। পুরো অভয়ারণ্যে কেওড়া গাছের আধিক্য রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এ বনের একাংশে সুন্দরী, গেওয়া, পশুর প্রভৃতি গাছ রোপণ করা হয়। এ ছাড়া অভয়ারণ্যের আশপাশের এলাকায় প্রচুর নারিকেল গাছ, বাঁশ আর বেত বনও দেখা যায়। এ বনে দেখা যায় চিত্রা হরিণ, বানর, উদবিড়াল, শিয়াল প্রভৃতি। ১৯৭৯ সালে চরকুকরি মুকরি বনে সর্বপ্রথম হরিণসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী অবমুক্ত করা হয়। পাখির মধ্যে বিভিন্ন প্রজাতির বক উল্লেখযোগ্য। অন্যান্য পাখির মধ্যে রয়েছে বন মোরগ-মুরগি, শঙ্খচিল, মথুরা, কাঠময়ূর, কোয়েল ইত্যাদি। এ ছাড়া সারা বছর এখানে কমবেশি নানা সামুদ্রিক পাখির আনাগোনা থাকলেও শীতে পুরো দ্বীপ পরিণত হয় পাখির অভয়ারণ্যে। চরকুকরি মুকরি অভয়ারণ্যে আছে নানা জাতের সরীসৃপ। এগুলো মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো গুঁইসাপ, বেজি, কচ্ছপ ও বিভিন্ন রকম সাপ। অভয়ারণ্য এলাকার পাশেই আছে জেলে পল্লী। মূলত ইলিশের মৌসুমে এ এলাকায় প্রচুর জেলে আসেন। এ ছাড়াও শীত মৌসুমেও অনেক জেলে আসেন এখানে।

কীভাবে যাবেন :চরকুকরি মুকরি যেতে হলে প্রথমে যেতে হবে ভোলা সদরে। ঢাকা থেকে ভোলা যাওয়ার জন্য প্রধান যোগাযোগ নদীপথ। ঢাকার সদরঘাট থেকে ভোলা যায় এমভি ফ্লোটিলা (০৪৯১-৬১২৩৬), এমভি সম্পদ (০৪৯১-৬১২৩৬), এমভি শ্রীনগর (০৪৯১-৫২৫২৩), এমভি বালীয়া (০১৭১১৯০৫৪৭১), এমভি লালী (০১৭১১৯০৫৪৭১), এমভি কর্ণফুলী (০৪৯১-৫১৩৫৪)। এসব লঞ্চে প্রথম শ্রেণীর দ্বৈত কেবিনের ভাড়া ৮০০-১০০০ টাকা, প্রথম শ্রেণীর একক কেবিন ৫০০-৭৫০ টাকা এবং তৃতীয় শ্রেণীর ডেকে ভাড়া ২০০-২৫০ টাকা।

ঢাকা থেকে প্রতিদিন বিকেলে ছেড়ে লঞ্চগুলো পরদিন সকালে ভোলা পৌঁছে দেয়। লঞ্চঘাট থেকে রিকশায় শহরের উপকণ্ঠে বাসস্ট্যান্ডে যেতে হবে। সেখান থেকে সকাল ৭টা থেকে ঘণ্টায় ঘণ্টায় চরফ্যাশনের বাস ছাড়ে। নামতে হবে চর আইচাতে। সময় লাগে ৪০ মিনিট।

এরপর রিকশায় কচ্ছপিয়া উপজেলা ট্রলার ঘাটে। সেখান থেকে ইঞ্জিন বোটে প্রায় দুই ঘণ্টা লাগে চরকুকরি মুকরি।

কোথায় থাকবেন :চরকুকরি মুকরিতে পর্যটকদের থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে বন বিভাগের বিশ্রামাগার, কোস্ট গার্ডের অতিথিশালা আর কিছু সাইক্লোন শেল্টার আছে। এসব জায়গায় থাকতে হলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে। এর বাইরে লোকালয়ে নিরাপদ কোনো স্থানে তাঁবু করে থাকতে পারেন। সে জন্য অবশ্যই বহনযোগ্য তাঁবুসহ ক্যাম্পিংয়ের যাবতীয় দ্রব্যাদি সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে।

 লেখা মুস্তাফিজ মামুন আলোকচিত্র রিদওয়ান আক্রাম

১ মিনিটে ইন্টারনেট দুনিয়ায় কি ঘটে

0 comments
ইন্টারনেট দুনিয়ায় 60 সেকেন্ডে মানে ১ মিনিটে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যায়, যা কিনা সত্যি কিন্তু অনেক আজবই মনে হবে।
চলুন দেখি কি ঘটে আমাদের এই অন্তর্জালেঃ-


--প্রতি ৬০ সেকেন্ডে ইউটিউবে ৬০০+ ভিডিও আপলোড হয় ।
--370,000+ মিনিট ভয়েস কল করা হয় Skype
দ্বারা
-- 13,000+ ঘন্টা অনলাইন রেডিও শোনা হয়
-- ৭০+ নতুন ওয়েবসাইট রেজিস্ট্রেশন হয় ।
-- 60 সেকেন্ডে গুগল জিনিয়াস
694.445 টি তথ্য খুজে দেয়।
-- ৩২০ টি টুইটার একাউন্ট খোলা হয়
টুইটারে এবং ৯৮০০০ টুইট জেনারেটেড হয় ।
-- আপনার মতো অনেকেই এই
60সেকেন্ডে ফেসবুকে; 695,000
টি স্ট্যাটাস আপডেট, 79,364
টি ওয়াল পোস্ট এবং 510,040
টি মন্তব্য করেন।
-- 168,000,000+ টি ই-মেইল পাঠানো হয়।
-- আইফোনের এপ্লিকেশন 13,000 এর অধিকবার
ডাউনলোড করা হয়।
-- 40 টি নতুন প্রশ্ন
Yahoo Answers.com
কে করা হয়।
--100+ নতুন প্রশ্ন answers.comএর
উপর বলা হয়।
-- ওয়ার্ডপ্রেস এর প্লাগইন 125 বার
ডাউনলোডকরা হয়।
-- 6,600+ ছবি flicr. com
আপলোড করা হয়।

Thursday, December 6, 2012

অদ্ভুদ সব আইন

0 comments
আইন নাগরিক জীবন, রাজনীতি, অর্থনীতি এবং সমাজের ভিত্তি নির্মাণের হাতিয়ার। ৩৫০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল লিখেছিলেন, ‘আইনের শাসন যে কোন ব্যক্তিশাসনের চেয়ে ভাল’।
আইনের চোখে সবাই সমান হলেও দেশ ভেদে আইনের ভিন্নতা দেখা যায়। দেশ-বিদেশে এমন কিছু আইন আছে যেগুলো অদ্ভুত বলে শনাক্ত করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
যেমন ধরা যাক হংকংয়ের কথা। সেখানে স্ত্রী পরকীয়া করলে স্বামী তাকে খুন করতে পারবে। তবে শর্ত একটাই, খুন করতে হবে খালি হাতে।
জাপানে কোনে মেয়েকে প্রণয়ের প্রস্তাব দিলে আইন অনুসারে মেয়েটি না বলতে পারবে না।  থাইল্যান্ডে ৩০ বছরের বেশি বয়সি অবিবাহিত নারী দেশের সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হবে।
দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় নতুন দেশ সামোয়াতে নিজের বৌয়ের জন্মদিন ভুলে যাওয়াটাই বে-আইনি।
পশুপালন পাশ্চাত্য-প্রাচ্যে খুব চলে। গৃহপালিত পশুরু নামকরণও হয়। এর তালিকায় শুকরও রয়েছে। কিন্তু ফ্রান্সে শুকরের নাম নেপোলিয়ান রাখা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ায় মেয়ের বাসরঘরে তার মায়ের (রেঁচে থাকলে) উপস্থিতি বাধ্যতামূলক।
যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলো চলে নিজস্ব আইন, রীতিপদ্ধতিতে। এক রাজ্যের আইন অন্য রাজ্যে মানার প্রয়োজন নেই। আর নিজস্ব আইন থাকায় কেন্দ্রের আইনও তোয়াক্কা করে না লোকে। কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের রয়েছে নিজস্ব এক অদ্ভুত আইন। তা হচ্ছে- যৌক্তিক কোনো কারণ না দেখিয়ে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করা যাবে না। রাজ্যের আইন এ কাজকে চুরির সামিল বলেই মনে করে। এবং এজন্য যে সাজা তা প্রতারণা বা ছিনতাইয়ের সাজার সমান।
ইন্ডিয়ানায় রোববারে গাড়ি বিক্রি করা আইনত দণ্ডনীয়। আরাকানসায় মাসে দুইবার বউ পেটালেই দণ্ড। তবে একবার বৌ পেটালে আইনে আটকাবে না। আর নেভাদায় বৌ পেটানো ধরা পড়লে আইন অনুসারে তাকে আধ ঘন্টা বেঁধে রাখা হবে। তার বুকে ‘বউ পিটিয়ে’ লেখা পোস্টার লাগিয়ে দেওয়া হবে।
আরিজোনায় সাবান চুরি করে ধরা পড়লে তার শাস্তি ওই সাবান দিয়েই নিজেকে ধুতে থাকবে যতক্ষণ না সাবান পুরো শেষ হয়।
শীতে তুষার জমে যায় রাস্তা-ঘাটে, আঙ্গিনায়। আর সেই তুষারে নেমে জমাট তুষার তুলে গোল্লা বানিয়ে ছুড়ে মারা একটি নির্দোষ খেলা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়ের কথা ভিন্ন। এখানে আইন করে বলা হয়েছে, শীতকালে কোনো শিশু জমে থাকা তুষার দিয়ে বল বানিয়ে গাছের দিকে নিক্ষেপ করতে পারবে না।
আর দেশটির দক্ষিণ প্রশান্তমহাসাগরীয় এলাকার ভুখন্ড গুয়ামের আইন হচ্ছে- কোনো কুমারি মেয়ে বিয়ে করতে পারবে না। এখানে কিছু পেশাদার পুরুষ আছে যারা অর্থের বিনিময়ে মেয়েদের কুমারিত্ব মোচন করে। পরে তাদের দেওয়া সনদ দেখিয়ে মেয়েদের বিয়ে হয়।

অমিয় দত্ত ভৌমিক