Saturday, April 28, 2012

হাড় কেন ভেঙ্গে যায়

0 comments
হাড ফোঁপরা হওয়ার কারণ সম্বন্ধে ইদানী অনেক কিছু জানা গেছে। মানব কংকালের গঠন বজায় রাখার জন্য দেহের অন্ত:ক্ষ বা গ্রন্থির রস হরমোনের নানান খেলার খবর জানা গেছে। এখন বোঝা যাচ্ছে হাড ভাঙ্গে কেন-এর প্রধান কারণ হাড় ফোঁপরা হওয়া। চিকিত্সার ভাষায় “অস্টিওপরোসিস”। হাড়গুলো দুর্বল হয়ে ফোঁপরা ও ভঙ্গুর হয়ে গেলে এর প্রতিটি ধরনের জন্য আছে নির্দিষ্ট চিকিত্সা। অস্টিওপরোসিসকে বার্ধক্যের একটি স্বাভাবিক অংশ বলেই ধরি আমরা, বেশির ভাগ মহিলার দৈহিক উচ্চতাও কম হয় এজন্য আবার পিঠ একটু কুজোও হয়। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এখন বুঝতে পেরেছেন, এটি আসলে ঘটে দুর্বল আস্থিকোষের সমতা নষ্ট হওয়ার জন্য। এক ধরনের অস্থিকোষ হলো অস্টিওক্লাস্টস্ যা ভেঙ্গে ফেলে পুরোনো হাড়, এবং অস্টিওব্লাস্ট যা গড়েতোলে নতুন হাড়। এই দ’ধরনের কোষ সমন্বিত ভাবে কাজ করে, যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হাড়গুলো মজবুত ও সুস্থ থাকে সারাজীবন। এই সমতা যখন চূর্ন হয় তখন ঘটে ‘অস্টিওপরোসিস।’ গত ১৫ বছর, বিজ্ঞানীরা সেসব ওষুধ নজরে রেখেছেন যেগুলো হাড়ের ক্ষয় ধীর করে। বিসফসকোনেট ধরণের ওষুধ। এমনকি ফোসাসেন্সের মত ওষুধ। আবার নতুন ওষুধও আছে যেগুলো হাড় গঠনে সহায়ক। এসব ওষুধ, বিসফসকোনেট বা অন্য ওষুধ যা অস্থিক্ষয় ধীর করে, এদের সঙ্গে কাজ করে একত্রে এবং সুস্থ সতেজ হাড়ের বাড়বাড়নের জন্য প্রয়োজনীয় সমতা পুনরায় সৃষ্টি করে।অন্যান্য গবেষকরা নতুন হাড় সৃজনের জন্য স্টেমকোষ প্রযুক্তি ব্যবহারের উপায় খুঁজে দেখছেন। অস্টিওপরোসিস চিকিত্সা বড় জরুরী। পৃথিবী জুড়ে অসংখ্য মানুষ অস্টিওপরোসিসের কারণে ফ্রাকচার হয়ে ভর্তি হচ্ছে হাসপাতালে। এদের মধ্যে অনেকেই আগে থেকে জানতে পারেন না যে, তাদের এমন হতে যাচ্ছে, কারণ বেশিরভাগ সময় অস্টিওপরোসিসের কোন উপসর্গ থাকে না। যখন জানান দেয় তখন হয়ত বা কবিজ ভেঙ্গেছে। বুড়োদের জন্য হাড় এভাবে আহত হলে তা মারাত্মক হতে পারে। ন্যাশনাল অস্টিওপরোসিস ফাউন্ডেশনের মতে, বয়স্ক লোক যাদের কোমরের হাড় ভেঙ্গেছে এদের ২০% মৃত্যু হয় এক বছরের মধ্যে। আর যারা বাঁচেন এদের বেশিরভাগ জীবন কাটান নার্সিং হোমে। তবে তরুণদের ও অস্থিফোপরা হলে অক্ষম করে দেয় জীবন। গত ২০ বছরে বিজ্ঞানীরা সনাক্ত করেছেন যাদের ঝুঁকি আছে, হাড় ফোঁপরা হওয়ার- ৬৫ বছর উর্দ্ধ মহিলা, ৭০ উর্দ্ধ পুরুষ, তরুণ যাদের ওজন ১২৭ পাউন্ডের নিচে, পাঁড় মাতাল ও ধূমপায়ী, আর এমন যারা গ্রহণ করেন কিছু ওষুধ যেমন স্টেরয়েড, স্তন ক্যান্সারের ওষুধ ও খিচুনির ওষুধ। হাড়ের ভাঙ্গন ও গড়ার কাজ শুরু হয় শৈশব থেকে, যখন অস্থির গঠন থাকে তুঙ্গে। বয়স ২০ হতে হতে, দুটোই চলে সমানতালে। ইতিমধ্যে হাড় যা গঠিত হবার হয়ে যায়। যারা খুব ব্যায়াম করেন, শৈশব থেকে ঠিকমত ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম পান, এদের হাড় হয় সগঠিত, বুড়ো হলে হাড়ের কষ্ট থাকে না। পুরুষদের হাড় গঠন ধীর হয়ে যাওয়া ঘটে ক্রমে ক্রমে, কিন্তু নারীদের ক্ষেত্রে, ঋতুবন্ধের পর এ প্রক্রিয়া ঘটে হঠাত্, নারীদের তখন ইস্টোজেন নেই, যা অস্থিক্ষয় রাখতো ঠেকিয়ে। এমন ক্ষতি-ক্ষয় প্রতিরোধ করতে হলে, যেসব রোগীর ঝুঁকি, এদের বোন্ ও মাস্ পরীক্ষা করানো উচিত। ২০০৭ সালে ফেব্রুয়ারী মাসে জার্নাল অব আমেরিকান মেডিকেল এসোসিয়েশনে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে ঋতুবন্ধ উত্তর নারীদের মধ্যে কোমরের অস্থি ভঙ্গের ঝুঁকি নির্ণয়ে নতুন এক স্কোরিং ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। ছোটখাট অস্থিক্ষয় ক্যালসিয়াম (৫০ উর্দ্ধ লোকের জন্য ১২০০ মিলি গ্রাম দৈনিক) ও ভিটামিন ডি (বয়স্কদের জন্য ৮০০-১০০০ আন্তর্জাতিক একক) দিয়ে চিকিত্সা করা যায়। ওয়েট-বেয়ারিং ব্যায়ামও হতে পারে। বুডোদের হাড় গঠনের জন্য। এসবে কাজ না হলে ওষুধ। বিস্ফসকোনেট অস্থিক্ষয় রোধের জন্য। আছে নতুন ওষুধ টেরিপেরিটাইড, অস্থিগঠনের, তবে অবশ্য ডাক্তারের পরামর্শে,সতর্কতার সঙ্গে। অন্যান্য বিজ্ঞানীরা অস্থিকোষগুলো খুটিয়ে দেখছেন যাদের গঠন, সংযুতি এবং গুণাগুণ ভালো ভাবে জেনে অস্টিওপরোসিস নিমূর্ল করা যাবে। জর্জিয়ায় বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ার-এর অধ্যাপক বাবরারা বয়ান বলেন, ‘এমন ধরনের গবেষণার শুরুতেরয়েছে আমরা।’ চিকিত্সার ব্যাপারে জেন্ডার পার্থক্য একটি বিষয় হতে পারে ভবির্ষতে।


লেখক: অধ্যাপক ডা: শুভাগত চৌধুরী

Thursday, April 26, 2012

দাড়ি কামানোর মজার সব তথ্য

0 comments
গড়পড়তায় একজন পুরুষ তার সারা জীবনে প্রায় ২০ হাজার বার দাড়ি কামিয়ে থাকেন। অর্থাৎ শুধু শেভের জন্য তিনি তার সারা জীবনে প্রায় ৩ হাজার ঘণ্টা সময় ব্যয় করেন। গড়পড়তায়, একজন পুরুষ তার জীবনে মুখমণ্ডলের প্রায় ৮ মিটার দাড়ি কামিয়ে থাকেন। শতকরা ৫০ ভাগেরও বেশি যুবক মুখমণ্ডলে শৌখিন ও আধুনিক বিভিন্ন ফ্যাশনে তাদের দাড়ি, গোঁফ রাখতে বা ছাঁটতে পছন্দ করেন। কয়েক বছর আগে ব্যতিক্রমী এক জরিপে জানা গিয়েছিল এরকমই বেশ কিছু মজার মজার তথ্য। বৈশ্বিক বাজারে শেভের বিভিন্ন উপাদান-সামগ্রীর বার্ষিক বাজার মূল্য ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি। আর এর ৭০ শতাংশই রয়েছে বিশ্বখ্যাত ‘জিলেট’ ব্র্যান্ডের একক দখলে। ২০ শতাংশ নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ‘শিক’ ও ‘উইলকিন্সন সোর্ড কোম্পানি’। জিলেটের এই একচ্ছত্র আধিপত্যের মূলে রয়েছে এর বিশ্বজোড়া গ্রহণযোগ্যতা ও সুখ্যাতি। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এর আধুনিক বিভিন্ন কার্যকরী ডিজাইন ও গুণগত মান নিয়ন্ত্রণে উন্নত প্রক্রিয়া আকৃষ্ট করেছে বিশ্বের বেশির ভাগ পুরুষকে। পুনরায় প্রতিস্থাপনযোগ্য কার্ট্রিজের বাজারেও জিলেট ব্র্যান্ডের অবস্থান শীর্ষে। কারণ, রিপ্লেসমেন্ট-কার্ট্রিজ বাজারের ৮৬ শতাংশ পণ্যই জিলেটের আধিপত্যে। এক্ষেত্রে ১৪ শতাংশ নিয়ে শিক অবস্থান করছে দুই নম্বর অবস্থানটিতে। আর, এ জরিপ চলাকালীন সময়ে জিলেট মাক-৩ রেজর ছিল বিশ্বের সব পণ্যসামগ্রীর মধ্যে সর্বাধিক বিক্রিত পণ্য।

বিডি রিপোর্ট ২৪

তাজহাট জমিদার বাড়ি, রংপুর

47 comments
হাতিশালে হাতি নেই, আস্তাবলে ঘোড়া নেই, নায়েব মশাইর ব্যস্ততা নেই, দূর-দূরান্ত থেকে আসা প্রজাদের আরজি নেই, খাজনা পরিশোধের তাগিদ নেই_ সবই আজ ইতিহাস। জমিদার বাড়ি ঘুরে এসে লিখেছেন ফখরুল ইসলাম
Tajhat Zomidar Bari, Rangpur, Bangladesh

৯৬ একর জায়গাজুড়ে বিশাল রাজবাড়ি। শান বাঁধানো দুটি বড় পুকুর। বিস্তীর্ণ বিশাল বাগান। সব কিছু সাজানো-গোছানো। সদর ফটক থেকে সোজা পথটি রাজবাড়ির সামনে এসে মিশেছে। পথই চিনিয়ে নিয়ে যাবে আগন্তুককে। শান-শওকত, জৌলুস_ কিছুর কমতি নেই। রাজবাড়ির বৈঠকখানা গমগম করছে। রাজা মশাই আসার এলান হতেই পিনপতন নীরবতা। উপস্থিত মজলিসের কুর্নিশ আর শ্রদ্ধায় সিক্ত রাজা আসন গ্রহণ করলেন। অন্দর মহল রানীর রূপের আলোয় উদ্ভাসিত। বাঁদিদের ব্যস্ততা। এভাবেই চলছিল প্রতাপশালী মহারাজা গোবিন্দ লালের রাজ্যপাট। সময়ের অনেক বাঁক পেরিয়ে কালের সাক্ষী হয়ে আজ দাঁড়িয়ে আছে তাজহাট জমিদার বাড়ি। শহরের কোলাহল, অসহনীয় ধুলাবালি, যানজটে ঘর্মাক্ত সময়ের ঘানি টানতে টানতে ক্লান্ত বোধ করছেন কিংবা ফ্ল্যাটবাড়ির কুঠুরির যাপিত জীবনে হাঁপিয়ে ওঠা কোনো নাগরিক যদি অন্তত কিছুটা সময় বিশাল খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে আকাশ দেখার ছল করে মন ভরে দম নিতে চান, তারা ঘুরে আসুন তাজহাট জমিদার বাড়ি। ব্যবসায়িক, দাফতরিক অথবা অন্য কোনো কাজে রংপুর এলে হাতে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা সময় নিয়ে দেখে যেতে পারেন হালে জাদুঘরে রূপান্তরিত হওয়া এ জমিদার বাড়ি।
প্রাসাদটি যেভাবে দেখলাম : পূর্বমুখী দোতলা এ বিশাল প্রাসাদটির দৈর্ঘ্য ৭৬ দশমিক ২০ মিটার। এটির ভূমি নকশা ইংরেজি ইউয়ের মতো এবং পশ্চিম দিক উন্মুক্ত। প্রাসাদটির নিচ তলায় প্রবেশপথের পশ্চাতে ১৮ দশমিক ২৯ বাই ১৩ দশমিক ৭২ মিটার মাপের হলঘর আছে। প্রাসাদ অভ্যন্তরের পুরোভাগেই আছে ৩ মিটার প্রশস্ত বারান্দা। ১৫ দমমিক ২৪ মিটার প্রশস্ত কেন্দ্রীয় সিঁড়িটি সরাসরি দোতলায় চলে গেছে। তা ইতালি থেকে আনা মার্বেল পাথরে তৈরি। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের লোকজনের সঙ্গে আলাপচারিতায় জানা গেছে, এ সিঁড়ির উভয় পাশে দোতলা পর্যন্ত ইতালীয় মার্বেলের ধ্রুপদী রোমান দেব-দেবীর মূর্তি দ্বারা সজ্জিত ছিল। অযত্ন-অবহেলা এবং যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে এগুলো অনেক আগে হারিয়ে গেছে। প্রাসাদের সামনের দিকে দুই প্রান্তে সেমিআটকোনার উদ্গত ও মধ্যভাগে একটি ৯ দশমিক ১৪ মিটার উদ্গত বারান্দা রয়েছে। ওই বারান্দার ছাদের ওপর চারটি সুসজ্জিত করিন্থীয় স্তম্ভ ও দুই পাশের উদ্গত অংশের প্রতিটিতে দুটি করে একই ধরনের স্তম্ভ রয়েছে। এর ওপর ত্রিকোণ আকৃতির চালের দুটি কক্ষ আছে। উপরতলায় ওঠার জন্য দুটি কাঠের সিঁড়ি রয়েছে। প্রাসাদের পেছনের দিক দিয়ে উপরে ওঠার জন্য দু'প্রান্তে দুটি গোল আকৃতির লোহার সিঁড়ি রয়েছে। এ প্রাসাদে ২২টি কক্ষ আছে। প্রাসাদ থেকে সদর ফটকে যাওয়ার পথের দু'পাশে প্রাসাদের সামনে দুটি বড় আকৃতির পুকুর আছে। পুকুর দুটির চারদিকে প্রায় ২ দশমিক ৫ ফুট উঁচু কারুকার্যময় দেয়াল রয়েছে। আছে সুদৃশ্য সিঁড়ি। এ পুকুর দুটির চারদিকে রয়েছে নারিকেল বীথিকার সারি। অবশিষ্ট সবটুকু জায়গাজুড়ে ফুলের বাগান। নরম সবুজ ঘাস আবৃত করে রেখেছে বিস্তীর্ণ ফুলের বাগান। কান পেতে শুনতে পারেন এ প্রাসাদের বাসিন্দাদের হারিয়ে যাওয়া পায়ের আওয়াজ, নূপুরের নিকস্ফণ, সেতারের মূর্ছনা, রাগ আর ঠুমরির সুর লহরি।
পেছন ফিরে দেখা : এ রাজবাড়ির ৫৬ একর জায়গায় সরকার গড়ে তুলেছে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। অবশিষ্ট ৪০ একর জায়গার ওপর দাঁড়িয়ে এটি এখন কালের মহিমা ঘোষণা করে যাচ্ছে। ২০০২ সালে সরকার এখানে রংপুর জাদুঘর স্থানান্তর করে। ১৯৯৫ সালে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর রাজবাড়িটি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করে। এরও আগে ১৯৮৪ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত প্রাসাদটি বাংলাদেশ সুুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বেঞ্চ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
এ প্রাসাদের ইতিহাস সংক্ষেপে এ রকম যে, মান্না লাল রায় তাজহাট জমিদার বংশের প্রতিষ্ঠাতা। শিখ ধর্ম থেকে হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে তিনি পাঞ্জাব থেকে এসে রংপুরের মাহীগঞ্জে বসবাস শুরু করেন। সে সময় মাহীগঞ্জ ছিল রংপুরের জেলা শহর। কথিত আছে স্বর্ণ ব্যবসায়ী মান্না লাল রায়ের আকর্ষণীয় 'তাজ' আর 'রত্ন' খচিত মুকুটের কারণে এ এলাকার নামকরণ হয় তাজহাট। জীবদ্দশায় তিনি বিপুল পরিমাণ ভূসম্পত্তির মালিক হন। রংপুরের অনেক এলাকা তার আয়ত্তে আসে। বংশপরম্পরায় মান্না লাল রায়ের নাতি ধনপতি লাল জমিদার হন। ধনপতি রায়ের নাতি উপেন্দ্র লাল রায় জমিদারি গ্রহণের পর অল্প বয়সে মারা যান। তখন জমিদারির দায়িত্ব তার কাকা 'মুনসেফ' গিরিধারী লাল রায়ের হাতে আসে। তিনি নিঃসন্তান হওয়ার কারণে কলকাতার গোবিন্দ লালকে দত্তক হিসেবে গ্রহণ করেন। গোবিন্দ লাল ১৮৭৯ সালে এই জমিদারির উত্তরাধিকারী হন। তিনি ছিলেন স্বাধীনচেতা আর জনপ্রিয়। তিনি ১৮৮৫ সালে 'রাজা', ১৮৯২ সালে 'রাজাবাহাদুর' এবং ১৮৯৬ সালে 'মহারাজা' উপাধি গ্রহণ করেন। ১৮৯৭ সালে ভূমিকম্পে নিজ বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে তিনি মারা যান। ১৯০৮ সালে তার ছেলে মহারাজা কুমার গোপাল লাল রায় জমিদারির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর মহারাজা কুমার গোপাল লাল রায় রাজবাড়ির মালপত্র গুছিয়ে ট্রেনে ভারতে যাওয়ার সময় কুষ্টিয়ায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। ছেলেমেয়েরা তার লাশ ও মালপত্র নিয়ে ভারতে চলে যান। এখন রাজবাড়িতে জমিদার আমলের কাঠের একটি টেবিল-চেয়ার ও ঝাড়বাতির অংশ আছে কালের সাক্ষী হয়ে।
যা যা দেখতে পাবেন : দোতলায় প্রত্নতত্ত্ব জাদুঘরে সংগ্রহশালাটি অনেক সমৃদ্ধ না হলেও দেখার মতো অনেক কিছু আছে। ২ হাজার বছরের পুরনো ছাদ আছে। তা মহাস্থানগড়ে রাজা পরশুরামের বাড়ি খনন করে ৬০ ফুট মাটির নিচ থেকে পাওয়া গেছে। ১৯৯৪ সালের ২৬ জুলাই গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে পাওয়া উল্কাপিণ্ড এখানে যত্নে রক্ষিত আছে দর্শনার্থীদের জন্য। এখানে আছে এক বিশেষ পাথর, নাম 'কচিকা পাথর'। এ পাথর ছয় মাস পানির নিচে রাখলে তা থেকে নতুন পাথর হয়। ১৯৩২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি লেখা বেগম রোকেয়ার চিঠি, তুলট কাগজে লেখা সংস্কৃত হস্তলিপি, ১৭ খ্রিস্টাব্দে লেখা বিসমিল্লাহসহ ৫ কালিমার শাহাদৎ উৎকীর্ণ আরবি শিলালিপি, ৬৯ হিজরির পোড়ামাটির ইস্টকলিপি। তা লালমনিরহাট জেলার অন্তর্গত হারানো মসজিদ থেকে উদ্ধার করা হয়। ১২০০ খ্রিস্টাব্দের শিলালিপি, ১৬৯১ সালের কালো পাথরের সংস্কৃতি শিলালিপি, এক দশমিক ৫ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য, এক ইঞ্চি প্রস্থ ও আধা ইঞ্চি পুরো কোরআন শরিফ, পোড়ামাটির সিলমোহর, মাটির পাত্র, বৃহৎ হাতির দাঁত ও হাতির দাঁতের পাশা, বিভিন্ন আকার ও সময়ের অনেক বিষ্ণুমূর্তিসহ প্রত্নসম্পদ এখানে দর্শনার্থীদের জন্য রক্ষিত আছে।
টুকিটাকি তথ্য :মূল ফটকে জনপ্রতি ১০ টাকা টিকিট কেটে প্রবেশ করতে হবে। মূল জাদুঘরে ছবি তোলার অনুমতি নেই। প্রাসাদের বাইরে ছবি তোলা যাবে। রংপুর শহর থেকে রিকশা ভাড়া ১৫ থেকে ২০ টাকা।

Wednesday, April 25, 2012

শ্রমিক দিবস

0 comments
মে দিবস
উন্নয়নের প্রধান হাতিয়ার ও অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হলেন শ্রমিক। এই শ্রমিকের হাতের শক্তিতে কারখানার চাকা ঘুরে। তাদের শরীরের ঘামের বিনিময়ে তৈরি হয় নানা পণ্য। আর এই পণ্য দেশ-বিদেশে বিক্রির মাধ্যমে যে অর্থ আয় হয়, তা দিয়ে চলে দেশের উন্নয়ন। কিন্তু এই শ্রমিকরাই নানা কারণে আজও অবহেলিত ও অধিকার বঞ্চিত। অথচ শ্রমিকের অধিকারের জন্যই পহেলা মে শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। অধিকারের জন্যই শ্রমিক সেদিন দিয়েছিলেন বুকের তাজা রক্ত। সে ইতিহাস এখনও মনে করিয়ে দেয় শ্রমিক অধিকারের কথা। যেভাবে এলো শ্রমিক দিবস : ১৮৮৬ সালের পহেলা মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শিল্প শ্রমিকরা উন্নত পরিবেশ, নির্ধারিত নিয়ম ও আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে হে মার্কেটের সামনে শ্রমিক সমাবেশের ডাক দেন। কিন্তু পুলিশ সেই সমাবেশ করতে দেয়নি। ফলে শ্রমিকরা এর প্রতিবাদে তিন মে আবারও হে মার্কেটের সামনে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন। এতেও পুলিশ বাধা দেয়। কিন্তু শ্রমিকরা তা মানেন না। ফলে এক পর্যায়ে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষ বেধে যায় এবং পুলিশের গুলিতে ছয় শ্রমিক নিহত হন। এই হত্যার প্রতিবাদে হে মার্কেটের শ্রমিকরা চার মে শ্রমিক ধর্মঘটের ডাক দেন এবং সবাই হে মার্কেটের সামনে সমাবেত হতে থাকেন। হে মার্কেটের শিল্প-কারখানার মালিকরা সমাবেশস্থলে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। ফলে বোমার আঘাতে আরও পাঁচ শ্রমিক প্রাণ হারান। এছাড়া শ্রমিক ধর্মঘট করার দায়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার আগস্ট স্পাইস নামে এক শ্রমিককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করে। শ্রমিকের এই অধিকারের কথা ভেবেই ১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট কংগ্রেসে পহেলা মে'কে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তখন থেকেই সারাবিশ্বে পহেলা মে মহান শ্রমিক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশেও প্রতি বছর এই দিবস পালিত হয়। 

লেখা :গাজী মুনছুর আজিজ

ল্যাসিক

0 comments
নাকের গোড়ায় চশমা মাঝে মাঝেই বিরক্তির কারণ হয়ে ওঠে। লেন্স ব্যবহারেও আছে নানা ঝক্কি। চোখের সমস্যা সমাধানে নতুন প্রযুক্তি ল্যাসিক। রাজধানীতে এ সেবা দিচ্ছে অনেক প্রতিষ্ঠান। বিস্তারিত লিখেছেন এমসি তারেক
LASIK
মানুষ সবকিছুকে সহজ ও উন্নত করে পেতে চায়। তাই কোনো কিছু পাওয়া হয়ে গেলে তা নিয়ে গবেষণায় নেমে পড়ে, কী করে সেটাকে আরও সহজ, উপযোগী ও উন্নততর করে বানিয়ে ব্যবহার করা যায়। তেমনই একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার চশমা। আর এ চশমা যখন পাওয়া হয়ে গেল এর পর থেকেই আবার গবেষণা শুরু হলো কী করে চশমা ছাড়াই ভালো দেখা যায়। অর্থাৎ চশমার বিকল্প আর কী হতে পারে। আর বিকল্প খুঁজবেই বা না কেন? চশমা মানুষের বাহ্যিক চেহারায় বিরাট একটা পরিবর্তন ঘটায়, যা মূলত কারোরই কাম্য নয়। ১৫০৮ সালে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি অত্যন্ত পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বুঝিয়ে দেন চশমার বিকল্প হতে পারে কন্ট্যাক্ট লেন্স। আর উনিশ শতকের শেষ দিকে এসে যখন কন্ট্যাক্ট লেন্স জনপ্রিয় হয়ে উঠল, তখনই আবার চিন্তার উদ্ভব হলো, কী করে মানুষকে একেবারে খালি চোখে ভালো দেখানো যায়। আর এ চিন্তা থেকেই ল্যাসিকের উৎপত্তি ঘটে। বর্তমানে প্রায়ই একটি স্লোগান শোনা যায়_ ল্যাসিক করুন, চশমা ছাড়া খালি চোখেই ভালো দেখুন। চক্ষু বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আগামী দু'এক দশকের মধ্যে চশমার ব্যবহার এত অবিশ্বাস্য হারে হ্রাস পাবে যে ভবিষ্যতে আর চশমার দোকান খুঁজে পাওয়া যাবে না। আর তা হবে শুধু ল্যাসিকের জন্যই। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ল্যাসিক আসলে কী? ল্যাসিক হচ্ছে এক ধরনের লেজার প্রযুক্তি, যা চোখে প্রয়োগ করে হারানো দৃষ্টি ফিরে পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে এক ধরনের শক্তিশালী ও সংকুচিত আলোকরশ্মি নেত্রস্বচ্ছের মাঝখানের (চোখের কালো মণি) এক-তৃতীয়াংশ অত্যন্ত নিখুঁতভাবে পাতলা করে কেটে তোলা হয় এবং পুরোটা না কেটে এক কোনায় আটকে রাখা হয়। এরপর এক ধরনের বিশেষ লেজারের (এক্সাইমার লেজার) সাহায্যে চোখের পাওয়ার স্থাপন করে নেত্রস্বচ্ছের সরিয়ে রাখা পর্দাটি আবার লাগিয়ে দেওয়া হয়, যেটা কর্নিয়ার সঙ্গে লেগে থাকে। এটি একটি ঝামেলামুক্ত এবং সেলাইবিহীন সার্জারি, যাতে সময় লাগে মাত্র কয়েক মিনিট। যারা চশমা মোটেও পছন্দ করেন না, তারা করিয়ে নিতে পারেন ল্যাসিক। বিশেষ করে যাদের চশমার পাওয়ার অনেক বেশি এবং চশমার জন্য প্রায়ই হতে হয় নানা বিড়ম্বনার শিকার, তাদের জন্য অনেকটা আশীর্বাদ হয়েই এসেছে ল্যাসিক। অনেকে হয়তো ছোটবেলায় স্বপ্ন দেখেছেন পাইলট হবেন কিংবা নৌবাহিনীর সমুদ্রজয় দেখে মনের গহিনে সুপ্ত বাসনা জমেছিল নেভি অফিসার হবেন। কেউ হয়তো হতে চেয়েছেন মডেল কিংবা অভিনেতা কিন্তু বাদ সেধেছে আপনার চশমাটি_ তারা ল্যাসিকের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে পারেন স্বপ্ন পূরণের পথে। এখন আসুন, জেনে নেওয়া যাক কারা করাতে পারবেন ল্যাসিক। যাদের কাছের দৃষ্টিতে সমস্যা বা মাইনাস পাওয়ারের জন্য চশমা পরেন, তাদের জন্য ল্যাসিক সবচেয়ে বেশি কার্যকর। এ ক্ষেত্রে -২ থেকে -২২ পর্যন্ত পাওয়ারের রোগীদের ল্যাসিক করা যায়। আর যারা দূরদৃষ্টি বা প্লাস পাওয়ারের জন্য চশমা পরেন তাদের ক্ষেত্রে +১ থেকে +৮ পর্যন্ত পাওয়ার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ল্যাসিক করা হয়। তবে মনে রাখতে হবে, ল্যাসিক শুধু তারাই করাতে পারবেন যাদের চশমার পাওয়ার অন্তত এক বছর ধরে ওঠানামা করে না এবং বয়স অবশ্যই ১৮ থেকে ২১ বছরের ওপর। তবে যাদের একটাই চোখ এবং চোখে বিশেষ কিছু রোগ রয়েছে, এমন রোগীদের জন্য ল্যাসিক নয়। ল্যাসিকের মতো একটি আধুনিক চিকিৎসাকে অস্বীকার করার সুযোগ নেই, তবে এর জটিলতাও যে একেবারেই নেই তা কিন্তু বলা যাবে না। ল্যাসিকের দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে আর ল্যাসিক সার্জনরাও স্বীকার করেন যে, এর দীর্ঘমেয়াদি জটিলতার বিষয়ে তাদের কাছে কোনো ডাটা নেই। তা ছাড়া ১৯৯৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঋউঅ (ঋড়ড়ফ ধহফ উৎঁম অফসরহরংঃৎধঃরড়হ) যখন ল্যাসিকের স্বীকৃতি দিয়েছিল তখন এফডিএর ডায়াগনস্টিক ও সার্জিক্যাল বিভাগের প্রধান ছিলেন ডা. মরিস ওয়াক্সলার। তিনি একটি টিভি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, এক্সাইমার লেজারকে ল্যাসিক সার্জারির জন্য স্বীকৃতি দেওয়াটা ছিল এফডিএ এবং তা একটি অত্যন্ত ভুল ও বিতর্কিত সিদ্ধান্ত। এ ছাড়া তাইওয়ানের তাইপে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত সার্জন ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি আর কখনও ল্যাসিক সার্জারি করাবেন না। কারণ ১০ বছর আগে তিনি যাদের ল্যাসিক করিয়েছেন তারা প্রায় সবাই অনবরত তার কাছে চোখের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে অভিযোগ করে যাচ্ছেন। সুতরাং প্রিয় পাঠক, চোখে চশমা? ভাবছেন ল্যাসিক করাবেন? তার আগে আশপাশে ভালোভাবে খোঁজ নিয়ে নিন। জেনে নিন তাদের কাছ থেকে, যারা চার-পাঁচ বছর আগে ল্যাসিক করিয়েছেন। প্রয়োজনে পরামর্শ নিন আপনার পারিবারিক ডাক্তারের। জেনে নিন, চোখের জন্য ল্যাসিক কতটা নিরাপদ। কেননা চোখ কোনো সাধারণ অঙ্গ নয়। আপনার একটি ভুল সিদ্ধান্ত হতে পারে জীবনের বড় কোনো ক্ষতির কারণ। এবার জেনে নেওয়া যাক কোথায় করাবেন ল্যাসিক এবং খরচ কী রকম পড়বে। ল্যাসিক করানোর জন্য যেতে পারেন নিচের প্রতিষ্ঠানগুলোতে : ল্যাসিক সাইট সেন্টার, গুলশান। খরচ পড়বে : প্রি-ল্যাসিক টেস্ট ৩৬০০ টাকা, ল্যাসিক দু'চোখে ৪৫,০০০ টাকা, মেডিসিন ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা। হারুন আই ফাউন্ডেশন, ধানমণ্ডি। খরচ পড়বে : প্রি-ল্যাসিক টেস্ট ৩,০০০ টাকা, ল্যাসিক দু'চোখে ৪৫,০০০ টাকা, মেডিসিন ৫০০ থেকে ১,০০০ টাকা। ওএসবি লেজার ভিশন সেন্টার, মিরপুর। খরচ পড়বে : প্রি-ল্যাসিক টেস্ট ২,৫০০ টাকা, ল্যাসিক দু'চোখে ৩৫,০০০ টাকা, মেডিসিন ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা।

Wednesday, April 18, 2012

Trend Spotting

0 comments
 Trend Spotting (পর্ব-১)


যখন দুইজন যোদ্ধা যুদ্ধক্ষেত্রে মিলিত হয়, তখন শুধু বোকা যোদ্ধাই কেবল কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু বুদ্ধিমান যোদ্ধা একটি পরিকল্পনা নিয়েই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে থাকে। ঠিক তেমনি আপনারও উচিত, একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা। আর সেই জন্য আপনাকে বাজারের গতিবিধি বা ট্রেন্ড বুঝতে হবে। বাজারে সাধারণত তিন ধরনের ট্রেন্ড পরিলক্ষিত হয়। এগুলো হচ্ছে ১. আপ ট্রেন্ড, ২. ডাউন ট্রেন্ড, ৩. রেঞ্জিং। আজ আমরা দেখব Trending Market কী এবং এই বিষয়টি কীভাবে আপনার কাজে আসবে। Trending Market হচ্ছে একটি মার্কেট, যখন নির্দিষ্ট ট্রেন্ডে অনেক দিন যাবৎ চলতে থাকে। চিত্র লক্ষ করুন ও দেখুন একটি পরিষ্কার ডাউন ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে। তার মানে আমরা এই ট্রেন্ডটিকে Trending বলতে পারি। কারণ, অনেক দিন যাবৎ এই ট্রেন্ডটি অব্যাহত ছিল। আপনি আপ ট্রেন্ড বুঝতে পারবেন, যখন ‘higher highs’এবং ‘higher lows’ দেখতে পাবেন এবং ডাউন ট্রেন্ড বুঝবেন ‘lower highs’ ও ‘lower lows’ দেখে।
আপনি এই Trending মার্কেটেও Moving Average টুলসটি ব্যবহার করতে পারেন। আপনি ৭ দিন, ২০ দিন এবং ৬৫ দিনের Simple Moving Average (SMA) নিতে পারেন। একটু ভালোভাবে লক্ষ করুন, যখন ওপর দিক থেকে ৭ দিনের SMA ২০ দিনের SMA কে অতিক্রম করে এবং ২০ দিনের SMA ৬৫ দিনের কে অতিক্রম করে, তখন মূল্যর trending up সংগঠিত হয়। আবার ঠিক উল্টোভাবে যখন নিচের দিক থেকে ৭ দিনের SMA ২০ দিনের SMA কে অতিক্রম করে এবং ২০ দিনের SMA ৬৫ দিনের কে অতিক্রম করে, তখন মূল্যর trending down সংগঠিত হয়। চিত্রে ঠিক এই বিষয়টিই দেখানো হয়েছে।




Trend Spotting (পর্ব-২)


আজ আমরা ranging নিয়ে আলোচনা করব। ranging হচ্ছে, একটি মার্কেট যখন নির্দিষ্ট রেঞ্জের মধ্যে বারবার ওঠানামা করে এবং রেঞ্জটির আওতা হচ্ছে মূল্যর উচ্চসীমা এবং মূল্যের নিম্নসীমা। বারবার মার্কেট এই রেঞ্জের মধ্য ওঠানামা করে বিধায় এটিকে ranging বলা হয়। চিত্রে একটু লক্ষ করলে দেখতে পাবেন, শেয়ারটির দাম একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে ওঠানামা করে। কিন্তু সেই রেঞ্জটি ব্রেক করতে পারেনি। এ ধরনের বাজারে বুদ্ধিমান বিনিয়োগকারীরা low price লেভেলে শেয়ার ক্রয় করেন এবং high price লেভেলে বিক্রি করেন। এই ranging মার্কেটেও আপনি Stochastic এবং RSI Indicator ব্যবহার করতে পারেন। আবারও চিত্রে দেখুন, আমরা Stochastic ব্যবহার করেছি।
এই টুলটি ব্যবহার করা হয়েছে বাজারে overbought এবং oversold চিহ্নিত করার জন্য। খেয়াল করুন, যখন শেয়ারটির দাম ওপরের লেভেলটি ব্রেক করতে পারেনি, তখন দেখুন Stochastic-টিও overbought অবস্থায় ছিল। এ কারণে শেয়ারটির দাম কমে যায়। ঠিক একইভাবে নিচের দিকের লেভেলও ব্রেক করতে পারেনি এবং সেই সময় Stochastic-টিও oversold অবস্থায় ছিল। সুতরাং, আপনি কিন্তু এই পদ্ধতিতে আপনার Entry এবং Exit-এর সময় নির্ধারণ করতে পারবেন। আপনি যখন trending অথবা ranging মার্কেটে ট্রেড করবেন, তখন আপনার ধারণা থাকা উচিত, কী পরিমাণ মুনাফা অথবা লোকসান হতে পারে। এরপর আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে tops এবং bottoms যেটিtrending ranging এবং উভয় মার্কেটের জন্য প্রযোজ্য। আপনি যদি এই trending এবং ranging সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা রাখেন, তবে আপনি আপনার বিনিয়োগ-কৌশল খুব সহজেই ঠিক করতে পারবেন এবং বিনিয়োগ ঝুঁকি অনেক কমিয়ে আনতে পারবেন।



Trend Spotting (পর্ব-৩)



গত কয়েক পর্বের ধারাবাহিকতায় আজ আমরা Trend Spotting-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় Retracement Reversal নিয়ে আলোচনা করব। অনেক বিনিয়োগকারী ও অ্যানালিস্টরা মাঝেমধ্যে ট্রেন্ড Retracement এবং Reversal নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তিতে পড়ে থাকেন। অনেকে আবার এই দুটিকে আলাদা করে চিহ্নিত করতে পারেন না। আজ আমরা এ বিষয় দুটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। Retracement হচ্ছে, পূর্ব গঠিত একটি ট্রেন্ডের বিপরীত অস্থায়ী ও সাময়িক মুভমেন্ট। অন্যভাবে বলা যায়, Retracement হচ্ছে ট্রেন্ডের বিপরীতে মুভমেন্ট। চিত্রে লক্ষ করুন, দেখবেন শেয়ারের ট্রেন্ডটি আপ ট্রেন্ডে ছিল; কিন্তু কিছু সময় পর পর আবার একটু ডাউন ট্রেন্ডে ছিল; কিন্তু সেই ট্রেন্ডটি স্থায়ী হয়নি এবং আবার সেই শেয়ারের দাম আপ ট্রেন্ডে চলে গেছে। এটিকে আমরা Retracement বলতে পারি।
চিত্রের দ্বিতীয় অংশে ডাউন ট্রেন্ডকে আমরা Retracement বলতে পারব না, কারণ তখন শেয়ারটির দাম মূল ট্রেন্ডের বিপরীতে অনেক বেশি সময় ছিল। এবার আসা যাক Retracement বিষয়ে। যখন একটি ট্রেন্ডের গতি সম্পূর্ণ পরিবর্তন হয়ে যায়, তখন সেই পরিবর্তনকে Reversal হিসেবে ধরে নিতে হবে। যখন আপ ট্রেন্ড থেকে শেয়ারের মূল্য ডাউন ট্রেন্ডে যায় অথবা ডাউন ট্রেন্ড থেকে মূল্য আপ ট্রেন্ডে যায়, তখন সাধারণত Reversal সংগঠিত হয়ে থাকে।
চিত্রটিতে দেখুন, শেয়ারটির দাম একটি স্পষ্ট আপ ট্রেন্ডে ছিল এবং Reversal সংগঠিত হওয়ার পর ডাউন ট্রেন্ডে চলে যায় এবং ডাউন ট্রেন্ডটি বেশ কিছুদিন স্থায়ী ছিল। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আপনি যদি দেখেন একটি Reversal অথবা Retracement হচ্ছে, তখন আপনি কী করবেন? যদি এমন পরিস্থিতি হয়, তবে আপনি প্রথমত আপনার শেয়ার ধরে রাখতে পারেন এবং Retracement-এর জন্য অপেক্ষা করতে পারেন। দ্বিতীয়ত, আপনি আপনার শেয়ার বিক্রি করে পরে কম দামে বাইব্যাক করতে পারেন। তৃতীয়ত, আপনি শেয়ার বিক্রি করে বাইব্যাক না-ও করতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে আপনাকে কিছু লোকসানের সম্মুখীন হতে হবে। একমাত্র আপনিই আপনার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।



Trend Spotting (শেষ পর্ব)



আজ আমরা Trend Spotting-এর সারসংক্ষেপ এবং ট্রেন্ড চিহ্নিত করার কৌশল নিয়ে আলোচনা করব। সঠিকভাবে retracements এবং reversals চিহ্নিত করতে সক্ষম হলে একজন বিনিয়োগকারী বেশি মুনাফা অর্জন করতে পারেন। এখন আমরা এই retracements ও reversals সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে কিছু শর্টকাট টেকনিক শিখে নিব। প্রথমে আসা যাক retracements বিষয়ে।
১. Retracements সাধারণত একটি লম্বা সময় মূল্য-পরিবর্তনের পর সংগঠিত হয়। ২. এই retracements-টি খুব সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য reversals হয়। ৩. Fundamental কোনো বিষয় পরিবর্তন হয় না। ৪. আপ ট্রেন্ডে সেই সময় ক্রয়চাপ থাকে এবং একটি মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী রেলি তৈরি হয় এবং ডাউন ট্রেন্ডে বিক্রয়চাপ বেশি হয় এবং মূল্য কমতে থাকে।
অন্যদিকে ১. reversals যেকোনো সময়ই ঘটতে পারে। ২. একটি লম্বা সময়ের জন্য এই reversals সংগঠিত হয়ে থাকে। ৩. অনেক সময় Fundamental বিষয়গুলোও পরিবর্তন হয়ে থাকে, ফলে একটি লম্বা সময়জুড়ে reversals হয়ে থাকে। ৪. আপ ট্রেন্ডে তেমন ক্রয়চাপ পরিলক্ষিত হয় না এবং ডাউন ট্রেন্ডেও খুব কম বিক্রয়চাপ দেখা যায়। একজন বিনিয়োগকারী Fibonacci retracement ব্যবহার করে retracement লেভেলগুলো বুঝতে পারবেন। Fibonacci এর বিভিন্ন লেভেল সাধারণত support এবং resistance হিসেবে কাজ করে থাকে। শেয়ারের দাম যদি retracement এর যেকোনো লেভেল থেকে Bounce করে, তবে বুঝতে হবে সেটি হবে retracement এবং যদি Bounce না করে ব্রেক করে, তবে সেটি reversal বলে বিবেচিত হয়। আবার অনেক সময় একটি ট্রেন্ড লাইন দিয়েও reversal বুঝা যায়। যখন দেখা যায়, একটি ট্রেন্ড লাইন ব্রেক করে ওপরে অথবা নিচে যায়, তখন বুঝতে হবে একটি শক্তিশালী reversal ট্রেন্ড তৈরি হয়েছে। আপনি এই পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করতে পারেন একটি retracements এবং reversals সংকেত চিহ্নিত করার জন্য।

সামাউন খালিদ কলিন্স

ডাইভারজেন্স ট্রেডিং (Divergence Trading )

1 comments
Divergence Trading (পর্ব-১)



আজকের টিউটোরিয়াল কর্নারে আমরা Divergence Trading সম্পর্কে জানব। এই বিষয়টি একটু দীর্ঘ বিধায় আমরা ধারাবাহিকভাবে আগামী কয়েক দিনের টিউটোরিয়াল কর্নারে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। এবার আসা যাক, Divergence Trading কী এবং এটি কীভাবে শেয়ারবাজারে কাজ করে সেই বিষয়ে। ধরুন, কী হবে, যখন কোনো বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ খুব কম ঝুঁকিতে থাকবে? খুব উচ্চ দামে শেয়ার বিক্রয় করতে পারবে এবং ক্রয়ের সময়ও খুব স্বল্প দামে ক্রয় করতে পারবে? উত্তর একটাই, আর তাহলো কম ঝুঁকি নিয়ে বেশি মুনাফা অর্জন করতে পারবে। আর এই Divergence Trading-এর মাধ্যমে একজন বিনিয়োগকারী খুব কম ঝুঁকি নিয়ে বেশি মুনাফা অর্জন করতে পারেন। Divergence Tradingটি হলো, একটি শেয়ার যখন বোটম লেভেলে থাকে, তখন ক্রয় করা এবং যখন টপ লেভেলে থাকে, ঠিক তখন বিক্রয় করা। আপনি এই Divergence Trading করার জন্য MACD, stochastic ইন্ডিকেটরগুলো ব্যবহার করতে পারেন। এই ট্রেডিং পদ্ধতিটি ব্যবহার করতে আপনাকে আরও কিছু বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে। বিষয়গুলো হচ্ছে Higher Highs and Lower Lows। সাধারণত Higher Highs হচ্ছে উচ্চ পয়েন্ট এর উচ্চ সীমা এবং Lower Lows হচ্ছে নিম্ন পয়েন্টের নিম্ন সীমা। চিত্রে ভালোভবে লক্ষ করলে আপনিও বিষয়টা বুঝতে পারবেন।
আপনি এখন জেনে গেছেন Divergence Trading সম্পর্কে। এখন আপনি পুরোপুরি প্রস্তুত Divergence Trading করার জন্য। দুই ধরনের Divergence রয়েছে। একটি হচ্ছে Regular এবং আরেকটি হচ্ছে Hidden। Regular bullish divergence ব্যবহার করা হয় সম্ভাব্য ট্রেন্ড রিভার্সাল বুঝার জন্য। যদি কোনো শেয়ারের দাম lower lows অবস্থানে থাকে, কিন্তু oscillatorটি higher lows অবস্থানে থাকে, তবে সেটি হবে regular divergence। এই regular divergence সাধারণত সংগঠিত হয় একটি ডাউন ট্রেন্ডের পর।
একটি Hidden bullish divergence সংগঠিত হয়, যখন একটি শেয়ারের দাম higher low অবস্থানে থেকে এবং oscillatorটি lower low অবস্থনে থাকে।


Divergence Trading (পর্ব-২)




এ পর্বে আমরা Divergence Trading-এর ব্যবহারিক প্রয়োগ দেখব। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কীভাবে আপনি Divergence Trading ব্যবহার করে ট্রেড করবেন। প্রথমে আমরা দেখব, কীভাবে lower lows এবং higher lows ব্যবহার করে আপনি ট্রেড করতে পারেন। চিত্রে লক্ষ করুন, একটি শেয়ারের মুভেমেন্ট দেখা যাচ্ছে।
প্রথমবার শেয়ারটি দামের একটি Downtrend সংগঠিত হয়েছিল এবং সে অবস্থা থেকে কিছুটা Pull Back করে ওপরে উঠেছিল। কিন্তু আবার কয়েক দিন পরে দাম পড়ে যায় এবং সে সময় Lower Lows সংগঠিত হয়। যদি আপনি এর আগের ডাটাগুলো দেখেন, তবে দেখতে পাবেন, এই লেভেলটিই সব চেয়ে নিম্নতম লেভেল এবং দাম এই লেভেলের নিচে আর যায়নি। অন্য দিকে, Stochastic-টি higher lows অবস্থায় রয়েছে। এই Stochastic ইনডিকেটরের পরিবর্তে আপনি MACD-ও ব্যবহার করতে পারেন। এখন চিত্রের ওই লেভেলটিকে আমরা বোটম বলে ধরে নিতে পারি। এই বোটম লেভেল থেকে কেউ যদি শেয়ার ক্রয় করেন, তবে তার ঝুঁকি অনেকটা কমে যায় এবং টপ লেভেলে বিক্রয় করেন, তবে অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি মুনাফা অর্জন করতে পারেন । এ সময়ে আপনাকে অবশ্যই কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। প্রথমত, আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে Lower Lows সংগঠিত হয়েছে কি না। দ্বিতীয়ত, ঠিকমতো ট্রেন্ড লাইন আঁকা হয়েছে কি না। অনেক সময় আপনি সঠিকভাবে ট্রেন্ড লাইন আঁকতে না পারলে হয়তো সে সময়ের ট্রেন্ডটি আপনি ঠিকমতো ধরতে পারবেন না। তাই আপনাকে ট্রেন্ড লাইনটি সঠিকভাবে আঁকতে হবে। এরপর আপনাকে slope-গুলো বুঝতে হবে। কোন slove পজেটিভ এবং কোনটি নেগেটিভ। সবকিছু যদি পজিটিভ থাকে, ঠিক তখনই কেবল আপনি ট্রেড করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। যদি সবকিছু পজেটিভ না থাকে, তবে আপনি শেয়ারটি আপনার অবজারভেশন তালিকায় রাখতে পারেন এবং যখন একটু পজিটিভ মুভমেন্টে আসবে, তখন আপনি ট্রেড করতে পারেন।

Divergence Trading (পর্ব-৩)



গত দুই পর্বের ধারাবাহিকতায় আজ ও আমরা Divergence Trading নিয়ে আলোচনা করব এবং ব্যবহারিক প্রয়োগ দেখব। আমরা গতকালের টিউটোরিয়াল কর্নারে দেখেছিলাম দুই ধরনের Divergence রয়েছে। একটি হচ্ছে regular এবং আরেকটি হচ্ছে Hidden।
পাশের চিত্রটি একটু খেয়াল করুন। প্রথমে চিত্রটি দেখলে আপনিও বুঝতে পারবেন, একটি Downtrend দেখা যাচ্ছে। লক্ষ করুন, কীভাবে শেয়ারটির দাম lower high অবস্থায় ছিল এবং সেই সঙ্গে stochastic-টি ও higher highs অবস্থায় ছিল। Divergence-এর দিক থেকে এটি একটি hidden bearish divergence। আপনি যদি এ রকম অবস্থায় থাকেন, তখন কী করবেন? তখন যদি আপনি ওই শেয়ারটিতে শক্ত অবস্থান নেন, তাহলে আপনার কিছুটা আর্থিক ক্ষতি মেনে নিতে হবে। আর তা যদি না চান, তাহলে হয়তো সামান্য কিছু ক্ষতি মেনে নিয়ে শেয়ারটি বিক্রি করে বড় ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে পারেন। তাই একটি ট্রেডের আগেই আপনার উচিত কিছুটা স্টাডি করে নেওয়া। স্টাডির সময় আপনাকে অবশ্যই কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। প্রথমত, আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে Higher high than the previous high সংঘটিত হয়েছে কি না। দ্বিতীয়ত, ঠিকমতো ট্রেন্ড লাইন আঁকা হয়েছে কি না। অনেক সময় আপনি সঠিকভাবে ট্রেন্ড লাইন আঁকতে না পারলে হয়তো সেই সময়ের ট্রেন্ডটি আপনি ঠিকমতো ধরতে পারবেন না। তাই আপনাকে ট্রেন্ড লাইনটি সঠিকভাবে আঁকতে হবে। এরপর আপনাকে slope-গুলো বুঝতে হবে। কোন slove পজেটিভ এবং কোনটি নেগেটিভ। সবকিছু যদি পজিটিভ থাকে, ঠিক তখনই কেবল আপনি ট্রেড করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। যদি সবকিছু পজেটিভ না থাকে, তবে আপনি শেয়ারটি আপনার অবজারভেশন তালিকায় রাখতে পারেন এবং যখন একটু পজিটিভ মুভমেন্টে আসবে, তখন আপনি ট্রেড করতে পারেন।
Divergence Trading (পর্ব-৪)





Momentum Tricks : যদি আপনি Divergence Trading টুলসটি আপনার টুলস বক্সে রাখেন এবং নিয়মিত ব্যবহার করতে থাকেন, তবে দেখা যাবে মাঝেমধ্যে আপনি অনেক সময় সম্পূর্ণ সিগন্যালের অপেক্ষা না করেই ট্রেডে অংশগ্রহণ করতে শুরু করেছেন। এ রকম অবস্থা আপনি কীভাবে এড়িয়ে যেতে পারেন? হ্যাঁ, এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য কিছু Momentum Tricks রয়েছে। এই Tricks-গুলো আপনাকে আরও নিখুতভাবে সিগন্যাল দিবে। আজ আমরা ওই Tricks-গুলোই দেখব। সর্ব প্রথম যে পদ্ধতি অথবা Trick রয়েছে, সেটা হচ্ছে Wait for a Crossover। আপনাকে Momentum indicator- ক্রসওভারের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এই ক্রসওভারটি ক্রয় থেকে বিক্রয় অথবা বিক্রয় থেকে ক্রয়ের সংকেত দিতে পারে। মূল বিষয়টি হচ্ছে, আপনি বোটম অথবা টপের জন্য অপেক্ষা করছেন, কিন্তু কোনোটাই সংগঠিত হবে না, যতক্ষণ Momentum ক্রসওভার ঘটবে না। চার্টের প্রথম দিকে দেখা যাচ্ছে, শেয়ারটি lower highs অবস্থানে রয়েছে এবং higher highs ততক্ষণে divergence তৈরি করেছে। ফলে বুঝা যাচ্ছে, শেয়ারটি একটি বেয়ারিশ stochastic তৈরি করবে এবং পরবর্র্তীতে তাই ঘটেছে। লক্ষ করুন, কয়েকটি ক্যান্ডেলস্টিক পরে stochastic এ ক্রসওভার সংগঠিত হয়েছিল। এই শেয়ারটির মুভমেন্ট থেকে আমরা কী শিখতে পারি ? হ্যাঁ, এখানে শিক্ষণীয় বিয়য়টি হচ্ছে, কোনো শেয়ারে বিনিয়োগ করার পূর্বে অপেক্ষা করুন। কারণ, আপনি জানেন না, আদৌ stochastic-টি শিফট করবে কি-না। দ্বিতীয় trick-টি হচ্ছে overbought/oversold পদ্ধতি। এতে আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে momentum highs and lows যতক্ষণ overbought and oversold-কে স্পর্শ না করবে। আপনি কিন্তু নিশ্চিত নন, কখন overbought and oversold-কে স্পর্শ করবে। আপনি ভাবতে পারেন, এটা আপনার ক্রয়ের উপযুক্ত সময়, যখন ইন্ডিকেটরটি oversold অবস্থায় থাকবে এবং নতুন একটি তৈরি low করবে। সত্যি, এটি একটি উপযুক্ত সময় হবে, যদি আপনি তখন শেয়ারটি ক্রয় করেন।

সামাউন খালিদ কলিন্স

শেয়ার ব্যাবসা:::: জেনে নিন অনেকগুলো টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটরের ব্যাবহার

3 comments
The Rate-of-Change (ROC)



The Rate-of-Change (ROC) Indicator-টি সাধারণত একটি momentum এবং অনেক সময় এই Indicator-কে একটি বিশুদ্ধ momentum oscillator-ও বলা হয়। সাধারণত এই Indicator-টি একটি নির্দিষ্ট সময় থেকে আরেকটি সময় পর্যন্ত দামের পরিবর্তনের হার নির্ণয় করে থাকে। যখন দামের পরিবর্তন হয়, তখন Rate-of-Change Indicator-টি জিরো লাইনের ওপরে ও নিচে ওঠানামা করে। যেহেতু Rate-of-Change একটি momentum, তাই এর সিগনালগুলো অন্যান্য momentum এর মতোই হয়ে থাকে, যেমন center line crossovers, divergences and overbought-oversold।
এই পরিবর্তনের হার সাধারণত তিন ধরনের হয়ে থাকে, সেগুলো হচ্ছে- Up trend, Down trend ও Side Way। সাধারণত একটি Up trend গঠিত হয়, যখন কতগুলো higher highs এবং higher lows থাকে এবং দামও জিকজ্যাক করে Up trend অনুসরণ করে; Pull back, যখন একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর percentage move করে আর Down trend গঠিত হয়, যখন lows and lower highs এবং দামও জিকজ্যাক করে Down trend অনুসরণ করে।
আমরা চার্টে দেখতে পাচ্ছি, এপ্রিল ২০০৯ থেকে এপ্রিল ২০১০ পর্যন্ত শেয়ারটি Up trend ছিল এবং ভালোভাবে লক্ষ করলে আমরা দামেরও পরিবর্তন দেখতে পাব, যেখানে কতগুলো higher highs and higher lows ছিল, কারণ সর্বোপরি একটি Up trend ছিল। Rate-of-Change indicator-টি এখানে স্বল্প সময়ের অর্থাৎ short-term oversold নির্ণয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। যখনই Indicator-টি Zero Line-এর নিচে এসেছে, ঠিক তার পর পরই আবার Up trend-এ চলে গেছে। খুব বেশি সময়ের জন্য The Rate-of-Change-টি oversold অবস্থায় ছিল না। সুতরাং কেউ যদি ওই অবস্থায় শেয়ার ক্রয় করেন এবং Zero Line অতিক্রম করার পর বিক্রয় করেন, তবে কিছু মুনাফা করতে পারেন। আপনি যদি এই Indicator-টির সঙ্গে simple moving average ব্যবহার করেন, তবে আরও ভালো দিক-নির্দেশনা পেতে পারেন।


Stock RSI



Stock RSI হচ্ছে Stochastics-এর ফর্মুলা, যা RSI-কে ভিত্তি করে রচিত। তার অর্থ হলো, এটি একটি RSI-এর ইন্ডিকেটর। Stock RSI পরিমাপ করে একটি নির্দিষ্ট সময়ে RSI-এর মান, যা তার সর্বোচ্চ/সর্বনিম্ন মাত্রার সাথে যুক্ত। যখন RSI একটি নির্দিষ্ট সময়ে নতুন একটি সর্বনিম্ন মাত্রা রেকর্ড করে তখন Stock RSI ০-তে অবস্থান করে। যখন RSI একটি নির্দিষ্ট সময়ে নতুন একটি সর্বোচ্চ মাত্রা রেকর্ড করে তখন Stock RSI ১০০-তে অবস্থান করে। ২০-এ অবস্থান নির্দেশ করে যে সাম্প্রতিক RSI সে সময়ের সর্বনিম্ন মাত্রা হতে ২০% ওপরে অবস্থান করছে অথবা সর্বোচ্চ মাত্রা হতে ৮০% নিচে অবস্থান করছে। আর ৮০-তে অবস্থান নির্দেশ করে যে সাম্প্রতিক RSI সে সময়ের সর্বনিম্ন মাত্রা হতে ৮০% ওপরে অবস্থান করছে অথবা সর্বোচ্চ মাত্রা হতে ২০% নিচে অবস্থান করছে।
সিগন্যালসমূহ:
• Overbought এবং Oversold Crossovers:যদি একটি শেয়ারের uptrend চিহ্নিত করা যায়, যখন Stoch RSI অগ্রসর হয়ে oversold-এর .২০-এর নিচ হতে .২০-এর ওপরে উঠে আসে, তবে একটি buy সিগন্যাল সৃষ্টি হতে পারে। একইভাবে, যদি একটি শেয়ারের downtrend চিহ্নিত করা হয়, যখন Stoch RSI পতিত হয়ে overbought-এর .৮০-এর ওপর হতে .৮০-এর নিচে চলে আসে, তবে একটি sell সিগন্যাল সৃষ্টি হয়।
• Centerline Crossovers কিছু সংখ্যক ট্রেডার .৫০ (centerline)-এর ওপরে ওঠা অথবা নিচে নামাকে সুনিশ্চিত সিগন্যাল হিসেবে ধরে নেয় এবং whipsawকে বর্জন করে। oversold-এর .৫০ হতে ওপরে উঠে আসা buy সিগন্যাল হিসেবে বিবেচিত এবং সেখানে অবস্থান নেয় যে পর্যন্ত না নিম্নগামী হয়। একইভাবে, overbought .৫০ নিচ হতে উঠে আসা sell সিগন্যাল হিসেবে বিবেচিত এবং সেখানে অবস্থান নেয় যে পর্যন্ত না .৫০ ওপর হতে নিচে নেমে আসে।
• Positive এবং Negative Divergence: একটি পজিটিভ divergence অনুসরণ করে সুনিশ্চিতভাবে .২০ ওপরে উঠে আসাকে যা buy সিগন্যাল এবং একটি নেগেটিভ divergence অনুসরণ করে .৮০ হতে নেমে আসাকে যা sell সিগন্যাল হিসেবে বিবেচিত।


Stochastics



টিউটোরিয়াল কর্নারে আজ আমরা Stochastics নিয়ে আলোচনা করব এবং ব্যাবহারিক প্রয়োগ দেখব। Stochastics একটি সূচক, যা একটি ট্রেন্ড কোথায় গিয়ে শেষ হবে, তা নির্দেশ করে থাকে। এই Stochastics একটি oscillator, যা বাজারের overbought ও oversold স্থল নির্দেশ করে। Stochastics-এর দুটি রেখাই MACD-এর রেখাগুলোর মতো, এই অর্থে যে Stochastics একটি রেখা অপর রেখাটির চেয়ে দ্রুত।
Stochastics এর ব্যবহার: পূর্বেই বলেছি Stochastics আমাদের বাজারের অবস্থা যা overbought বা oversold কি না, সে সম্পর্কে জানায়। Stochastics-এর স্কেলমান ০ হতে ১০০। যখন Stochastics-এর রেখাগুলো ৭০-এর (চার্টে লাল ডট রেখা) ওপরে অবস্থান করে, তখন তা বাজারের overbought নির্দেশ করে, আর যখন ৩০-এর (নীল ডট রেখা) নিচে অবস্থান করে, তখন তা বাজারের oversold নির্দেশ করে। সাধারণ নিয়মানুসারে বাজার oversold হলে আমরা ক্রয় করি এবং overbought হলে বিক্রয় করি।
ওপরের চার্ট হতে আমরা দেখতে পাই, Stochastics অনেকটা সময় ধরে overbought-এর অবস্থান নির্দেশ করছে। এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে দাম কোনোদিকে যাবে, তা কি আপনি অনুমান করতে পারেন?
যদি আপনি বলেন দাম নিচের দিকে নামবে, তাহলে আপনি সম্পূর্ণভাবে সঠিক। কারণ, বাজার অনেকটা সময় ধরে overbought-এ অবস্থান করছে, যেখানে রিভার্সেল ঘটতে বাধ্য।
এটাই হচ্ছে Stochastics-এর মূল বিষয়। অনেক ট্রেডাররা Stochastics ভিন্নভাবে ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু Stochastics-এর প্রধান কাজ হচ্ছে, বাজার কখন overbought এবং oversold হয়, তা নির্দেশ করা। Stochastics-এর ব্যবহার আপনার ট্রেডের জন্য কতটা উপযোগী তা আপনি সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে বুঝতে পারবেন। এটি সম্পূর্ণ আপনার ওপর নির্ভর করে যে আপনি কোন কোন ইন্ডিকেটর ব্যবহার করে ট্রেড করবেন। আপনাকে আপনার নিজস্ব ইন্ডিকেটর খুঁজে বের করতে হবে- যেগুলো আপনাকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিবে।


Price Volume Trend



Price Volume Trend ইনডিকেটরটি হচ্ছে একটি শেয়ারের মূল্য এবং ভলিউমের শতকরা পরিবর্তনের হার, যা মূল্যের পরিবর্তনের গতি কতটা মজবুত, সেটি প্রকাশ করে থাকে। Price Volume Trend ইনডিকেটরটি সাধারণত অন্যান্য Price Volume ইনডিকেটরের মতো শুধু আগের দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মূল্য যোগ অথবা বিয়োগ করে না, বরং মূল্যর পরিবর্তনের শতকরা হার নিয়ে কাজ করে থাকে। একটি upward দিনের ভলিউমকে গুণ করা হয় সেই দিনের মূল্যের শতকরা বৃদ্ধির হার এবং সেই দিনের ক্লোজিং এবং আগের দিনের ক্লোজিং মূল্যের সঙ্গে। তারপর প্রাপ্ত মানটির সঙ্গে আগের দিনের Price Volume Trend-এর সঙ্গে যোগ করা হয়। আবার একটি Downward দিনের ভলিউমকে গুণ করা হয় সেই দিনের মূল্যর শতকরা হ্রাসের হার এবং সেই দিনের ক্লোজিং এবং আগের দিনের ক্লোজিং মূল্যের সঙ্গে। তারপর প্রাপ্ত মানটির সঙ্গে আগের দিনের Price Volume Trend-এর সঙ্গে যোগ করা হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই ইনডিকেটরটি আপনাকে কীভাবে সাহায্য করবে? এই ইনডিকেটরটি আপনাকে divergences বুঝতে সাহায্য করে। এবার একটি উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানি।
যখন শেয়ারটির মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, তখন সেই সঙ্গে যদি Price Volume Trend-ও বৃদ্ধি পায়, তবে সেটি Upward Trend বুঝিয়ে থাকে। আবার যখন শেয়ারটির মূল্য কমতে থাকে, তখন সেই সঙ্গে যদি Price Volume Trend-ও কমতে থাকে; তবে সেটি হবে Downward Trend। এবার লক্ষ করুন, যখন শেয়ারটির মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, তখন সেই সঙ্গে যদি Price Volume Trend কমতে থাকে, তবে বুঝতে হবে,upward Trend-টি খুব একটা Strong নয়। একইভাবে দেখা যায়, আবার যখন শেয়ারটির মূল্য কমতে থাকে, তখন সেই সঙ্গে যদি Price Volume Trend বৃদ্ধি পেতে থাকে, তবে বুঝতে হবে, Downward Trend-টি খুব একটা Strong নয়। আপনি এই ইনডিকেটরটি ব্যবহার করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই Ami Broker ব্যবহার করতে হবে।


Parabolic SAR



আজ আমরা দেখব কীভাবে একটি চার্টে Parabolic SAR ইন্ডিকেটর, RSI এবং Stochastics oscillator যুক্ত করে কাজ করা যায়। প্রথমে জানতে হবে, Parabolic SAR ইন্ডিকেটর কী। Parabolic SAR ইন্ডিকেটর হচ্ছে- এমন একটি Indicator, যেটা Assets-এর Momenterm নির্দেশ করে এবং যখন Momenterm-এর দিকপরিবর্তনের সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। তার মানে হচ্ছে, upward অথবা dwonward-এ যাবার সম্ভাবনা। মাঝেমধ্যে অনেকে Stop and Reversal System-ও বলে থাকে। নিম্নের একটি চার্টে আমরা Parabolic SAR ইন্ডিকেটর, RSI ও Stochastics oscillator যুক্ত করেছি। ইতোমধ্যে আপনারা জেনেছেন, যখন RSI ও Stochastics তাদের oversold স্থল ত্যাগ করা শুরু করে, তখন তা buy সিগন্যাল হিসেবে কাজ করে এবং যখন RSI ও Stochastics তাদের overbought স্থল ত্যাগ করা শুরু করে, তখন তা buy সিগন্যাল হিসেবে কাজ করে।
এখানে আমরা HR Textile-এর একটি উদাহরণ দিচ্ছি। ০৩.০৩.২০১১ তারিখে আমরা buy সিগন্যাল পেয়েছি। তার আগে যদি আমরা ভালোমতো লক্ষ করি তবে দেখতে পাব, RSI ও Stochastics oscillator-টি oversold অবস্থায় ছিল এবং buy সিগন্যাল দিচ্ছিল। এই তিনটি ইন্ডিকেটরে buy সিগন্যাল পরপর সংঘটিত হয়েছে এবং এটি একটি ভালো ট্রেড হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
আবার ০৩.০৪.২০১১ তারিখে আমরা দেখতে পাই RSI ও Stochastics oscillator-টি overbought অবস্থায় ছিল এবং Parabolic SAR-ও Downtrend-এ ছিল। আমরা যদি এই তিনটি Indicators এক সঙ্গে ব্যবহার করি, তবে পরিষ্কার sell Signal পাই । আবার যদি আমরা May মাসের দিকে লক্ষ করি তবে আবারও RSI ও Stochastics oscillator-টি oversold অবস্থায় দেখতে পাই এবং আবার Buy সিগন্যাল পাই। সুতরাং যখন কোনো oscillator দীর্ঘ সময় overbought বা oversold অঞ্চলে অবস্থান করলে ধরে নিতে হবে, তখন নতুন একটি সুদৃঢ় ট্রেন্ড সৃষ্টি হচ্ছে। উপরোক্ত উদাহরণে দেখতে পাই, যেহেতু Stochastics দীর্ঘ সময় নিয়ে oversold অঞ্চলে অবস্থান করছিল, তারপর একটি সুদৃঢ় Uptrend সৃষ্টি হয়েছিল। আবার যখন overbought অঞ্চলে অবস্থান করছিল, তখন একটি সুদৃঢ় Downtrend সৃষ্টি হয়েছিল ।


Momentum



আজকে আমরা মোমেন্টাম ইন্ডিকেটর নিয়ে আলোচনা করব। এই মোমেন্টাম ইন্ডিকেটরটি একটি নির্দিষ্ট সময়ে শেয়ারের মূল্য কী পরিমাণে পরিবর্তন হয়, তা পরিমাপ করে।
মূলত দুভাবে মোমেন্টাম ইন্ডিকেটর ব্যবহৃত হয়:
মোমেন্টাম ইন্ডিকেটরটিকে MACD-এর মতো ট্রেন্ডকে অনুসরণ করে। যখন মোমেন্টাম ইন্ডিকেটরটি নিচে অবস্থান করে এবং ঊর্ধ্বমুখী নির্দেশ করে তখন সাধারণত ক্রয় সিগন্যাল দিয়ে থাকে। বিক্রয় সিগন্যাল দিবে যখন মোমেন্টাম ইন্ডিকেটরটি শীর্ষে অবস্থান করে এবং নিচে নেমে আসবে। আপনি হয়তো এই ইন্ডিকেটরের একটি স্বল্পমেয়াদি moving average-এর মাধ্যমে এর শীর্ষ ও নিম্ন অবস্থান নির্দিষ্ট করতে চান। যদি মোমেন্টাম ইন্ডিকেটর শীর্ষ অথবা নিম্ন মানে পৌঁছায় তবে যে ট্রেন্ডটি চলছিল সে ট্রেন্ডটি চলতে থাকবে, তা আপনাকে ধরে নিতে হবে। উদাহরণ, যদি মোমেন্টাম ইন্ডিকেটর শীর্ষের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে এবং নিচের দিকে নেমে আসে, তবে আপনি হয়তো মনে করতে পারেন যে দাম বাড়তে পারে। তাছাড়া, ট্রেডের পর মূল্যের পরিবর্তনই ইন্ডিকেটরের সিগন্যাল নিশ্চিত করে (যদি দাম বেড়ে শীর্ষে পৌঁছায় এবং নিম্নগতি হয়, তবে বিক্রয়ের পূর্বে অপেক্ষা করুন, যতক্ষণ না দাম কমে নিচে নেমে আসতে শুরু করে)।
আপনি মোমেন্টাম ইন্ডিকেটরটিকে প্রধান ইন্ডিকেটর হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এই পদ্ধতিতে বাজার শীর্ষে অবস্থান করছে তা শনাক্ত করা হয় মূল্যের দ্রুত বৃদ্ধি (যখন সবাই মনে করে মূল্য আরও উপরে যাবে) এবং বাজার নিম্নসীমায় নেমে আসে, তখন তা শনাক্ত করা হয় মূল্যের দ্রুত পতনের মাধ্যমে (যখন সবাই বেরিয়ে আসতে চায়)। এটি সবসময় সংঘটিত হয়, যা একটি সাধারণ মতবাদ। ফলে এই ইন্ডিকেটরটি আপনিও আপনার টুলস বক্সে রাখতে পারেন।


Detrended Price Oscillator



টিউটোরিয়াল কর্নারে ইতোমধ্যে আমরা বিভিন্ন ধরনের ইন্ডিকেটর নিয়ে আলোচনা করেছি। আজ আমরা Detrended Price Oscillator ইন্ডিকেটরটি নিয়ে আলোচনা করব। Detrended Price Oscillator ইন্ডিকেটরটি শেয়ারের মূল্য বা দামের ওঠানামাকে পর্যবেক্ষণ করে একটি ট্রেন্ড খুঁজে পেতে সাহায্য করে। আমরা যারা Ami Broker ব্যবহার করি, তারা সবাই খুব সহজেই এ ইন্ডিকেটরটি ব্যবহার করতে পারব। যাদের এখনো Ami Broker ইনস্টল করা নেই, তারা Ami Broker ইনস্টল করে নিতে পারেন। Detrended Price Oscillator সাধারণত ১৪ দিনের Moving Average-এর একটি Straight Line হিসেবে গণ্য হয় এবং মূল্য এই Moving Average-এর ওপরে এবং নিচে ওঠানামা করে। এটাই মূলত Detrended Price Oscillator। অন্যান্য Oscillator-এর মতো এ ইন্ডিকেটরটিও overbought এবং oversold-এর মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয়ের সিগন্যাল দিয়ে থাকে। আসুন, আমরা একটি উদাহরণের মাধ্যমে ব্যাপারটি আরও ভালোভাবে দেখি।
চিত্রে দেখা যাচ্ছে, যখন Detrended Price Oscillator ইন্ডিকেটরটি জিরো লাইনের ওপরে থাকে, তখন বুঝা যায় শেয়ারটির মূল্য Moving Average-এর উপরে আছে অর্থাৎ বুলিশ ট্রেন্ড রয়েছে। আবার Detrended Price Oscillator যখন জিরো লাইনের নিচে থাকে, তখন বুঝা যায় শেয়ারটির মূল্য Moving Average-এর নিচে আছে অর্থাৎ বিয়ারিশ ট্রেন্ড রয়েছে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে আপনি কখন এ ইন্ডিকেটরটি ব্যবহার করে শেয়ার ক্রয় এবং বিক্রয় করবেন? যখন দেখবেন Price Oscillator নিচের দিক থেকে Zero Line-কে অতিক্রম করছে এবং ওপরের দিকে যাচ্ছে তখনই শেয়ারটির ক্রয় করার উপযুক্ত সময়। তার অর্থ হচ্ছে শেয়ারটি বুলিশ ট্রেন্ডে রয়েছে। আবার যখন দেখবেন Price Oscillator ওপর দিক থেকে Zero Line-কে অতিক্রম করছে এবং নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে, তখনই শেয়ারটির বিক্রয় করার উপযুক্ত সময়। তার অর্থ হচ্ছে শেয়ারটি বিয়ারিশ ট্রেন্ডে চলে যাবে। এভাবে আপনি এই ইন্ডিকেটরটি শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন।


Average True Range পর্ব -১ :



Average True Range indicator-টি দামের গতি ও সময় কোনোটাই নির্দেশ করে না, শুধু দাম পরিবর্তনশীলতার (volatility) ডিগ্রি নির্দেশ করে। এই indicator-গুলো সবসময় বিষয় অনুযায়ী ব্যবধান (gap) এবং limit move সড়াব দেখায়। limit move তখনই সংঘটিত হয়, যখন একটি কমোডিটি তার অনুমোদিত সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত ওঠানামা করে এবং পরবর্তী সেশন না আসা পর্যন্ত আবার ট্রেডে অংশগ্রহণ করে না। এর ফলে সৃষ্ট বার কিংবা ক্যান্ডেল স্টিক ছোট ড্যাশে পরিণত হয়। নিম্নলিখিত তিনটি value-এর উপর ভিত্তি করে True range নির্ধারিত হয়।
• চলতি সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মূল্যের পার্থক্য (high & low)।
• পূর্ববর্তী সমাপ্তি মূল্য এবং চলতি (current) সর্বোচ্চ মূল্যের পার্থক্য।
• পূর্ববর্তী সমাপ্তি মূল্য এবং চলতি সর্বনিম্ন মূল্যের পার্থক্য।
যদি চলতি (current) সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্নের পরিধি বৃদ্ধি পায়, তবে এটি True range হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার সুযোগ থাকে। আর যদি চলতি (current) সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্নের পরিধি ছোট হয়, তবে এটি অন্য দুটি পদ্ধতির মতো True range ক্যালকুলেশনে ব্যবহৃত হয়। শেষের দিকে দুটি সম্ভাবনা তৈরি হয়, যখন পূর্ববর্তী সমাপ্তি মূল্য চলতি (current) সর্বোচ্চ মূল্যের চেয়ে বেশি থাকে। (যা limit move অথবা gap নেমে আসাকে ইঙ্গিত করে)
চিত্রে দেখতে পাই তিনটি অবস্থাতেই TR চলতি সর্বোচ্চ/সর্বনিম্ন-এর উপর নির্ভর করছে না। লক্ষ করুন, তিনটি দৃষ্টান্তেই সীমার স্বল্পতা রয়েছে এবং দুটি দৃষ্টান্তে একটি গুরুত্বপূর্ণ gap পরিলক্ষিত হচ্ছে।
১. ব্যবধান (gap) বৃদ্ধি, যা একটি স্বল্প সীমা (gap) সৃষ্টি করে। পূর্ববর্তী সমাপ্তি মূল্য এবং চলতি সর্বোচ্চ মূল্যের পার্থক্যের উপর ভিত্তি করে TR মান নির্ণয় করা হয়।
২. ব্যবধানের (gap) হ্রস্বতা, যা একটি স্বল্প সীমা (high/low) সৃষ্টি করে। পূর্ববর্তী সমাপ্তি মূল্য এবং চলতি সর্বনিম্ন মূল্যের পার্থক্যের উপর ভিত্তি করে TR মান নির্ণয় করা হয়।
৩. তা সত্ত্বেও পূর্ববর্তী সর্বোচ্চ/সর্বনিম্ন পরিধির মধ্যে চলতি সমাপ্তি মূল্য অন্তর্ভুক্ত থাকে।

পর্ব-২ :





১ম পর্বে আমরা Average True Range নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। এখন আমরা এটির calculation দেখব এবং এর ব্যবহারিক প্রয়োগ দেখব। আমরা জানি, মূলত তিনটি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে calculation করা হয়। বিষয় গুলো হচ্ছে : ১. চলতি সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মূল্যের পার্থক্য (high & low), ২. পূর্ববর্তী সমাপ্তিমূল্য এবং চলতি (current) সর্বোচ্চ মূল্যের পার্থক্য, ৩. পূর্ববর্তী সমাপ্তিমূল্য এবং চলতি সর্বনিম্ন মূল্যের পার্থক্য। সাধারণত ATR ১৪ দিনের ডাটার ওপর ভিত্তি করে সৃষ্টি হয় এবং দিনের মধ্যবর্তী সময়, দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক ভিত্তিতে এটি নির্ণীত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ATR দৈনিক ডাটার ওপর নির্ভরশীল। কারণ, সবকিছুর শুরু রয়েছে, প্রথম TR value পেতে হলে সর্বোচ্চ থেকে সর্বনিম্ন মূল্যকে বাদ দিতে হবে। আর প্রথম ১৪ দিনের ATR হচ্ছে দৈনিক ATR value-এর গড়, যা আগের ১৪ দিনে সংঘটিত হয়েছিল। এর পরে Wilder (ইন্ডিকেটরটির জনক) ডাটাকে আরও সঠিকভাবে পেতে পূর্ববর্তী ATR value যুক্ত করেছেন। ২য় ও পরবর্তী ১৪ দিনের ATR value-এর ক্যালকুলেশন নিচে বর্ণিত হলো।
১. পূর্ববর্তী ১৪ দিনের ATR-কে ১৩ দিয়ে গুণ, ২. একেবারে চলতি ATR value যুক্ত করতে হবে, ৩. ১৪ দ্বারা বিভাজন করতে হবে। চিত্রে আমরা ATR বিষয়টি দেখতে পাচ্ছি। ভালোভাবে লক্ষ্য করলে দেখবেন, যখন ATR ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছিল Average True Range-এর তুলনায় এবং শেয়ারের দামও বৃদ্ধি পেয়েছিল। আবার যখন ATR নিম্নমুখী হয়ে উঠেছিল Average True Range-এর তুলনায় এবং শেয়ারটির দামও কমে যাচ্ছিল। এভাবে একটি শেয়ারের ATR খুব সহজেই নির্ণয় করা যায়।



Reversal Candle stick Pattern



আজ আমরা Reversal Pattern-গুলো সম্পর্কে জানব। Reversal Pattern-গুলো সাধারণত বিপরীত সংকেত প্রকাশ করে থাকে অর্থাৎ এই Candle stick-গুলো যদি upward ট্রেন্ডে দেখা যায়, তবে সেটি downward সংকেত দিয়ে থাকে এবং যদি downward ট্রেন্ডে দেখা যায়, তবে সেটি upward সংকেত দিয়ে থাকে।
১. Long-legged Doji : এই রেখাটি সবসময় একটি পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করে। এটি তখনই সংঘটিত হয় যখন প্রারম্ভিক ও সমাপ্তি মূল্য একই থাকে এবং সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মূল্যের দূরত্ব পারস্পারিকভাবে অধিক হয়।
২. Dragon-fly Doji : এই রেখাটিও পরিবর্তনের আভাস দেয়। এটি তখনই সংঘটিত হয়, যখন প্রারম্ভিক ও সমাপ্তি মূল্য একই থাকে এবং সর্বনিম্ন মূল্য প্রারম্ভিক, সর্বোচ্চ ও সমাপ্তি মূল্যের চেয়ে কম থাকে।
৩. Gravestone Doji : এই রেখার মাধ্যমেও আমরা পরিবর্তনের আভাস পাই। এটি আমরা দেখতে পাই যখন প্রারম্ভিক, সমাপ্তি ও সর্বনিম্ন মূল্য একই অবস্থানে থাকে এবং সর্বোচ্চ মূল্য প্রারম্ভিক, সমাপ্তি ও সর্বনিম্ন মূল্যের চেয়ে বেশি থাকে।
৪. Four Price Doji : এই কেন্ডেল স্টিকটির কোনো সর্বোচ্চ বা সর্বনিম্ন কোনো মূল্য থাকে না, শুধু প্রারম্ভিক এবং সমাপনী মূল্য থাকে। এই প্রারম্ভিক এবং সমাপনী মূল্যের মধ্যেও কোনো ব্যবধান থাকে না।
৫. Star : স্টারগুলো রিভার্সেলের ইঙ্গিত দেয়। একটি বড় রেখার (রিয়েল বডি) পর এই রেখাটি ছোট দেহ নিয়ে আবির্ভূত হয়। যখন এটি বিয়ারিশ প্যাটার্নের পর আবির্ভূত হয়, তখন তা downtrend নির্দেশ করে এবং বুলিশ প্যাটার্নের পর আবির্ভূত হয়, তখন তা uptrendনির্দেশ করে। তবে স্টারটির অবশ্যই ছায়া থাকতে হবে, অন্যথায় এটি স্টার হিসেবে গণ্য হবে না।
৬.Doji star : স্টারটি রিভার্সেলের এবং ডজিটি সিদ্ধান্তহীনতা নির্দেশ করে। যদিও এটি অনিশ্চিত সময়ে রিভার্সেলের ইঙ্গিত দেয়। ট্রেড করার পূর্বে এই ডজি দেখার পর আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে।


Bearish Candle Stick Pattern



আজ আমরা Bearish Pattern-গুলো সম্পর্কে জানব।
১. Long black (filled-in) line : এটি একটি বিয়ারিশ রেখা। একটি নির্দিষ্ট সময়ে প্রারম্ভিক মূল্য সর্বোচ্চের কাছাকাছি থেকে শুরু হয়ে সর্বনিম্ন মূল্যের কাছে গিয়েই শেষ হয়।
২. Hanging man : এই রেখাগুলো বিয়ারিশ, যা uptrend-এর পর সৃষ্টি হয়। যদি এই রেখাগুলো downtrend-এর পর তৈরি হয়, তবে আমরা একে hammer বলব। এদের ছোট শরীর (প্রারম্ভিক মূল্য ও সমাপ্তি মূল্যের অল্প পার্থক্য) এবং নিচের দিকে লম্বা ছায়া (সর্বনিম্ন মূল্য প্রারম্ভিক, সর্বোচ্চ, সমাপ্তি মূল্যের চেয়েও নিচে অবস্থান করে) দেখে এদের চিহ্নিত করা যায়। এটি পূর্ণ কিংবা খালি থাকে।
৩. Dark cloud cover. এই কেন্ডেলটি একই বিয়ারিশ কেন্ডেল, যা আগের দিনের কেন্ডেলের সমাপ্তি মূল্যর ওপরে থেকে শুরু হয় এবং আগের দিনের কেন্ডেলকে ঢেকে ফেলে।
৪. Bearish engulfing lines : এটি একটি বিয়ারিশ প্যাটার্ন। সাধারণত এটি uptrend-এর পর সৃষ্টি হয় (এটি রিভার্সেল হিসেবে কাজ করে)। যখন ছোট বুলিশ (খালি) রেখাটি একটা বড় বিয়ারিশ রেখা (পূর্ণ) দ্বারা আবৃত থাকে।
৫. Evening star : এটি একটি বিয়ারিশ প্যাটার্ন, যা সম্ভাব্য শীর্ষবিন্দু নির্দেশ করে। এখানে স্টারটি রিভার্সেলের সম্ভাবনা নির্দেশ করে এবং বিয়ারিশ রেখাটি এই নির্দেশনাকে সমর্থন করে। স্টারটি পূর্ণ বা খালি থাকতে পারে।
৬. Doji star : স্টারটি রিভার্সেলের এবং ডজিটি সিদ্ধান্তহীনতা নির্দেশ করে। যদিও এটি অনিশ্চিত সময়ে রিভার্সেলের ইঙ্গিত দেয়। নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এই ডজি দেখার পর আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে।
৭. Shooting star : এই প্যাটার্নটি অল্পস্বল্প রিভার্সেলের ইঙ্গিত দেয়, যা সাধারণত রেখার মিছিলের পর প্রতিভাত হয়। সর্বনিম্ন মূল্যের কাছাকাছি স্টারটি পরিলক্ষিত হয় এবং এর উপরের দিকে একটি দীর্ঘ লম্বা ছায়া থাকে।




Supply Testing



আজ আমরা জোগান (supply) নিয়ে আলোচনা করব এবং Supply Testing-এর ব্যবহারিক প্রয়োগ দেখব। সাধারণত বড় বিনিয়োগকারী অথবা মার্কেট মেকাররা বাজারে একটি শেয়ারের দাম কমাতে পারে, কিন্তু তারা কখনো দাম বাড়াতে পারে না, যতক্ষণ অন্য বিক্রয়কারীরা একই সময় বিক্রয় করতে থাকেন। প্রফেশনাল ট্রেডাররা সাধারণত supply pressure শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেন এবং তাদের নিশ্চিত হতে হয় supply pressure পুরোপরি শেষ হয়ে গেছে। এর পরই তারা তাদের হাতে থাকা শেয়ার ট্রেড করেন। ভলিউমের পরিমাণ দেখে তারা বুঝতে পারেন, কী পরিমাণ শেয়ার বিক্রি হয়েছে। লো ভলিউম ট্রেড অর্থ হচ্ছে, little selling on the mark-down। হাই ভলিউম ট্রেডের অর্থ হচ্ছে, fact selling on the mark-down।
এই পদ্ধতিকে আবার ‘Testing’-ও বলা যায়। আপনি কখনো হাই ভলিউম অথবা লো ভলিউমে এই ‘Test’টি করতে পারেন। সাধারণত একটি সফল লো ভলিউম টেস্ট আপনাকে সংকেত দেয় মার্কেট ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে এবং একইভাবে হাই ভলিউম টেস্ট আপনাকে সংকেত দেয় মার্কেট কিছু দিনের জন্য ঊর্ধ্বমুখী হবে, কিন্তু সেই ট্রেন্ডটি বেশি দিন থাকে না।
এবার একটি বাস্তব উদাহরণ দেখি। চিত্রে লক্ষ করুন, মে মাসের শেষের দিকে বিক্রয়চাপ বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং প্রথম কয়েক দিন পর ভলিউম কমে গিয়েছিল। তার অর্থ হচ্ছে, বাজারে জোগান (Supply) কমে গিয়েছিল এবং বিক্রেতারা আর কম দামে শেয়ার বিক্রি করতে রাজি ছিলেন না। ফলে কয়েক দিন পরই দেখুন, দাম আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছিল। ঠিক একই চিত্র ছিল আগস্ট এবং সেপ্টেম্বর মাসেও। প্রায় দুই মাস যাবৎ দাম কমছিল এবং সেই সঙ্গে ভলিউমও কমছিল। একটা পর্যায় এসে দেখা গেল, বিক্রয়চাপ শেষ হয়ে গেছে। কারণ, সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ভীত হয়ে তাদের অধিকাংশ শেয়ারই বিক্রয় করে দিয়েছেন। এ কারণে বাজারে বিক্রয়কারীর সংখ্যা কমে যায় এবং সঙ্গে সঙ্গে supply-ও কমে যায়। সুতরাং দেখা যায়, এই supply testing খুবই একটি কার্যকর পদ্ধতি।


Pushing Up through Supply

আমরা ইতোমধ্যে চাহিদা এবং জোগান (Demand & Supply) সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আজ আমরা দেখবো মার্কেট মেকার অথবা আমরা যাদের মার্কেট প্লেয়ার বলি তারা কীভাবে শেয়ারের দাম পরিবর্তন করতে পারে। সাধারণত Crowed Behavior-এর জন্য আমাদের মতো সাধারণ বিনিয়োগকারীরা অনেক সময় ওপরের লেভেলে আটকা পড়ে যাই। তার অর্থ হচ্ছে, Resistance লেভেল ব্রেক করতে পারে না। এই Resistance লেভেলগুলো মার্কেট মেকাররা আমাদের থেকে ভালো বুঝেন। আর তাই তারা সেই সময় নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। যখন Resistance লেভেলে বিনিয়োগকারীরা আটকে যায়, তখন কিছু বিনিয়োগকারী পেনিক সেল করেন এবং শেয়ারটির দাম আস্তে আস্তে কমে যায়। একটি নির্দিষ্ট সময় পর বিক্রয়কারীর সংখ্যা কমে যায় এবং যারা সেল না করে আটকে ছিল, তারা প্রাথনা করতে থাকে দাম বাড়ার জন্য। এই সুযোগটির জন্যই প্রোফেশনাল মানি অথবা মার্কেট মেকাররা অপেক্ষা করতে থাকেন।
তারা সেই সময় খুবই কম দামে শেয়ারগুলো কিনে নেন এবং কিছুদিন অপেক্ষা করেন। তারপর আস্তে আস্তে শেয়ারটির বিক্রেতা কমে যায় এবং জোগানও (Supply) কমে যায়। ফলে চাহিদা বৃদ্ধি পায় এবং দাম আবার বাড়তে শুরু করে। আবার সেই Resistance লেভেলে চলে গেলে মার্কেট মেকাররা বাজারে জোগান বাড়িয়ে দেয় এবং Resistance লেভেল ব্রেক করে। যখন এই অবস্থা হয়, তখন যেসব বিনিয়োগকারী Resistance লেভেলে আটকে ছিল, তারা কিছুটা স্বস্তি পায় এবং শেয়ারগুলো বিক্রয় না করে অপেক্ষা করতে থাকে বেশি দামের আশায়। আবারও সেই Crowed Behavior-এর জন্য নতুন বিনিয়োগকারীরা ওই লেভেলে শেয়ার কিনতে থাকেন। এই সময় মার্কেট মেকাররা আবার তাদের সব শেয়ার বিক্রয় করে কিছুদিন নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। এভাবেই এই ধারাটি চলতে থাকে। চিত্রে লক্ষ করুন প্রথমে শেয়ারটির দাম কমেছিল। তারপর কিছু দিন Resistance লেভেলে ঘুরাঘুরি করে এবং সেই সঙ্গে বিক্রয়চাপও কমে যায়। ঠিক তার কিছু দিন পরই শেয়ারটির দাম আবার বাড়তে থাকে। এর মানেই হচ্ছে মার্কেট মেকাররা অথবা প্রোফেশনাল মানি resistance লেভেল কে Push Up করছে Supply বৃদ্ধি করে।


Market Sentiment



যেকোনো বাজারে সমপরিমাণ চাহিদা এবং যোগানের ভিত্তিতে দাম নির্ধারিত হয়। চাহিদা এবং যোগানে পরিবর্তন না ঘটলে দামে কোনো পরিবর্তন ঘটবে না। ভবিষ্যতের চাহিদার ওপর ভিত্তি করেই নির্দিষ্ট দাম নির্ধারিত হয়। অর্থাৎ ট্রেডাররা যে দামে ট্রেডে আগ্রহী এবং যা পরবর্তীতে বাজারের চাহিদার সঙ্গে পরিবর্তিত হয়। এরপর আমরা দেখব কিভাবে বাজারের চাহিদা ট্রেডের ক্ষেত্রে আমাদের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে।
চাহিদার সঙ্গে বাজার ওতোপ্রতভাবে জড়িত (Measuring Expectation that Drive Market) :
এখানে সেন্টিমেন্ট টার্মটির মাধ্যমে বাজারের সামগ্রিক প্রত্যাশাকেই বোঝানো হয়েছে। প্রত্যেকের ভয় এবং আশাহত হওয়া বা লোভ এবং সন্তষ্টির মধ্য এটি বিরাজমান। একটি বিয়ার মার্কেটে ট্রেডারদের প্রত্যাশা একই হয়। বাজারের সর্বনিম্ন মূল্যের প্রতি এবং লোকসানের ক্ষেত্রে তারা ঐক্যমত পোষণ করে। যখন দাম পড়তে শুরু করে তখন কিছু কিছু অংশগ্রহণকারী আশান্বিত হয় যে দাম বাড়বে। কিন্তু দেখা যায় যে, দাম একটি নিম্নপর্যায়ে নেমে আসে। আবার বুল মার্কেটের মাঝ পর্যায়ে কারো কারো প্রত্যাশার পরিবর্তন ঘটে; অর্থাৎ দাম বাড়বে এ ব্যাপারে তারা সুনিশ্চিত; কিন্তু সবাই আশাবাদী হতে পারে না।
যখন দাম বাড়তে থাকে তখন অনেকেই ভাবে যে দাম আরও বাড়বে। এ ক্ষেত্রে অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে ট্রেডে অংশ নেয় যেখানে তারা অতিমাত্রায় প্রলুব্ধ হয়। অন্যভাবে বলতে গেলে এখানে প্রত্যাশা অনেক বেশি থকে। যখন প্রত্যাশা বেশি থাকে তার মানে হলো সেখানে কেনার জন্য আর কোনো ব্যক্তিকে খুঁজে পাওয়া যায় না। যেখানে দাম আর বাড়বে না এবং সবাই তাদের কেনা শেষ করেছে তা বোঝায়।
মার্কেট সেন্টিমেন্ট পরিমাপে বিভিন্ন টেকনিক্যাল পরিমাপক ব্যবহৃত হয়। এটি নির্ণিত হয় সাধারণত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী বনাম বৃহৎ বিনিয়োগকারী, জোরালো অর্থ প্রবাহ বনাম দূর্বল অর্থ প্রবাহের তুলনা করে। তুলনাগুলো আমাদের এই তথ্য দেয় যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামত সবসময় সঠিক হয় না। আবার একটি উঠতি বাজারের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ ট্রেডার ক্রয় করেছে এটি বোঝায় এবং আর কাউকে কেনার জন্য খুঁজে পাওয়া যায় না। অর্থাৎ যেখানে চাহিদা শেষ হয়েছে, সেখান থেকেই দাম কমতে থাকে।


Identify Bullish & Bearish Volume

আজকে আমরা দেখব, কীভাবে আমরা বুলিশ এবং বিয়ারিশ ভলিউম চিহ্নিত করতে পারি। শুধু তাই নয়, আমরা এই বুলিশ ও বিয়ারিশ ভলিউম দেখে বাজারের চাহিদা ও জোগান সম্পর্কেও ধারনা পেতে পারি। যখন আপনি দেখেন বাজারে একটি শেয়ারের দাম বাড়ছে এবং সেই সঙ্গে ভলিউমও বৃদ্ধি পাচ্ছে- তার মানে কী হচ্ছে? বাজারে কি চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে? হ্যাঁ, আপনি এই প্রশ্নগুলোর উত্তর সহজেই দিতে পারবেন, যদি আপনি ভলিউম অ্যানালাইসিস জানেন। এখন আসুন দেখি কীভাবে এই বুলিশ এবং বিয়ারিশ ভলিউম চিহ্নিত করা যায়। চিত্র - ১ এ লক্ষ করুন। দেখা যাচ্ছে, শেয়ারটির দাম বাড়ছে এবং প্রারম্ভিক এবং সমাপনী মূল্যের মধ্যে পার্থক্যের পরিমাণ বেশি এবং সেই সঙ্গে ভলিউমও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা এই ভলিউমটিকে বুলিশ ভলিউম বলতে পারি। কারণ, সেই সময় বাজারে চাহিদা বেশি ছিল এবং সঙ্গে সঙ্গে দামও বাড়ছিল। আবার ঠিক একইভাবে চিত্র - ২ এ লক্ষ করুন, দেখবেন শেয়ারটির দাম কম ছিল এবং প্রারম্ভিক ও সমাপনী মূল্যের মধ্যেও পার্থক্য বেশি ছিল। এবার ভলিউম দেখুন। ভলিউম কিন্তু আগের দিনের থেকেও বেশি ছিল।
এই ভলিউমটিকে আমরা বিয়ারিশ ভলিউম বলতে পারি। তার কারণ হচ্ছে দাম কমছে, সেই সঙ্গে শেয়ারের জোগানও বাড়ছে। লক্ষ করে দেখুন, আস্তে আস্তে শেয়ারটির দাম কমে যাচ্ছে। তার কারণ হচ্ছে বাজারে জোগান রয়েছে বেশি, কিন্তু সেই তুলনায় চাহিদা বাড়ছে না। ফলে বিক্রয়ের চাপ বেশি এবং দাম কমছে। সুতরাং আমরা বুলিশ এবং বিয়ারিশ ভলিউম সহজেই চিহ্নিত করতে পারব। কিছু বিষয় আমাদের মনে রাখতে হবে সেই বিষয়গুলো হচ্ছে, বাজারে বিয়ারিশ ভলিউম তখনই হয়, যখন প্রোফেশনাল মানি অথবা মার্কেট মেকাররা সেই শেয়ারটি কিনতে আগ্রহী হয় না এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও চাহিদা থাকে না। একইভাবে বুলিশ ভলিউম হয়, যখন দেখা যায়, প্রোফেসনাল মানি অথবা মার্কেট মেকাররা সেই শেয়ারটি কিনতে আগ্রহী এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও চাহিদা থাকে।


Importance of Volume



অনেক টেকনিক্যাল অ্যানালিস্টকে আমরা ভলিউম নিয়ে কথা বলতে শুনি। আসলে ভলিউম বলতে আমরা কি বুঝি? সাধারণত ভলিউম হচ্ছে, একটি দিনের লেনদেনকৃত শেয়ারের সংখ্যা। বেশি পরিমাণের ভলিউম একটি শেয়ারের সক্রিয়তা প্রকাশ করে থাকে। ভলিউমের মুভমেন্ট বোঝার জন্য (আপ অথবা ডাউন) অ্যানালিস্টরা সাধারণত ভলিউম বার দেখে থাকেন। এই ভলিউম বারগুলো একটি চার্টের নিচের দিকে অবস্থান করে। ইচ্ছে করলে আপনি অসর Ami Broker-এ ভলিউম বারগুলো Customized করেও নিতে পারেন। এই ভলিউম বারগুলো একটি নির্দিষ্ট সময়ে কতগুলো শেয়ার লেনদেন হয়েছিল এবং ট্রেন্ডটি কেমন ছিল সেটি প্রকাশ করে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই ভলিউম বিষয়টি এত গুরুত্বপূর্ণ কেন এবং এই ভলিউম অ্যানালাইসিস করে আপনার কী লাভ হবে। হ্যাঁ ভলিউম টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ এই ভলিউমই একটি ট্রেন্ড এবং চার্ট প্যাটার্নগুলোকে নিশ্চিত করে থাকে। দাম যদি ঊর্ধ্বমুখী অথবা নিম্নমুখী হয়, তবে সঙ্গে সঙ্গে বেশি পরিমাণ ভলিউমও দেখতে পাওয়া যায়। আপনি যদি দেখেন, একটি শেয়ারের দাম হু হু করে বাড়ছে, কিন্তু সেই সাথে ভলিউম সেই পরিমাণে বৃদ্ধি পাচ্ছে না, তখন আপনি ধরে নিতে পারেন এই দাম বৃদ্ধিটি একটি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং দামের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বেশি দিন টিকবে না। ধরুন, আপনি দেখলেন, একটি শেয়ার অনেক দিন ডাউন ট্রেন্ডে থাকার পর হুট করে একদিন ৫% দাম বৃদ্ধি পেল। আপনি কি এই বৃদ্ধিকে একটি রেভারসাল ট্রেন্ড ধরবেন? এ ক্ষেত্রে ভলিউম অ্যানালাইসিস আপনাকে সাহায্য করবে। যদি ভলিউম আগের দিনগুলোর থেকে বেশি হয়, তবে আপনি এটিকে রেভারসাল ট্রেন্ড হিসেবে ধরতে পারেন। কিন্তু যদি ভলিউম আগের দিনগুলোর থেকে বেশি না হয়, তবে আপনার বুঝতে হবে, এটি কোনো রেভারসাল ট্রেন্ড নয়। সুতরাং ভলিউমের সম্পর্ক সব সময় ট্রেন্ডের সঙ্গে। যখন দাম ঊর্ধ্বমুখী হবে, তখন ভলিউমও বৃদ্ধি পাবে। যখন দাম নিম্নমুখী থাকবে, তখন ভলিউমও কম থাকবে। কিন্তু যদি এই ভলিউম এবং ট্রেন্ডের মধ্যে সাদৃশ্য না থাকে, তবে এটি একটি দুর্বল ট্রেন্ড বলে বিবেচিত হয়।


Demand Factor



শেয়ারবাজারে চাহিদা ও জোগান (ডিমান্ড অ্যান্ড সাপ্লাই) বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসে আপনি ভলিউম ও দামের গতি দেখে সহজেই বিষয়টি ধরতে পারবেন। একজন বিনিয়োগকারী অথবা অ্যানালিস্ট ডিমান্ড ও সাপ্লাই বিবেচনা করে মার্কেটে ঢুকবেন কি ঢুকবেন না নির্ধারণ করে থাকেন। সেই সঙ্গে আরও কিছু বিবেচ্য বিষয় রয়েছে। যেমন- analysis of trading volume, price action and price spreads। শেয়ারবাজার আপনার কাছে আরও সহজ ও বোধগম্য হয়ে উঠবে, যখন আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন বাজার কি ঊর্ধ্বমুখী হবে, না নিম্নমুখী থাকবে। এ জন্য আপনাকে দুটি বিষয় সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা রাখতে হবে। একটি হচ্ছে Lack of demand Ges Supply। এই Lack of demand হচ্ছে।

সামাউন খালিদ কলিন্স

সিরাজগঞ্জ

0 comments
দেশের ঐতিহাসিক প্রাচীন নির্দশন দেখার ইচ্ছা আমার প্রবল। তাই একটু ফুরসত্ পেলেই দেশের কোনো একটি ঐতিহাসিক স্থান ঘুরে আসি। অবশ্য ওইসব এলাকায় পরিচিত কোনো বন্ধু-স্বজন থাকলে তো আর কথাই নেই, ঘুরতে যাবই। বেশ কিছু দিন যাবত কোথাও বের হওয়ার সুযোগ পাইনি। প্রতিবন্ধকতা ছিল এমএ পরীক্ষা, ক্ষুদ্র ব্যবসা কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার, শখের নেশা সাংবাদিকতা। গত বছর ৬ জুলাই কারমাইকেল কলেজে ইতিহাস (এমএ) শেষ বর্ষের মৌখিক পরীক্ষা শেষ করেই ঢাকা হয়ে সিরাজগঞ্জ ঘোরার মনস্থির করি। মাঝে বিরোধী দলগুলোর হরতাল, পবিত্র শবেবরাতের কারণে কয়েকদিন দেরি হলো।
২৭ জুলাই তেঁতুলিয়া থেকে হানিফ এন্টারপ্রাইজে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হলাম। ঢাকায় পৌঁছে সেখান থেকে সিএনজিযোগে মহাখালী বাস টার্মিনালে যাই। ‘অভি এন্টারপ্রাইজ’ বাসযোগে সাড়ে ১১টায় সিরাজগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হলাম। ডাক্তার বন্ধু জানাল, ঢাকা থেকে সিরাজগঞ্জ শহরে পৌঁছতে ঘণ্টা চারেক সময় লাগে। কিন্তু রাস্তার জ্যাম এবং টাঙ্গাইল বাইপাস সড়কে ফুকে গাড়ির সামনের চাকা পাংচার হওয়ায় এক ঘণ্টা দেরিতে সিরাজগঞ্জে পৌঁছলাম।
হার্ডপয়েন্ট থেকে ফেরার পথে আমাকে সাংবাদিক হেলাল ভাই নিয়ে গেল উপমহাদেশের প্রখ্যাত গণিত সম্রাট জাদব চক্রবর্তীর ঐতিহাসিক বাড়িতে। প্রায় সাড়ে তিন একর জমির ওপর অবস্থিত প্রাচীন নিদর্শন কারুকাজের নকশাকৃত পুরনো বিল্ডিংটি দেখে মন জুড়িয়ে গেল। সেখানে প্রবেশ করে মনে হচ্ছিল আমি এক রাজবাড়িতে ঢুকেছি। শুনেছি স্বাধীনতার পর বাড়িটি ‘এতিম শিশু সদন’ হিসেবে ব্যবহৃত হলেও বর্তমানে নর্থ বেঙ্গল মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। প্রফেসর ডা. এমএ মতিন প্রাচীন বাড়িটি সরকারের কাছ থেকে একশ’ বছরের জন্য লিজ নিয়ে মেডিকেল কলেজ স্থাপন করেছেন। প্রতি সেশনে ৩৭ জন দেশের এবং ১৩ জন বিদেশি ছাত্র-ছাত্রী মেডিকেল বিষয়ে ভর্তি হয়ে পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছেন। সেখানে ফটোসেশন করার পর আমাকে নিয়ে গেল ঐতিহাসিক ইলিয়াট ব্রিজ দেখার জন্য, যা ‘বড় পুল’ হিসেবে স্থানীয়ভাবে পরিচিত। লোহার নকশাকৃত ব্রিজটি সিরাজগঞ্জের দু’শহরকে একত্রিত করেছে। ব্রিজের পাশে রয়েছে ছোট একটি শিশুপার্ক। নকশাকৃত লোহা দিয়ে তৈরি ব্রিজটি দেখার মতোই। সেখানেও ফটোসেশন করলাম।
ইলিয়াট ব্রিজ থেকে আবারও সাংবাদিক হেলাল ভাইয়ের অফিসে গেলাম। হেলাল ভাই আগের মতো গরম কলজি সিংড়া ও চমচম মিষ্টি এনে আপ্যায়ন করাল। তখন সময় দুপুর ২টা। আমি নাস্তা সেরে সাংবাদিক হেলাল ভাইকে প্রস্তাব দিলাম, চলুন রবীন্দ্র কাচারি বাড়ি ঘুরে আসি। কিন্তু তার জরুরি কাজ থাকায় তিনি অব্যাহতি চেয়ে আমাকে কাচারি বাড়ি যাওয়ার দিকনির্দেশনা দিলেন। একই সঙ্গে শাহজাদপুরের সাংবাদিক বন্ধু ‘দৈনিক করতোয়া’র সাগর বশাককে ফোনে জানিয়ে দিলেন আমার যাওয়ার কথা। তখন সিরাজগঞ্জ শহর থেকে রবীন্দ্র কাচারি বাড়ি যেতে লোকাল বাসে প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় লাগবে। কিন্তু আমাকে রাতে বাড়ি ফিরতে হবে। ঐতিহাসিক কাচারি বাড়ি দেখার প্রবল ইচ্ছা পূরণের জন্য বাস টার্মিনাল সংলগ্ন মোড় থেকে চারশ’ পঞ্চাশ টাকায় সিএনজি ভাড়া করে বিকাল পৌনে ৩টায় শাহজাদপুর রবীন্দ্র কাচারি বাড়ির উদ্দেশে রওনা হলাম। যাওয়ার প্রাক্কালে রাস্তার দু’পাশে অবলোকন করলাম তাঁতিদের তাঁত বোনার দৃশ্য। সিএনজি চালককে বললাম, ভাই দেখেশুনে জোরে চালিয়ে যাবেন। আমি এক ঘণ্টা দশ মিনিটে শাহজাদপুর পৌঁছলাম। বাসস্ট্যান্ড মোড়ে দাঁড়িয়ে আমি ফোন দিলাম সাংবাদিক বন্ধু সাগর বশাককে। তিনি আমার ফোন পেয়ে বাজারের ভেতরে গৌড়ি সিনেমা হলের সামনে আমাকে যেতে বললেন। আমি সিএনজি চালককে নিয়ে সেখানে গিয়ে দেখি অপেক্ষমাণ সাংবাদিক বশাক। সাংবাদিকতার পাশাপাশি তার বাজারে বড় কাপড়ের দোকানও রয়েছে। তাই তিনি খুব ব্যস্ত। তবু আমার সঙ্গে সিএনজিতে উঠে কয়েক মিনিটে রবীন্দ্র কাচারি বাড়ি পৌঁছালাম। বর্তমানে রবীন্দ্র কাচারি বাড়ি জাদুঘর হিসেবে অনেকের কাছে পরিচিত। সেখানে প্রবেশকালে ২০ টাকার টিকিট নিতে হয়। স্থানীয় সাংবাদিক সাগর বশাকের অতিথি হওয়ায় আমাকে সে টাকা দিতে হয়নি। সাংবাদিক বন্ধু আমাকে প্রথমে জাদুঘরে নিয়ে গেল। জাদুঘরের ভেতরে প্রবেশদ্বারে দু’পাশে বড় হার্ডবোর্ডে লিখা ‘ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্যশৈলীতে একটি দ্বিতল ভবন যার দৈর্ঘ্য ২৬.৮৫ মিটার, প্রস্থ ১০.২০ মিটার ও উচ্চতা ৮.৭৪ মিটার। ভবনটির প্রতি তলায় সিঁড়িঘর ছাড়া বিভিন্ন আকারের মোট সাতটি কক্ষ এবং উত্তর-দক্ষিণ পাশে প্রশস্ত বারান্দা।
শাহজাদপুরের জমিদারি একদা নাটোরের রানী ভবানীর জমিদারির অংশ ছিল। ১৮০৪ সালে শাহজাদপুরের জমিদারি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর মাত্র তেরশ’ টাকা দশ আনায় কিনে নেন। জমিদারির সঙ্গে শাহজাদপুরের কাচারি বাড়িটি হস্তগত হয়েছিল বলে অনেকের ধারণা। ১৮৯০ থেকে ১৮৯৭ পর্যন্ত মাত্র আট বছর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জমিদারি দেখাশোনার জন্য এ বাড়িতে মাঝে মাঝে আসতেন। তিনি থাকতেন কুষ্টিয়ার শিলাইদহে। ১৯৬৯ সালে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর জরাজীর্ণ অবস্থায় পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করে। রবীন্দ্র আলোকচিত্র ও বাড়িতে প্রাপ্ত আসবাবপত্র নিয়ে একটি স্মৃতি জাদুঘর করার চেষ্টা চলছে।
সেখানে ঢুকে নিচতলায় দেখলাম বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শৈশবের ছবি, বয়সের ভারে পৌঢ় ছবি ও তার হাতের লেখা পাণ্ডুলিপি দেয়ালিকা। জাদুঘরের উপরতলায় আছে কবির ব্যবহৃত চেয়ার, শোফা সেট, খাট সেট, পালকি, হারমোনিয়াম, চিনামাটির প্লেট, নানা ধরনের চেরাগ বাতি ইত্যাদি। যেগুলো সংরক্ষণের জন্য সাদা চকচকে প্লাস্টিক কাগজ দিয়ে মোড়ানো হয়েছে। এছাড়া কিছু কিছু জিনিস স্বচ্ছ আলমিরার মধ্যে সংরক্ষণ করা হয়েছে। জাদুঘরের ভেতরে স্বল্প সময়ে অবস্থান করে বিশ্বকবির ব্যবহৃত জিনিসপত্র দেখে মন জুড়িয়ে গেল। সেখান থেকে বেরিয়ে গেলাম রবীন্দ্র চর্চার জন্য নবনির্মিত অডিটোরিয়াম ভবনে। সেখানে জাদুঘরের দায়িত্বরত কাস্টডিয়ান জহরুল হকের সঙ্গে কথা হলো। তিনি আমাকে এক কাপ চা খেতে বললেন। প্রচণ্ড গরমে আমি ঠাণ্ডা পানি খেয়ে বিদায় নিলাম। এবার সাংবাদিক বন্ধু সাগর বশাক বাজারে তার এলাকার চমচম মিষ্টি ও দই খাওয়ালেন। বিকাল পৌনে ৫টায় সিরাজগঞ্জের উদ্দেশে ফিরলাম। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সিরাজগঞ্জ বাজারে পৌঁছলাম। সুযোগ পেলে আপনিও ঘুরে আসুন উপমহাদেশের প্রখ্যাত গণিত সম্রাট জাদব চক্রবর্তীর বাড়ি, শাহজাদপুরে রবীন্দ্র কাচারি বাড়ি, ইলিয়াট ব্রিজ ও সিরাজগঞ্জ শহররক্ষা বাঁধ।

আমার দেশ
এম. এ. বাসেত

বড়াইবাড়ী দিবস

0 comments
১৮ই এপ্রিল ঐতিহাসিক বড়াইবাড়ী দিবস। ২০০১ সালের এই দিনে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বড়াইবাড়ীতে হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। রাতের আঁধারে বড়াইবাড়ী বিডিআর ক্যাম্পসহ আশপাশের এলাকা দখল করে নিতে আক্রমণ চালিয়েছিল ভারতীয় বাহিনী; কিন্তু তাদের সেই আক্রমণের দাঁতভাঙা জবাব দিয়েছিল তত্কালীন বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) ও এলাকাবাসী। বিডিআর-জনতার সম্মিলিত প্রতিরোধ ভারতীয় বাহিনীকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করে। তত্কালীন বিডিআর মহাপরিচালক আ ল ম ফজলুর রহমানের তথ্য অনুযায়ী বড়াইবাড়ী যুদ্ধে ভারতীয় বাহিনীর চার শতাধিক সদস্য নিহত হয়। বিভিন্ন সভা-সেমিনারে দেয়া বক্তব্যে তিনি একাধিকবার এ তথ্য জানিয়েছেন। অপরদিকে বিডিআরের শাহাদাত বরণ করেন ৩ জন। নিজের জীবন দিয়ে ৩ বিডিআর সদস্য দেশের মাটি রক্ষা করেন; কিন্তু তাদের আজও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা না দেয়ায় ক্ষুব্ধ বড়াইবাড়ী এলাকার মানুষ। তবে ২০০৯ সালে দৈনিক আমার দেশ’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বড়াইবাড়ীর ৩ শহীদ পরিবারকে দেশ রক্ষায় বীর সন্তানদের অবদানের জন্য আনুষ্ঠানিক সম্মাননা এবং ৫০ হাজার করে নগদ টাকা দেয়ায় তারা ভীষণ খুশি।
বড়াইবাড়ীর ঘটনার বিষয়ে নতুন প্রজন্মের স্থানীয় যুবকরা বলেছেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি বা দেখার সৌভাগ্য হয়নি; কিন্তু ২০০১ সালের ১৮ এপ্রিল ভারতীয় বাহিনীর আক্রমণ প্রতিরোধ করতে যে যুদ্ধ রচিত হয়েছিল তাকে সত্যিকার অর্থে আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ বলেই মনে হয়েছে। ১৮ এপ্রিল রাত থেকে যুদ্ধ চলে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত। যুদ্ধে বিডিআরের ল্যান্স নায়েক ওয়াহিদ মিয়া, সিপাহী মাহফুজুর রহমান ও সিপাহী আবদুল কাদের শহীদ হন। গুরুতর আহত হন আরও ৬ জন। ২০ এপ্রিল যুদ্ধ থামার পর বিডিআর-বিএসএফ পতাকা বৈঠকে ১৬টি লাশ ও দু’জন আত্মসমর্পণকারী বিএসএফ সদস্যকে হস্তান্তর করা হয়।
ওই ঘটনা বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ২০০১ সালের ১৮ এপ্রিল ভোর সাড়ে ৩টায় ভারতীয় বাহিনী বড়াইবাড়ী দখলের উদ্দেশ্যে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশের ভেতরে প্রবেশ করে। রাতের আঁধারে বড়াইবাড়ী বিডিআর ক্যাম্প দখলে নেয়ার চেষ্টা চালায় তারা। রাতে ধানক্ষেতে পানি দিতে আসা মিনহাজ উদ্দিন নামের এক যুবককে রাস্তায় পায় ভারতীয় বাহিনী। তার কাছে জানতে চায় বিডিআর ক্যাম্প কোন দিকে। সে ঘটনা বুঝতে পেরে বিডিআর ক্যাম্পের উল্টো দিকে তাদের দেখিয়ে দেয়। ভারতীয় বাহিনী সেদিকে রওনা করলে মিনহাজ উদ্দিন জীবন বাজি রেখে বিডিআর ক্যাম্পে চলে আসে এবং ভারতীয় বাহিনী প্রবেশ করার সংবাদ দেয়। এ সংবাদ পেয়ে প্রস্তুতি নেন বিডিআর ক্যাম্পের সদস্যরা। এরই মধ্যে রাস্তায় টহল বিডিআর পেয়ে গুলি চালায় ভারতীয় বাহিনী। এদিকে প্রস্তুতি নিয়ে ক্যাম্প থেকে পাল্টা গুলি চালায় বিডিআর। শুরু হয় যুদ্ধ। ভারতীয় বিশাল বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে অটল থাকে ক্যাম্পের ২৫ বিডিআর। সঙ্গে প্রতিরোধ গড়ে তোলে স্থানীয় জনগণও। আক্রমণের সংবাদ পেয়ে জামালপুর থেকে সকাল ১০টায় লে. কর্নেল শায়রুজ্জামানের নেতৃত্বে অতিরিক্ত ফোর্স সেখানে পৌঁছায়। এতে যুদ্ধ আরও তীব্র রূপ নেয়। ১৮ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত চলে এ যুদ্ধ। ভারতীয় বাহিনী মরিয়া হয়েও বিডিআর ক্যাম্প দখলে নিতে পারেনি। এক পর্যায়ে প্রাণে বেঁচে থাকা দুই বিএসএফ সদস্য আত্মসমর্পণ করে। তবে এর আগে প্রথম আক্রমণেই বিডিআর ক্যাম্প দখলে নিতে না পেরে ভারতীয় বাহিনী গ্রামের ৮৬টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।

Saturday, April 14, 2012

ক্লান্তি থেকে রোগের উপসর্গ

2 comments
ক্লান্তির একটি বড় কারণ হলো অনিদ্রা। ঘুম খুব কম হলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে মনোযোগ ও স্বাস্থ্যের উপর। পূর্ণবয়ষ্কদের প্রতিরাতে ঘুম হওয়া উচিত ৭-৮ ঘন্টা। ঘুম হওয়া উচিত বড় রকমের অগ্রাধিকার। ঘুমের একটি নিয়মিত সূচী থাকাও চাই। ঘুম ঘরে যেন না থাকে ল্যপটপ, সেলফোন ও টিভি। এরপরও সমস্যা থাকলে চিকিত্সকের পরামর্শ। ঘুমের বৈকল্য থাকতেও পারে। নিম্নে ক্লান্তির কারণগুলো হলো:

স্লিপএপনিয়া হতে পারে বড় কারণ

অনেকে মনে করেন বেশ ঘুম হচ্ছে, নাক ডাকিয়ে ঘুম। কিন্তু ঘুমে সাময়িক স্বাসবোধ বা এপনিয়া তো পথে বাধঅ হয়ে দাঁড়ায়। সারারাতধরে মাঝে মধ্যে এমন স্বপ্নকালের শ্বাসবিরতি। প্রতি বিরতিতে সামান্য ক্ষণের জন্য হলেও জেগে উঠা হয়ত অজান্তেই। ফলাফল হলো: আট ঘন্টা হলেও ঘুমের ঘাটতি থেকে গেলো। হা করে ঘুমানো খুব বাজে অভ্যাস। স্থূলো হলো ওজন হ্রাস করা চাই। ধূমপান করে থাকলে বর্জন করুন। সিপিএপি ডিভাইস ব্যবহার করা যাতে রাতে নিদ্রা কালে স্বাসপথ থাকে উম্মুক্ত।

খুব কম আহার করা

ক্লান্তির অন্যতম কারণ শরীরে পর্যাপ্ত জ্বালানির জোগান নেই। খুব কম আহার করলে ক্লান্তি আসে। আবার ভুল খাবার খেলেও সমস্যা হয়। সুষম খাদ্য খেলে রক্তের সুগার মানকে স্বাভাবিক পর্যায়ে রাখে, আর রক্তের সুগার নেমে গেলে যে শ্লথ গতি হয় শরীর একেও রোধ করে। প্রাত:রাশ খাওয়া কখনও বাদ দেবেননা, প্রতিবেলার আহারে যেন অবশ্য থাকে জটিল শর্করা ও প্রোটিন। যেমন গমের টোস্ট ও ডিম। দিনভর স্থির এনার্জির জন্য কম করে সারাদিন খাওয়া।

ক্লান্তির কারণ রক্তস্বল্পতা

নারীদের ক্লান্তির একটি কারণ হলো রক্তস্বল্পতা। ঋতুস্রাবের সময় অধিক রক্তক্ষয় হলো লৌহ ঘাটতি। মেয়েরা তাই থাকে ঝুঁকিতে। প্রয়োজন লোহিত কনিকা। কারণ এর অক্সিজেন বহন করে টিস্যুও দেহযন্ত্রে। লৌহ ঘাটতি হয়ে রক্তস্বল্পতা হলে লৌহপরিপূরক ওষুধ, লৌহসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, কৃশমাংস, যকৃত্, শেলফিস, ধানস, লৌহসমৃদ্ধ শস্য। কচু শাক, লালশাখ, তেল দিয়ে ভেজে খেলে ভালো।

ক্লান্ত ও বিষন্নতা যদি দুই সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয় তবে ডাক্তারের পরামর্শ জরুরী।

ক্লান্তির কারণ হতে পারে হাইপোথাইরয়েডিজম

গলদেশের মূলে রয়েছ ছোট গ্রন্থি থাইরয়েড। আমাদের দেহবিপাক নিয়ন্ত্রণ করে। শরীরের জ্বালানিকে গতিতে ও এনার্জিতে রূপান্তরিত করে। এর গতিকেও নিয়ন্ত্রণ করে। গ্রন্থির কাজ কর্ম শ্লথ হলে, বিপাক চলে মন্দগতিতে। শরীরও তখন স্লথ হয়ে যায়। রক্ষ পরীক্ষায় যদি প্রমাণ হয় যে থাইরয়েড গ্রন্থির কাজ-কর্ম মন্থরগতি তাহলে প্রয়োজন হতে পারে সিনথেটিক হরমোন তখন চিকিত্সকের পরামর্শ জরুরী।

ক্যাফিন ওভারলোডে হতে পারে ক্লান্তি

ক্যাফিন মাঝারি মাত্রায় সজাগ সতর্ক করে মান। কিন্তু খুব বেশি হলে বাড়ে হূদঘাত হার। রক্তচাপ ও বাড়ায়। শরীর ও মনকে ক্লান্ত করে।

মূত্র সংক্রমণেও হতে পারে ক্লান্তি

মূত্রসংক্রমণ যাদের হয় তাদের প্রস্রাবে হয় জ্বালা ও বারবার প্রস্রাব করার তাগিদ। তবে সংক্রমণ সব সময় জোরালো উপসর্গ নিয়ে আসেনা। একমাত্র লক্ষণ হতে পারে ক্লান্তি। মূত্র পরীক্ষা করলে মূত্র সংক্রমণ ধরা পড়ে। এন্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিত্সায় ক্লান্তিও ভালো হয়।

ডায়াবেটিসও হতে পারে ক্লান্তির কারণ

ডায়াবেটিস হলে রক্তে বাড়ে সুগার। দেহকোষে না ঢুকে সেই সুগার ক্রমাগত বাড়তে থাকে রক্তে। অথচ স্বাভাবিক অবস্থায় হরমোন ইনসুলিনের সহায়তায় সুগার দেহকোষে ঢুকে শক্তিতে রূপান্তরিত হবার কথা। কিন্তু ডায়াবেটিস হলে ইনসুলিনের হয় ঘাটতি। ফলাফল; এত খাওয়ার পরও শরীর হয়ে পড়ে দুর্বল ও নি:শক্তি। তাই ক্লান্তি যদি অটল হয়ে থাকে তাহলে ডায়াবেটিসের জন্য রক্ত পরীক্ষা করানো উচিত। ডায়াবেটিসের চিকিত্সার মধ্যে জীবন যাপনে পরিবর্তন আনা; খাদ্যবিধি ও ব্যায়াম করা। প্রয়োজনে মুখে খাবার ওষুধ ও ইনসুলিন।

পানিশূন্যতাও হতে পারে ক্লান্তির কারণ

ক্লান্তির একটি বড় কারণ পানিশূন্যতা। ব্যায়াম করুন বা ডেসেক কাজ করুন, শরীরে পানি চাই, শরীর শীতল থাকা চাই। পিপাসা পেলে বোঝা গেলো পানির প্রয়োজন শরীরের। সারাদিন পানি পান করুন, তাহলে লঘু মূত্র হবে, হালকা লাগবে। শরীর চর্চার আধঘন্টা/এক ঘন্টা আগে পানি পান করুন দুগ্লাস।

হূদরোগেও হতে পারে ক্লান্তি

প্রতিদিনের কাজ কর্মে ক্লান্তি ভর করলে যেমন বাগান পরিষ্কার করা বা ঘর পরিষ্কার করা তখন বুঝতে হবে হয়ত হূদযন্ত্র আর এত সবল নয়। যদি দেখা যায় যে কাজগুলো এক সময় সহজ মনে হতো সেগুলো এখন কঠিন মনে হচ্ছে, তাহলে হূদচিকিত্সকের পরামর্শ নেয়া ভালো। যদি হূদরোগ হয়ও তাহলে জীবন ধারার পরিবর্তন, ওষুধ, চিকিত্সা কুশলে রাখতে চেষ্টা করবে। শক্তি ফিরিয়ে আনতে হবে শরীরে।

সিফট্ কাজে ঘুমের সমস্যা

রাতভর কাজ বা নাইট শিফট্ দেহঘডিকে গোলমাল করে দিতে পারে। ক্লান্তি ভর করবে, যখন জাগার কথা জেগে উঠলে ক্লান্ত মনে হবে। দিনে ঘুমাতেও সমস্যা হতে পারে। বিশ্রামের সময় দিনের আলোর মুখোমুখি যত কম হওয়া যায়। ঘর রাখতে হবে যতদূর সম্ভব অন্ধকার, শীতল ও শান্ত। তাতেও না হলে চিকিত্সকের পরামর্শ।

ফুড এলার্জিতে ক্লান্তি

অনেকের মতে, লুকিয়ে থাকা ফুড এলার্জি ঘুম কাতর করতে পারে। আহারের পর ক্লান্তি তীব্র হলে তা ফুড এলার্জির জন্য হতে পারে। চিকিত্সকের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন। ক্রনিক ফ্যাটিগ সিনড্রোম বা ফাইব্রোমায়ালজিয়া, মাম, অটল ক্লান্তির কারণ হতে পারে স্বাস্থ্য সমস্যা। তখন চিকিত্সকের পরামর্শ জরুরী। মৃদু ক্লান্তি হলে, ব্যায়াম আধ ঘন্টা। সপ্তাহে তিনবার।

Wednesday, April 11, 2012

আলোকবর্ষ

0 comments
নক্ষত্র থেকে নক্ষত্র এবং পৃথিবী থেকে নক্ষত্র মাপতে যে একক ব্যবহার করা হয় তাকে আলোকবর্ষ বলে।পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব প্রায় ১৫ কোটি কিলোমাটার।আর সূর্য থেকে পৃথিবীতে আলো আসতে সময় লাগে মাত্র ৮ মিনিট ১৯ সেকেন্ড।আরো জেনে নিন সূর্যের কেন্দ্রভাগের উত্তাপ প্রায়১৫০,০০০,০০০ ডিগ্রী ও পৃষ্ঠভাগের৬,০০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস।

অর্পিত সম্পত্তি

0 comments
১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ’৬৫ থেকে ’৬৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যেসব নাগরিক এ দেশ থেকে ভারতে চলে যান, তাঁদের স্থাবর সম্পত্তি তৎকালীন পাকিস্তান সরকার শত্রু সম্পত্তি হিসেবে চিহ্নিত করে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৪ সালে নাম পরিবর্তন করে অর্পিত সম্পত্তি করা হয়।

Saturday, April 7, 2012

আমরা হাই তুলি কেন

0 comments
আমাদের শরীরে কাজের ফলে ক্লান্তি আসে। তাতে বাড়তি শক্তির প্রয়োজন হয়। আর শক্তি আসে শরীরে জমানো প্রটিন,চর্বি সহ বিভিন্ন জমানো জিনিস ভেঙ্গে। এগুলো অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে ভাঙ্গে। তাই অতিরিক্ত অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় যা আমরা হাই তুলে টেনে নেই।

Friday, April 6, 2012

বিশ্বের বিরল কিছু ছবি

0 comments
১. বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী আলবাট আইনস্টাইনের স্কুলজীবনের প্রোগ্রেস রিপোর্ট - যার অস্তিত্ব ছিল বলে কখনই ধরা হয় নাই।

২. প্রায় জনমানবহীন কোনো এক সময়ের ব্রাজিলের রাজধানী ।

৩. যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের দাবারু ফিশারের সাথে রুশ দাবারু স্পাসকির দাবা যুদ্ধ। ফিশার এই প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন খেতাব ছিনিয়ে নিলে তিনি বিশ্ব জুড়ে ভুয়াসী প্রশংসিত হন।

৪. খরগোশের সাজে হিটলার।

৫. বাধ্যতামূলক আর্মি সার্ভিসের তালিকায় গায়ক এলভিস প্রেসলি।

৬. দ্যা বিটেলস হোম

৭. পরিবারের সদস্যদের সাথে ওসামা বিন লাদেন

৮. বার্লিন প্রাচীরের পতন

৯. ফাস্ট ফুড হিসেবে সুপরিচিত ম্যাগডোনালস এর প্রথম বিক্রয় কেন্দ্র

১০. কোকা কোলার বোতলের বিবর্তন

১১. বিখ্যাত রক গায়ক জন লেনন - আততায়ীর হাতে মৃত্যুবরণ করার আগ মুহুর্তে

১২. ১১ সেপ্টেম্বরের দুর্ঘটনার কথা শোনার কালে প্রেসিডেন্ট বুশ

১৩. মহাত্মা গান্ধী ও কৌতুক অভিনেতা চার্লি চ্যাপলিন

১৪ .প্রথম কম্পিউটার

১৫. মর্গে শায়িত প্রেসিডেন্ট কেনেডি

১৬. মার্টিন লুথার কিং এর প্রাণহীন দেহ

১৭. দ্যা বিটেলস -১৯৫৭

১৮. গুগলের সুত্রপাত

১৯. সর্বনাশের উদ্দেশ্যে টাইটানিকের যাত্রা শুরু

২০. সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত প্রিন্সেস ডায়নার প্রাণহীন দেহ

নেয়া হয়েছে রামন'র সংগ্রহশালা থেকে