Tuesday, July 17, 2012

আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট

0 comments
আলেকজান্ডারের শিক্ষক ছিলেন অ্যারিস্টটল। কিন্তু তার নিত্যসঙ্গী ছিল মহাকবি হোমার রচিত ইলিয়াড। মুহূর্তের জন্যও তিনি ইলিয়াড মহাকাব্যটিকে ভুলতেন না। এমনকি ঘুমানোর সময়ও তিনি ইলিয়াড লিশের নিচে রেখে ঘুমাতেন। অনেক পাঠকই হয়তো জানেন মহাকাব্য ইলিয়াডে দ্বেষ-বিদ্বেষ, ষড়যন্ত্র এবং রিরংসার কথাই লেখা হয়েছে। এ মহাকাব্যে মানবিক প্রেম ছিল খুব নগণ্য। যুদ্ধক্ষেত্রে আলেকজান্ডার যখন তার প্রতিভার চূড়ান্ত প্রকাশ ঘটালেন; একে একে গ্রিসের সব ক'টি রাজ্য জয় করলেন; তারপর মিসর, পারস্য, এশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল এবং মধ্য এশিয়াকে পরাজিত করে ভারতবর্ষে পেঁৗছালেন, তখনও কিন্তু তিনি ইলিয়াড ছাড়েননি। খ্রিস্টপূর্ব ৩২৩ অব্দে তিনি ব্যাবিলনে মারা যান। মাত্র ৩২ বছর বয়সেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। জীবনের শেষ সময়েও ইলিয়াড যে তার নিত্যসঙ্গী ছিল, এ ব্যাপারে প্রাপ্ত বিভিন্ন নতুন তথ্যের আলোকে ঐতিহাসিকরা একমত হয়েছেন। * আলেকজান্ডার ছিলেন ম্যাসিডোনিয়ার রাজার ছেলে। ম্যাসিডোনিয়ার লোকজনের সঙ্গে গ্রিসের অন্যান্য এলাকার লোকজনের ভালো সম্পর্ক ছিল না। কারণ ম্যাসিডোনিয়ার মানুষজনকে তারা বিশ্বাস করত না, অর্থাৎ সন্দেহের চোখে দেখত। গ্রিক সমাজে গণতন্ত্রের চর্চা ছিল। গণতান্ত্রিক ধ্যান-ধারণা আলেকজান্ডার সহ্য করতে পারতেন না। তাই প্রথম সুযোগেই তিনি এথেনীয় গণতন্ত্র ধ্বংস করে দেন। * প্রাচ্য দেশীয় পোশাক-আশাক আলেকজান্ডার পছন্দ করতেন। পোশাক-আশাক ছাড়াও প্রাচ্য নারীদের প্রতি তার দুর্বলতা ছিল। বেশ ক'জন সুন্দরী নারীকে তিনি বিয়েও করেছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি তার বন্ধু-বান্ধবকেও প্রাচ্য দেশীয় নারীদের বিয়ে করার উপদেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তার কথায় কেউ কান দেননি। * অ্যারিস্টটলের ভাগ্নে ছিলেন ক্যানিসথেনেস। আলেকজান্ডার এশিয়ার বিভিন্ন ভূখণ্ড জয় করার সময় ক্যানিসথেনেস তা চাক্ষুস দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন। এসব যুদ্ধ অভিযানের কথা তিনি লিখে রেখে গেছেন। এ ক্যানিসথেনেসকে খুন করেন আলেকজান্ডার। কারণ তার সন্দেহ হয় ক্যানিসথেনেস তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
*আলেকজান্ডারের যুদ্ধ অভিযানের বর্ণনা হিব্রু ধর্মগ্রন্থে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। * আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর তার মূর্তি দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা হয়। তখন রোমের সম্রাট ছিলেন সিজার। তিনি ছিলেন বিরাট সাম্রাজ্যের অধিকারী। কিন্তু যেসব দেশ জয় করেছিলেন, সেসব দেশে তিনি ব্যক্তিগতভাবে সফরে যেতে পারতেন না। তাই নিজের মূর্তি দূরবর্তী সেসব দেশে পাঠিয়ে দিতেন। তার ধারণা ছিল, প্রজারা মূর্তি দেখেই সম্রাটের উপস্থিতি সম্পর্কে সজাগ থাকবে। ঐতিহাসিকরা মনে করেন এ ধারণাটি সিজার আলেকজান্ডারের চিন্তাধারা থেকে গ্রহণ করেছিলেন। * পারস্যের প্রতিভাবান কবি ফেরদৌসী রচিত 'শাহানামা' এক অসামান্য কাব্যগ্রন্থ। আলেকজান্ডারের বীরত্ব নিয়ে কাব্য রচনা করেছিলেন ফেরদৌসী। তুরস্কের কবি নেভাই এবং আহমেদীও আলেকজান্ডারের বীরত্বের কথা রচনা করেছিলেন।

মাহমুদুল হাসান

0 comments:

Post a Comment