Monday, July 30, 2012

তিনবিঘা করিডর ও দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ছিটমহল

0 comments
পাটগ্রাম উপজেলার কুচলিবাড়ী ইউনিয়ন ও দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ছিটমহলের মাঝখানে তিনবিঘা করিডরটি অবস্থিত। ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ছিটমহল দহগ্রাম-আঙ্গরপোতার সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের যাতায়াতের একমাত্র পথ হচ্ছে এই করিডরটি। পাটগ্রাম উপজেলা সদর থেকে এর দূরত্ব ১০ কিলোমিটার। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ভারত বিভাগের সময় সীমান্ত এলাকাগুলো যাতে সুষ্ঠুভাবে বণ্টিত হয়, এ জন্য গঠিত হয়েছিল Radcliffe Commission। ব্রিটিশদের ডিভাইড অ্যান্ড রুলনীতির সার্থক প্রয়োগ করে Radcliffe Commission সীমান্ত এলাকাগুলোকে এমনভাবে ভাগাভাগি করেছিল, যাতে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ বিরাজ করে, যার দৃষ্টান্ত ছিটমহলগুলো। এর মধ্যে লালমনিরহাট জেলাধীন পাটগ্রাম উপজেলার সীমান্তবর্তী ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ছিটমহল দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতা ব্যাপকভাবে পরিচিত। এ ছিটমহলের সঙ্গে তৎকালীন পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডের যোগাযোগের জন্য একটি 'প্যাসেজ ডোর'-এর ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল, যা বর্তমানে 'তিনবিঘা করিডর' নামে পরিচিত। পাকিস্তান আমল পেরিয়ে বাংলাদেশ আমল পর্যন্ত তিনবিঘা হস্তান্তর প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের অনেক বৈঠক এবং চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতা ছিটমহল পাটগ্রাম উপজেলার একটি স্বতন্ত্র ইউনিয়ন 'দহগ্রাম ইউনিয়ন' হিসেবে পরিগণিত হয় এবং ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দের ১৯ আগস্ট এখানে ইউনিয়ন পরিষদের শুভ উদ্বোধন ঘটে। ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জুন ইজারার মাধ্যমে ওই তিনবিঘা বাংলাদেশকে প্রদান করা হয়। তবে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এক ঘণ্টা পর পর করিডর দিয়ে বাংলাদেশিদের যাতায়াতের সুযোগ দেওয়া হয়। অতঃপর করিডর দিন-রাত খোলা রাখার জন্য দাবি উত্থাপিত হলে ২০০১ খ্রিস্টাব্দের ২৭ এপ্রিল থেকে তা সকাল ৬টা ৩০ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৬-৩০ মিনিট পর্যন্ত খোলা রাখার ব্যবস্থা করা হয়। সর্বশেষ গত ৬ সেপ্টেম্বর ২০১১ খ্রিস্টাব্দে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হাসিনা-মনমোহন বৈঠকে স্বাক্ষরিত চুক্তি মোতাবেক বাংলাদেশিদের যাতায়াতের জন্য তিনবিঘা করিডর বর্তমানে ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা হচ্ছে।

0 comments:

Post a Comment