Thursday, July 19, 2012

ঢাকার কামান

0 comments
ঢাকা একটি ঐতিহাসিক শহর। ৪০০ বছরের পুরনো এই শহর। মগ, পর্তুগিজ আর আরাকান জলদস্যুদের হাত থেকে ঢাকা শহরকে রক্ষার জন্য অনেক কামান তৈরি করা হয়। এই কামানগুলো তৈরি হয় সতেরো শতকের ত্রিশের দশকে। কামানগুলোর মধ্যে আকারে বড় ছিল দুটি। এর একটির নাম 'কালে খাঁ জমজম' আর অন্যটির নাম 'বিবি মরিয়ম'। বিশাল এই কামান দুটির খ্যাতি ছিল ভারতজোড়া। শুধু আকারে নয়, এগুলোর নির্মাণশৈলীও ছিল অপূর্ব। এ জন্য কামানগুলো ছিল ঢাকাবাসীর গর্বের বস্তু। কালে খাঁ জমজম কামানটি ছিল সবচেয়ে বড় আর বিবি মরিয়ম আকারে তার চেয়ে ছোট। সম্রাট আওরঙ্গজেব ভারতবর্ষের সর্ববৃহৎ কামানের যে তালিকা তৈরি করান তার মধ্যে কালে খাঁ জমজমও ছিল। বিবি মরিয়ম কামানটি সেই তুলনায় বেশ ছোট। এর দৈর্ঘ্য ১১ ফুট। ১৬৬১ সালে মীর জুমলা আসাম অভিযানের সময় ছয়টি ভারী কামান ব্যবহার করেন। বিবি মরিয়ম ছিল এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়। মীর জুমলা যুদ্ধে বিজয় লাভ করে ফিরে এসে বিবি মরিয়মকে বড় কাটরার দক্ষিণে সোয়ারি ঘাটের পাশে স্থাপন করেন। তখন থেকে এটি 'মীর জুমলার কামান' নামে পরিচিতি লাভ করে। 'কালে খাঁ জমজম' তখনো রাখা ছিল মোগলাই চরে। কিন্তু নদীভাঙনে একদিন 'কালে খাঁ জমজম' বুড়িগঙ্গায় তলিয়ে যায়। ১৮৪০ সালে বিবি মরিয়মকে সোয়ারি ঘাট থেকে সরিয়ে চকবাজারে স্থাপন করা হয়। চকবাজার ঘনবসতি এলাকায় পরিণত হলে ১৯২৫ সালে কামানটি সদর ঘাটে রাখা হয়। পরে বিবি মরিয়মকে স্থাপন করা হয় গুলিস্তানে। গুলিস্তান তখন ঢাকার কেন্দ্রস্থল। তখন থেকে এটিকে মানুষ গুলিস্তানের কামান বলত। এরপর ১৯৮৩ সালে সরকার এ কামানটি ওসমানী উদ্যানে স্থাপন করে। এখন পর্যন্ত বিবি মরিয়ম সেখানেই আছে।

0 comments:

Post a Comment