Saturday, September 29, 2012

রাস নৃত্য

0 comments

মণিপুরীদের সবচেয়ে প্রধান উৎসব রাসমেলায় যে নৃত্য পরিবেশন করা হয় সেটাই রাসনৃত্য নামে পরিচিত। প্রতিবছর কার্তিক পূর্ণিমা তিথিতে এই উৎসব পালন করা হয়। রাসনৃত্য মণিপুরী সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধ্রুপদী ধারার এক অনন্য সৃষ্টি। মহারাস, বসন্ত রাস, কুঞ্জরাস, দিব্যরাস ও নিত্যরাস-রাসনৃত্য_এই পাঁচ ভাগে বিভক্ত। রাসনৃত্যে সাধারণত রাধা ও কৃষ্ণের ভূমিকা দেওয়া হয় শিশুদের, যাদের বয়স পাঁচের কম। মণিপুরীদের বিশ্বাস, এ বয়সের পর শিশুদের দৈবশক্তি লোপ পেয়ে যায়। তবে প্রকৃত নাটনৃত্য ও গীত পরিবেশন করে তরুণীরা, যারা রাধার সহচরী হিসেবে মঞ্চে আসে। রাসনৃত্যের মাধ্যমে ভক্ত-শিল্পীরা শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে আবেগসূত্রে মিলিত হয়। বাংলা, মৈথিলী, ব্রজবুলি ও মৈতৈ কবিদের পদাবলি থেকে রাসনৃত্যের গীত গাওয়া হয়। মণিপুরী নৃত্যকে বাইরের জগতের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে সিলেটে বেড়াতে এসে এ নাচের কোমল আঙ্গিক দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন। পরে তিনি তাঁর নৃত্যনাট্যে মণিপুরী নৃত্য ব্যবহার করেন। রাস মণিপুরী আদিবাসীরা প্রতিবছর যথানিয়মে উৎসব ভক্তিসহকারে উদ্যাপন করে। উৎসবের সময় দেশ-বিদেশ থেকে আগত দর্শনার্থীদের ভিড়ে মণিপুরীদের এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। রাধা-কৃষ্ণের প্রণয় উপজীব্য করে রাসনৃত্য শুধু মণিপুরী সমাজে নয়, পুরো সাংস্কৃতিকজগতেই এটি এখন পছন্দের একটি নৃত্য।

0 comments:

Post a Comment