Tuesday, September 25, 2012

জামদানি শাড়ি

0 comments

যুগ যুগ ধরে জামদানি শাড়ি বাঙালি নারীর কাছে অতি পরিচিত একটি পোশাক। প্রাচীনকালের মসলিন কাপড়ের উত্তরাধিকারী এই জামদানি শাড়ি মূলত কার্পাস তুলা দিয়ে তৈরি এক ধরনের সূক্ষ্ম বস্ত্র। মসলিনের ওপর নকশা করে জামদানি কাপড় তৈরি করা হয় আর নকশা বোনার পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করে করোলা, ময়ূর প্যাচপাড়, চন্দ্রপাড়, দুবলা জাল, সাবু দানা ইত্যাদি নামকরণ করা হয়ে থাকে। জামদানির প্রাচীনতম উল্লেখ পাওয়া যায় আনুমানিক ৩০০ খ্রিস্টাব্দে কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র গ্রন্থে। ১৭০০ শতাব্দীতে জামদানি দিয়ে নকশাওয়ালা শেরওয়ানির প্রচলন ছিল। এ ছাড়া নেপালের আঞ্চলিক পোশাক রাঙ্গার জন্যও জামদানি ব্যবহৃত হতো। বিগত সময়গুলো জামদানি শিল্প বেশ দুর্যোগপূর্ণ সময় পার করেছে। মোগল আমলে সম্রাট ও তাঁদের রাজ কর্মচারীদের এই শিল্পের প্রতি অমনোযোগিতা এবং ইংরেজ শাসনামলে শিল্প বিপ্লবের ফলে জামদানি শিল্প তার ঐতিহ্য হারাতে বসে। তবে স্বাধীন বাংলাদেশে ঐতিহ্যের ধারক জামদানি শিল্প ও শিল্পীদের বাঁচাতে সরকার ঢাকার ডেমরায় জামদানি পল্লীর তাঁতিদের আর্থিক সহায়তা করে এবং ১৯৯২ সালে দক্ষিণ রূপসী গ্রামে জামদানি পল্লী প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থাকে (বিসিক) দায়িত্ব দেয়। তবে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বর্তমানে জামদানি শিল্প অনেকটাই তার পুরনো ঐতিহ্য ফিরে পেয়েছে। শাড়ি ছাড়াও সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া, পাঞ্জাবি, ব্যাগ ইত্যাদি হিসেবে বর্তমানে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জামদানির ব্যাপক চাহিদা বাড়ায় এবং বাজারে এর উচ্চমূল্য নতুন করে বাংলাদেশে এই শিল্পের গতি সঞ্চার করেছে।

0 comments:

Post a Comment