Monday, April 22, 2013

মিয়ানমার ট্র্যাজেডি

0 comments

মিয়ানমারের সাম্প্রতিক দাঙ্গার চালচিত্র


দিনটি ছিল এ বছরের ২১ মার্চ। ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর ওই এলাকায় ২৫ জন মুসলমানকে হত্যা করা হয়। মৃতদেহগুলোকে একটি পাহাড়ের ওপর তুলে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। কয়েকটি দেহ কুপিয়ে খণ্ড-বিখণ্ড করা হয়। রয়টার্সের এক ক্যামেরাম্যান পুড়ে অঙ্গার হওয়া দেহগুলোর ছবি তুলেছেন। তিনি জানান, মৃতদের অনেকেই ছিল শিশু, যাদের বয়স ১০ বছরের কম।

২০১১ সালের মার্চে ৪৯ বছরের সামরিক শাসনের অবসান হতে না-হতে শুরু হয় বৌদ্ধ-মুসলমান দাঙ্গা। গত মার্চের চার দিনের দাঙ্গায় মিকিতলা শহরটিতে মারা যায় ৪৩ জন। বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ছেড়ে পালায় প্রায় ১৩ হাজার মানুষ। তাদের বেশির ভাগই মুসলমান। এ ঘটনার পর দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে আরও ১৪টি গ্রামে। দাঙ্গায় বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সশস্ত্র আক্রমণ খুবই লক্ষণীয়।

মিয়ানমারের মিকিতলা শহরের পথে হেঁটে যাচ্ছিলেন এক মুসলিম নারী। হঠাৎ এক বৌদ্ধ ভিক্ষু নারীটিকে পাকরাও করে গলায় ছুরি চেপে ধরে। পাশে দাঁড়িয়ে ছিল একদল পুলিশ। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, পুলিশ এগোতে উদ্যত হলেই ভিক্ষুটি চিত্কার করে বলে, ‘এগোলেই মেরে ফেলব।’ কিন্তু তখনো পুলিশেরা অতটা বিস্মিত হয়নি। কয়েক মুহূর্ত পর পুলিশ বুঝতে পারে, এসব ভিক্ষু আসলে দাঙ্গাকারী।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের অনুসন্ধানী প্রতিবেদেনে এমনই তথ্য উঠে আসে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মেয়েটির গলায় ছুরি চেপে ধরা ভিক্ষুটি ছিল একটি বড় দলের সঙ্গে। ভিক্ষু দলটির প্রত্যেকের হাতে ছিল রামদা বা তলোয়ার। মুসলমানদের নিধনে ব্যবহূত হতে অস্ত্রগুলো যেন চকচক করছিল।



ধর্ম, ভিক্ষু ও দাঙ্গা
মিয়ানমারে গণতন্ত্রের সংগ্রামে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু মিকিতলা দাঙ্গায় ভিক্ষুরা যেভাবে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছেন, তাতে তাঁদের সামাজিক ও ধর্মীয় অবস্থান এখন প্রশ্নের মুখোমুখি।
হত্যা ও লুটপাট যখন চলছিল, শহরের পুলিশ তখন ঠায় দাঁড়িয়েছিল। এমন অভিযোগ করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। দাঙ্গার শিকার অসহায় লোকেদের রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এমন অবস্থানের পেছনে কাদের হাত ছিল, তা অনুসন্ধানের বিষয়। তবে মুসলমানদের আতঙ্কিত হওয়ার কারণ ছিল আরও অনেক। ওই এলাকার বিভিন্ন দেয়ালে লেখা ছিল, ‘চাই মুসলমান নিধন’।
তবে দাঙ্গার দায় কেবল বৌদ্ধদের নয়। দাঙ্গার শুরুটি হয়েছিল এক বৌদ্ধকে হত্যার মধ্য দিয়ে। মুসলমানেরা ওই বৌদ্ধকে হত্যা করেছিল। দাঙ্গার জন্য দায়ী সন্দেহে ৪২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। কিন্তু এতে দাঙ্গা বন্ধ হয়ে যাবে, তা নয়। কারণ নতুন দাঙ্গার লু-হাওয়া ছড়াচ্ছে ‘৯৬৯’ আন্দোলন।

অর্থনৈতিক কারণ
ধর্মীয় ও জাতিগত কারণে বৌদ্ধ ও মুসলমানদের দাঙ্গা চলছে, বিষয়টি এমন নয়। সব সময়ই দেখা যায়, এ ধরনের দাঙ্গাকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা হয়। মিয়ানমারের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দাঙ্গার কারণ যত না ধর্মীয়, তার চেয়ে বেশি অর্থনৈতিক। এশিয়ার অন্যতম দরিদ্র দেশটিতে মেখতিলা প্রদেশে ও দেশটির কেন্দ্রস্থলে অবস্থানকারী মুসলমানদের অর্থনৈতিক অবস্থা বৌদ্ধদের চেয়ে ভালো।
দেশটিতে মুসলমানদের সংখ্যা ৫ শতাংশের কম। মেখতিলায় তাদের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ। মুসলমানদের হাতে আছে আবাসন ব্যবসা, ইলেকট্রনিকস পণ্যের ব্যবসা, কাপড়ের দোকান, রেস্তোরাঁ ও মোটরসাইকেলের ডিলারশিপ। শহরটির বৌদ্ধদের মোট আয়ের বহু গুণ বেশি আয় করে মুসলমানেরা। বৌদ্ধরা মুসলমানদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে শ্রমিক বা মুসলমানদের উত্পাদিত পণ্যের বিক্রেতা হিসেবে কাজ করে থাকে।
মিয়ানমারে সামরিক শাসনের অবসানের পর নতুন বাণিজ্য ও বাজার প্রসারের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। বিরাট এ বাজারে দখল কায়েম করা ও জারি রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিক দাঙ্গা চলতে থাকলে নতুন মিয়ানমারের অর্থনৈতিক হিসাব-নিকাশ থেকে ছিটকে বেরিয়ে যাবে ধনী মুসলমানেরা। তাই তাদের টিকে থাকার লড়াইও অর্থনীতিকে কেন্দ্র করেই।

স্বর্ণ ব্যবসায়ীর দোকান থেকে দাঙ্গা
২০ মার্চ মেখতিলার নিউ উইন্ট সেইন এলাকায় এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর দোকান থেকে দাঙ্গা শুরু হয়। মুসলমান ব্যবসায়ীর সঙ্গে ক্রেতা বৌদ্ধ দম্পতির কথা-কাটাকাটি থেকে হাতাহাতি হয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, ওই ঘটনার জন্য মুসলমান ব্যবসায়ীটিই দায়ী। এমনিতেই এলাকায় উগ্র ও একরোখা হিসেবে ওই ব্যবসায়ীর কুখ্যাতি ছিল। তাই ক্রেতাকে বিক্রেতার চড় মারার ঘটনাটি ছিল ‘বারুদের গুদামে ম্যাচের কাঠি ছুড়ে’ দেওয়ারই নামান্তর।
বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সম্বোধন করে প্রচার করা একটি লিফলেট মুসলিমবিরোধী ক্ষোভ উসকে দেয়। লিফলেটটি ছেড়েছিল ‘অসহায় বুদ্ধরা’ নামের একটি সংগঠন। সেটিতে যা লেখা ছিল তার মূল কথা হলো, মুসলমানেরা বৌদ্ধদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তাদের অর্থ জোগাচ্ছে সৌদি আরব এবং তারা মসজিদে মসজিদে গোপন সভা করছে।


বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে শুরু হয় দাঙ্গা। চার মুসলমান এক বৌদ্ধ ভিক্ষুকে তলোয়ার দিয়ে আঘাত করে। মোটরসাইকেলের আরোহী বৌদ্ধ ভিক্ষুটি মাটিতে পড়ে যাওয়ার পর মুসলমানেরা তাঁর গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ ঘটনা সো থেইন নামের এক মেকানিক দেখে ফেলে। সে দ্রুত এক বাজারে ছুটে গিয়ে চিত্কার করে বলতে থাকে ‘ভিক্ষুকে মেরে ফেলেছ! ভিক্ষুকে মেরে ফেলেছ!!’ সঙ্গে সঙ্গে শত শত বৌদ্ধ অস্ত্র নিয়ে বেরিয়ে আসে এবং মুসলমানদের বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আক্রমণ করে।
এ দাঙ্গায় ওই ভিক্ষুটি ছাড়া আর কেউ মারা যায়নি, তবে হাজার হাজার মুসলমান গৃহহীন হয়েছে। পুরো এলাকা মাটির সঙ্গে মিশে গেছে।

৯৬৯ আন্দোলন
মিয়ানমারের বর্মিদের বিশ্বাস, দাঙ্গার জন্য এমন এক প্রতিষ্ঠান দায়ী, যেটি চোর-বাটপারে পূর্ণ হয়ে গেছে। কিন্তু দাঙ্গা যে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের নেতৃত্বে সংঘটিতে হচ্ছে, তা তারা বিশ্বাস করতে নারাজ।
মেখতিলার দাঙ্গা দেখেছেন এমন এক ব্যক্তি জানান, দাঙ্গায় অংশ নেওয়া ভিক্ষুরা এসেছেন আশপাশের সুপরিচিত মঠগুলো থেকে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালেই থেকেও অনেকে এসেছিলেন। তাঁদের অন্যতম ছিলেন উইরাথু।
নয় বছর জেল খেটে মুক্তি পেয়েছেন উইরাথু। সামরিক শাসন অবসানের পর যে কয়েক শ রাজনৈতিক বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়, তাঁদের অন্যতম ছিলেন উইরাথু। ২০০৩ সালে মুসলমানবিরোধী দাঙ্গায় নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তাঁর কারাদণ্ড হয়েছিল।


উইরাথু মান্দালেইয়ের বিরাট মেসোইয়েন মঠে ৬০ জন ভিক্ষু ও আড়াই হাজার শিক্ষার্থী নিয়ে অবস্থান করেন। এ মঠে বসে তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন ‘৯৬৯’ আন্দোলনের। মুসলমানদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও সামাজিক অবস্থান এ আন্দোলনের প্রধান লক্ষ্যবস্তু।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৯৬৯ সংখ্যাটি তিনটি বৌদ্ধ মতাদর্শের প্রতিনিধিত্ব করে। প্রথম ৯ দিয়ে বোঝানো হয় বুদ্ধের নয়টি বিশেষ ক্ষমতা, ৬ দিয়ে বোঝানো হয় বুদ্ধের ছয়টি শিক্ষা এবং শেষ ৯ দিয়ে বোঝানো হয় সংঘ বা বৌদ্ধ মতবাদের নয়টি বিশেষ প্রতীক। আন্দোলনের নেতার বলছেন, তাঁদের লক্ষ্য হলো মিয়ানমারে বৌদ্ধ আধিপত্য বজায় রাখা। তাঁরা মনে করছেন, মুসলমানেরা পরজীবীর মতো টিকে থেকে বৌদ্ধদের আধিপত্য নস্যাত্ করছেন।

৯৬৯ আন্দোলনের প্রভাব
তবে ৯৬৯ সংখ্যাটি এখন মুসলমানবিরোধী জাতীয়তাবাদের ব্রান্ডে পরিণত হয়েছে। উইরাথু এক সাক্ষাত্কারে রয়টার্সকে বলেন, ‘আমাদের একটি স্লোগান আছে: খেতে হলে ৯৬৯ খাও, যেতে হলে ৯৬৯-এ যাও, কিনতে হলে ৯৬৯-এ কেনো।’ এর অর্থ হলো, যদি আপনি খেতে, কোথাও যেতে বা কিছু কিনতে চান, তবে তা করুন একজন বৌদ্ধের সঙ্গে। ‘মৌলবাদী’ পরিচয়কে সানন্দে গ্রহণ করে উইরাথু নিজেকে ‘বর্মি বিন লাদেন’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন।
চার মাস আগে উইরাথু তাঁর ৯৬৯ মতবাদ ছড়াতে শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘আমার কাজ হলো, এ অভিযান ছড়িয়ে দেওয়া।’ তবে ৯৬৯ স্টিকার ও প্রতীক কাজে লাগতে শুরু করেছে। সহিংসতা যত বাড়ছে, ৯৬৯ প্রতীকের ব্যবহারও তত বাড়ছে।


মিকিতলার দেয়ালে দেয়ালে দাঙ্গাকারীরা ৯৬৯ এঁকে রেখেছে। রেঙ্গুনের বাগো এলাকায় ৯৬৯ দলের ভিক্ষুরা গণসংযোগ চালানোর পরপরই সেখানে মুসলমানবিরোধী দাঙ্গা শুরু হয়। ৯৬৯ লেখা স্টিকারে ছেয়ে যাচ্ছে দেশটির দোকানপাট, মোটরসাইকেল, মোটরগাড়ি স-ব।


মিনলা শহরের এক কমিউনিটি সেন্টারে গত ২৬ ও ২৭ ফেব্রুয়ারিতে এক বৌদ্ধসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উইমালা বিওয়ানথা। তিনি শ্রোতাদের মধ্যে মুসলমানবিরোধী চেতনা জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, তাঁর নিজের প্রদেশ ‘মন’-এ মুসলমানদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো কোণঠাসা করার চেষ্টা চলছে। সেখানে ৯৬৯ আন্দোলনের কর্মীরা এক মুসলমানের মালিকানাধীন একটি জনপ্রিয় বাস সার্ভিসকে বয়কট করেছে। এসব ভাষণে বৌদ্ধরা উজ্জীবিত হয়, মুসলমানেরা ভয়ে কুঁকড়ে যায়। এর মাস খানেক পর প্রায় ৮০০ বৌদ্ধ লোহার পাইপ ও হাতুড়ি হাতে পথে নেমে আসে। তারা তিনটি মসজিদ ও ১৭টি বাড়ি ভেঙে ফেলে। অনেক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানও তারা গুঁড়িয়ে দেয়।
উইরাথু বলছেন, তিনি ভিক্ষুদের সংঘাতে ঠেলে দেওয়ার জন্য দায়ী নন। তবে তিনি বলেছেন, মুসলমানেরা বৌদ্ধদের পরিচয়কে নষ্ট করছে। তিনি বলেন, ‘অর্থ আয় করে ওরা (মুসলমানেরা) বড়লোক হয়ে গেছে। ওরা এখন বৌদ্ধদের মেয়েদের বিয়ে করে, ধর্মান্তরিত করে আর ধর্মবিস্তার ঘটায়। ওদের ব্যবসা-বাণিজ্য দিনকে দিন বেড়ে চলেছে। ওরা জমি ও বাড়িঘর কিনছে। এর অর্থ হলো বৌদ্ধদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।’
উইরাথু বলেন, ‘ওরা যখন বেশি কামাবে, তখন বেশি মসজিদ বানাবে। ... এগুলো হলো শত্রুদের থাকার জায়গা। তাই আমরা অবশ্যই এগুলো ঠেকাব।’

রক্ষকেই ভক্ষক
‘উইরাথুকে গ্রেপ্তার করা উচিত,’ বলছিলেন গণতন্ত্রের দাবিতে ২০০৭ সালের বিক্ষোভের প্রধান নেতা ও জনপ্রিয় ভিক্ষু নেই নেই লুইন। ওই আন্দোলনকে সামরিক বাহিনী কঠোর হাতে দমন করেছিল। নেই নেই বলেন, ‘সে (উইরাথু) যা বলছে, তা বুদ্ধের শিক্ষা নয়। তিনি একজন ভিক্ষু, তিনি মঠের অধ্যক্ষ। কিন্তু তিনি ভয়ংকর। ক্রমে তিনি ভীতিকর ও করুণ হয়ে উঠছেন।’


নেই নেই বলেন, কেবল সরকারই এসব মুসলমানবিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে পারে। তিনি বলেন, ‘অতীতে গণতন্ত্র ও রাজনীতির কথা বললে ওরা (সরকার) বাধা দিত। আর এখন এসব জ্বালাময়ী ভাষণকে তারা বাধা দিচ্ছে না। উইরাথু একটি প্রভাবশালী মঠের অধ্যক্ষ বলে কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পাচ্ছে না। তাই সরকারের উচিত তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।’


ব্যাংকক পোস্টোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটা এখনো জানা যায়নি যে ৯৬৯ আন্দোলন ও আশিন উইরাথুর পেছনে করা আছেন। ধারণা করা হয়, উইরাথুর পেছনে আছেন অনেক ক্ষমতাধর ব্যক্তি। কেউ কেউ মনে করেন, সেনাবাহিনীর একটি কট্টর অংশ এদের পেছনে আছে। সেনাবাহিনীর এ অংশটি হারানো ক্ষমতা ধরে রাখতে চায় এবং দাঙ্গা বাধিয়ে দেশে অস্থিরতা তৈরি করে রাখতে চাইছে। সবচেয়ে আশঙ্কার ব্যাপার হলো, দেশের সরকার উইরাথুকে প্রশ্রয় দিচ্ছে এবং সে দাঙ্গা উসকে দেওয়ার মতো ভাষণ চালিয়ে গেলেও সরকার তাঁকে কিছু বলছে না।


পিস কালটিভেশন নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতা ও ৫৬ বছর বয়সী বৌদ্ধ ভিক্ষু আশিন পাম না ওনথা এক সাক্ষাত্কারে বলেন, ‘উইরাথু হলো হাতের পুতুল। ও আভিজাত্য ও খ্যাতির লোভে নাচছে।’ আশিন থাম ১৯৮৮ সাল থেকে দেশের সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। এখন তিনি বিভিন্ন ধর্ম ও জাতির মধ্য সদ্ভাব বিস্তারের লক্ষ্যে কাজ করছেন।
আশিন থাম আরও বলেন, ‘উইরাথু ও তার ৯৬৯ আন্দোলন ঘনিষ্ঠজনদের থেকে সহায়তা পাচ্ছেন।’ ‘ঘনিষ্ঠজন’ বলতে তিনি সামরিক বাহিনীর খুব কাছের ৩০ জন ব্যবসায়ীর একটি সংগঠনকে নির্দেশ করেছেন। এই সংগঠনটিই দেশের অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। তিনি বলেন, মুসলমানদের হাতে আছে বিপুল সম্পদ এবং এই ঘনিষ্ঠজনেরা সেটি লুট করতে চায়।
আশিন থাম মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন, দাঙ্গার পেছনে সেনাবাহিনীর হাত আছে।

বাণিজ্যিক দখল
সংস্কারকরা দাঙ্গা বাধাচ্ছেন, এমন গুজবও আছে বেশ জোরেশোরে। অনেকেই বলছেন, সাবেক সামরিক শাসকের ঘনিষ্ঠজনেরা দাঙ্গা বাধাচ্ছেন। এত দিন তাঁরা ছিলেন ক্ষমতায়, তাই বাণিজ্যের দিকে খুব বেশি মনোযোগ দেননি। এখন ক্ষমতা ছাড়ার সময় ঘনিয়ে আসছে, তাই ব্যবসার জন্য সুবিধাজনক পরিস্থিতি তৈরি করার প্রয়োজন পড়ছে। তাঁরা চাইছেন, মুসলমান ব্যবসায়ীদের তাড়িয়ে দিয়ে এক অর্থনৈতিক শূন্যস্থান তৈরি করতে। তাহলে ওই শূন্যস্থানে তাঁরা জেঁকে বসতে পরবেন। মেখতিলার ৬৭ বছর বয়সী মুসলমান ব্যবসায়ী ওন থুইনও এমনটাই মনে করেন।
দাঙ্গায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া তাঁর মেটাল ওয়ার্কশপে হাঁটাহাঁটি করতে করতে ওন থুইন বলেন, ‘এর (দাঙ্গার) পেছনে ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক উভয় কারণই আছে।’ তিনি বলেন, তাঁরা কয়েক পুরুষ ধরে ওই লাভজনক ব্যবসা করে আসছেন। তাঁর নিজের অনেক বৌদ্ধ বন্ধু আছেন। তাঁদেরই একজন দাঙ্গার সময় তাঁর প্রাণ বাঁচিয়েছেন।

রোহিঙ্গা পৃথিবীর সবচেয়ে নিপীড়িত জনগোষ্ঠী


জাহেদ খান
২০১২ সালে আরাকানে শুরু হওয়া রোহিঙ্গা নিধন এখন মিয়ানমারের প্রায় সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে। সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ দেশটির গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। ২০১৩ সালের ২১ মার্চ। তরুণী মুসলিম মেয়েটিকে ধরে ফেলল এক বৌদ্ধ ভিক্ষু, ধরেই তার গলায় একটি ধারালো ছুরি ঠেকালো। "যদি তোমরা আমাদের পিছু পিছু আসো, তাহলে ওকে মেরে ফেলবো"। পেছনে ফিরে পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বললো ওই ভিক্ষু। একদল উত্তেজিত বৌদ্ধ কর্তৃক মিয়ানকারের মধ্যাঞ্চলীয় মিখতিলা থেকে মুসলমানদের ধরে নিয়ে যাওয়ার সময়ের ঘটনা এটি। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ২৫ জন রোহিঙ্গা মুসলমানকে হত্যা করা হয় এদিন। বৌদ্ধ দাঙ্গাবাজরা নিহতদের রক্তাক্ত লাশগুলো পাশের এক পাহাড়ে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে ফেলে। নিহতদের মাঝে দু'টি শিশুও ছিল। তাদের পোড়া লাশ পরে উদ্ধার করা হয়। নাইপপিতাও থেকে মাত্র ১৩০ কিলোমিটার দূরে এক লাখ বাসিন্দার এক শহরে মাত্র চারদিকে ৪৩ জন মুসলমানকে হত্যা করা হয়। শহরের প্রায় ১৩ হাজার মুসলিম বাসিন্দাকে তাদের বাসস্থান ও ব্যবসা থেকে উচ্ছেদ করা হয়। এ দু'টি ঘটনাই মিয়ানমারে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার খণ্ড চিত্র। এসব দাঙ্গার ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য থেকে এটি বোঝা যায়, মুসলমানদের হত্যায় নেতৃত্ব দিয়েছিল বৌদ্ধ ভিক্ষুরাই। এসব দাঙ্গার ঘটনা প্রতিরোধে পার্লামেন্টের বিরোধীদলীয় নেত্রী শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অং সান সু চিও দৃঢ় ভূমিকা রাখতে পারেননি। দাঙ্গার বিষয়ে মৃদুভাবে সতর্ক করা ছাড়া ধর্মপ্রাণ সু চির কোনো জোরালো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বৌদ্ধ মিয়ানমারে ২০১২ সালের দাঙ্গার কারণ অস্পষ্ট তবে অনেক পর্যবেক্ষক মনে করেন এক রাখাইন তরুণীকে কয়েকজন মুসলিম কর্তৃক ধর্ষণ ও হত্যার গুজব এবং এর ফলে ১০ জন মুসলিম রোহিঙ্গাকে হত্যাই দাঙ্গার প্রধান কারণ। দাঙ্গায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ পাওয়া যায়। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে একতরফাভাবে রোহিঙ্গাদের ধর-পাকড়ের অভিযোগ ওঠে।

এই একবিংশ শতাব্দীতেও পৃথিবীতে এমন লাখো লাখো মানুষ আছে যারা অসুস্থ হলে হাসপাতালে যেতে পারে না, আর হাসপাতালে গেলেও তাদের চিকিত্সা দেয়া হয় না। শিশুরা স্কুলে যেতে পারে না, তরুণ-তরুণীদের বিয়ে ও সন্তান ধারণে বাধা দেয়া হয়। শত শত বছর ধরে একটি নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে বসবাস করলেও তাদের নাগরিকত্ব নেই। এই মানুষগুলোর বাস আমাদের খুব নিকটে। প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার সাথে অনেক মিল রয়েছে তাদের ভাষার। জাতিসংঘের বিবেচনায় পৃথিবীর সবচেয়ে নিপীড়িত সেই জনগোষ্ঠীর নাম রোহিঙ্গা।

বর্তমানে প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমারে বসবাস করে। বিভিন্ন সময়ে প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। নানাভাবে সৌদি আরবে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ৫ লাখ। জাতিসংঘ ও ওআইসি মিয়ানমার সরকারকে এই সাম্প্রদায়িক ও জাতিগত নিপীড়ন বন্ধের আহ্বান জানালেও প্রকৃতপক্ষে সরকার তাতে কর্ণপাত করছে না। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা মুসলিম-বিদ্বেষী প্রচারণা চালাচ্ছে এবং তাদের নেতৃত্বেই চলছে হত্যাযজ্ঞ, অগ্নিসংযোগ। প্রাণ বাঁচাতে ক্ষুধার্ত রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধরা ছোট ছোট নৌকায় করে প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নেয়ার জন্য আকুতি জানাচ্ছে। কিন্তু প্রতিবেশী দেশগুলোও তাদের প্রত্যাখ্যান করছে। মিয়ানমারের বক্তব্য- রোহিঙ্গা মুসলিমরা বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী। শত শত বছর ধরে মিয়ানমারে বসবাস করলেও তাদের নেই নাগরিকত্ব। সরকারি পৃষ্ঠাপোষকতায় রোহিঙ্গাদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতনের পরেও বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। বিশ্ব বিবেক এখানে যেন বধির।

১৯৪২ সালের ২৮ মার্চ মিয়ানমারের মিনরিফ এবং ম্রক ইউ শহরে রাখাইন জাতীয়তাবাদী এবং কারেইনপন্থিরা প্রায় ৫ হাজার মুসলমানকে হত্যা করে। রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে প্রায় ২০ হাজার মুসলমানকে হত্যা করা হয়। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে নির্যাতন, ধর্ষণ এবং হত্যা করেছিল জাপানীরা। এসময় প্রায় ২২ হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলায় চলে গিয়েছিল। ১৯৭৮ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নাগামান অভিযানের ফলে প্রায় দুই লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এই সেনাঅভিযান সরাসরি বেসামরিক রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চলেছিল। এসময় ব্যাপক হত্যা, ধর্ষণ ও মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা ঘটে। ১৯৯১-৯২ সালে একটি নতুন দাঙ্গায় প্রায় আড়াই লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে আসে। তারা জানায়, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে বাধ্যতামূলক শ্রম প্রদান করতে হয়। রাস্তার কাজে ও সেনাক্যাম্পে তাদের বাধ্যতামূলক বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করতে হয়।

নাগরিকত্ব বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর ১৯৮৯ সালে মিয়ানমার তিন ধরনের নাগরিক কার্ডের প্রচলন করে। পূর্ণাঙ্গ নাগরিকদের জন্য গোলাপী সহযোগী নাগরিকদের জন্য নীল এবং অভিযোজিত নাগরিকদের জন্য সবুজ রঙের কার্ড দেয়া হয়। চাকরি, ব্যবসা, বাণিজ্য, পড়াশোনা, চিকিত্সা সেবাসহ সব ধরনের কাজকর্মে এই কার্ডের ব্যবহার শুরু হয়। কিন্তু রোহিঙ্গাদের কোন ধরনের কার্ড দেয়া হয়নি। এর ফলে রোহিঙ্গাদের পক্ষে মিয়ানমারে টিকে থাকা দুরূহ হয়ে পড়ে। ১৯৯৪ সাল থেকে রোহিঙ্গা শিশুদের জন্ম নিবন্ধন বন্ধ করে দেয় সরকার। পরে জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক হাইকমিশনারের চাপে রোহিঙ্গাদের তালিকাযুক্ত করার উদ্যোগ শুরু হয় ১৯৯৫ সালে। এ সময় রোহিঙ্গাদের দেয়া হয় সাদা কার্ড যেখানে জন্মস্থান ও তারিখ লেখা হয় না। এরফলে এই কার্ড মিয়ানমারের নাগরিকত্ব প্রদান করে না এবং রোহিঙ্গাদের কোন কাজেও আসে না। কয়েক বছর পর এই কার্ডও বন্ধ করে দেয় সরকার। রোহিঙ্গাদের নাম শুধু তালিকাভুক্ত করে রাখা হয় নাসাকা বাহিনীর খাতায়।

এক একটি গ্রাম এক একটি কারাগার: নিজ গ্রামের বাইরে যেতে হলে রোহিঙ্গাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী নাসাকার কাছ থেকে ট্রাভেল পাস নিতে হয়। এই ট্রাভেল পাস নিয়েই তারা গ্রামের বাইরে যেতে পারে। ট্রাভেল পাস পাওয়া সহজ নয়। সেজন্য নাসাকাকে দিতে হয় ঘুষ। নির্দিষ্ট সময়ে গ্রামে ফিরে না এলে রোহিঙ্গাদের নাম কাটা যায় তালিকা থেকে। তখন তাদের স্থান হয় কারাগারে।

বিয়ে ও সন্তান ধারণে বাধা: বিয়ে করতে হলে রোহিঙ্গাদের নাসাকাকে অনেক টাকা ঘুষ দিতে হয় এবং বছরের পর বছর অনুমতির জন্য অপেক্ষা করতে হয়। রাষ্ট্রের অনুমোদন ছাড়া অনেকেই ধর্মমতে বিয়ে করে ফেলে। সেসব দম্পতির সন্তানদের কোন পরিচয় থাকে না।

নেই শিক্ষা, চিকিত্সা ও সরকারি চাকরির অধিকার: রোহিঙ্গাদের জন্য সরকারি চাকরি নিষিদ্ধ। সরকারি হাসপাতালগুলোতে তাদের প্রবেশ পদ্ধতিগতভাবে নিষিদ্ধ। আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোকেও রোহিঙ্গাদের জন্য কোন স্বাস্থ্যসেবার উদ্যোগ নিতে দেয়া হয় না। কিছু কিছু স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোহিঙ্গাদের জন্য নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্যসেবার অনুমতি আছে। গুরুতর অসুস্থ হলেও রোগীকে গ্রামের বাইরে নিতে হলে আগে নাসাকার কাছ থেকে ট্রাভেল পাস নিতে হয়। এ কারণে অনেক অসুস্থ রোহিঙ্গা মুসলিম সীমান্ত পাড়ি দিয়ে চিকিত্সা নিতে বাংলাদেশে আসার চেষ্টা করে। বাংলাদেশে ঢুকতে পারলে এদের অধিকাংশই আর ফিরে যায় না। ২০০১ সালে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। খুব কম রোহিঙ্গা গ্রামেই মাধ্যমিক স্কুল আছে। আশেপাশের গ্রামের স্কুলে যেতে হলে নাসাকার ট্রাভেল পাস যোগাড় করতে হয়। ফলে রোহিঙ্গা শিশুদের আর মাধ্যমিক স্কুলে পড়া হয় না।

সংকট শরণার্থী শিবিরেও: মিয়ানমারে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় প্রাণ বাঁচাতে বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে হয়েছে বহু মানুষকে। তারা আশ্রয় নিয়েছে শরণার্থী শিবিরে। রোহিঙ্গারা সেখানেও পড়েছে চরম সংকটে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদের কাছে খাবার, ওষুধপত্র নিয়ে যেতে দিচ্ছে না মিয়ানমার সরকার। প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়ে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে জীবন-যাপনের জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক কিছুই পাচ্ছেন না তারা। এ পরিস্থিতিতে অনেক মানবাধিকার সংস্থা তাদের সহায়তায় এগিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে। কিন্তু মিয়ানমার সরকারের কাছ থেকে আসছে বাধা। সাহায্য নিয়ে শরণার্থী শিবিরগুলোতে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না কাউকেই। দীর্ঘ এক বিবৃতিতে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ভবিষ্যত্ নিয়ে শংকা প্রকাশ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। উগ্রপন্থি বৌদ্ধদের হামলায় নিহত হওয়ার পাশাপাশি শরণার্থী শিবিরেও মৃত্যুর সঙ্গে লড়তে হচ্ছে রোহিঙ্গাদের।

0 comments:

Post a Comment