Wednesday, November 20, 2013

বডিবিল্ডিং ট্রেইনিং

0 comments
যারা খুব রোগা-পাতলা এবং অনেক খাওয়ার পরেও ওজন বাড়ে না, তাদেরকে ইংরেজিরে হার্ডগেইনার বলে। সাধারণত এদের হাড় চিকন এবং মেটাবলিজম (সোজা বাংলায় হজম শক্তি) খুব দ্রুত হওয়ার ফলে যতই খান না কেন, সেটা গায়ে লাগে না। আমাদের বাংলাদেশে এ ধরনের গঠনই বেশি বলে চারদিকে শুধু রোগা-পাতলা মানুষ চোখ পড়ে। তবে এদের পক্ষে স্বাস্থ্য ভালো করে বা ওজন বাড়ানো একেবারে অসম্ভব ব্যাপার নয়। শুধু অন্যান্য রেগুলার পদ্ধতির চাইতে একটু ভিন্ন পদ্ধতিতে যেতে হবে। সেরকম একটি বিষয় নিয়েই খুব সুন্দর একটা লেখা রয়েছে এবাউট.কম ওয়েবসাইটে। আমরা সেটা থেকে সংক্ষেপে নিজেদের মত করে আলোচনা করার চেষ্টা করছি।
হার্ডগেইনারদের যেসব ব্যাপার খেয়াল রাখতে হবে-
১. ব্যায়ামের সময় যথা সম্ভব কম রাখতে হবে, বড়জোড় এক ঘণ্টা। কেননা পেশী বাড়াতে যে হরমোনের দরকার হয়, সেটা এক ঘণ্টা পরে কমে যেতে শুরু করে। তাই এক ঘণ্টার পরেও যদি ব্যায়াম চাইয়ে যান তাহলে পেশী ক্ষয় হতে শুরু করবে।

২. ব্যায়াম করার সময় একটা সেট শেষ করে আরেকটা সেট শুরু করার মাঝে যত কম বিশ্রাম নিতে পারবেন, তত ভালো। বড়জোড় ৯০ সেকেণ্ড বিশ্রাম নিবেন। তারপর আবার পরবর্তী সেটের ব্যায়াম শুরু করে দেবেন। বেশী বিশ্রাম নিলে শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যেতে পারে।

৩. পর পর দুইদিনের বেশী একটানা ব্যায়াম করবেন না। সবচেয়ে ভালো হয় যদি একদিন পর পর ব্যায়াম করতে পারেন। মনে রাখবেন জিমে কিন্তু শরীর বাড়ে না। জিমে শুধু পেশীকে নাড়িয়ে দেয়া হয়, সেখানে যথাসম্ভব রক্তসঞ্চালন করে জাগিয়ে তুলতে হয়। পেশী বাড়ে যখন খাওয়া-দাওয়া ঠিক মতো করে বাড়িতে ঘুমাবেন বা বিশ্রাম নিবেন তখন। এছাড়া পেশী যথেষ্ঠ বিশ্রাম পেলে পরের বার জিমে গিয়ে আবার নতুন উদ্যমে শুরু করতে পারবেন। নইলে ক্লান্তি লাগবে, ব্যায়াম করার ইচ্ছে কমে যাবে।

৪. প্রতি সেট ব্যায়ামে ৬ থেকে ১৫ র‍্যাপ্‌স্‌-এর বেশী যাবেন না। হালকা ওয়েট নিয়ে বেশী র‍্যাপ্‌স্‌ দিলে শরীর মেয়েদের মত কোমল ও নরম গঠনের হয়ে যাবে। পেশী বাড়াতে চাইলে বেশী ওজন নিয়ে যত কম র‍্যাপ্‌স্‌ দিতে পারেন, তত ভালো।

৫. দিনের পর দিন একই রুটিনে ব্যায়াম না করাই ভালো। মাঝে মাঝে রুটিন চেঞ্জ করতে পারেন। অর্থাৎ কয়েক সপ্তাহ পরে মাঝের ব্যায়ামটা আগে, প্রথম ব্যায়ামটা মাঝে- এভাবে ঘুরিয়ে নিতে পারেন। এতে একঘেয়েমি লাগবে না।

৬. বেশী ওজন নিতে গিয়ে আবার ব্যায়ামের ফর্ম যাতে নষ্ট হয়ে না যায়, সেটা দেখতে হবে। যেমন ধরুন হাতের পেশীর ব্যায়াম করছেন। অন্যদের সাথে পাল্লা দিয়ে বেশী ওজন নিতে গিয়ে হাতের পেশীর সাথে কাধের পেশীও ব্যবহার করলেন। এটা নিজের সাথেই এক ধরনের প্রতারণা। এটা কখনো করবেন না। অন্যের সাথে তুলনা না করে নিজের যেটুকু সামর্থ, সেটুকুই সঠিক ভাবে করবেন। এ প্রসঙ্গে আরেকটা কথা- কখনোই অন্যের বডির বা শক্তির সাথে নিজের তুলনা করবেন না। এতে হীনমন্যতার সৃষ্টি হতে পারে। আপনি আপনার বডির বেস্ট ফর্মে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। অর্থাৎ পাল্লাটা হবে নিজের সাথে, নিজের বর্তমান অবস্থা থেকেও আরো বেটার অবস্থানে যাওয়ার।

৭. দৌঁড়ানো, হাঁটা, সাঁতার, সাইকেল চালানো- এই টাইপের বাড়তি কাজ যতটা সম্ভব কম করবেন। কেননা এতে আরো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

৮. জিমের মেশিন এড়িয়ে চলবেন। ফ্রি ওয়েট ব্যবহার করবেন।

৯. রুটিন বানিয়ে ব্যায়ামের নোট রাখবেন। এতে হিসাব থাকবে যে এই সপ্তাহে কত ওজন নিতে পারলেন, বা কতটা র‍্যাপ্‌স্‌ দিতে পারলেন। পরের সপ্তাহে চেষ্টা করবে সেই একই ব্যায়ামে ২ কেজি বা ৫ পাউণ্ড ওজন বাড়াতে। যেমন ধরুন- ৫০ কেজি দিয়ে ৮ বার বেঞ্চপ্রেস দিতে পারলেন এই সপ্তাহে। পরের সপ্তাহে টার্গেট থাকবে ৫২ কেজি দিয়ে ৮ বার দেয়ার। কিংবা ধরেন এই সপ্তাহে ৫টা পুল-আপ দিতে পারলে পরের সপ্তাহে ৬টা দেবেন। এগুলো হিসাব রাখতেই রুটিনের নোট রাখা উচিত। এতে বুঝতে পারবেন আপনার ব্যায়ামের এবং শক্তির কতটা উন্নতি হচ্ছে। (যারা সিরিয়াস, তারা এইটা অবশ্যই করবেন।)

১০. দুই সপ্তাহ পর পর শরীরের ওজন এবং ফিতা দিয়ে দেহের বিভিন্ন অংশের মাপ নিবেন। এটাও লিখে রাখবেন। টার্গেট রাখবেন প্রতি দুই সপ্তাহে ২ কেজি করে ওজন বাড়াতে।

0 comments:

Post a Comment