Thursday, November 28, 2013

কোটালীপাড়া উপজেলা মুক্ত দিবস

0 comments
৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা মুক্ত দিবস। এ দিনেই কোটালীপাড়ায় স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা পত পত করে উড়তে থাকে। লোকজন ঘর থেকে বেরিয়ে আনন্দে ফেটে পড়ে। দিবসটি পালন উপলক্ষে কোটালীপাড়ায় হেমায়েত বাহিনী বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহন করেছে।

১৯৭১ সালের এ দিনে কোটালীপাড়ায় প্রায় ৫’শ পাকহানাদারকে পরাস্ত করে মুক্তিযোদ্ধারা কোটালীপাড়াকে শক্রমুক্ত করে । চুড়ান্ত বিজয় ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হলেও কোটালীপাড়ায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়েছিল ৩ ডিসেম্বর। এদিন সকাল ১০ টার দিকে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়াই প্রথম হানাদার মুক্ত হয়। এদিন মিত্র ও মুক্তিবাহিনীর আক্রমনে কোটালীপাড়া থানা,মসজিদ ও গোডাউনে অবস্থানরতঃ পাকসেনাদের পতন ঘটে। কোটালীপাড়াকে শত্রু মুক্ত করে হেমায়েত বাহিনী। পাকবাহিনী ও তাদের দোষররা ছিল খুবই শক্ত অবস্থানে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন সময়ে বেশ কয়েকটি সম্মূখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয় হেমায়েত বাহিনী। উল্ল্যেখযোগ্য যুদ্ধ হয় উপজেলার বাঁশবাড়িয়া, ঝনঝনিয়া, জহরের কান্দি, হরিনাহাটিসহ বিভিন্ন স্থানে। এ ছাড়া ছোট খাট বেশ কয়েকটি স্থানে যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন হেমায়েত বাহিনী প্রধান হেমায়েত উদ্দিন বীর বিক্রম।

কোটালীপাড়া মুক্ত হওয়ায় এদিন আনন্দের বন্যা বয়ে গিয়েছিল। মুক্তিকামী মানুষ অনেক দুঃখ বেদনার পর মুক্তির স্বাদ পেয়ে দলে দলে লাল সবুজ পতাকা ও মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্র উচিয়ে আনন্দ উল্লাসে ফেঁটে পড়েন এবং জয় বাংলা শ্লোগান দেন।

হেমায়েত বাহিনী প্রধান হেমায়েত উদ্দিন বীর বিক্রম জানিয়েছেন, ২ ডিসেম্বর রাত দুইটার দিকে তারা সিদ্ধান্ত নেন চারিদিক থেকে কোটালীপাড়া থানা, মসজিদ, গোডাউন ঘরে অবস্থানকারী শত শত পাকহানাদার সদস্যকে আক্রমন করা হবে। ভোর রাত ৪ টার দিকে আমরা এক সাথে চারিদিক থেকে আক্রমন শুরু করি। কিন্তু, চারিদিক থেকে পরিকল্পিত আক্রমনের মুখে পরাস্থ হয়ে পড়ে পাকহানাদাররা। ৩ ডিসেম্বর সকাল ১০ টার দিকে ৪ শতাধিক আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। শুধুমাত্র সেদিন কুরপালা থেকেই সাড়ে তিন’শ সশস্ত্র রাজাকারকে আত্মসমর্পনে বাধ্য করা হয়েছিল । মুক্তিকামী মানুষের কাছে এদিনটি এখন স্মরণীয় হয়ে রয়েছে।

বক্তাবলী গণহত্যা দিবস

0 comments
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার বক্তাবলীতে ১৯৭১ সালের ২৯ নভেম্বর ১শ’ ৩৯ জন নিরীহ ঘুমন্ত গ্রামবাসীকে হত্যা করেছিল পাকসেনারা। প্রতি বছর এ দিনটি আসলেই শোকের ছায়া নামে এলাকাবাসীর মধ্যে।

২৯ নভেম্বর’ ১৯৭১, তখনও ভোরের কুয়াশা কাটেনি। নদী বেষ্টিত চরাঞ্চল বক্তাবলীর মানুষ ছিলেন ঘুমিয়ে। এ গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাটি আছে এমন তথ্য পেয়ে দেশীয় দোসর আল-বদর, আল-সামসদের নিয়ে হামলা চালায় পাক সেনারা। সেদিন পাক সেনারা দু’টি ইউনিয়নের ৫/৬টি গ্রামের প্রায় সবকটি বাড়িঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছিল।
নির্মম সেই ঘটনার দিনটি ছিল সোমবার আর এর পরের সোমবারেই ছিলো ভাই হাফিজুরের বিয়ে। ভাইয়ের বিয়ে নিয়ে বেশ উচ্ছাসিত ছিলো বোন রোকেয়া। ঘুর্ণাক্ষরেও আঁচ করতে পারেননি একমাত্র ভাই হারিয়ে যাবে অজানার দেশে। আর দু’ভাই হারানোর ঘটনা বলতে গিয়ে এখনো চোখের জলে ভাসেন অপর স্কুলশিক্ষক ভাই হারুন উর রশিদ দুলাল ।
তার দাবি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুত শেষ করে তাদের রায় কার্যকর করার।
এক সাগর রক্তের বিনিময়ে এসেছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। স্বাধীনতা রক্তিম সুর্য উদিত করতে দেশের লাখো মুক্তিযোদ্ধার মতো এই অজপাড়া গাঁ বক্তাবলীবাসীরও রয়েছে যথেষ্ট অবদান। আর তারই স্বীকৃতি চায় এ এলাকার মানুষ। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে এখানে একটি স্মৃতি স্তম্ভ নির্মিত হলেও তা পরিপূর্নতা পায়নি।
ভোরের দিকে পাক হানাদাররা দেশীয় আল বদর, আল সামসদের ও রাজাকারদের নিয়ে অতর্কিতে হামলা চালায় ওই দু’টি ইউনিয়নের ৫/৬টি গ্রামের প্রায় সবকটি বাড়িঘরে। সে বাড়িঘর থেকে কিশোর, যুবক ও বয়স্কদের অস্ত্রের মুখে ধরে এনে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে লাইন করে দাড় করায়। পরেতাদেরকে গুলি করে হত্যা করে। এভাবে হত্যা করে ১শ’ ২৯ জনকে। পরে এলাকার বাড়ি ঘরে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। এলাকাবাসীর দাবি, পাকহানাদার বাহিনীর হাতে ওই রাতে নিহত শহীদদের পূর্ণাঙ্গ নামের তালিকা প্রকাশ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মান করে তা সংরক্ষনের দাবি জানান।

Tuesday, November 26, 2013

শহীদ ডা. মিলন দিবস

0 comments
২৭ নভেম্বর শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলন দিবস। ১৯৯০ সালের এই দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির কাছে সামরিক স্বৈরাচার হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের লেলিয়ে দেয়া সন্ত্রাসীদের নির্মম বুলেট কেড়ে নেয় বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) তৎকালীন যুগ্ম সম্পাদক ডা. মিলনের জীবন। মিলনের আত্মদানের মধ্যদিয়ে সেদিনের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নতুন গতি সঞ্চারিত হয়। অবশেষে ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে স্বৈরশাসনের পতন ঘটে। শোকাবহ এই ঘটনার স্মরনে ১৯৯১ থেকে প্রতিবছর রাজনৈতিক ও চিকিৎসক সংগঠনসমূহ বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে ডা. মিলন দিবস পালন করে।
দেশব্যাপী রাজপথ-রেলপথ অবরোধ আন্দোলন চলছিল। ২৭শে নবেম্বর ১৯৯১ তারিখে বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের একটি সভায় যোগ দিতে রিকশাযোগে পিজি হাসপাতালে (র্বতমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) যাচ্ছিলেন ডা. মিলন। এসময় একই রিকশায় তার সহযাত্রী ছিলেন ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএসসি এলাকা অতিক্রমকালে সন্ত্রাসীরা তার ওপর গুলি চালায়। তাৎক্ষণিকভাবে তার মৃত্যু হয়। তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে দাফন করা হয়।

Monday, November 25, 2013

পায়রা সমুদ্র বন্দর

0 comments
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এই প্রথম দেশে একটি নূতন সমুদ্র বন্দরের যাত্রা শুরু হইয়াছে। ২০০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার রামনাবাদ চ্যানেলে পায়রা সমুদ্র বন্দরের শুভ উদ্বোধন করেন। চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্র বন্দরের পর ইহা বাংলাদেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর। আপাতত লাইটারেজ জাহাজের মাধ্যমে পণ্য খালাসের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হইলেও বন্দরের কার্যক্রম পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হইলে এই বন্দর জেটিতে সরাসরি মাদার ভেসেল ভিড়িতে পারিবে। এই বন্দরে গভীর সমুদ্রে বিচরণক্ষম ৮-১০ ড্রাফটের জাহাজ ধারণের পরিকল্পনা রহিয়াছে। আগামী দশ বত্সরের মধ্যে পায়রা সমুদ্র বন্দরের পূর্ণাঙ্গ অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় হইবে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। ইহার ফলে দেশের দক্ষিণ মধ্যবর্তী অঞ্চলে ব্যাপক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হইবে বলিয়া আশা করা যাইতেছে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমদানি-রপ্তানি এবং সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড জোরদার হইতেছে। যেহেতু সারাবিশ্বে নৌপথে পণ্য পরিবহন সবচাইতে সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব, তাই আমাদের বন্দর সুবিধাদি বৃদ্ধি করাটাও জরুরি হইয়া পড়িয়াছে। যে কোন দেশের বন্দর, তাহা স্থল, সমুদ্র বা বিমান যাহাই হউক না কেন, সেই দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসাবে কাজ করে। তন্মধ্যে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সমুদ্র বন্দরের ভূমিকাই সর্বাধিক। একই কারণে যুগে যুগে গানবোট ডিপ্লোমেসিও গুরুত্ব পাইয়া আসিতেছে। নদী ও সমুদ্র ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বিশ্বের পরাশক্তিগুলি বিভিন্ন দেশে প্রভাব বিস্তার করিয়া চলিয়াছে। আমাদের জন্য আশার কথা হইল, এই দেশের প্রায় ৭১০ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্র উপকূল রহিয়াছে। এই সুদীর্ঘ উপকূলবর্তী এলাকায় রহিয়াছে অসংখ্য চ্যানেল যাহা আশীর্বাদ স্বরূপ। তাই শুধু পায়রা সমুদ্র বন্দরই নহে, এতদঞ্চলের পাথরঘাটায় আরেকটি সমুদ্র বন্দর নির্মিত হইতে পারে। এই ব্যাপারে এখন হইতেই পরিকল্পনা গ্রহণ করিয়া অগ্রসর হইতে হইবে। কেননা ইহাও দক্ষিণাঞ্চলবাসীর প্রাণের দাবি।

জানা মতে, বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির ৯৫ শতাংশ সমুদ্র বন্দরের মাধ্যমে সম্পন্ন হইয়া থাকে। তন্মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের অবদান ৯২ ভাগ। একটি বন্দরের উপর এই পরিমাণ চাপ ও নির্ভরশীলতা কোন শুভ লক্ষণ নহে। তাহাছাড়া প্রাকৃতিক কারণেও চট্টগ্রাম বন্দরের সমপ্রসারণ সীমিত হইয়া আসিতেছে। এমতাবস্থায় পায়রা সমুদ্র বন্দর পূর্ণাঙ্গরূপে কাজ শুরু করিতে পারিলে চট্টগ্রাম বন্দরের উপর হইতে চাপ কমিয়া যাইবে বহুলাংশে। দক্ষিণাঞ্চল হইতে মত্স্য প্রক্রিয়াকরণ ও রপ্তানিকরণ সহজ হইবে। শিল্প-কল-কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে বৃদ্ধি পাইবে কর্মসংস্থান। ইহাতে এখানকার আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বড় ধরনের রূপান্তর ঘটিবে। এই সমুদ্র বন্দরের পাশেই 'বানৌজা শের-ই-বাংলা' নামে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ নৌঘাঁটিও নির্মাণ করা হইতেছে। ইহাতে থাকিবে নৌ কমান্ড, এভিয়েশন, জাহাজ ও সাবমেরিন বাথিং সুবিধা। ফলে সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হইবে এবং দুর্যোগকালে এই এলাকার মানুষের জান ও মালের হেফাজত হইবে। উল্লেখ্য, রাজধানী ঢাকা হইতে রাবনাবাদ চ্যানেলের দূরত্ব প্রায় ৩৪০ কিলোমিটার। ফলে তুলনামূলক কম সময়ে রাজধানীর সহিত সংযোগ স্থাপনের কারণে পায়রা সমুদ্র বন্দরের ভবিষ্যত্ খুবই উজ্জ্বল। এই সমুদ্র বন্দরকে ঘিরিয়া দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ যে স্বপ্ন দেখিতে শুরু করিয়াছেন, আমরা তাহার সাফল্য কামনা করি। তাই বন্দর সংক্রান্ত পরিকল্পনার যথাযথ ও দ্রুত বাস্তবায়ন একান্ত আবশ্যক। আমরা বন্দর নির্মাণের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।

-ইত্তেফাক সম্পাদকীয়

আন্তর্জাতিক বিশ্ব নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস

0 comments
২৫ নভেম্বর ২০১৩ ৷ ক্যালেন্ডারের আর পাঁচটা দিনের থেকে এই তারিখটা একটু আলাদা ও গুরুত্বপূর্ণ৷ কারণ এই দিনটাকে পালন করা হয় ‘ইন্টারন্যাশনাল ডে ফর দ্য এলিমিনেশন অব ভায়োলেন্স এগেইনস্ট উইমেন’ বা আন্তর্জাতিক বিশ্ব নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস হিসেবে৷ প্রত্যেকবছর সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের নারী নির্যাতন প্রতিরোধক শাখা এদিন থেকে টানা ১০ দিন ব্যাপী নির্যাতন প্রতিরোধক নানা রকমের কর্মসূচি পালন করে ৷ দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে নানান পদ্ধতিতে জনমানসে সচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এই শাখা ৷

নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ১৯৮১ সালে লাতিন আমেরিকায় নারীদের এক সম্মেলনে ২৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ১৯৯৩ সালে ভিয়েনায় বিশ্ব মানবাধিকার সম্মেলন দিবসটিকে স্বীকৃতি দেয়। জাতিসংঘ দিবসটি পালনের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয় ১৯৯৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর। বাংলাদেশে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস উদ্যাপন কমিটি ১৯৯৭ সাল থেকে এই দিবস ও পক্ষ পালন করছে।

রাতের অন্ধকার ,বা দিনের আলো, মেয়েরা নিরাপদ নয়৷ পুরুষের লালসা ও নির্যাতনের শিকার বস্তুতে পরিণত হয়েছেন তারা ৷ প্রত্যেক ঘরে প্রত্যেক দিনে তাই কারোর পরিনতি হচ্ছে নির্ভয়ার মতন, তো কারোর জ্যোতি উদয়ের মতন৷ প্রত্যেকদিনই প্রায় বধূহত্যা বা কন্যা সন্তান হত্যার ঘটনা শুনতে পাওয়া যায়৷ নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবসে প্রশ্ন একটাই থাকে এটাকি শুধুমাত্র একটা তারিখ একটা দিবসেই আটকে থাকবে? নাকি চোখ খুলবে সমাজের? যেখানে দাঁড়িয়ে প্রকৃত অর্থে সমস্ত নারীরা মুক্ত হবে নির্যাতনের হাত থেকে৷

Wednesday, November 20, 2013

বডিবিল্ডিং ট্রেইনিং

0 comments
যারা খুব রোগা-পাতলা এবং অনেক খাওয়ার পরেও ওজন বাড়ে না, তাদেরকে ইংরেজিরে হার্ডগেইনার বলে। সাধারণত এদের হাড় চিকন এবং মেটাবলিজম (সোজা বাংলায় হজম শক্তি) খুব দ্রুত হওয়ার ফলে যতই খান না কেন, সেটা গায়ে লাগে না। আমাদের বাংলাদেশে এ ধরনের গঠনই বেশি বলে চারদিকে শুধু রোগা-পাতলা মানুষ চোখ পড়ে। তবে এদের পক্ষে স্বাস্থ্য ভালো করে বা ওজন বাড়ানো একেবারে অসম্ভব ব্যাপার নয়। শুধু অন্যান্য রেগুলার পদ্ধতির চাইতে একটু ভিন্ন পদ্ধতিতে যেতে হবে। সেরকম একটি বিষয় নিয়েই খুব সুন্দর একটা লেখা রয়েছে এবাউট.কম ওয়েবসাইটে। আমরা সেটা থেকে সংক্ষেপে নিজেদের মত করে আলোচনা করার চেষ্টা করছি।
হার্ডগেইনারদের যেসব ব্যাপার খেয়াল রাখতে হবে-
১. ব্যায়ামের সময় যথা সম্ভব কম রাখতে হবে, বড়জোড় এক ঘণ্টা। কেননা পেশী বাড়াতে যে হরমোনের দরকার হয়, সেটা এক ঘণ্টা পরে কমে যেতে শুরু করে। তাই এক ঘণ্টার পরেও যদি ব্যায়াম চাইয়ে যান তাহলে পেশী ক্ষয় হতে শুরু করবে।

২. ব্যায়াম করার সময় একটা সেট শেষ করে আরেকটা সেট শুরু করার মাঝে যত কম বিশ্রাম নিতে পারবেন, তত ভালো। বড়জোড় ৯০ সেকেণ্ড বিশ্রাম নিবেন। তারপর আবার পরবর্তী সেটের ব্যায়াম শুরু করে দেবেন। বেশী বিশ্রাম নিলে শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যেতে পারে।

৩. পর পর দুইদিনের বেশী একটানা ব্যায়াম করবেন না। সবচেয়ে ভালো হয় যদি একদিন পর পর ব্যায়াম করতে পারেন। মনে রাখবেন জিমে কিন্তু শরীর বাড়ে না। জিমে শুধু পেশীকে নাড়িয়ে দেয়া হয়, সেখানে যথাসম্ভব রক্তসঞ্চালন করে জাগিয়ে তুলতে হয়। পেশী বাড়ে যখন খাওয়া-দাওয়া ঠিক মতো করে বাড়িতে ঘুমাবেন বা বিশ্রাম নিবেন তখন। এছাড়া পেশী যথেষ্ঠ বিশ্রাম পেলে পরের বার জিমে গিয়ে আবার নতুন উদ্যমে শুরু করতে পারবেন। নইলে ক্লান্তি লাগবে, ব্যায়াম করার ইচ্ছে কমে যাবে।

৪. প্রতি সেট ব্যায়ামে ৬ থেকে ১৫ র‍্যাপ্‌স্‌-এর বেশী যাবেন না। হালকা ওয়েট নিয়ে বেশী র‍্যাপ্‌স্‌ দিলে শরীর মেয়েদের মত কোমল ও নরম গঠনের হয়ে যাবে। পেশী বাড়াতে চাইলে বেশী ওজন নিয়ে যত কম র‍্যাপ্‌স্‌ দিতে পারেন, তত ভালো।

৫. দিনের পর দিন একই রুটিনে ব্যায়াম না করাই ভালো। মাঝে মাঝে রুটিন চেঞ্জ করতে পারেন। অর্থাৎ কয়েক সপ্তাহ পরে মাঝের ব্যায়ামটা আগে, প্রথম ব্যায়ামটা মাঝে- এভাবে ঘুরিয়ে নিতে পারেন। এতে একঘেয়েমি লাগবে না।

৬. বেশী ওজন নিতে গিয়ে আবার ব্যায়ামের ফর্ম যাতে নষ্ট হয়ে না যায়, সেটা দেখতে হবে। যেমন ধরুন হাতের পেশীর ব্যায়াম করছেন। অন্যদের সাথে পাল্লা দিয়ে বেশী ওজন নিতে গিয়ে হাতের পেশীর সাথে কাধের পেশীও ব্যবহার করলেন। এটা নিজের সাথেই এক ধরনের প্রতারণা। এটা কখনো করবেন না। অন্যের সাথে তুলনা না করে নিজের যেটুকু সামর্থ, সেটুকুই সঠিক ভাবে করবেন। এ প্রসঙ্গে আরেকটা কথা- কখনোই অন্যের বডির বা শক্তির সাথে নিজের তুলনা করবেন না। এতে হীনমন্যতার সৃষ্টি হতে পারে। আপনি আপনার বডির বেস্ট ফর্মে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। অর্থাৎ পাল্লাটা হবে নিজের সাথে, নিজের বর্তমান অবস্থা থেকেও আরো বেটার অবস্থানে যাওয়ার।

৭. দৌঁড়ানো, হাঁটা, সাঁতার, সাইকেল চালানো- এই টাইপের বাড়তি কাজ যতটা সম্ভব কম করবেন। কেননা এতে আরো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

৮. জিমের মেশিন এড়িয়ে চলবেন। ফ্রি ওয়েট ব্যবহার করবেন।

৯. রুটিন বানিয়ে ব্যায়ামের নোট রাখবেন। এতে হিসাব থাকবে যে এই সপ্তাহে কত ওজন নিতে পারলেন, বা কতটা র‍্যাপ্‌স্‌ দিতে পারলেন। পরের সপ্তাহে চেষ্টা করবে সেই একই ব্যায়ামে ২ কেজি বা ৫ পাউণ্ড ওজন বাড়াতে। যেমন ধরুন- ৫০ কেজি দিয়ে ৮ বার বেঞ্চপ্রেস দিতে পারলেন এই সপ্তাহে। পরের সপ্তাহে টার্গেট থাকবে ৫২ কেজি দিয়ে ৮ বার দেয়ার। কিংবা ধরেন এই সপ্তাহে ৫টা পুল-আপ দিতে পারলে পরের সপ্তাহে ৬টা দেবেন। এগুলো হিসাব রাখতেই রুটিনের নোট রাখা উচিত। এতে বুঝতে পারবেন আপনার ব্যায়ামের এবং শক্তির কতটা উন্নতি হচ্ছে। (যারা সিরিয়াস, তারা এইটা অবশ্যই করবেন।)

১০. দুই সপ্তাহ পর পর শরীরের ওজন এবং ফিতা দিয়ে দেহের বিভিন্ন অংশের মাপ নিবেন। এটাও লিখে রাখবেন। টার্গেট রাখবেন প্রতি দুই সপ্তাহে ২ কেজি করে ওজন বাড়াতে।

সশস্ত্র বাহিনী দিবস

0 comments
২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলাদেশের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সহযোগিতায় সম্মিলিতভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণের সূচনা করে। এরপর থেকে প্রতি বছর ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালিত হচ্ছে।
আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে সম্মিলিতভাবে ২১ নভেম্বরকে সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর আগে ২৫ মার্চ সেনা, ১০ ডিসেম্বর নৌ এবং ২৮ সেপ্টেম্বর বিমান বাহিনী আলাদাভাবে দিবসগুলো পালন করত। পরে ২১ নভেম্বরের তাৎপর্য সমুন্নত রাখতে সম্মিলিত দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়। ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ-ভারতের সেনাদের নিয়ে গড়া যৌথবাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর তিরানব্বই হাজার সেনা রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমর্পণ করে। এর মাধ্যমেই স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে ও পাক-ভারত যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে। স্পষ্টত দেখা যাচ্ছে, সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালনের পেছনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সক্রিয়। মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্ন সামরিক বাহিনীর অবদানকে সাধারণ জনতার আত্মত্যাগের সঙ্গে একীভূত করে দেখা হয় এ দিবসটিতে। ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর তাণ্ডবলীলার জবাবে অস্ত্র তুলে নেয় বিপ্লবী ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস, পুলিশ, আনসার ও অন্য সদস্যরা। পরবর্তী সময়ে এগিয়ে আসেন পূর্ব পাকিস্তানের কর্মরত বাঙালি নাবিক ও নৌ-অফিসার, সেনা ও বিমান কর্মকর্তারা। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেয় সর্বস্তরের মুক্তিপাগল হাজার হাজার যুবক। বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম ধারণ করে সশস্ত্র সংগ্রামের রূপ। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে পাকিস্তানি শাসকদের স্বপ্ন নস্যাৎ ও তাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রয়োজন দেখা দেয় একটি সুসংগঠিত সশস্ত্র বাহিনীর। মুজিবনগরে গঠিত অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার কর্নেল এম এ জি ওসমানীকে (পরবর্তী সময়ে জেনারেল) মুক্তিবাহিনীর প্রধান নিয়োগ করে। তাঁর ওপর মুক্তিবাহিনী পুনর্গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেনাবাহিনীর অফিসার ও সৈনিকরা দ্রুত নিজেদের সুসংগঠিত করে পাল্টা আক্রমণ করে। সারা দেশকে বিভক্ত করা হয় ১১টি সেক্টরে, যার নেতৃত্ব দেওয়া হয় একেকজন সুশিক্ষিত পেশাদার সেনা কর্মকর্তাকে। আট মাস পর একাত্তর সালের ২১ নভেম্বর চূড়ান্তভাবে সম্মিলিত আক্রমণের পরিকল্পনা গৃহীত হয়। সেদিন স্থল, নৌ ও আকাশপথে কর্নেল ওসমানীর নেতৃত্বে চালানো হয় ত্রিমুখী আক্রমণ। উন্মুক্ত হয় বিজয়ের পথ। এই আক্রমণ পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সফলতা লাভ করে জলে, স্থলে ও অন্তরীক্ষে। তারা বাধ্য হয় পশ্চাদপসরণে। সুশিক্ষিত একটি বাহিনীর বিরুদ্ধে সূচিত হয় মুক্তিবাহিনীর বিজয়ের ইতিহাস। তারপর মিত্রবাহিনীর সহযোগে ঘোষিত হয় সার্বিক যুদ্ধ। ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতি ছিনিয়ে আনে চূড়ান্ত বিজয়। প্রকৃতপক্ষে এ বিজয়কে ত্বরান্বিত করেছিল ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বরের সম্মিলিত আক্রমণ।

বিশ্ব শৌচাগার দিবস

0 comments
১৯ নভেম্বর বিশ্ব শৌচাগার দিবস। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর সব মানুষের জন্য স্বাস্থ্যকর টয়লেট নিশ্চিত করার ব্যপারের ব্যর্থতা মোটেও সুখকর ব্যাপার নয়। এটার সঙ্গে জড়িয়ে আছেন মানুষের জীবন-মৃত্যু। তাই এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ১৯ নভেম্বরকে বিশ্ব টয়লেট দিবস ঘোষণা করেছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, বিশ্বে ২.৫ বিলিয়ন মানুষ স্বাস্থ্যকর স্যানিটেশন থেকে বঞ্চিত এবং এক বিলিয়নেরও বেশি মানুষ খোলা পায়খানা ব্যবহার করে। ফলে তারা প্রতিরোধযোগ্য বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে অসচেতনতার কারণে অসংখ্যা মানুষ এসব রোগে ভুগে মারা যাচ্ছে। এ বিষয়ে সচেতনতা না থাকায় এসব মৃত্যুর সঠিক সংখ্যা হিসেবের বাইরে থেকে যাচ্ছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন বলেন, বৈশ্বিক উন্নয়নের জন্য অন্যতম অগ্রাধিকার হিসেবে আমাদের উচিত সবার জন্য স্বাস্থ্যকর স্যানিটেশন নিশ্চিত করে এ ক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্ত বাধাকে দূর করা। নিম্নমানের স্যানিটেশনের কারণে প্রতিবছর ডায়রিয়ার আক্রান্ত হয়ে আট লাখের বেশি শিশু মারা যায়। যাদের বয়স পাঁচ বছরেরও কম।
বান বলেন, টয়লেট ও স্যানিটেশনের গুরুত্ব সম্পর্কে খোলামেলা আলোচনা ও একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে আমরা বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ মানুষের স্বাস্থ্যগত উন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম হব। এটাই বিশ্ব টয়লেট দিবসের উদ্দেশ্য। ২০০১ সালে ১৯ নভেম্বরকে বিশ্ব শৌচাগার দিবস ঘোষণা করে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা।

Tuesday, November 19, 2013

কোমল গোলাপি ঠোঁট পাবার ১১টি উপায়

0 comments
কে না চায় একজোড়া সুন্দর ও আকর্ষণীয় ঠোঁট? কেবল একজোড়া স্বাস্থ্যজ্জ্বল ঠোঁটই আপনার হাসিকে করে তুলতে পারে আরো আকর্ষণীয়, চেহারাকে করে তুলতে পারে মোহনীয়। আর তাই জেনে নিন ঠোঁটকে সুন্দর রাখবার উপায়গুলো।

আসুন, জেনে নেয়া যাক সুন্দর গোলাপি ঠোঁট পেতে কী কী করবেন ও করবেন না-
যা করতে পারেন-

১. একটি পাতলা লেবুর টুকরোর ওপরে খানিকটা চিনি ছিটিয়ে প্রতিদিন ঠোঁটে ঘষুন। চিনি ঠোঁটের মরা চামড়াগুলোকে পরিষ্কার করতে এবং লেবু সূর্যের ফলে কালো হয়ে যাওয়া ঠোঁটের চামড়াকে উজ্জবল করতে সাহায্য করে।

২. মধুর সাথে চিনি এবং কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল মিশিয়ে ১০ মিনিট ঠোঁটে ঘষুন।

৩. ঠোঁটকে উজ্জ্বল করতে ল্যাক্টিক এ্যাসিড খুব উপকারী। নিয়মিত দুধ খাবার সাথে সাথে খানিকটা দুধ তুলোয় করে ঠোঁটে ঘষে নিন। শুষ্ক চামড়াকে তুলে ফেলার মাধ্যমে দুধ ঠোঁটের কালো হওয়াকেও প্রতিরোধ করে। [গোলাপি ঠোঁট]

৪. গোলাপের পাপড়িও ঠোঁটের গোলাপী ভাব আনতে সাহায্য করে। এজন্য গোলাপের পাপড়ি দুধের মধ্যে রেখে তাতে মধু ও গ্লিসারিন মিশিয়ে নিন। প্রলেপটি ১৫ মিনিট ঠোঁটে মাখুন। এরপর দুধ দিয়ে ঠোঁটকে মুছে নিন। প্রতিদিন এই প্রলেপটির ব্যবহার আপনার ঠোঁটকে করে তুলবে আকর্ষণীয়।

৫. লেবুর ভেতরের এসিড ঠোঁটের শুষ্ক চামড়াকে তুলে ফেলতে সাহায্য করে। তবে লেবুর রসের সাথে খানিকটা চিনি ও মধু মিশিয়ে ঘরে বসেই নিতে পারেন ঠোঁটের পুরোপুরি যতœ। প্রলেপটি মাখার একঘণ্টা পর ধুয়ে নিন।

৬. লেবুর রসের সাথে খানিকটা গ্লিসারিন মিশিয়ে ঠোঁটে মাখুন। কয়েকদিনেই আপনি পাবেন চমৎকার ফলাফল।

৭. বাদামের তেল, মধু ও চিনির মিশ্রন করুন। প্যাকটি আপনার ঠোঁটকে কেবল সুন্দরই করবে না, কোমলতাও বাড়াবে।

৮. ঘুমানোর আগে ঠোঁটে পালং পাতা ঘষে নিন। সাথে রাখতে পারেন জাফরানও। এই দুটি সহজলভ্য উপাদানের নিয়মিত ব্যবহার আপনার শুষ্ক ঠোঁটকে সারিয়ে তুলবে এক নিমিষেই।

৯. কমলালেবু খাবার সময় এর বীচিগুলোকে সংরক্ষণ করুন এবং নিয়মিত ঠোঁটকে এগুলোর দ্বারা পরিষ্কার করুন।

১০. প্রতিদিন টমেটো পেষ্ট করে ঠোঁটে মাখুন। আপনার ঠোঁট হবে উজ্জ্বল।

১১. শশার রসও ঠোঁটের কালো হওয়কে প্রতিরোধ করে। ফলাফল পেতে প্রতিদিন অন্তত ৫ মিনিট শসার রস ঠোঁটে ঘষুন।

[গোলাপি ঠোঁট] মনে রাখবেন-


- ধুমপান ঠোঁটের জন্যে ক্ষতিকর। তাই ধুমপান থেকে বিরত থাকুন।
- রাতে ঘুমাতে যাবার আগে লিপস্টিক তুলে ফেলতে ভুলবেননা।
- জিহ্বা দিয়ে অবিরত ঠোঁট ভেজানো বন্ধ করুন। এতে সাময়িক আরাম মিললেও আসলে ঠোঁটের সৌন্দর্য হানি হয়। বদলে ব্যবহার করুন লিপজেল।
- ফাস্টফুডের পরিবর্তে শাক-সব্জী খাওয়ার পরিমাণ বাড়ান।
- চা এবং কফির পরিবর্তে পানি খাবার পরিমাণ বাড়ান। প্রচুর পরিমাণে পানি আপনার ঠোঁটকে রাখতে পারে সুস্থ ও স্বাভাবিক সৌন্দর্যময়।

Sunday, November 17, 2013

ইসলামী ব্যাংক এর “এম ক্যাশ” এর সুবিধা সমূহ

0 comments

এম ক্যাশ-এর সুবিধা সমুহ

দিনে ২৪ ঘন্টা, সপ্তাহে ৭ দিন ও ৩৬৫ দিন ব্যাংকিং সুবিধা শাখাবিহীন ব্যাংকিং সুবিধা দেশের যেকোন স্থান হতে ব্যাংকিং সেবা গ্রহন সম্ভব। বিদেশ হতে অল্প সময়ে সরাসরি মোবাইল একাউন্টে অর্থ প্রেরণ ব্যাংকিং সুবিধা বঞ্চিতদের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা গ্রহনের ব্যবস্থা সর্বাধিক ও অধিকতর নিরাপদ ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রায় সকল কার্যক্রমে ব্যাংক লেনদেনের সুযোগ সৃস্টি করা

এম ক্যাশ-এর সেবা সমুহ
স্বল্প সময়ে গ্রাহকের একাউন্ট খোলা
বিদেশ হতে অর্থ প্রেরণ ও গ্রহণ
নগদ টাকা জমা
নগদ টাকা উত্তোলন
এক একাউন্ট হতে অন্য একাউন্টে অর্থ স্থানান্তর
একাউন্টের ব্যালান্স জানা
বেতন/ভাতা প্রেরণ ও গ্রহণ
মোবাইল টপ-আপ (রিচার্জ)
পণ্য ক্রয়-বিক্রয়
যেকোন মোবাইল ফোন ও সিম ব্যবহার করে এই সুবিধা গ্রহণ
শুধুমাত্র ২০ টাকা জমা দিয়েই একাউন্ট খোলা যায়
ব্যাংকের অন্যান্য একাউন্টের সাথে লেনদেনের (জমা, উত্তোলণ, হস্তান্তর) ব্যবস্থা

এম ক্যাশ-এর একাউন্ট খোলা ও লেনদেন
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ মনোনীত যেকোন এজেন্ট, ব্যাংকের যেকোন শাখা এবং এম ক্যাশ চুক্তিবদ্ধ মোবাইল ফোন কোম্পানী কর্তৃক মনোনীত যেকোন এজেন্ট এর কাছে একাউন্ট খোলা ও লেনদেন করা যাবে। এজেন্টের কাছে খোলার ফরম পাওয়া যাবে।
এই একাউন্ট খোলার ফরম পূরণ করে ২০ টাকা জমা দিয়ে একাউন্ট খোলা যাবে।

এম ক্যাশ-এ একাউন্ট খোলার জন্য যা লাগবে
১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
জাতীয় পরিচয় পত্র/ নাগরিক সনদ পত্র/ ড্রাইভিং লাইসেন্স/ পাসপোর্ট এর ফটোকপি
এজেন্ট/ কর্মকর্তা গ্রাহকের তথ্যাবলীর মাধ্যমে গ্রাহকের মোবাইল একাউন্ট খুলবেন এবং গ্রাহকের মোবাইলে সাথে সাথে একটি SMS যাবে।
গ্রাহকের মোবাইল নাম্বারটির সাথে একটি Cheek ডিজিট যুক্ত হয়ে মোট ১২ সংখ্যার একটি মোবাইল একাউন্ট হবে।
এরপর গ্রাহকের মোবাইল ফোনে একটি ফোন আসবে এবং গ্রাহককে গোপন ৪ ডিজিটের PIN দিতে বলবে। গ্রাহক তার নিজসব চার ডিজিটের
PIN দিবেন এবং এই PIN ই পরবর্তীতে তার লেনদেনের জন্য গোপন PIN হিসেবে কাজ করবে। এই অবস্থায় গ্রাহক তার মোবাইল
একাউন্টে টাকা জমা দিতে পারবে।

এম ক্যাশ-এ মোবাইল একাউন্টে লেনদেনের সীমা
দৈনিক জমা : সর্ব্বোচ্চ ৫ বার
দৈনিক উত্তোলন : সর্ব্বোচ্চ ৫ বার
দৈনিক অর্থ স্থানান্তর : সর্ব্বোচ্চ ১০ বার
দৈনিক জমার পরিমাণ : ৫০-২৫,০০০ টাকা
দৈনিক উত্তোলণের পরিমাণ : ৫০-২৫,০০০ টাকা
দৈনিক স্থানান্তরের পরিমাণ : ১০-৫,০০০ টাকা
মাসিক মোট জমা : সর্ব্বোচ্চ ৩০ বার
মাসিক মোট উত্তোলন : সর্ব্বোচ্চ ১৫ বার
মাসিক মোট অর্থ স্থানান্তর : সর্ব্বোচ্চ ১০০ বার
মাসিক জমার পরিমাণ : ৩,০০,০০০ টাকা
মাসিক উত্তোলণের পরিমাণ : ১,৫০,০০০ টাকা
মাসিক স্থানান্তরের পরিমাণ : ১,০০,০০০ টাকা

মোবাইল একাউন্টে লেনদেনের সার্ভিস চার্জ
একাউন্ট খোলাঃ ফ্রি
বৈদেশিক অর্থ জমাঃ ফ্রি
বেতন ভাতা গ্রহনঃ ফ্রি
মোবাইল টপ-আপ (রিচার্জ)- ফ্রি
একাউন্ট ব্যালান্স চেকঃ ফ্রি
অর্থ জমাঃ ফ্রি
অর্থ উত্তোলনঃ ১০-১০০০ টাকা পর্যন্ত ১০ টাকা ১০০১-২৫,০০০ টাকা পর্যন্ত ১% হারে
মার্চেন্ট পেমেন্টঃ ফ্রি

-মিজানুর রহমান সোহেল

Monday, November 11, 2013

১১ নভেম্বর ঐতিহাসিক বেতিয়ারা শহীদ দিবস

0 comments
১১ নভেম্বর সোমবার ঐতিহাসিক বেতিয়ারা শহীদ দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বেতিয়ারায় ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের উদ্যোগে গঠিত বিশেষ গেরিলা বাহিনীর সদস্য মো. সিরাজুম মুনীর জাহাঙ্গীর, বশিরুল ইসলাম মাস্টার, নিজাম উদ্দিন আজাদ, শহীদুল্লাহ সাউদ, আওলাদ হোসেন, দুদু মিয়া, আবদুল কাইয়ুম, আবদুল কাদের ও মোহাম্মদ শফিউল্লাহসহ নয়জন তরুণ গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
স্বাধীনতা সংগ্রামে বাঙালী জাতির ইতিহাসে একটি ঐতিহ্যবাহী গৌরবোজ্জ্বল দিন। সেদিন দেশপ্রেম ও সাহসের রক্তিম আল্পনায় আত্মদানের এক অমর অধ্যায় রচিত হয়েছিল কুমিল্লার বেতিয়ারায়।

জানা যায়, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ভারতের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে আসা ন্যাপ, কমিউনিস্ট পার্টি ও ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ উদ্যোগে গঠিত বিশেষ গেরিলা বাহিনীর ৭৮জনের একটি বীর গেরিলা যোদ্ধার দল আগরতলা হয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে।

ওই দলটির ট্রেনিংক্যাম্প কমান্ডার ছিলেন, তৎকালীন ছাত্র ইউনিয়নর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি, যৌথ গেরিলা বাহিনীর কমান্ডার ও বর্তমানে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি কেন্দীয় উপদেষ্টা মন্ডলীর অন্যতম সদস্য মঞ্জুরুল আহসান খান। ১০নভেম্বর রাতে দুই নং সেক্টরের অধীনে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের বেতিয়ারা নামক স্থানে এসে জমায়েত হয়েছিলেন।

সেদিন যুদ্ধ চলাকালে সোর্স’র ভুল সিগন্যাল থাকায় শত্রুদের পাতা চতুর ফাঁদে পড়ে ৭৮জনের মধ্যে ৯জন শহীদ হয়েছিলেন, বাকি ৬৯জন সাহসী লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে প্রাণে বেঁচেছিলেন। সেই থেকে বীর গেরিলা মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের এই ইতিহাসকে সমুজ্জ্বল করে রাখতে প্রতি বছর ১১নভেম্বর ‘বেতিয়ারা শহীদ দিবস হিসাবে দিনটি পালিত হয়ে আসছে।

১১ নভেম্বরের শহীদ গেরিলারা বেতিয়ারার ধান খেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিলেন। ঘটনার সাত দিন পর স্থানীয় লোকজন ধান ক্ষেত থেকে শহীদদের গলিত লাশ উদ্ধার করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে একটি গর্ত খুড়ে মাটি চাঁপা দিয়ে রেখেছিলেন। ২৮ নভেম্বর কুমিল্লা অঞ্চলের প্রথম মুক্তাঞ্চল হিসাবে স্বীকৃত চৌদ্দগ্রামের এ জগন্নাথদীঘি অঞ্চল শত্রুমুক্ত হওয়ার পর বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউল হোসেন জিবুর উদ্যোগে ডাঃ সবুর চৌধুরী, মাষ্টার মুজিবুর রহমান, মাষ্টার আলী আকবর, মো. ফরাজী, আব্দুল মালেক, মতি মিয়া ও আতা খানের সার্বিক সহযোগীতায়, চাঁদা তুলে এবং ইসলামী শরিয়ামতে মাওলানা আবেদ আলী সাহেবের মাধ্যমে নামাজে জানাযা শেষে পুনরায় মহাসড়কের পশ্চিম পার্শ্বে দ্বিতীয়বার দাফন করা হয়। শহীদদের গণকবরের ওপর স্বাধীন বাংলার লাল-সবুজের পতাকা উত্তোলন করে পাশেই নির্মাণ করা হয় শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ।

১৯৭২ সালে ওই গণকবরের পাশে স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধনের মাধ্যমে ‘বেতিয়ারা’ শহীদ দিবস পালন করেন মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টা মন্ডলীর অন্যতম সদস্য বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি প্রয়াত কমরেড মনিসিংহ। যার ধারাবাহিকতায় ‘বেতিয়ারা শহীদ দিবস পালন আজও অব্যাত রয়েছে ।

তবে বেতিয়ারার শহীদদের গণকবরের পাশে যে বেদীটি নির্মান করা হয়েছিল তা রক্ষার বিষয়টি ‘ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক সংস্কারের মূখে অনিশ্চয়তার বেড়া জালে আটকে আছে। সরকারের উদ্যোগে জমি অধিগ্রহন পূর্বক জরুরী ভিত্তিতে বেতিয়ারার শহীদদের স্মরনে স্মৃতিসৌধ নির্মানে উদ্যোগ নেয়া এখন সকলের দাবী।

কিন্তু শহীদদের জন্য নিষ্কন্টক পরিবেশে স্মৃতিসৌধ নির্মান না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।

Sunday, November 10, 2013

গ্রে স্ট্রিট, কলকাতা

0 comments
কলকাতার গোড়াপত্তনের একদম শুরুর দিকে সুতানটি ছিল ব্যবসায়ীদের সুতোর হাট। সুতো ব্যবসায়ীদের বাসস্থানগুলিও পরবর্তীকালে তাঁদের ব্যবসার স্থান হয়ে দাঁড়ায়। ওই এলাকার রাস্তা তৈরি ও মেরামতির কাজের দায়িত্ব তাঁরা নিয়েছিলেন। পাশাপাশি খরচ চালানোর জন্য তাঁরা সেইসময় কর ছাড়ের সুবিধা আদায় করে নিয়েছিলেন। সেই ব্যবসায়ীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন জনার্দন শেঠ ও গোবিন্দরাম মিত্র। সেই সময়ে কলকাতা বন্দরে বিদেশ থেকে অনেক জাহাজ আসত তবে সব জাহাজগুলি সবসময়ে পণ্যভর্তি থাকত না। হালকা জাহাজ নিয়ে সমুদ্র পাড়ি দেওয়া অসম্ভব, তাই জাহাজের বাকি অংশে বালি বোঝাই করা হত। কিন্তু পরে এই ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন সেই বালি বন্দর থেকে নিয়ে এসে শহর লাগোয়া মেঠো রাস্তায় ফেলে দেওয়া হত। শহরের প্রতিরক্ষার জন্য সুতানটির দিক থেকে ঘুরে এসে গোবিন্দপুরের দক্ষিণ পর্যন্ত একটি পরিখা খনন করা হয়েছিল। ১৭৪২ সালে মাত্র ছ’মাসের মধ্যে পরিখাটি খোড়ার কাজ শেষ হয়েছিল। এই কাজ দেখাশোনা করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তিনশো ইউরোপীয় ও তিনশো ভারতীয়কে। এর নাম দেওয়া হয়েছিল ‘মরাঠা ডিচ ক্যানেল’,পরে এই পরিখা বুজিয়ে দিয়ে রাস্তা তৈরি করা হয়। বর্তমানে সেই রাস্তার নাম সার্কুলার রোড। মধ্য কলকাতায় সেই রাস্তার নাম আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস রোড ও উত্তর কলকাতায় সেই রাস্তার নাম আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় রোড। কলকাতার প্রথম পাকা রাস্তা এই সাকুর্লার রোড। উত্তর কলকাতার এই লোয়ার সাকুর্লার রোড বা আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রোডের উপরই আর একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা গ্রে স্ট্রিট। গ্রে স্ট্রিট আদতে ইংল্যান্ডের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চালর্স আর্ল গ্রে-র নামানুসারে তৈরি রাস্তা। কলকাতার আদি ইতিহাসের পাশাপাশি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসের সঙ্গেও জড়িয়ে রয়েছে এই রাস্তার নাম। ১৯০৮ সালের ৮ মে ঋষি অরবিন্দ এই বাড়ি থেকে গ্রেফতার হন। আলিপুর বোমার মামলায় গ্রেফতার করা হয় ঋষি অরবিন্দকে। সে বাড়ি আজও রয়েছে এই গ্রে স্ট্রিটে। পরে এই গ্রে স্ট্রিটের নামও হয়ে যায় অরবিন্দ সরণি।
গ্রে স্ট্রিটে রয়েছে প্রসিদ্ধ হাতিবাগান বাজার। রয়েছে সুপ্রাচীন হাতিবাগান টোল। হাতিবাগান বাজারেরও রয়েছে এক ইতিহাস। ১৭৫৬ সালে সিরাজদ্দৌলা কলকাতা আক্রমণ করেন। এই সময়ই নবাবের হাতিদেরকে রাখা হয়েছিল এই অঞ্চলেরই এক বাগানে ইতিহাসের সেই নাম নিয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে হাতিবাগান।
গ্রে স্ট্রিটে আরো দু’টি সুবিখ্যাত রাস্তা হল হরি ঘোষ স্ট্রিট ও রাজা নবকৃষ্ণ স্ট্রিট। হরি ঘোষ স্ট্রিট খুবই পুরোনো রাস্তা। বলরাম ঘোষের চার ছেলে ছিল। তাঁদের নাম রামহরি, শ্রীহরি, নরহরি এবং শিবহরি। হরিহর শেঠের বিবরণে জানা যায় যে শেষ দু’জন অকালেই প্রয়াত হন। রামহরি সম্পর্কে তেমন বিশেষ কোনও খবর নেই। শ্রীহরি পেশাগত ভাবে ছিলেন মুঙ্গের দূর্গের দেওয়ান। এই দূর্গটি ছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দখলে। শ্রীহরি অসহায় মানুষদের নিজের বাড়িতে আশ্রয় দিতেন। তাঁর বাড়ি সবসময় লোকজনের কোলাহলে মুখরিত থাকত। এই কোলাহলের জন্য আশেপাশের বাড়ি থেকে শ্রীহরি ঘোষের বাড়িকে উদ্দেশ্য করে বলা হত ‘হরি ঘোষের গোয়াল’।
রাজা নবকৃষ্ণ স্ট্রিট শুরু হয়েছে হরি ঘোষ স্ট্রিট যেখানে গ্রে স্ট্রিট-এর সঙ্গে মিশেছে, তার উত্তর দিক থেকে। রাজা নবকৃষ্ণ ছিলেন শোভাবাজারের দেব রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বেহালা থেকে কুলপি পর্যন্ত প্রায় ষোল কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করেছিলেন। সেই রাস্তা ‘রাজার জঙ্গল’ নামে পরিচিত। নিজের বাড়ির সামনে নিজের খরচেই যে রাস্তাটি তিনি তৈরি করেন তা নবকৃষ্ণ স্ট্রিট নামে পরিচিত। রাধাকান্ত দেবের বাড়ির সামনে দিয়েই গিয়েছে এই রাস্তা। ১৮৫৬ সালের তৈরি ‘ক্যালকাটা ডাইরেক্টরি’ অনুযায়ী ওই রাস্তার এক নম্বরে কোন বাড়ি ছিল না। সেখানে ছিল বস্তি। দ্বিতীয় নম্বরে ছিলেন মহারাজের দলবল, রাজা শিবকৃষ্ণ বাহাদুর, রাজা কালীকৃষ্ণ, রাজা দেবকৃষ্ণ, রাজা অপূর্বকৃষ্ণ, রাজা নরেন্দ্রকৃষ্ণ, রাজা কমলকৃষ্ণ এবং সদর দেওয়ানী আদালতের উকিল হরকালী ঘোষ। বারো নম্বরে ছিল `শ্যামপুকুর’ নামে একটি পুকুর।
পরবর্তীকালে গ্রে স্ট্রিটের উপর দিয়ে হেঁটে গিয়েছেন বহু নামী ব্যক্তিবর্গ। কর্ণওয়ালিশ স্ট্রিটের `স্টার’ থিয়েটারে এসেছেন গিরিশ ঘোষ। শ্যামপুকুরের বাটিতে ছিলেন রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। আরও পরে কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত (১৯০১-১৯৮৬০) চলে আসেন ৯০/১ গ্রে স্ট্রিটের বাড়িতে। স্মৃতির সরণিতে তাই আজও অম্লান গ্রে স্ট্রিট।

Saturday, November 2, 2013

বস্ত্রহীন বিয়ে

0 comments
“শুভ বিবাহ” শব্দটা শুনলেই যেনো সবার মনটা আনচান করে উঠে। বর-কণে, উৎসব-আনন্দ সহ অনেক কিছুই মিশে রয়েছে বিবাহ শব্দটির মধ্যে। বিয়ে একটি মানবিক বিষয়। মানুষ যখন প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে উঠে তখন সে তার জৈবিক চাহিদা মেটানো ও পারিবারিক কাঠামো তৈরি করার জন্য ধর্মীয় রীতি নীতি অনুযায়ী বিয়ে করে থাকে। মানুষের জন্ম লগ্ন থেকে শুরু করে আজ অবধি বিশ্বে বিয়ে প্রথা প্রচলিত আছে এবং থাকবে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নিয়মে বিবাহ সম্পন্ন করা হয়। বিয়েকে ঘিরে উৎসব আমেজও বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম। বিয়েতে সাধারণত বিয়ের দিন বর ও কণে উভয়ই ঐতিহ্যগত ও ধর্মীয়ভাবে ঝলমলে পোশাক পরিধান করে থাকে।
বর্তমান আধুনিক সমাজে প্রত্যেকটা বিষয় পরিবর্তন হচ্ছে ঠিক তেমনি বিয়ের উৎসবেও এসেছে অনেক পরিবর্তন ও নতুনত্ব। আধুনিক এই বিশ্বে মানুষ সব কিছুতেই একটু ব্যতিক্রম খোজার চেষ্টা করে। ফলে পৃথিবী আধুনিক হচ্ছে নাকি অসভ্য হচ্ছে সেটাও একটি মূল্যবান প্রশ্ন।

আপনারা হয়তো ভাবছেন বিয়ের অনুষ্ঠানে আবার সভ্য-অসভ্যের কথা আসছে কেন? আসছে এই কারণে যে, বিয়েতে ব্যতিক্রম আনার জন্য মানুষ সভ্যতার চূড়ান্ত সীমা লংঘন করে ফেলছে।

আপনি কি কল্পনা করতে পারেন যে, একটি বিয়ে অনুষ্ঠান চলছে আর সেখানে বর কণে পুরো উলঙ্গ হয়ে বসে আছে। হয়তো এমন অবস্থা কল্পনাও করতে পারছেন না। কিন্তু এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে জ্যামাইকাতে। আর এই ঘটনাটি বেশ সমালোচনার জন্ম দিয়েছে বিশ্ব ব্যাপী।

২০১২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারী তারিখে জ্যামাইকার সমুদ্র সৈকতে আয়োজন করা হয়েএক নগ্ন বিয়ের উৎসব। যে বিয়ের অনুষ্ঠানে বিয়ে পড়ানো হয় ৯ জোড়া বর কনেকে। যে অনুষ্ঠানটি ছিল খুবই রুচিহীন ও সমালোচনা মুখর। এ দিন বিয়ের অনুষ্ঠানে বর-কণের পায়ে দামি জুতা, হাতে রিস্টব্যান্ড এবং গলায় টাই আর নেকলেস থাকলেও তাদের শরীরে ছিল না কোনও পোশাক।

শরীরে কোনও পোশাক না থাকলেও যথারীতি কনেদের অনেকের মাথায়ই ছিল ঘোমটা বা অবগুণ্ঠন! আবার দু-একজন কণে মুকুট বা হ্যাটও পরেছিলেন। উলঙ্গ বর-কনেরা যাতে সহজেই সবার চোখে পড়ে সেজন্য তাদের দেহে বাড়তি সৌন্দর্য ও উজ্জ্বলতা বাড়াতে তাদের শরীরে ব্যবহার করা হয়েছিল উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার পেইন্ট! আর কনেদের হাতে লাগানো হয়েছিল লাল, সাদা আর হলুদ রংয়ের বাহারি ফুল।

নয়টি নগ্ন জুটির আলোচিত-সমালোচিত এ গণবিয়ে অনুষ্ঠিত হয় জামাইকার নেগ্রিল সমুদ্র সৈকতে উন্মুক্ত আকাশের নিচে। এমন নির্লজ্জ ও উদ্ভট নগ্ন বিয়ের আয়োজন করেছিল ‘দ্য হেডোনিজম টু রিসোর্ট’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করার পাশাপাশি এই প্রতিষ্ঠানটি একই সঙ্গে বহন করেছে এই নয় জুটির নগ্ন হয়ে বিয়ে করার যাবতীয় খরচও।

নগ্ন বিয়ের এই অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে অংশগ্রহণকারীদের বাছাই করার জন্য ‘কেন তোমরা নগ্নতার মধ্য দিয়ে দাম্পত্য জীবন শুরু করতে চাও?’ এ প্রশ্নটিসহ আরও কয়েকটি প্রশ্ন করা হয়। এসব প্রশ্নের সঠিক উত্তরদাতার মধ্য থেকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হয় ১০০ জুটিকে।

পরে এদের মধ্য থেকে বাছাই করা হয় ভাগ্যবান সেরা ১০ জুটিকে। যাদের প্রদান করা হয় নগ্ন বিয়ের বিশেষ সুযোগ। আনন্দের বিষয় এই যে, অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্য মোট ১০টি জুটি নির্বাচন করা হলেও পরে একটি জুটির শুভবুদ্ধির উদয় হলে তারা এই অনুষ্ঠান থেকে তাদের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। ফলে অনুষ্ঠানটি নয়টি জুটিকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।

নগ্ন বিয়েতে অংশ গ্রহণ করে এই নয় জুটি নিজেদেরকে সৌভাগ্যবান ভেবেছে। অবশ্য বিশ্বের বিবেকবান মানুষরা ভেবেছে তারাই সমাজের সবচেয়ে নিকৃষ্ট জীব। এই বিয়েকে ঘিরে জ্যামাইকা সহ সমগ্র বিশ্বে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। বিবেকবান মানুষেরা আশা করেন আধুনিকতা বা ব্যতিক্রমতার নামে ভবিষ্যতে কেউ যেনো আর কোনও দিন এই ধরনের নির্লজ্জ কাজে অংশ গ্রহণ বা আয়োজন না করে।

Dhaka Times 24

জ্যাম ও জেলির পার্থক্য

0 comments
আমরা প্রায় সময়ই জ্যাম ও জেলি দিয়ে পাউরুটি ও অন্যান্য খাবার খেয়ে থাকি কিন্তু আমরা সবাই কি জানি এদের মাঝে পার্থক্যটা কি? আসুন জেনে নেই, জ্যাম তৈরি হয় সরাসরি ফলমূল থেকে, যা চিনির শিরার সাথে সিদ্ধ করে গলানো হয় যতক্ষণ না পর্যন্ত তা একটা থকথকে আবরনের মত হয়।জ্যামের মধ্যে যে ফল থেকে তা তৈরি তাঁর কিছুটা অংশ টুকরা-টুকরা থেকে যায় এতে সহজেই বুঝা যায় যে জ্যামটা কোন ফল থেকে তৈরি হয়েছে অপরদিকে জেলি তৈরি করা হয় ফলের রস থেকে এতে মূল ফলের কোন অংশ বিদ্যমান থাকে না আর এজন্য জেলি জ্যামের থেকে অনেক মসৃণ হয়ে থাকে তাছাড়া জেলিতে চিনির পরিমাণও জ্যামের থেকে বেশি থাকে। 

জেলহত্যা দিবস

0 comments
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর। পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ স্থান নামে খ্যাত জেলখানায় ঢুকে একদল সন্ত্রাসী সেদিন বাংলাদেশের ক্ষণজন্মা ৪ মহান পুরুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। ইতিহাস কলঙ্কিত এমন বিরল ঘটনা পৃথিবীর আর কোন দেশে ঘটেনি।
মহান মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এএইচএম কামরুজ্জামানকে ১৯৭৫ সালের এদিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় হত্যা করা হয়।

১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ভোর রাতে রিসালদার মোসলেমের নেতৃত্বে ঘাতকরা জেল খানায় প্রবেশ করে। কারারক্ষীরা প্রথমে তাদেরকে অস্ত্র নিয়ে জেলখানায় ঢুকতে বাধা দিলে মোশতাক তখন তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিআইজি (প্রিজন)কে ফোনে বলেন, ওদের কাজে বাধা না দিয়ে ওরা যা করতে চায় তা করতে দিন।

ঘাতকরা জেলখানায় ঢুকেই চার নেতাকে টার্গেট করে ব্রাশফায়ার করতে থাকে। তাদের একটানা ব্রাশফায়ারে একমাত্র তাজউদ্দিন ছাড়া বাকি তিন জন ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। এসময় তাজউদ্দিন পানি পানি বলে চিৎকার করতে থাকেন। ঘাতকরা তাজউদ্দিনের গলার আওয়াজ শুনতে পেয়ে ফিরে এসে পানির পরিবর্তে তাকে ব্যানট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। যা আজও জাতিকে ব্যাথিত করে।

ঐদিন মোশতাকের আরেকটি ঘাতক দল কুর্মিটোলা কারাগারে হত্যাকান্ড চালাতে গিয়েছিল। কিন্তু কারারক্ষীদের বাধার মুখে তারা ভিতরে ঢুকতে পারেনি। মোশতাক তার পরাজয় নিশ্চিত জেনে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছিল। পরে খালেদ মোশাররফের সাথে চুক্তি অনুসারে ঘাতক চক্র ওইদিন রাতে দেশ থেকে পালিয়ে যায়।

জাতীয় চার নেতাকে এমন নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় তখনই লালবাগ থানায় একটি মামলা হয়। কিন্তু দীর্ঘ ২১ বছর এ হত্যাকান্ডের তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ ছিল। পরে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে জেল হত্যা মামলার প্রক্রিয়া নতুন করে শুরু করে। দীর্ঘ ৮ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিচার কাজ চলার পর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত মামলাটির রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ২০ আসামির মধ্যে ১৫ সাবেক সেনা কর্মকর্তার শাস্তি এবং অপর ৫ জনকে খালাস দেয়া হয়। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে পলাতক তিন আসামির মৃত্যুদন্ড এবং অপর ১২ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়।