Thursday, March 31, 2016

এপ্রিল ফুল

0 comments
নানান সংস্কৃতিতে ভিন্ন ভিন্ন ঐতিহ্য থেকে পালন করা হলেও এপ্রিল মাসের প্রথম দিন বা বছরের এ সময়টিকে বিশেষভাবে উদযাপনের ইতিহাস দীর্ঘদিনের। আধুনিক বিশ্বে ‘এপ্রিল ফুল’ পালন যেমন সব দেশে একইভাবে হয় না, তেমনি এই উত্সবের উত্স বা ইতিহাস নিয়েও গবেষক-লেখকদের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে। তবে প্রাচীন পারস্য ও রোমান সাম্রাজ্য থেকে শুরু করে আধুনিক ইউরোপে এমন একটি হাস্য-কৌতুকের উত্সব পালনের রীতি বরাবরই ছিল।
এপ্রিল ফুল কীভাবে শুরু হয়েছিল
কোনো একটি সংস্কৃতির একটি নির্দিষ্ট উত্সব বা একক রীতি থেকে আধুনিক ‘এপ্রিল ফুল’ শুরু হয়েছিল বলে মনে করেন না অনেক ইতিহাস গবেষকই। প্রাচীনকাল থেকেই সাম্রাজ্য ও ধর্ম বিস্তার এবং ক্ষমতার পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে একদিকে যেমন ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে আদান-প্রদান বেড়েছে, তেমনি নানান জাতিগোষ্ঠীর ওপর ভিন্ন সংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা করা হয়েছে। আবার প্রতিক্রিয়া হিসেবে পালটা বা প্রতিরোধী সংস্কৃতিরও জন্ম দিয়েছে নানান সময়ের নানান জাতি-জনগোষ্ঠী। কালের বিবর্তনে ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির ভিন্ন মাত্রার নানান উপাদানও একত্রে মিশে যেতে পারে। কালে কালে রূপ বদলাতে পারে আচার-অনুষ্ঠান উত্সবের। এপ্রিল ফুল উদযাপনের বিষয়টিও তেমনি নানাভাবে আবর্তিত-বিবর্তিত হয়ে বর্তমান রূপ ধারণ করেছে বলে মনে করা হয়।
হিলারিয়া ও বোকাদের ভোজ
প্রাচীন রোমে ‘হিলারিয়া উত্সব’ এবং ‘ফিস্ট অব ফুলস’ বা ‘বোকাদের ভোজ’ উত্সবের রীতিকে আধুনিক এপ্রিল ফুলের অন্যতম পূর্বসূরি বলে মনে করা হয়। রোমান ‘হিলারিয়া’ শব্দটি আধুনিক ইংরেজিতে ‘হিলারিয়াস’ শব্দের কাছাকাছি, যা খুবই হাস্যরসময় বা কৌতুকপূর্ণ অবস্থা বোঝায়। মার্চ মাসের ২৫ তারিখে পালিত হিলারিয়া উত্সবটি রোমানরা গ্রহণ করেছিল একটি গ্রিক উত্সবের রীতি থেকে। গ্রিস ও রোমের প্রাচীন ধর্মীয় ও সামাজিক আচারের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল এ উত্সবটি।
‘বোকাদের ভোজ’ ইউরোপের মধ্যযুগের বহুল জনপ্রিয় একটি উত্সব। আদিতে ২৮ ডিসেম্বর পালিত এ উত্সবের রীতি এখনো স্প্যানিশ ভাষাভাষী অনেক দেশেই জনপ্রিয়। ষোড়শ শতাব্দী পর্যন্ত ফ্রান্স, জার্মানি, পোল্যান্ড, স্পেন, ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডে এটি তুমুল জনপ্রিয় ছিল। এ উত্সবে তরুণরা নিজেদের মধ্য থেকে একজন সাজানো পোপ, বিশপ বা আর্চবিশপ নির্বাচন করত এবং তাকে প্রধান ব্যক্তি হিসেবে উত্সব পরিচালনার দায়িত্ব দিত। উত্সবটি শুরুতে নানা ধর্মীয় আচারের সঙ্গে সম্পর্কিত থাকলেও হাস্য-তামাশা কৌতুকে ভরা নানা কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে এতে সমাজের প্রথাগত নেতৃত্বের প্রতি এক ধরনের ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ ফুটিয়ে তোলা হতো বলেও মনে করেন অনেক তাত্ত্বিকেরা।

পারস্যের সিজদাহ বে-দার
পারস্য নববর্ষ নওরোজের ১৩তম দিনে হাস্যকৌতুক উদযাপনের রীতিই জানা ইতিহাসে এমন সবচেয়ে প্রাচীন উত্সবের দৃষ্টান্ত। ৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ বা এখন থেকে আড়াই হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে এই উত্সব পালিত হয়ে আসছে। ইরানি নববর্ষের ১৩তম দিন সাধারণত এপ্রিলের ১ বা ২ তারিখ পড়ে। এই দিনটিকে পারসিকরা বলতো ‘সিজদাহ বে-দার’, যার অর্থ অনেকটা ‘১৩তম দিনে বাড়ির বাইরে যাওয়া’। এই দিনে ইরানিরা পরিবার পরিজনসহ বেড়াতে বের হয় এবং শহর-নগরের বেশির ভাগ মানুষই আনন্দ উত্সবে মেতে থাকে। ইরাক, আজারবাইজান, আর্মেনিয়াসহ মধ্য এশিয়ার অনেক দেশেই এখনো এই উত্সব পালিত হয়। প্রাচীন পারস্যে এই দিনে খরার মৌসুম শেষে কৃষিকাজ শুরুর দিন হিসেবে উদযাপিত হতো। ইরানি পণ্ডিতেরা মনে করেন, সিজদাহ বে-দার উত্সবের অন্তর্নিহিত তাত্পর্য হলো পারিবারিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা, সুখী জীবনযাপন করা এবং বন্ধুত্ব স্থাপন করা। খ্রিষ্টপূর্ব সময় থেকে এখনো ধারাবাহিকভাবে এই সংস্কৃতি টিকে থাকায় অনেকে মনে করেন পারস্যের এই ‘সিজদাহ বে-দার’ উত্সবই ‘এপ্রিল ফুল’ পালনের অন্যতম আদি উত্স।

বাইবেলের কাহিনিতে
বাইবেলের দুটো কাহিনিতে এপ্রিল ফুলের উত্স আছে বলেও মনে করেন কেউ কেউ। এর একটিতে বলা হয়, নুহ (আ.) যেদিন নৌকা থেকে একটা ঘুঘুকে কোথাও ডাঙা আছে কি না তা দেখতে পাঠিয়েছিলেন, সেই দিনটি ছিল পয়লা এপ্রিল। আর দ্বিতীয়টি হলো যিশুকে বিচারক পিলাত থেকে বিচারক হেরোডের আদালতে পাঠানোর দিনটিও ছিল পয়লা এপ্রিল। বিচারক পিলাত তাঁর কাছে পাঠানোর পর বিচারক হেরোড যিশুকে পুনরায় পিলাতের কাছে যেতে বলেন বিচারের জন্য। এভাবে যিশুকে বোকা বানানোর এই বিষয়টাকে এপ্রিল ফুলের উত্স হিসেবে মনে করেন কেউ কেউ। আর এই ‘পিলাতের কাছ থেকে হেরোডের কাছে পাঠানো’ বোকা বানানো বোঝাতে রীতিমতো প্রবাদবাক্য হিসেবে ব্যবহূত হয়।

চসারের ক্যান্টারবারি টেলসপ্রখ্যাত সাহিত্যিক জিওফ্রে চসারের ‘ক্যান্টারবারি টেলস’ প্রকাশিত হয় ১৩৯২ সালে। এতে ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় রিচার্ডের সঙ্গে অ্যান অব বোহেমিয়ার বাগদানের বার্ষিকীর দিনটি বোঝাতে চসার একটি প্রতীকী বাক্য লেখেন, যেখানে দিনটিকে ‘মার্চের ৩২ তারিখ’ বা এপ্রিলের প্রথম দিন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর এই কাহিনিতে ওই দিন এক ধূর্ত শেয়ালের একটি মোরগকে বোকা বানানোর গল্প রয়েছে। এই বোকা বানানোর সঙ্গেই এপ্রিলের ১ তারিখ বা এপ্রিল ফুলের কাহিনী জড়িয়ে গেছে। (তবে আধুনিক গবেষকেরা বলছেন আসলে পাণ্ডুলিপির ভুলের কারণেই এটা এমন হয়েছে। আসলে বাক্যটি হবে ‘এপ্রিল শুরুর ৩২ দিন পর’ বা ২ মে।)
পরবর্তী সময় ফরাসি, ফ্লেমিশ এবং ব্রিটিশ কবি-সাহিত্যিকদের লেখায় এপ্রিল ফুলের কথা উঠে আসে। মধ্যযুগের ইউরোপে বিভিন্ন দেশে এই উত্সব নানা স্থানে নানা রীতিতে পালিত হতো। ১৬৯৮ সালের ১ এপ্রিল বহু মানুষকে বোকা বানিয়ে টাওয়ার অব লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ব্রিটেনে এপ্রিল ফুলের একটা বড় ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত। টাওয়ার অব লন্ডনের এই ঘটনার পর বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসে। দুই বছর পর নতুন শতাব্দীর শুরুতে ১৭০০ সালের পয়লা এপ্রিল ইংল্যান্ডে মহাসমারোহে এপ্রিল ফুল উদযাপন শুরু হয় এবং তখন থেকেই দিন দিন এর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে বলে মনে করেন অনেকে।

জুলিয়ান ও গ্রেগোরিয়ান বর্ষপঞ্জি
‘এপ্রিল ফুল’ নামটি এবং এই দিবসটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠার আরেকটি তত্ত্ব হচ্ছে ইউরোপে জুলিয়ান ক্যালেন্ডার থেকে গ্রেগোরিয়ান ক্যালেন্ডারের প্রবর্তন। রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজারের প্রবর্তিত বর্ষপঞ্জি জুলিয়ান ক্যালেন্ডার হিসেবে পরিচিত। ১৬ শতকের প্রায় শেষভাগ পর্যন্ত ইউরোপের বেশির ভাগ দেশেই এই বর্ষপঞ্জি অনুসরণ করা হতো। পোপ তৃতীয় গ্রেগোরি জুলিয়ান বর্ষপঞ্জি সংস্কার করেন এবং নতুন নিয়মটি তাঁর নামেই প্রবর্তিত হয় গ্রেগোরিয়ান ক্যালেন্ডার হিসেবে।
জুলিয়ান বর্ষপঞ্জিতে নববর্ষ ১ জানুয়ারি হলেও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং অঞ্চলে দীর্ঘদিন পর্যন্ত যার যার স্থানীয় রীতি অনুসারে ২ এপ্রিল নববর্ষ হিসেবে পালিত হতো। কালক্রমে বিভিন্ন দেশ জুলিয়ান বর্ষপঞ্জির নিয়ম মেনে আনুষ্ঠানিকভাবে ১ জানুয়ারি নববর্ষ উদযাপন শুরু করে। তবে, ১৫৮২ সালে ফ্রান্স পুরোপুরি গ্রেগোরিয়ান ক্যালেন্ডার প্রবর্তন শুরু করলে ১ জানুয়ারি নববর্ষ পালন অনেকটা বাধ্যতামূলক হয়ে ওঠে। কিন্তু নতুন রীতিতে এসেও অনেককেই পুরোনো অভ্যাসবশত নববর্ষের আগের দিন পয়লা এপ্রিলে উপহার ও শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দেখা যেত। আর এ থেকেই ‘এপ্রিল ফুল’ বা ‘এপ্রিলের বোকা’ কথাটি চালু হয় এবং ‘বোকা হওয়া’ বা ‘বোকা বানানোর’ বিষয়টা নিয়ে কৌতুক শুরু হয়।
ফ্রান্স যেদিন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেগোরিয়ান বর্ষপঞ্জি অনুসরণ করতে শুরু করে, সেই দিনটিকেই অনেকে হালের এপ্রিল ফুলের ঐতিহাসিক শুরু বলে মনে করেন।

এপ্রিল ফুলের নানা আচার
যুক্তরাজ্যে এপ্রিলের প্রথম দিনে কৌতুক করে যাকে বোকা বানানো হয় তার উদ্দেশ্যে চিত্কার করে ‘এপ্রিল ফুল’ বা ‘এপ্রিলের বোকা’ কথাটি বলাই রীতি। গত শতকের পঞ্চাশের দশকে এক লোক-গবেষক দেখিয়েছিলেন যে, আধুনিক সময়ে এসে ব্রিটেন এবং এক সময় ব্রিটেনের উপনিবেশ ছিল এমন অনেক দেশেই এপ্রিল ফুলের সংস্কৃতি একই রকম। সম্ভবত উপনিবেশিক শাসনের মধ্য দিয়েই এটা ছড়িয়েছিল।
এসব দেশে দুপুর ১২টা বা মধ্যাহ্নের আগেই ‘এপ্রিলের বোকা’ বানানোর রীতি প্রচলিত। মধ্যাহ্নের পর কেউ কাউকে নিয়ে কৌতুক করলে তারা নিজেরাই ‘এপ্রিলের বোকা’ হিসেবে গণ্য হয়। তবে, অস্ট্রেলিয়া এর ব্যতিক্রম, কেননা সেখানে দুপুরের পরও এই কৌতুক একইভাবে গ্রহণ করা হয়।
স্কটল্যান্ডে ঐতিহ্যগতভাবে দিনটিকে ‘হান্ট দ্য গাওক ডে’ হিসেবে উদযাপন করা হয়। ‘গাওক’ বলতে বোঝায় বোকা কোকিল বা বোকা ব্যক্তি। স্কটিশ রীতিতে এ দিন ‘কোনো বিষয়ে সাহায্য চেয়ে’ কাউকে একটা মুখবন্ধ খাম বা পিন আঁটা চিরকুট ধরিয়ে দিয়ে অন্য একজনের কাছে পৌঁছে দিতে বলা হয়। চিরকুটে যা লেখা থাকে তা অনেকটা এ রকম, ‘ময়না হাসছে, ময়না হাসে, কোকিলটাকে খোঁজো আরেক মাইল, অন্য কারও কাছে’। এই চিরকুট যিনি পাবেন তিনিও একই রকম আরেকটি চিরকুট দিয়ে পত্রবাহককে আরেকজনের কাছে পাঠিয়ে দেবেন, এভাবেই এই বোকা বানানোর খেলাটা চলতে থাকবে।
ফ্রান্স এবং সুইজারল্যান্ড ও কানাডার ফরাসিভাষী এলাকায় ‘এপ্রিল ফুল’-এর ফরাসি সংস্করণ হলো ‘এপ্রিলের মাছ’। এদিন একটির কাগজের মাছ বানিয়ে তা এমনভাবে কারও পিঠে ঝুলিয়ে বা সেঁটে দেওয়া হয়, যাতে সে তা বুঝতে না পারে। আর এই কাগুজে মাছ নিয়ে ঘুরে বেড়ানো ব্যক্তিকে দেখে সবাই হাসে এবং তাকে ‘এপ্রিলের মাছ’ হিসেবে চিহ্নিত করে মজা পায়। বেলজিয়ামেও এই রীতি প্রচলিত।
ইতালিতেও এই দিনে কৌতুক করে হাস্যস্পদে পরিণত করা ব্যক্তিকে ‘এপ্রিলের মাছ’ বলা হয়ে থাকে। বেলজিয়াম এবং পার্শ্ববর্তী কিছু অঞ্চলে এ দিন শিশুরা অভিভাবক এবং শিক্ষকদের দরজার বাইরে আটকে রাখে এবং ওইদিন সন্ধ্যায় বা পরদিন উপহার নিয়ে আসার শর্তে দরজা খুলে দেয়।
পোল্যান্ডে এ দিনটিতে ব্যাপক হাস্যরসে মেতে থাকে মানুষজন। নানা রকমের কৌতুকের ফাঁদ পেতে রাখা হয় মানুষজনের জন্য। অফিস, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসহ গণমাধ্যমও এসবে অংশগ্রহণ করে। গুরুতর কাজকর্ম বা আনুষ্ঠানিক বিষয়াদি এড়িয়ে চলা হয় এইদিন। এই চর্চা এবং বিশ্বাস এতটাই জোরালো যে, ১৬৮৩ সালে তুর্কিবিরোধী জোটের সঙ্গে হাঙ্গেরির রাজা প্রথম লেওপোল্ড যে চুক্তি করেছিলেন তা পেছনের তারিখে অর্থাত্ ৩১ মার্চ হিসেবে স্বাক্ষর করা হয়।

‘হোক্স’ এবং ‘প্রাঙ্কস’

এপ্রিল ফুল উদযাপনের সঙ্গে বহুলভাবে উচ্চারিত ও জড়িত দুটি শব্দ ‘হোক্স’ এবং ‘প্রাঙ্কস’। কাউকে বোকা বানানোর জন্য উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কোনো ঘটনা বা কিছু সাজিয়ে রাখাকে হোক্স বলা হয়। এটা বাস্তবে কৌতুক করা। বিষয়টি এমন হতে হবে যে, এটা দ্বারা সত্যি সত্যি কাউকে প্রতারণা করা হবে না, হাস্যরসের জন্যই সাজানো হবে ঘটনাটি। ‘প্রাঙ্কস’ বিষয়টিও তাই। যারা এই বাস্তব কৌতুক করেন তাঁদেরকে ‘প্রাঙ্কস্টার’ বলা হয়। গত শতাব্দীতে পশ্চিমা দেশগুলোর শীর্ষস্থানীয় অনেক সংবাদ মাধ্যমও এপ্রিল ফুল উপলক্ষে ‘সাজানো সংবাদ’ ছাপায় ও সম্প্রচার করে।
১৯৫৭ সালের ১ এপ্রিল বিবিসি তাদের ‘প্যানোরমা’ নামের এক অনুষ্ঠানে সম্প্রচার করে যে—‘এবার সুইজারল্যান্ডের চাষিরা সেমাই (স্প্যাগেত্তি) চাষে বাম্পার ফলন পেয়েছেন।’ সংবাদের সঙ্গে ছবিও দেখানো হয় যে, কয়েকজন মিলে সেমাই গাছ থেকে সেমাই পাড়ছেন। তবে, পরদিন বিবিসিকে পালটা বোকা বানিয়ে তাদের কাছে বিপুল সংখ্যক অনুরোধ আসতে থাকে ‘সেমাই গাছ’ কেনার জন্য। ফলে পরদিন বিবিসি ঘোষণা দিতে বাধ্য হয় যে, ওই তথ্যচিত্রটি একটা ‘প্রাঙ্ক’ ছিল।

 

Sunday, March 27, 2016

দানি সম্প্রদায়ের বর্বরতা

0 comments
কখনও শুনেছেন স্বামী মারা গেলেই স্ত্রীর আঙুল কেটে দেওয়া হয় শোক পালনের জন্য? শুনতে আশ্চর্য লাগলেও এ রকমই এক প্রথা প্রচলিত আছে ইন্দোনেশিয়ার পাপুয়ার দানি সম্প্রদায়ের মধ্যে। কলকাতার সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা এক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই জানিয়েছে।
একজন দানি বিধবা
প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী, যখনই পরিবারের কর্তা মারা যান, শোক পালনের জন্য স্ত্রীর দু’হাতের বেশ কয়েকটি আঙুল কেটে দেওয়া হয়। ধারণা, এতে নাকি মৃতের আত্মার শান্তি হয়! আঙুল কাটার আগে নারীর হাত কষে বেঁধে দেওয়া হয় যাতে হাতে রক্তের প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। তার পর কুড়ুল দিয়ে আঙুল কেটে দেওয়া হয়।
প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে এই প্রথা সহ্য করতে হয় সেখানকার নারীদের।
দীর্ঘ দিন ধরে নিষ্ঠুর এই প্রথা চলে আসছে দানি সম্প্রদায়ের মধ্যে। ওই দ্বীপে গেলেই আঙুলহীন নারীদের দেখা মিলবে। তবে সম্প্রতি সে দেশের সরকার এই প্রথার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।