Thursday, June 30, 2016

স্কিন ট্যাগ বা অ্যাক্রোকোর্ডন

0 comments
স্কিন ট্যাগ বলতে গেলে প্রায় সবারই রয়েছে। কারও বেশি, কারও কম। ত্বকের তুলনামূলক পুরু অংশে শিরা ও কোলাজেন একীভূত হয়ে তৈরি হয় স্কিন ট্যাগ।

স্কিন ট্যাগ কী? এতে ত্বকের উপর ছোট মাংসল আঁচিলের মতো পিণ্ড বের হয়। গোলাপি, বাদামি বা লালচে রঙের এ মাংসল পিণ্ডগুলোই স্কিন ট্যাগ। এর বৈজ্ঞনিক নাম অ্যাক্রোকোর্ডন (acrochordons)।

সাধারণত চোখের পাতা, ঘাড়, কন‍ুইয়ের উপরের অংশে, পিঠ বা বুকে এগুলো হয়। নারী-পুরুষ সবারই স্কিন ট্যাগ হতে পারে। অনেকসময় এক জায়গায় অনেগুলো স্কিন ট্যাগ দেখা দেয়। তবে চিন্তার কিছু নেই। বাড়িতে বসেই বিসদৃশ স্কিন ট্যাগ অপসারণ করা সম্ভব। জেনে রাখুন কিছু সহজ সমাধান -


আপেল সাইডার ভিনেগার – ঘাড়ের স্কিন ট্যাগ ঝর‍াতে আপেল সাইডার ভিনেগার সবচেয়ে ভালো সমাধান। আপেল সাইডার ভিনেগারে কটন বল ভিজিয়ে স্কিন ট্যাগের উপর বুলিয়ে নিন। এভাবে একমাস করুন।

ক্যাস্টর অয়েল- বেকিং পাউডারে সামান্য ক্যাস্টর অয়েল দিয়ে পেস্ট বানান। আঁঠালো পেস্ট হবে। দুই থেকে চার সপ্তাহ স্কিন ট্যাগের উপর লাগান। ধীরে ধীরে সেগুলো মুছে যাবে।

আনারস – দিনে কয়েকবার আনারসের রস ব্যবহার করুন। স্কিন ট্যাগ পুরোপুরি বিলীন হয়ে যাওয়া পর্যন্ত লাগান। তিল বা আঁচিল তুলে ফেলতেও আনারসের রস লাগানো যায়।
পেঁয়োজের রস – পেঁয়াজ কেটে তার উপর এক চিমটি লবণ ছড়িয়ে একটি পাত্রে সারারাত রেখে দিন। পরদিন সকালে কাটা পেঁয়াজের রস করে বোতলে ভরে রাখুন। ১০-১২ দিন প্রতি রাতে স্কিন ট্যাগে লাগান এ মিশ্রণটি।
কলার খোসা – পাকা কলার খোসা ছোট ছোট টুকরো করে তা স্কিন ট্যাগের উপর লাগান। এবার একটি ওয়ান টাইম ব্যান্ডেজ দিয়ে খোসাটি ত্বকের সঙ্গে লাগিয়ে দিন। এভাবে সারারাত রাখুন। ট্যাগ মিলিয়ে যাওয়া পর্যন্ত রোজ এটা করুন।
ট্রি টি অয়েল- স্কিন ট্যাগ রিমুভাল উপকরণের মধ্যে ট্রি টি অয়েল সেরা সলিউশন। একটি কটনবল পানিতে ভিজিয়ে, তাতে কয়েক ফোঁটা টি ট্রি অয়েল দিন। এবার চক্রাকারে কটন বলটি স্কিন ট্যাগের উপর ম্যাসাজ করুন। স্কিন ট্যাগ ভ্যানিস করতে এক সপ্তাহ দিনে দু’বার করে ব্যবহার করুন।

banglanews24com

Saturday, June 25, 2016

মাটির ফ্রিজ

0 comments
মরক্কোর অনেক বিদ্যুৎহীন গ্রামের একটির বাসিন্দা ফাতিমা। তাপমাত্রা আর আর্দ্রতার কারণে পরিবারের খাবারদাবার পচে নষ্ট হয়ে যাওয়া চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া তাঁর আর কোনো উপায় ছিল না। অপচয় রোধে ফাতিমা তাঁর পরিবারের খাওয়াদাওয়ার আয়োজন পরিবর্তন করেন। কিন্তু তাতে দেখা দিল স্বাস্থ্যের সমস্যা। খাদ্যের পুষ্টিগুণের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেল। হাটবারের দিনের পরপর ফলমূল শাকসবজিতে ঠাসা খাবার থালা। কিন্তু সপ্তাহের শেষের দিনগুলোতে শ্বেতসার ও শিম বা মোটর-জাতীয় দানাদার খাদ্যের ওপর বেশি নির্ভর করতে হয়।

রাওউইয়া লামহার ও তাঁর কাদামাটির প্রাকৃতিক ফ্রিজ। ছবি: গো এনার্জিলেস


বিদ্যুৎহীন গ্রাম ও শহরতলির দরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য দ্রুত পচনশীল খাদ্যসামগ্রী দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করা খুব জরুরি।
গো এনার্জিলেসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রাওউইয়া লামহার বলেন, ‘আমি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এনাক্টাসের সদস্য। মাঠপর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে প্রাকৃতিক ফ্রিজের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করি। সেখান থেকেই এই প্রকল্পের চিন্তা মাথায় আসে।’ গত বছরের শুরুর দিকে রাওউইয়া ও তাঁর সহকর্মীরা দেশটির মোহাম্মেদিয়া শহরের কাছের জেনাতা এলাকার কুমোরদের সহযোগিতায় প্রথম মাটির তৈরি ফ্রিজের একটি নমুনা দাঁড় করান। অবস্থাভেদে এ ধরনের ফ্রিজে ১০ থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত খাদ্যসামগ্রী সংরক্ষণ করা যায়।

এই প্রাচীন শীতলীকরণ পদ্ধতির সুবাদে আজকের দিনে ফাতিমার মতো নারীরা এখন খরচ ২০ শতাংশ কমিয়ে আনতে পেরেছেন

এঁটেল মাটির প্রাকৃতিক ও রাসায়নিক গুণাবলি আর কুমোরদের দক্ষতার কথা বিবেচনা করে গো এনার্জিলেস তাদের প্রকল্পটি জেনাতা এলাকা থেকে মারাকেশ এলাকায় সরিয়ে আনে। রাওউইয়া বলেন, ‘এ বিশেষ এলাকার এঁটেল মাটি আমাদের কাঙ্ক্ষিত গুণাগুণের বিশেষ উপযোগী। তা ছাড়া যে দুজন কুমোর আমাদের সঙ্গে কাজ করছেন, তাঁদের কাজের মান অনেক উন্নত।’


এই প্রাচীন শীতলীকরণ পদ্ধতির সুবাদে আজকের দিনে ফাতিমার মতো নারীরা এখন খরচ ২০ শতাংশ কমিয়ে আনতে পেরেছেন। সেই সঙ্গে তাঁরা তাঁদের খাবারদাবারে বৈচিত্র্য বজায় রাখতে পারছেন। তবে, শুধু খাবার সংরক্ষণের ক্ষেত্রে নয়, এই প্রাকৃতিক ফ্রিজ আরও গুরুতর একটা সমস্যার অভাবনীয় সমাধান দিয়েছে: বিদ্যুতের ব্যবহার ছাড়াই এ ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যাচ্ছে জীবন রক্ষাকারী জরুরি ওষুধপত্র।

বিদ্যুৎ​ ছাড়াই সতেজ থাকবে ফলমূল
যথাযথ অবস্থায়, আলো ও তাপ থেকে দূরে ঠান্ডা জায়গায় সংরক্ষণ না করলে ইনসুলিনের মতো ওষুধ কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে। মরক্কোর বিশেষ বিশেষ অঞ্চলে, যেখানে গ্রীষ্মকালে কখনো কখনো ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা থাকে, সেখানে হিমায়ন কৌশলের অভাবে জীবন হুমকির মুখে পড়ে।
মরক্কোর মেকনেস শহরের অদূরে আহদ্রি অঞ্চলের বাসিন্দা আহমেদকে ইতিমধ্যে এ ধরনের স্থানীয় ও সহজলভ্য ফ্রিজের অভাবে মূল্য দিতে হয়েছে। ডায়াবেটিসে ভুগছেন তিনি। গরমে গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যাওয়া ইনসুলিন নিয়েছিলেন। এ কারণে তাঁকে হাসপাতালের বিছানায় আশ্রয় নিতে হয়। চার দিন থাকতে হয় হাইপারগিসেমিক কোমায়।


ইনসুলিন স্বল্প তাপমাত্রায় সংরক্ষণের বিষয়ে আহমদের একটি মাত্র উপায়ই জানা ছিল। আর তা হলো, ভেজা মাটির স্তরের নিচে পুঁটলিতে ইনসুলিন পুঁতে রাখা। পানীয় জল সরবরাহে এটি হয়তো একসময় পূর্বপুরুষের জন্য কার্যকর পদ্ধতি ছিল, কিন্তু ইনসুলিনের মতো জীবন রক্ষাকারী ওষুধ সংরক্ষণে এ মোটেও আদর্শ উপায় নয়। ‘বিদ্যুতের ব্যবহার ছাড়াই প্রাকৃতিক ফ্রিজে তৈরির ফলে, ওষুধ ও খাদ্যসামগ্রী সংরক্ষণে আমাদের সামর্থ্য অনেক বেড়ে গেছে’, বলেন রাওউইয়া।


আজ, নবীন এই কোম্পানি দুই ধরনের প্রাকৃতিক ফ্রিজ দিচ্ছে। প্রথমটি বড় বেশি বুনিয়াদি মডেলের, এটির নকশা করা হয়েছে বিদ্যুৎ বঞ্চিত মানুষের কথা মাথায় রেখে। খরচও কম, মাত্র ২২০ দিরহাম (প্রায় ২০ ইউরো)। দ্বিতীয়টির নকশায় আছে নান্দনিকতার ছাপ। যারা জৈব-জ্বালানি ব্যবহার করে থাকেন, তাঁদের কথা মাথায় রেখে বানানো হয়েছে এই ফ্রিজ। এর মূল্য ৩৫০ দিরহাম (প্রায় ৩৩ ইউরো)। এসব মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে শুধু উৎপাদন খরচ মেটাতে।


রাওউইয়া তাঁর ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপ্লোমার পঞ্চম বর্ষে পড়ছেন। পানি ও পরিবেশ প্রকৌশল বিষয়ে দক্ষতা তৈরি করছেন তিনি। এরই মধ্যে উদ্যোক্তা হিসেবে আবির্ভাব ঘটেছে তাঁর। গো এনার্জিলেস কোম্পানির তিনি সহ-প্রতিষ্ঠাতা। প্রতিষ্ঠানটি প্রাকৃতিক ফ্রিজ তৈরির প্রকল্প হাতে নিয়েছে। শক্তিশালী বিপণন কৌশল অবলম্বনের পরিকল্পনা করছে তারা। উৎপাদন প্রক্রিয়ায়ও গতি আনা হবে। গত বছর প্রাথমিকভাবে ৫০টি বিভিন্ন ধরনের ফ্রিজের নমুনা প্রকাশ করার পর, এর ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে কোম্পানিটি উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করছে।