Tuesday, July 26, 2016

পেঁয়াজ কাটতে জ্বলবে না চোখ

0 comments
রোজকার রান্নার অন্যতম উপকরণ পেঁয়াজ। ঝাঁঝালো এ মসলা উপাদানটি কাটার সময় চোখ জ্বালা করে, চোখে পানি চলে আসে। না কেঁদে পেঁয়াজ কাটার কিছু পদ্ধতি রয়েছে। আচ্ছা, তার একটু বলে নেই পেঁয়াজ কাটার সময় চোখে পানি আসে কেন-
 
কাটার পর পেঁয়াজের কোষগুলো ভেঙে যায়। ভেতর থেকে নির্গত হতে থাকে সালফেনিক অ্যাসিড, যা পেঁয়াজের অন্য এনজাইমের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করে। এ কেমিক্যাল প্রতিক্রিয়া একটি অস্থিতিশীল সালফার গ্যাস তৈরি করে। যা বাতাসের মৃদু ঝাপটায় আমাদের চোখে এসে পড়ে। সালফেনিক অ্যাসিডের কারণে চোখ জ্বালা করে ওঠে ও চোখে পানি আসে।
আরও একটি কথা, পেঁয়াজ কাটার পর হাতে এক প্রকার গন্ধ হয়। তার জন্যও দায়ী এই সালফার উপাদানগুলো। কিন্তু রান্নার সময় এই এনজাইম নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। ফলে তা আর চোখ জ্বালায় না। এবার আসা যাক কথার আসল প্রসঙ্গে। জেনে নিন চোখে জল ছাড়াই পেঁয়াজ কাটার সাতটি পদ্ধতি-

•     ফ্যানের নিচে বা বাতাস চলাচল করে এমন স্থানে বসে পেঁয়াজ কাটুন। বাতাসে সালফার গ্যাস উড়ে যায়। ফলে চোখের সংস্পর্শে আসে না।
•    কাটার ১৫ মিনিট আগে পেঁয়াজ ফ্রিজে রেখে দিন। এতে পেঁয়াজের কেমিকেলের প্রতিক্রিয়া ধীর হয়ে যায় ও রসায়ন পাল্টে যায়। উচ্চ তাপমাত্রা পেঁয়াজের কেমিকেলগুলো সক্রিয় করে তোলে। যার কারণে কাটার সময় চোখ জ্বালা করে। তবে পেঁয়াজ দীর্ঘসময় ফ্রিজে রাখা যাবে না। এতে তা নরম হয়ে যাবে।
•    ধারালো ছুরি ব্যবহার করুন। কারণ ধারালো ছুরি পেঁয়াজের কোষগুলোকে কম ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই ঝাঁঝ কম বের হয়।
•    পেঁয়াজের বোঁটার অংশে এনজাইম কেন্দ্রীভূত থাকে। কাটার আগে বোঁটার অংশ কেটে ফেলুন।
•    জ্বলন্ত চুলা বা মোমবাতির পাশে পেঁয়‍াজ কাটলে ঝাঁঝ উবে যায়। কারণ আগুনের তাপে সালফার উপাদান নিঃশেষ হয়ে পড়ে।
•     পেঁয়াজের খোসা ছাড়িয়ে পানিতে ১৫-২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এতে সালফার যৌগ সংকুচিত হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে যদিও পেঁয়াজের বহিরাবরণ পিচ্ছিল হয়ে যায়। তাই কাটার সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন।
•     শেফদের পরামর্শ- পেঁয়াজ দু’ভাগ করে, কাটা অংশ চপিং বোর্ডের উপর রেখে কাটলে গ্যাস সরাসরি চোখের সংস্পর্শে আসতে পারে না।

Sunday, July 17, 2016

চোখের নিচের কালি দূর করুন

0 comments

অ্যালার্জি, পানি শূন্যতা, অনিদ্রা, ধূমপান, দুশ্চিন্তা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে চোখের নিচে কালি পড়ে, ফোলাভাবও হয়। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে জেনে নিন কিছু ঘরোয়া টোটকা।

► কাঠবাদামের তেল : এই তেলে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ‘ই’ যা ত্বকের আর্দ্রতার মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এমনকি চোখের নিচে পাতলা ত্বকের যত্নের জন্যও এই তেল বেশ উপযোগী। নিয়মিত চোখের নিচের ত্বকে এই তেল ব্যবহারে কালচে দাগ দূর হবে এবং বলিরেখাও কমে আসবে। রাতে ঘুমানোর আগে চোখের নিচে ও উপরে হালকাভাবে মালিশ করে তেল লাগিয়ে ঘুমাতে হবে, সকালে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে উপকার পাওয়া যাবে।

► পুদিনাপাতা : ত্বক শীতল রাখতে এবং যে কোনো জ্বালাপোড়া ও ফোলাভাব কমাতেও পুদিনাপাতা বেশ উপকারী। ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে এই পাতা। প্রয়োজনীয় পরিমাণে পুদিনাপাতা নিয়ে পেস্ট তৈরি করে চোখের নিচের ত্বকে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন।

টমেটো : এতে আছে লাইকোপেন, ভিটামিন সি এবং রেটিনল যা রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং কোষ গঠনে সহায়তা করে। তা ছাড়া ত্বকের রং উজ্জ্বল করে ও ত্বকের কালচে ভাব দূর করতে   সাহায্য করে টমেটো। এক টে. চামচ টমেটোর রস, আধা চামচ লেবুর রস, এক চিমটি করে হলুদ ও চালের গুঁড়ার পেস্ট তৈরি করে চোখের নিচে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন।

Friday, July 15, 2016

বাস্তিল উৎসব

0 comments
ফ্রান্সের জাতীয় উৎসব যা বাস্তিল উৎসব হিসাবে পরিচিত। ফরাসীদের কাছে ‘ফেত্ নাসিওনাল্’ উৎসব নামেই বেশি পরিচিত। প্রতি বছর ১৪ই জুলাই এটি উদযাপন করা হয়।
স্থানীয়ভাবে এটি ল্য ক্যাতৌযে জুইয়ে (le quatorze juillet) অর্থাৎ ১৪ই জুলাই নামে পরিচিত। ১৭৮৯ সালের ১৪ই জুলাই  ফ্রান্সের সাধারণ মানুষের প্রতিবাদে বাস্তিল দুর্গের পতন ঘটে।
কুখ্যাত বাস্তিল দুর্গের পতনের মাধ্যমেই ফরাসি বিপ্লব সংঘটিত হয়। এই বিপ্লব ছিল তদানীন্তন ফ্রান্সের শত শত বছর ধরে নির্যাতিত ও বঞ্চিত ‘থার্ড স্টেট’ বা সাধারণ মানুষের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। এই বিপ্লবের আগে সমগ্র ফ্রান্সের ৯৫ শতাংশ সম্পত্তির মালিক ছিল মাত্র ৫ ভাগ মানুষ। অথচ সেই ৫ ভাগ মানুষই কোনো আয়কর দিত না। যারা আয়কর দিত তারা তেমন কোনো সুযোগ ভোগ করতে পারত না। এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদ করত তাদের বাস্তিল দুর্গে বন্দি করে নির্যাতন করা হতো।


বাস্তিল দুর্গ ছিল স্বৈরাচারী সরকারের নির্যাতন ও জুলুমের প্রতীক। বন্দিদের রাখা হতো এই দুর্গে। একবার তার মধ্যে প্রবেশ করলে জীবত্কালে বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা থাকত না। কারাগারের ভেতরেই মেরে ফেলা হতো বহু বন্দিকে। অত্যাচারে জর্জরিত ফরাসি জনসাধারণ ওই তারিখে বাস্তিলের দুর্গ ভেঙে বন্দিদের মুক্ত করে। তাদের স্লোগান ছিল-স্বাধীনতা, সাম্য এবং ভ্রাতৃত্ব। ফরাসি রাজা ষোড়শ লুই দেশবাসীর সুখ-দুঃখ দূরের কথা, নিজেদের প্রত্যাসন্ন বিপদেরও কোনো খোঁজখবর রাখতেন না। চাটুকারদের প্ররোচনায় রাজা অমানুষিক নির্যাতন চালাতেন প্রজাদের ওপর। ১৭৮৯ সালের ১৪ জুলাই নির্বাচিত প্রতিনিধি, রক্ষী বাহিনীর সদস্য এবং বাস্তিল দুর্গের আশপাশের মানুষ বাস্তিল অভিমুখে রওনা হয়।

প্রতিনিধিরা রক্তক্ষয় এড়াতে বাস্তিল দুর্গের প্রধান দ্য লোনের কাছে আলোচনার প্রস্তাব দেন। লক্ষ্য ছিল বাস্তিলে অবস্থিত ৭ জন রাজবন্দিকে মুক্ত করা। কিন্তু দ্য লোন প্রস্তাবগুলো ফিরিয়ে দেয়। জনতা উত্তেজিত হয়ে পড়ে, জনতার ঢেউ আছড়ে পড়ে বাস্তিল দুর্গে, বাস্তিলের রক্ষীরাও কামান দাগাতে শুরু করে। প্রায় দুইশ’ বিপ্লবী মানুষ হতাহত হয়। এরপর চারদিক থেকে উত্তেজিত ক্ষুব্ধ জনতা বাস্তিল ধ্বংস করে। পতন হয় স্বৈরাচারী শাসকের, ইতিহাসের পাতায় লিখিত হয় শোষিত, নির্যাতিত মানুষের জয়ের নতুন এক উপাখ্যান-যার নাম ফরাসি বিপ্লব। এর পর থেকেই ফরাসীরা এই দিনটিকে জাতীয় উৎসব হিসাবে পালন করে আসছে। এটি হয়ে ওঠে ফরাসিদের মুক্তির মাইলফলক।১৭৯০ সালে প্রথম বাস্তিল দিবস উদযাপন করা হয়। সেই থেকে প্রতিবছর দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে।

ঢাকাটাইমস২৪