নওয়াজেশ আহমদ
সেদিন রামগড়ের এক পাহাড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম। একটি লিচুবাগান পরিদর্শন করাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। চীনা তিন জাতের লিচু দিয়ে সে বাগান সমৃদ্ধ। পাহাড়ি এলাকা, নানা ধরনের গাছ-গাছালিতে আচ্ছন্ন। হঠাত্ বাঁ পাশের এক ঝোপের মধ্যে চোখে পড়ল লাল ফুলে আচ্ছাদিত অনেকগুলো পুষ্পদণ্ড। আমার পরিচিত ফুল বলে মনে হলো। কাছে গিয়ে ভালো করে দেখলাম। হ্যাঁ, এই প্রজাতি আমি ব্যাংককের মাহিদোল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেষজ গাছপালার বাগানে দেখেছি। যার থাই নাম চিত্তামুন ফ্লোয়েন। আমাদের দেশে এই প্রজাতির নাম রক্তচিতা। ফুল ও কচি ডাল লাল রং বলেই হয়তো এই নাম।
বহুবর্ষজীবী ছোট গুল্ম, পাঁচ ফুট উঁচু হতে পারে। গাছের গা আঠালো, পাতা সরল ও একান্তর। পাতার আকার মোটামুটি ডিম্বাকৃতি। পুষ্পবিন্যাস গাছের আগায়, কখনো কখনো পার্শ্ববর্তী। বৃতি কিছুটা আঠালো। ফুলে পাঁচটা পাপড়ি। বেশ লাল রঙের, ফল ক্যাপসুল।
রক্তচিতার মূলে আছে কয়েক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ। এই যেমন প্লাবাজিন, সিটোস্টেরোল, গ্লাইকোসাইডস। থাই-চীনা মতে, তাদের প্রধান ভেষজ গুণ হচ্ছে প্লাবাজিন পাইলস রোগে উপকারী। কারণ এই রাসায়নিক মল পরিষ্কার করতে সাহায্য করে থাকে। তবে মিউকাসে একটু জ্বালাপোড়া করতে পারে। ভারতীয় বনৌষধিতে নব্যের সমীক্ষায় এই প্রজাতির ব্যবহার দেখা যায়। বিশেষ করে হেপাটাইটিস, ডিসপেপসিয়া ও বাতরোগে। লিওকোডারমা চর্মরোগে এর ব্যবহার দেখা যায়। তবে বেশ সাবধানের সঙ্গে ব্যবহার করতে হয়। রক্তচিতার বৈজ্ঞানিক নাম Plumbago indica। পরিবারের নাম Plumbaginaceae। রক্তচিতার বেশ কয়েকটি ঘনিষ্ঠ প্রজাতি দেখা যায় আমাদের দেশের পাহাড়ি এলাকায়।
No comments:
Post a Comment