Thursday, January 27, 2011

লিপিষ্টিক বা ঠোঁট পালিশ

আজ থেকে ৫০০০ বছর আগে ব্যবিলনের কাছে ঐতিহাসিক উর (Ur) শহরে মেশপটেমিয়ান নারীদের ঠোঁটে লিপিস্টিকের উৎপত্তি পাওয়া যায়। সেই সময়ে মূল্যবান পাথর গুঁড়ো বা চূর্ণ করে ঠোঁটের উপরে প্রলেপ দেয়া হতো।ইন্দাস ভেলি (Indus valley) সভ্যতায় নারীরা লাল রং তাদের ঠোঁটে প্রয়োগ করত।

আবার ঐতিহাসিক মিশরীয় নারীগন আয়োডিন এবং ব্রোমিন থেতে রক্ত বর্ণ রং নিংড়ে বের করত।সময়ের আবর্তনে এর নাম হয় মৃত্যু চুম্বন(‘the kiss of death’)। রানী ক্লিওপেট্রা তাঁর ঠোঁটে লিপস্টিক ব্যবহার করতেন যা তৈরি হতো মেরুন রংয়ের বিটল পোকা থেকে, এর ফলে ঠোঁটে একটি গাঢ় লাল আভা ফুটে উঠতো, এছাড়া বেজ দেওয়া জন্য ব্যবহৃত হতো পিপড়া।

১৬০০ শতাব্দিতে ইংল্যান্ডে কুইন এলিজাবেথ এর রাজত্বকালে লিপষ্টিক বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। চক সাদা মুখে গাঢ় লাল ঠোঁট পালিশের এর প্রকাশ ঘটান। তখন ঠোঁট পালিশ তৈরী হতো মোম আর গাছ-গাছড়া দিয়ে। যদিও নারী এবং পুরুষ উভয়েই লিপিষ্টিকে মুগ্ধ এবং আকর্ষিত হয় তবু এটা সমালোচনার উর্ধে নয়। ১৯৬৩ সালে ইংল্যান্ডের একজন ধর্ম যাজক থমাস হল লিপিষ্টিক ব্যবহৃত মুখের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে বলেন মুখে রং ব্যবহার করা শয়তানের কাজ।

১৭৭০ সালে ইংল্যান্ডের পার্লামেন্ট একটি আইন পাশ করে লিপিষ্টিকের বিরুদ্ধে, যেখানে বলা হয়, কোন নারী সৌন্দর্য্য চর্চার মাধ্যমে কোন পুরুষকে বিবাহের জন্য বিমোহিত করলে তা ডাইনীর মত কাজ বলে বিবেচিত হবে। ১৮০০ সালে রানী ভিক্টোরিয়া প্রকাশ্যে এই লিপিষ্টিকের বিরোধীতা করেন। তার পরেও যাই হোক, চলচ্চিত্রের আশির্বাদে ২য় বিশ্ব যুদ্ধের পর লিপষ্টিক আবারো জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

মোম দন্ড লিপষ্টিকের আকার ধারণ করে থাকে। এটা তৈরীতে বিভিন্ন প্রকারের মোম ব্যবহৃত হয়। লিপষ্টিক তৈরীর অংশ হিসাবে গুরুত্বপুর্ণ উপাদান হলো জলপাই, খনিজ, রেড়ির তৈল, কোকোয়া বাটার, পেট্রোলেটাম, এবং ভেড়ার চর্বি। এছাড়াও ভিটামিন-ই, এলোভেরা, এমাইনো এসিড, সানস্ক্রিন, কোলাজেন - এর সাথে বিভিন্ন রং, রঞ্জক ও আকার প্রদান করা হয়। ১৯৯০ সালে লিপ লাইনার এর আগমন ঘটে।

 লিখেছেন : মাধুকরী 

No comments:

Post a Comment