রাজধানী ঢাকার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত সুবিশাল একটি নগর উদ্যান হলো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। আগে এ উদ্যানটি 'রমনা রেস কোর্স ময়দান' নামে পরিচিত ছিল। ব্রিটিশ আমলে এখানে প্রতি রবিবার ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হতো। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা এ দেশ থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতীয় নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নামে উদ্যানটির নাম রাখা হয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। এ উদ্যানেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ দিয়েছিলেন। এখানেই ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পরাজিত হয়ে আত্মসমর্পণ করেছিল। ১৯৭৫ সালের পর এলাকাটিকে সবুজে ঘেরা পার্কে পরিণত করা হয়। পার্কের একপাশে শিশুদের জন্য একটি বিনোদন পার্ক গড়ে তোলা হয়। ১৯৯৬ সালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে 'স্বাধীনতা স্তম্ভ' ও 'শিখা চিরন্তন' নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। স্বাধীনতা স্তম্ভের প্রধান আকর্ষণ জনতার দেয়াল নামে ২৭৩ ফুট দীর্ঘ একটি ম্যুরাল বা দেয়ালচিত্র। এটি ইতিহাসভিত্তিক টেরাকোটার পৃথিবীর দীর্ঘতম ম্যুরাল। এর বিষয়বস্তু ১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বাঙালি জাতির মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস। এ ছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটি দৃষ্টিনন্দন কৃত্রিম জলাশয় বা লেক খনন করা হয়েছে। এ লেকটির ধারে প্রতিদিন অসংখ্য কর্মক্লান্ত মানুষ ভিড় জমায় একটু প্রশান্তির জন্য।
No comments:
Post a Comment