টোকাই বলতে এখন আমরা হতদরিদ্র পথশিশুদের বুঝে থাকি। ছিন্নবস্ত্র পরিহিত অর্ধনগ্ন টোকাইরা শহর এলাকায় বাস করে। বিখ্যাত কার্টুনিস্ট রফিকুন্নবীর (রনবী) কার্টুন চরিত্র টোকাই থেকে পথশিশুদের এই টোকাই পরিচিতি গড়ে ওঠে। ১৯৭৮ সালে 'সাপ্তাহিক বিচিত্রা' পত্রিকায় প্রথম টোকাই চরিত্রটি আত্মপ্রকাশ করে। রনবী এ রকম একটি কার্টুন চরিত্র তৈরির প্রথম চিন্তা করেন ষাটের দশকে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কার্টুনিস্ট সুলজের 'চার্লি ব্রাউন' চরিত্রটি দেখে অনুপ্রাণিত হন। ফুটপাতের ধারে, আবর্জনার স্তূপের পাশে বা পড়ে থাকা বড় পাইপের ভেতরে রনবী লুঙ্গি পরিহিত টোকাই চরিত্রটি আঁকেন। এই টোকাইদের মাধ্যমে তিনি সমাজের নানা অসংগতি তুলে ধরেন। এই চরিত্রটি এতটাই জনপ্রিয়তা অর্জন করে যে পরবর্তী সময়ে অতিদরিদ্র, বস্তি, ফুটপাত, রেলস্টেশন প্রভৃতি স্থানে বসবাসকারী শিশুদের টোকাই হিসেবে ডাকা শুরু হয়। এই টোকাইরা বৈষম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ফলে সৃষ্টি হয়। অতিদরিদ্র পরিবারের সদস্যরা নিজেদের ভাত-কাপড়ের সংস্থান করতে না পেরে শিশুকালেই এই টোকাইদের জীবিকা নির্বাহের জন্য নামিয়ে দেয়। টোকাইরা আবর্জনা থেকে খাবার কুড়িয়ে, রাস্তা থেকে ফেলে দেওয়া বিভিন্ন জিনিস সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। বস্তা হাতে টোকাইরা একাকী বা দলবদ্ধভাবে বিভিন্ন জিনিস কুড়িয়ে থাকে। বেশির ভাগ টোকাইরই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ থাকে না। টোকাইরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রাস্তা বা ফুটপাতে রাত যাপন করে থাকে।

No comments:
Post a Comment