Wednesday, May 15, 2013

কোন সংকেতের কী মানে

0 comments
ঘূর্ণিঝড় মহাসেন ধেঁয়ে উপকূলে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানো হয়েছে। আবহাওয়া অফিসের জারি করা এ বিপদ সংকেত নিয়ে আমাদের অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা নেই। ফলে প্রায়ই বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়। কোনটার ব্যাপকতা কত তা বুঝানোর জন্যে ১ থেকে ১১ পর্যন্ত সতর্ক সংকেত রয়েছে। ১ হলে কম ক্ষতি হবে আর ১১ হলে অনেক বেশি ভয়াবহ ক্ষতি হবে।

১নং দূরবর্তী সতর্ক সংকেত:
জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার পর দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া সম্মুখীন হতে পারে। দূরবর্তী এলাকায় একটি ঝড়ো হাওয়ার অঞ্চল রয়েছে, যেখানে বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ৬১ কিলোমিটার যা সামুদ্রিক ঝড়ে পরিণত হতে পারে।

২নং দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত:
দূরে গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘন্টায় ৬২-৮৮ কিমি.। বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না, তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ পথে বিপদে পড়তে পারে।

৩নং স্থানীয় সতর্ক সংকেত:
বন্দর ও বন্দরে নোঙর করা জাহাজগুলো দূর্যোগ কবলিত হওয়ার আশঙ্খা রয়েছে। বন্দরে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং ঘূর্ণি বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘন্টায় ৪০-৫০ কিমি. হতে পারে।

৪নং স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত:
বন্দর ঘূর্ণিঝড় কবলিত। বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ ঘন্টায় ৫১-৬১ কিমি. তবে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার মতো তেমন বিপজ্জনক সময় এখনও আসেনি।

৫ নং বিপদ সংকেত:
বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার ঝঞ্ঝাবহুল এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে নিপতিত। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘন্টায় ৬২-৮৮ কিমি.। ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

৬নং বিপদ সংকেত:
বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার ঝঞ্ঝাবহুল এক সামূদ্রিক ঝড়ের কবলে নিপতিত। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘন্টায় ৬২-৮৮ কিমি.। ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

৭নং বিপদ সংকেত:
বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার ঝঞ্ঝাবহুল এক সামূদ্রিক ঘূণিঝড়ের কবলে নিপতিত। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘন্টায় ৬২-৮৮ কিমি.। ঝড়টি বন্দরকে উপর বা নিকট দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

৮নং মহাবিপদ সংকেত:
বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘন্টায় ৮৯ কিমি. বা তার উর্ধ্বে হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।

৯নং মহাবিপদ সংকেত:
বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ এক সামূদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে নিপতিত। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘন্টায় ৮৯ কিমি. বা তার উর্ধ্বে হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।


১০নং মহাবিপদ সংকেত:
বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ এক সামূদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে নিপতিত। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘন্টায় ৮৯ কিমি. বা তার উর্ধ্বে হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরের উপর বা নিকট দিয়ে উপকূল অতিক্রম করবে।

১১নং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেত:
আবহাওয়ার বিপদ সংকেত প্রদানকারী কেন্দ্রের সঙ্গে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং স্থানীয় কর্মকর্তা আবহাওয়া অত্যন্ত দূর্যোগপূর্ণ বলে মনে করেন।


উৎসঃ ঢাকা টাইমস্‌

Sunday, May 12, 2013

মা দিবস

0 comments
মা। ত্রি-ভুবনের সবচেয়ে মধুরতম শব্দ। মায়ের মমতা, ত্যাগ ও মর্যাদা স্মরণ করার দিন। মা—যিনি কোনো শর্ত ছাড়াই সন্তানদের ভালোবাসেন এবং সন্তানদের জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করেন। যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মে মাসের দ্বিতীয় রোববার ‘মা দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশেও বিশ্বের অন্য দেশের মতো নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করা হয়।

১৯১১ সাল থেকে এই দিনটি পালন হয়ে আসছে‘মা দিবস হিসেবে। সর্ব প্রথম ১৯১১ সালের মে মাসের দ্বিতীয় রোববার আমেরিকাজুড়ে পালিত হয় প্রথম‘মা দিবস’। সে সময় আমেরিকায় মায়েদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে ‘মাদারিং সানডে’ নামে একটি বিশেষ দিন উদযাপন করা হতো। এর পর আমেরিকার সীমানা ছাড়িয়ে মা দিবসটি সর্বজনীন করে তোলার লক্ষ্যে এগিয়ে আসেন জুলিয়া ওয়ার্ড নামের এক আমেরিকান। মা দিবসকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়ার লক্ষ্যে ১৮৭২ সালে জুলিয়া ওয়ার্ড ব্যাপক লেখালেখি শুরু করেন। এরপর ১৮৭২ সালের মে মাসের দ্বিতীয় রোববার নিজের মায়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে জুলিয়া ওয়ার্ড নিজে ‘মা দিবস’পালন করেন।

১৯১৪ সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন দিবসটিকে রাষ্ট্রয়ী স্বীকৃতি দেন। এরপর পৃথিবীর দেশে দেশে মা দিবসটি পালনের রেওয়াজ ছড়িয়ে পড়ে।

প্রতিবছর মে মাসের দ্বিতীয় রোবাবারে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘটা করে ‘মা দিবস’ পালিত হয়। গর্ভে ধারণ করে পৃথিবীর আলো-বাতাস দেখানো থেকে শুরু করে বেড়ে ওঠা এমনকি প্রতিষ্ঠিত হওয়া পর্যন্ত প্রতি পদে পদে সন্তানকে সাহস, উৎসাহ ও ভরসা দেন মা। মায়ের ঋণ শোধ করা যাবে না কখনোই। মাকে ভালোবাসা জানাতে বছরের সবকটা দিনও যথেষ্ট নয়। তবুও এই একটি দিন মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেয় মায়ের মমতা, ত্যাগ ও মর্যাদার কথা।
এ দিবসকে উপলক্ষ করে দোকানীরা তাদের পসরা সাজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ছেলেমেয়েদের মনের কথাই বিভিন্ন কোম্পানি তাদের পণ্যের গায়ে তুলে ধরে।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, প্রাচীন গ্রিসে প্রথম ‘মা দিবসের’ প্রচলন শুরু হয়। সেখানে প্রতি বসন্তকালে একটি দিন দেবতাদের মা ও ক্রোনাসের সহধর্মিনী ‘রিয়া’র উদ্দেশ্যে উদযাপন করা হতো। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময় ‘মা দিবস’ বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে পালিত হতো।

রোমানরা পালন করতেন ১৫ থেকে ১৮ মার্চের মধ্যে। তারা দিনটিকে উৎসর্গ করেছিলেন ‘জুনো’র প্রতি। ১৬০০ শতাব্দী থেকে যুক্তরাজ্যেও ‘মাদারিং সানডে’ হিসেবে এ দিনটি উদযাপন শুরু হয়। ইস্টার সানডের ঠিক ৩ সপ্তাহ আগের রোববারে এটি পালন করেন তারা।

নরওয়েতে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় রোববারে, সৌদি আরব, বাহরাইন, মিসর, লেবাননে বসন্তের প্রথম দিন অর্থাৎ ২১ মার্চ এ দিনটি উদযাপিত হয়।

কিন্তু বিশ্বজুড়ে ‘মা দিবস’র বর্ণাঢ্য উদযাপন মূলত আমেরিকানরা শুরু করেন। ১৮৭০ সালে সমাজসেবী জুলিয়া ওয়ার্ড হো আমেরিকার নারীদেরকে যুদ্ধের বিরুদ্ধে সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে দিবসটিকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য রাষ্ট্রের কাছে প্রচুর লেখালেখি করেন।

এ সময় অ্যান জার্ভিস দিনটির সরকারি অনুমোদন পাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের চেষ্টা চালাতে থাকেন। কিন্তু সফলকাম হতে পারেননি তিনি। তার মৃত্যুর পর তার মেয়ে অ্যানা জার্ভিস মায়ের অসমাপ্ত স্বপ্ন পূরণের কাজে হাত দেয়। তিনি চেষ্টা করতে লাগলেন একটি বিশেষ দিন ঠিক করে ‘মা দিবস’টি উদযাপন করার জন্য। সেই লক্ষ্যেই ১৯০৮ সালের ১০ মে তিনি পশ্চিম ভার্জিনিয়ার গ্রাফিটন শহরের সেই চার্চে, যেখানে তার মা অ্যান জার্ভিস রোববারে পড়াতেন সেখানে প্রথমবারের মতো দিনটি উদযাপন করেন।

এরপর থেকেই আস্তে আস্তে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি বিস্তার হতে থাকে এবং এক সময় আমেরিকার ৪৫টি অঙ্গরাজ্যে মে মাসের দ্বিতীয় রোববার ‘মা দিবস’ পালন শুরু হয়।

১৯১২ সালে সর্বপ্রথম এ দিনকে স্বীকৃতি দিয়ে আমেরিকার কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন ১৯১৪ সালে দেশব্যাপী এ দিনটিকে সরকারি ছুটি ও জাতীয় উৎসবের মর্যাদা দেন।

Thursday, May 9, 2013

বুদ্ধি বাড়ে যোগাসনে

0 comments
যোগাসন কেবল স্বাস্থ্য ভালো করে স্ট্রেস বা মেদ কমানোর জন্যই উপযুক্ত নয়, তা মগজ কিংবা বুদ্ধি বাড়ানোতেও সমান কার্যকর।
নির্দিষ্ট কিছু আসন করলে তার ফল সরাসরি মগজের ওপর পড়ে। এতে বুদ্ধির বিকাশ তো হয়ই, একই সঙ্গে শক্তির স্তর বাড়ে, চিন্তায় স্বচ্ছতা আসে। পাশাপাশি মনের অস্থিরতাও কমে। মতি স্থির হয়। ফলে লেখাপড়া বা কর্মস্থলে ভালো ফল পাওয়া যায় সহজেই। এজন্য আপনাকে সঠিক যোগাসনটির নাম জানতে হবে। শিখতে হবে যথার্থ নিয়ম-কানুনও। প্রয়োজনে কোনো যোগগুরুর সাহায্য নেয়া ভালো। কারণ ভুল যোগাসনে ফল খারাপ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। যেসব যোগাসন নিয়মিত করলে বুদ্ধি বাড়ে— শশঙ্গাসন, মত্স্যাসন, সর্বাঙ্গাসন সর্বোপরি শীর্ষাসন। এরই সঙ্গে করতে হবে নানা প্রণায়াম। কীভাবে করবেন আসুন দেখে নিই—

শশঙ্গাসন: শশ মানে খরগোশের মতো করে আসন করতে হবে। হাঁটু গেড়ে পায়ের পাতার ওপর বসুন। দুই হাত দিয়ে গোড়ালি চেপে সঙ্গে সঙ্গে মাথা নুইয়ে হাঁটুর সামনে এনে তালু মাটিতে ঠেকান। এ সময়ে কোমর ধনুকের মতো বাঁকা হয়ে সেখানে ও পিঠে টান পড়বে। পেটের পেশিও সংকুচিত হবে। প্রথম দিকে ৩০ সেকেন্ড করে চারবার করুন। প্রতিবার ৩০ সেকেন্ড করে শবাসনও করবেন।

মত্স্যাসন: মাছ হতে হবে আপনাকে! শবাসনে শুয়ে শুয়ে হাত দুই পাশে দিন। পা তুলে মাথার ওপর দিয়ে উল্টোদিকে নিয়ে গিয়ে পায়ের আঙুল মাটিতে ঠেকান। প্রথম দিকে ৩০ সেকেন্ড করে চারবার করুন। প্রতিবার ৩০ সেকেন্ড করে শবাসনও করবেন।

উস্ট্রাসন: উটের মতো হতে গেলে হাঁটু গেড়ে পায়ের পাতার ওপর বসতে হবে। পেছন দিকে হাত ঘুরিয়ে দুই হাত দিয়ে দুই পায়ের গোড়ালি ধরুন। ধীরে ধীরে পেট ও বুক যথাসম্ভব এগিয়ে শরীরটাকে ধনুকের মতো বাঁকান। এ অবস্থায় হাঁটুর ওপর থেকে গলা পর্যন্ত হালকা টান পড়বে। প্রথম দিকে ৩০ সেকেন্ড করে চারবার করুন। প্রতিবার ৩০ সেকেন্ড করে শবাসনও করবেন।


-সাইফুল ইসলাম জুয়েল

যেভাবে নির্বাচিত হন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট

0 comments
জাতি হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র খুব একটা পুরনো নয়। এর ইতিহাস মাত্র সোয়া পাঁচশ’ বছরের। পৃথিবীর মানচিত্রে এমন অনেক দেশ আছে যাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সভ্যতা আমেরিকা থেকে অনেক বেশি প্রাচীন ও গৌরবোজ্জ্বল। উদাহরণস্বরূপ  মিসর, সিরিয়া, ইরাক, ইরান, তুরস্ক, ইতালি, চীন, রাশিয়া, ইংল্যান্ড ও ভারতবর্ষসহ অনেক দেশের নাম করা যায়। আমেরিকায় সভ্যতার সূচনা ধরা হয় ১৪৯২ সাল  থেকে যখন কলাম্বাস এ দেশ আবিষ্কার করেন, যদিও তার আগেও এখানে ন্যাটিভ ইন্ডিয়ানদের বসবাসের অনেক আলামত পাওয়া যায়। স্কুলে যেভাবে আমেরিকার ইতিহাস পড়ানো হয় তাতে এই পুরো সময়টাকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা হয়।

প্রি-কলোনিয়াল পিরিয়ড (১৪৯২-১৬০৭); কলোনিয়াল পিরিয়ড (১৬০৭-১৭৭৬);  এবং পোস্ট-কলোনিয়াল বা স্বাধীন আমেরিকান পিরিয়ড (১৭৭৬ বর্তমান)।

সভ্যতার বিবেচনায় আমেরিকা অনেক জাতির তুলনায় নবীন হলেও তাদের রাজনৈতিক স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের ইতিহাস অনেক দীর্ঘ ও পাকাপোক্ত। তারা ২৩৬ বছর ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের চর্চা করে আসছে। আধুনিক বিশ্বে এমন দেশ খুব কমই আছে যাদের স্বাধীন গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য এত লম্বা ও উজ্জ্বল। পলাশীর যুদ্ধে পরাজয়ের মাধ্যমে ভারতবর্ষ যখন ইংরেজদের কাছে তার স্বাধীনতা হারায় তার মাত্র ২০ বছরের মাথায় আমেরিকা একই ইংরেজদের কাছ থেকে সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে তাদের রাজনৈতিক মুক্তি অর্জন করে। তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো, স্বাধীনতার পর থেকেই তারা সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক উপায়ে নিজেরাই নিজেদের শাসন করছে। তবে তাদের গণতন্ত্র ইংল্যান্ড, ভারত কিংবা বাংলাদেশের মতো পার্লামেন্টারিয়ান পদ্ধতির নয়। আমেরিকার গণতন্ত্র প্রেসিডেন্সিয়াল পদ্ধতির। এ পদ্ধতিতে সাধারণত জনগণের সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে থাকেন, কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেলায় এ নিয়ম প্রযোজ্য নয়। নির্বাচন কিভাবে হয় তার বিস্তারিত আলোচনায় একটু পরে আসছি।

আমেরিকা স্বাধীন হয় ১৭৭৬ সালের ৪ জুলাই। এরপর তারা তড়িঘড়ি করে যেনতেন প্রকারের একটি সংবিধান রচনা করেন। আমেরিকার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ যাদের সসম্মানে বলা হয় ‘ফাউন্ডিং ফাদারস’, তারা সময় নিয়ে অনেক চিন্তাভাবনা ও তর্ক-বিতর্ক করে দীর্ঘ ১১ বছরে জাতির জন্য তৈরি করেন একটি অমূল্য দলিল সংবিধান। এটা চূড়ান্ত রূপ নিয়ে গৃহীত হয় ১৭ সেপ্টেম্বর, ১৭৮৭ সালে। এরপর দীর্ঘ ২২৫ বছরে মাত্র ২৭টি সংশোধনী নিয়ে সেই একই সংবিধান দেশে এখনো বলবৎ আছে। এ থেকে আমেরিকার ‘ফাউন্ডিং ফাদারদের’ দেশপ্রেম, গণতন্ত্রপ্রীতি, বুদ্ধিমত্তা ও দূরদর্শিতার প্রমাণ পাওয়া যায়। পক্ষান্তরে পাঠকেরা আমাদের দেশের কথা একবার ভেবে দেখুন, আমরা মাত্র ৯ মাসের গৌরবোজ্জ্বল ও বীরত্বপূর্ণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করে অসম্ভবকে সম্ভব করেছি। আবার দুই বছরের মধ্যেই একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান রচনা করে আরেকটি রেকর্ড করে ফেললাম, কিন্তু তারপর মাত্র দুই বছরের মাথায় চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে সংবিধানের আওতায় বাকশাল কায়েম করলাম। তারপর আজ অবধি আমাদের জাতীয় জীবনের ওই পবিত্র দলিল নিয়ে যে কাটাছেঁড়া, বালখিল্য ও খিস্তিখেউড় চলছে তার শেষ কোথায় আমরা কেউ জানি না। মাত্র ৪০ বছরে আমরা ১৫টি সংশোধনী এনেছি। আরেকটি অত্যাসন্ন।

এখানে একটি কথা আমি মোটা দাগে আমাদের দেশের রাজনীতিবিদ ও পাঠকদের বলে রাখতে চাই, একটি দেশের সংবিধান সব ধর্ম, বর্ণ, গোত্রের সব নাগরিকের বিশ্বাস ও আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলনসহ এক পবিত্র দলিল। এটা কস্মিনকালেও কোনো রাজনৈতিক দলের মেনিফেস্টো হতে পারে না। একটি দল কোনো বিশেষ সময়ে, বিশেষ কারণে সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ আসন পেলেই দলীয় বিবেচনায় সংবিধানে সংশোধনী আনতে পারে না।’

মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী তাদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আর দশ-পাঁচটি দেশের মতো সাদাসিধে ধরনের নয়। যেহেতু প্রেসিডেন্টের হাতে যাবতীয় নির্বাহী ক্ষমতা, তাই তাদের ‘ফাউন্ডিং ফাদাররা’ নানা কিসিমের ভারসাম্য রক্ষার জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে একটি কঠিন ও জটিল পরোক্ষ পদ্ধতি আবিষ্কার করে গেছেন। বিভিন্ন সময়ে উদ্ভূত ছোটখাটো সমস্যা সামাল দিতে গিয়ে তারা ওই নিয়ম-কানুনে কিছু পরিবর্তন এনেছেন, কিন্তু সেই পুরনো মৌলিক পদ্ধতি এখনো বহাল আছে। আর মাত্র কিছু দিন পরই হতে যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তাই এ নির্বাচনের প্রাক্কালে আমার পাঠকদের সম্ভাব্য কৌতূহলী মনের খোরাক জোগাতে লিখছি আজকের এই কলামটি।

মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী একজন প্রেসিডেন্টপ্রার্থী তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে কমসংখ্যক জনসমর্থন নিয়েও শুধু ইলেক্টোরাল কলেজের সংখ্যাধিক্যে নির্বাচিত হয়ে হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে বসতে পারেন। সাম্প্রতিক ইতিহাসে আমাদের চোখের সামনে এমন ঘটনা ঘটেছেও। ২০০০ সালে জর্জ ডব্লিউ বুশ জুনিয়র আল গোর থেকে অনেক কম জনভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে কারণে-অকারণে যুদ্ধ করে আমেরিকা ও পশ্চিমা অর্থনীতির বারোটা বাজিয়ে গেছেন।

এবার দেখা যাক আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইলেক্টোরাল কলেজ কিভাবে কাজ করে। এ দেশে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয় চার বছর অন্তর অন্তর। পরপর দুই টার্মের বেশি কেউ প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হতে পারেন না। যদিও বলা হয়, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, কিন্তু আসলে এর সাথে সব কংগ্রেসম্যান অর্থাৎ ফেডারেল প্রতিনিধি পরিষদের (কেন্দ্রীয় নিম্নকক্ষ) সদস্য এবং কিছুসংখ্যক সিনেটরের (কেন্দ্রীয় উচ্চকক্ষ) নির্বাচন হয়। সিনেটররা রোটেশনের ভিত্তিতে ছয় বছরের জন্য নির্বাচিত হন।

নির্বাচনের প্রায় এক বছর আগে থেকেই প্রেসিডেন্ট প্রার্থীরা পার্টি নমিনেশনের জন্য লড়াইয়ের মাঠে নেমে পড়েন। বর্তমান প্রেসিডেন্ট যেহেতু আপনাআপনি পার্টি নমিনেশন পেয়ে যান, তাই তিনি মাঠে নামেন আরেকটু পরে। প্রার্থীরা নিজের পকেট থেকে এবং ব্যক্তিগত ও পার্টি উদ্যোগে দেশের ভেতরে আইনানুযায়ী যে চাঁদা আদায় করেন, তা দিয়েই নির্বাচনী ব্যয় সঙ্কুলান করে থাকেন। এ দেশে প্রেসিডেন্সিয়াল ক্যাম্পেইন চলাকালীন সময়ে আমাদের দেশের মতো মাঠে-ময়দানে বড় বড় সভা সমাবেশ হয় না। মিটিং যা হয় তার সবই ঘরোয়া-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়াম মিটিং অথবা টাউন হলজাতীয় জমায়েত। বাকি সব প্রচার-প্রচারণা চলে মিডিয়ার মাধ্যমে। পত্রপত্রিকা, টিভি অ্যাড, টকশো, বিতর্ক, ইন্টারভিউ, এর সাথে আজকাল ই-মেইল, ফেসবুক, টুইটারও যোগ হয়েছে বটে। ক্যাম্পেইনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো নির্বাচনে তিন-চার সপ্তাহ আগে প্রার্থীদের মুখোমুখি জাতীয়ভাবে টিভি বিতর্ক।

প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের মধ্যে হয় পরপর তিনটি ডিবেট এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের মাঝে হয় একটি। এসব ডিবেট ও তাদের ফলাফলকে ঘিরে ভোটারদের মধ্যে দেখা যায় দারুণ উত্তাপ ও উত্তেজনা। শেষ মুহূর্তে আনডিসাইডেড ভোটারদের সিদ্ধান্তে এসব ডিবেট বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

নির্বাচনটি যদিও ফেডারেল, তথাপি এই গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন পরিচালনার জন্য নেই কোনো ফেডারেল নির্বাচন কমিশন। গোটা নির্বাচন প্রক্রিয়ার দেখভাল ও পরিচালনার দায়িত্ব ৫০টি অঙ্গরাজ্য ও স্বতন্ত্র টেরিটোরি দেশের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির। প্রতিটি অঙ্গরাজ্য ও ওয়াশিংটন ডিসিতে নিজ নিজ কর্তৃপক্ষ আলাদাভাবে ভোটার তালিকা করা থেকে শুরু করে ভোট গ্রহণ, ভোট গণনা, রেজাল্ট সার্টিফাই করা ইত্যাদি যাবতীয় কাজ করে থাকে। এ ব্যাপারে তাদের প্রত্যেকের রয়েছে নিজস্ব আইন, রাজ্যে রাজ্যে এ আইনের তফাৎও আছে বিস্তর।

কোন সরকারের অধীনে, কোন কমিশনের হেফাজতে, কোন তারিখে, কিভাবে নির্বাচন হবে এ নিয়ে এ দেশে কোনো বিতর্ক নেই। নির্বাচনের দিন-তারিখ সাংবিধানিকভাবে আগে থেকেই ঠিক করা। নির্বাচন হবে প্রতি চার বছর অন্তর অন্তর (বছরটি কাকতালীয়ভাবে লিপইয়ার) নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের মঙ্গলবারে। তবে নভেম্বরের প্রথম দিন যদি মঙ্গলবার হয় সে ক্ষেত্রে নির্বাচন হবে মাসের দ্বিতীয় মঙ্গলবারে। অর্থাৎ মাসের প্রথম দিন কোনো অবস্থাতেই নির্বাচন হতে পারবে না। নিশ্চয়ই এর কোনো মাজেজা আছে, কিন্তু বিষয়টি এখনো আমার মাথায় আসে না। ভোটের তারিখ নির্দিষ্ট থাকলেও ওই দিনের ভিড় এড়ানোর জন্য দুই-তিন সপ্তাহ আগ থেকেই স্বল্পপরিসরে অগ্রিম ভোটদানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তার নিয়মও একেক রাজ্যে একেক রকম।

নির্বাচনের দিন ভোটাররা ভোট দেন, কিন্তু প্রার্থীরা সরাসরি সে ভোট পান না। ভোট পড়ে তাদেরই মনোনীত ইলেক্টোরাল কলেজের সপক্ষে। পরবর্তী পর্যায়ে এই ইলেক্টোরাল কলেজের দ্বারা আলাদাভাবে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। আমেরিকার ৫০টি অঙ্গরাজ্য ও ওয়াশিংটন ডিসি এই নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে থাকে। সারা দেশে ইলেক্টোরাল কলেজের সদস্য সংখ্যা ৫৩৮ জন। আমেরিকার কেন্দ্রীয় আইনসভা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট। প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেট। জনসংখ্যার অনুপাতে ৫০টি অঙ্গরাজ্য থেকে মোট ৪৩৫ জন সদস্য দুই বছর পরপর প্রতিনিধি পরিষদে নির্বাচিত হন এবং প্রতি ছয় বছর পরপর পর্যায়ক্রমে রোটেশনের মাধ্যমে ছোট-বড় প্রতিটি অঙ্গরাজ্য থেকে সমানসংখ্যক অর্থাৎ দুজন করে মোট ১০০ সদস্য সিনেটে নির্বাচিত হয়ে আসেন। এই দুইয়ের সমষ্টি ৫৩৫। তার সাথে যোগ হয় ওয়াশিংটন ডিসির জন্য আরো তিনজন। এ নিয়ে সর্বমোট ৫৩৮ জন। এই ৫৩৮ জনই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইলেক্টোরাল কলেজ।

রাজ্যওয়ারি ইলেক্টোরাল কলেজের বিন্যাস এ রকম। আলাবামা-৯, আলাস্কা-৩, অ্যারিজোনা-১১, আরকানসা-৬, ক্যালিফোর্নিয়া ৫৫, কলোরাডো-৯, কানেটিকাট-৭, ডেলাওয়ার-৩, ওয়াশিংটন ডিসি-৩, ফ্লোরিডা-২৯, জর্জিয়া-১৬, হাওয়াই-৪, আইডাহো-৪, ইলিনয়-২০, ইন্ডিয়ানা-১১, আইওয়া-৬, ক্যানসাস-৬, কেন্টাকি-৮, লুইজিয়ানা-৮, মেঈন-৪, ম্যারিল্যান্ড ১০, মন্টানা-৩, নেব্রাস্কা-৫, নেভাডা-৬, নিউ হ্যাম্পশায়ার-৪, নিউজার্সি-১৪, নিউ মেক্সিকো-৫, নিউ ইয়র্ক-২৯, নর্থ ক্যারোলাইনা-১৫, নর্থ ড্যাকোটা-৩, ওহাইও-১৮, ওকলাহোমা-৭, অরিগন-৭, প্যানসিলভানিয়া-২০, রোড আয়ল্যান্ড-৪, সাউথ ক্যারোলিনা-৯, সাউথ ড্যাকোটা-৩, টেনেসি-১১, টেক্সাস-৩৮, ইউটা-৬, ভারমন্ট-৩, ভার্জিনিয়া-১৩, ম্যাসাচুসেটস-১১, মিশিগান-১৬, মিনেসোটা-১০, মিসিসিপি-৬, মিসৌরি-১০, ওয়াশিংটন স্টেট-১২, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া-৫, উইসকনসিন-১০, ওয়ায়োমিং-৩। জনসংখ্যার ওঠানামার সাথে এই বিন্যাস অদলবদল হয়, কিন্তু মূল সংখ্যা ৫৩৮-এ স্থির থাকে।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আরেকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, এটা জাতীয় নির্বাচন হলেও কোনো একক জাতীয় নিয়মের ভিত্তিতে হয় না এ নির্বাচন। প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে তার নিজস্ব নিয়ম ও আইনের ভিত্তিতে ভোট গ্রহণকার্যক্রম পরিচালিত হয়। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে এমনটি হয় বলে আমার জানা নেই। মেইন ও নেব্রাস্কা ছাড়া বাকি সব ক’টি অঙ্গরাজ্যে যে প্রার্থী বেশির ভাগ পপুলার ভোট পাবেন সে রাজ্যে তার মনোনীত ইলেক্টোরাল কলেজের সবাই জিতল বলে বিবেচিত হয়। পরবর্তীকালে আনুষ্ঠানিক এবং অফিসিয়াল নির্বাচনে তার ইলেক্টোরাল কলেজেই তার সপক্ষে ভোট দেয়ার সুযোগ পায়। পক্ষান্তরে প্রতিদ্বন্দ্বী পার্টির সব ইলেক্টোরাল কলেজই পরাজিত বলে গণ্য হয়।

মেইন ও নেব্রাস্কার বেলা এই সরল নিয়ম প্রযোজ্য নয়। ওই দুই রাজ্যে যে প্রার্থী পপুলার ভোটে জয়লাভ করবেন তিনি পাবেন রাজ্যের দুই সিনেটারের বিপরীতে দুটো ইলেক্টোরাল কলেজ, বাকিগুলো নির্ভর করবে আনুপাতিক প্রাপ্ত ভোটের ওপর। অর্থাৎ যে প্রার্থী যে ক’টি কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্টে জেতবে তিনি পাবেন আরো ততটি ইলেক্টোরাল কলেজ। এভাবে ৫৩৮টি ইলেক্টোরাল কলেজের মধ্যে যিনি ন্যূনতম ২৭০টি পাবেন, তিনিই বেসরকারিভাবে নির্বাচিত বলে ঘোষিত হবেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে তার রানিং মেট আপনা-আপনিই নির্বাচিত হয়েছেন বলে বিবেচিত হবেন।

এখানেই শেষ নয়। সরকারি ফল ঘোষণার আগে সারা দেশের সব ইলেক্টোরাল কলেজ এক জায়গায় জমায়েত হয়ে তাদের প্রার্থীদের পক্ষে-বিপক্ষে ভোট দেন। সেটা গণনা করা হয়, সার্টিফাই করা হয়, তারপর সরকারি ফল ঘোষিত হয়। এখন প্রশ্ন হলো, একজন প্রার্থীর মনোনীত ইলেক্টোরাল কলেজ কি আনুষ্ঠানিক সরকারি ভোটের সময় তার বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারে? বাস্তবে হয় না, তবে তাত্ত্বিকভাবে এটা সম্ভব।

ইতিহাসে এমন ঘটনা ঘটেছে কি না এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই, তবে অতীতে কোনো সময় হলে হয়েও থাকতে পারে। ইন্টারনেট ঘাঁটাঘাঁটি করে পাঠকদের জন্য এ জাতীয় কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য উদঘাটন করতে পারিনি। তবে দুইজন প্রার্থী যদি সমান সমান ইলেক্টোরাল কলেজ জেতেন তাহলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয়ার মালিক কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ-প্রতিনিধি পরিষদ। এ রকম ঘটনা ইতিহাসে ঘটেছে বৈকি।

লেখক: আবু এন এম ওয়াহিদ; অধ্যাপক, টেনেসি স্টেইট ইউনিভার্সিটি

এডিটর, জার্নাল অব ডেভেলপিং এরিয়াজ

সূত্র: নয়াদিগন্ত, ৩০ অক্টোবর ২০১২

Wednesday, May 1, 2013

ছেলেদের ত্বক সজীব রাখার জন্য

0 comments
ত্বক সুন্দর রাখতে কেমিক্যালের চেয়ে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা ভালো। কেননা, কেমিক্যাল ব্যবহারে ত্বকের কোমলতা ও উজ্জ্বলতা কমে যেতে পারে। মুখ ও গলায় আলু, পাতিলেবুর রস, কচি শসার রস ব্যবহারে ভালো ফল পাওয়া যায়।

আলু পানিতে ধুয়ে পাতলা করে কেটে মুখমণ্ডল ও গলা ১০ মিনিট ঘষতে হবে। এরপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে ত্বকের সজীবতা ফিরে আসবে। পেঁপে, গাজর, শসা, কমলা, আপেল পেস্ট করে স্ক্রাব তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন। বাসায় এসব করতে না চাইলে যে কোনো জেন্টস পার্লার ও সেলুনে গিয়ে ত্বকের পরিচর্যা করাতে পারেন।

মাসে অন্তত দুবার ফেসিয়াল করা উচিত। ফেসিয়াল করলে ত্বকের ব্লাক হেডস দূর হয়ে যায়। যারা সময়ের অভাবে অথবা অনভ্যস্ততার কারণে পার্লারে পরিচর্যা করতে পারেন না, তাদের জন্য ঘরে বসে ত্বকের পরিচর্যার দুটি সহজ পদ্ধতি_

তৈলাক্ত ত্বকের জন্য : যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা দুই চামচ কাঠবাদাম বাটা এবং মুগডাল গুঁড়ার সঙ্গে এক চা চামচ গোলাপজল দিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখ ও গলায় মেখে ২০ মিনিট রেখে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে আলতোভাবে ঘষে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে দুবার এভাবে ত্বকের পরিচর্যা করুন।

শুষ্ক ত্বকের জন্য : শুষ্ক ত্বকের জন্য দুই চা চামচ মুগডাল গুঁড়া, সমপরিমাণ ময়দা, দুই চামচ আর্মন্ড অয়েল, দুই চামচ প্রিপারমিন্ট ওয়েল সেইসঙ্গে এক চামচ গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। মুখ ও গলায় মেখে ২০ মিনিট রাখুন। এবার ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ময়শ্চারাইজার মাখুন।