Saturday, February 22, 2020

ময়মনসিংহের রসুলপুর রেঞ্জের সামাজিক বানর

0 comments
মধুপুর বনাঞ্চলঘেষা ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার রাঙ্গামাটিয়া ও নাওগাঁও ইউনিয়নের প্রায় ৮৬৩ দশমিক ১৪ একর জায়গা জুড়ে রয়েছে এই প্রাকৃতিক বনাঞ্চল।

রসুলপুর বন বিভাগটি পাঁচটি বিট অফিস ও তিনটি ফরেস্ট ক্যাম্প দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। জামালপুরের বাঁশচড়া, ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ার সন্তোষপুর, এনায়েত পুর মুক্তাগাছার রসুলপুর সদর, ও ছালড়া নিয়ে রসুলপুর রেঞ্জ। ক্যাম্প গুলো হলো হালিদা, কমলাপুর ও রাঙ্গামাটিয়া।

একসময় এ বনে হরিণ, ভাল্লুক, হনুমান, সজারু ও বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণির অভয়ারণ্য ছিল। প্রাকৃতিক নানা কারণসহ গাছ কেটে বন উজাড় করায় দিনদিন এসব বন্যপ্রাণি হারিয়ে যেতে বসেছে। বর্তমানে এ বনে প্রায় পাঁচ শতাধিক বানর রয়েছে। বানরগুলো প্রায়ই লোকালয়ে অবাধ বিচরণ করছে। এরা সামাজিক বানর হিসেবেও পরিচিত।

বনের ভেতরে একরের পর একর জমি এখন খালি ময়দান। এ সব এলাকায় এখন ক্রমেই গড়ে উঠছে বসতবাড়ি। প্রভাবশালীরা গড়ে তুলছেন বিশাল বিস্তৃত এলাকা নিয়ে মৎস্য খামার ও এগ্রো ফার্ম। কিছু এলাকা দখল করে রাখা হচ্ছে সামাজিক বন বিভাগের নামে। রসুলপুর বনাঞ্চল ঘুরে ১৭ হাজার একর জমির বনের মধ্যে এখন পাঁচ হাজার একরের বেশি বন পাওয়া খুব কঠিন। 

ফুলবাড়ীয়ার সন্তোষপুর, মুক্তাগাছার ছালড়া ও রসুলপুর সদর বিটে সামান্য এলাকা জুড়ে গজারি বাগান রয়েছে। আর বাঁশচড়া ও খাজুলিয়ায় বনের দেখা মেলাভার। এ দুটি এলাকার পুরোটাই এখন ফাঁকা। দখল হয়ে গেছে এ দুটি এলাকার বনের জমি।

সম্প্রতি বনের ভেতরে টানা হয় পল্লী বিদ্যুতের কভারহীন হাইভোল্টেজ সংযোগ। অন্তত ৫ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে কভার ছাড়া তারে, বিদ্যুতের সংযোগ । এ কারণে তারে জড়িয়ে ঝলসে যাচ্ছে বানরের হাত-পা, মুখসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ।

বন কর্মকর্তাদের দাবি, বানরদের বিষয়ে আগেই চিঠি দেয়া হয়েছিলো বিদ্যুৎ বিভাগকে।

তবে বিদ্যুৎ বিভাগের দাবি, বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন তারা।


ভালোবাসার নিদর্শন পরি বিবির মাজার

0 comments

ভালোবাসার গণ্ডি কেবল স্বামী-স্ত্রী কিংবা প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে আবদ্ধ থাকার মতো নয়। কন্যার প্রতি বাবার প্রচণ্ড ভালোবাসার এক অপূর্ব নিদর্শন রয়েছে আমাদের এ দেশেই। তাও আবার খোদ ঢাকায়। 

সপ্তদশ শতকে মোঘল শাসনামলে বাংলার সুবেদার ছিলেন শায়েস্তা খান। তার আদরের কন্যা ছিলেন ইরান দুখত্ রহমত বানু ওরফে পরি বিবি। বেশ ঘটা করেই শায়েস্তা খান তার কন্যা পরি বিবির বিয়ে দেন মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সুযোগ্য পুত্র প্রিন্স মোহাম্মদ আজমের সঙ্গে। এই বিয়ে অনুষ্ঠিত হয় ১৬৬৮ সালের ৩ মে। তখন এক লাখ ৮০ হাজার টাকা দেনমোহর ধার্য করে এই বিয়ে হয়।

মোঘল রাজপুত্র আজম পরি বিবিকে নিয়ে ঢাকায়ই থাকতেন। বাবার সংসার এবং সুবেদারি শাসন তথা রাজনীতিতে পরি বিবির প্রভাব ছিল লক্ষ্য করার মতো। কিন্তু মাত্র ১৬ বছরের বিবাহিত জীবনের মাথায় কন্যাবৎসল বাবা শায়েস্তা খান ও স্বামী মোহাম্মদ আজমকে রেখে অকাল মৃত্যুবরণ করেন পরি বিবি।

প্রিয় কন্যার অন্তিম ঠাঁই হয় লালবাগ দুর্গের মসজিদের পূর্ব পাশে। এরপর কবরের ওপর শায়েস্তা খান নির্মাণ করেন এক-গম্বুজ বিশিষ্ট সমাধি। যার নাম পরি বিবির মাজার।

কেউ চাইলেই পুরান ঢাকার লালবাগ কেল্লায় গিয়ে সমাধিসৌধটি দেখে আসতে পারেন। সাড়ে তিন শ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই সমাধির সঙ্গে জাড়িয়ে আছে বেদনার ইতিহাস। আর আছে মেয়ের জন্য এক বাবার ভালোবাসার নিদর্শন।

গদখালীতে বাণিজ্যিকভাবে ফুলের চাষাবাদ

0 comments
যশোর সদর থেকে প্রায় পঁচিশ কিলোমিটার দুরে ঝিকরগাছার একটি গ্রামের নাম গদখালী। যা বিখ্যাত হয়ে উঠেছে ফুল চাষের কারণে।মাঠের জমিসহ রাস্তার দু'পাশে চোখ ও প্রাণ জুড়ানো অসংখ্য ফুলের বাগান ।

ওই গ্রাম ও আশপাশের হাজার হাজার একর জমিতে বছর জুড়ে উৎপাদন হচ্ছে দেশী বিদেশী নানা জাতের ফুল যার বার্ষিক বাজার মূল্য প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা।

এই গ্রামের ফুল সারাদেশ তো বটেই, যাচ্ছে বিদেশেও।

১৯৮২ সালে জনৈক এক চাষী এক বিঘা জমিতে রজনীগন্ধা ফুল চাষ করেন। উৎপাদন ভালো হওয়ায় ধান, পাটের বদলে বাড়তে থাকে ফুল চাষের জমি। এখন এ গ্রামের যেকোনো দিকে তাকালেই চোখে পড়ে একটার পর একটা ফুলের বাগান। বিশেষ করে বিভিন্ন জাতের গোলাপ, গাঁদা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা আর অর্কিড, পাতাবাহার, রজনীগন্ধার বাগান রয়েছে অসংখ্য।

এর বাইরেও চোখে পরে পলি হাউজ বা ফুল চাষের বিশেষ ঘর। ভারত ও চীন থেকে বিশেষজ্ঞ চাষিদের সহায়তায় তৈরী হয় এ পলি হাউজগুলো। এসব ঘরে মূলত চাষ হয় জারবার ফুলের।

এসব ফুলের বাইরেও লিলিয়ামসহ নানা জাতের ফুল চাষ করেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।

বিষেশ দিনগুলো যেমন পহেলা ফাল্গুন, ভালোবাসা দিবস, ২১শে ফেব্রুয়ারী, ২৬শে মার্চ এ বেড়ে যায় ফুলের চাহিদা। সারা বছর যা বিক্রি হয় এ তিন মাসে তার চাইতে দ্বিগুন বিক্রি হয়ে থাকে। ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা তাদের। এ বছর ফুল চাষীরা মুজিব বর্ষকে উপলক্ষ্যে লক্ষ্যমাত্রার চাইতে বেশী জমিতে ফুল চাষ করেছেন।
খুব ভোরেই এখানে জমে উঠে বাংলাদেশের বৃহত্তম ফুলের বাজার। ঢাকাসহ নানা জায়গার ব্যবসায়ীরা এসে ট্রাক বা পিক আপ ভর্তি করে ফুল নিয়ে যান আর এসব ফুল বিক্রি হয় সারাদেশে বিশেষ করে শহর এলাকাগুলোতে।

ফুল চাষীদের দাবি বিদেশ থেকে প্লাস্টিকের ফুল আমদানি বন্ধসহ কম সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা।

ফুল চাষীদের নানা পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

এ বছর এ অঞ্চলের প্রায় সাড়ে সাত হাজার কৃষক ৬৩৬ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুল চাষ করেছে।


কূটনীতি মানে কি

0 comments
ইংরেজি ‘ডিপলোম্যাসি’ শব্দের বাংলা অর্থ করা হয়েছে ‘কূটনীতি’। ‘কূট’ বাংলা ভাষার একটি নেতিবাচক শব্দ। শব্দটির আভিধানিক অর্থ ‘অসত্য’ ‘মিথ্যা’ ‘জাল’ ‘জটিল’ ‘দুর্বোধ্য’ ‘প্যাঁচানো’। ‘কূট’র সঙ্গে ‘নীতি’ যোগ হয়ে যে ‘কূটনীতি’ তার অর্থ ‘অসত্য নীতি’? জাল, জটিল, দুর্বোধ্য বা প্যাঁচানো নীতি? কূটনীতিক বা কূটনৈতিক শব্দ দিয়েও আভিধানিক অর্থে সম্মানজনক কিছু বোঝায় না। কিন্তু, বাংলা ভাষায় শব্দগুলো বহুকাল ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে আভিধানিক অর্থ নয়, প্রচলিত রীতি বা নীতি অনুযায়ী শব্দের অর্থ ধরে নেওয়া হয়।

কূটনীতির সঙ্গে ‘কৌশল’ শব্দের একটি নিবিড় সম্পর্ক আছে। একে অপরের প্রতি ‘সৌজন্যবোধ’ দেখাবেন, সেখানে ‘কৌশল’ থাকতে পারে। কিন্তু, অসম্মানজনক কোনো শব্দ বা আচরণ থাকবে না।

যদিও পৃথিবীর শক্তিধর কোনো কোনো রাষ্ট্র দুর্বল রাষ্ট্রের কূটনীতিকদের সঙ্গে সব সময় যে সৌজন্য বজায় রেখে কথা বলেন, তা নয়। তবে বন্ধুত্ব বা হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজমান দুটি দেশের ক্ষেত্রে যদি এমন কিছু ঘটে, সেটা হয়ে ওঠে আলোচনা-সমালোচনার বিষয়।