Wednesday, August 31, 2016

কেন মাথাব্যথা হয়

0 comments
মাথাব্যথা দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। প্রতিবছর শতকরা প্রায় ২০ জন শিশু ও কিশোর মাথাব্যথায় আক্রান্ত হয়। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালের সহকারী অধ্যাপক ডা. এম এস জহিরুল হক চৌধুরী বলেন, সব মাথাব্যথাই মাইগ্রেন নয়। দৃষ্টিস্বল্পতা, মস্তিষ্কের টিউমার প্রভৃতি কারণেও মাথাব্যথা হতে পারে।

মাথাব্যথা প্রধানত দুই প্রকার

প্রাইমারি হেডেক, যেমন: মাইগ্রেন, টেনশন টাইপ হেডেক, ক্লাস্টার হেডেক ইত্যাদি
সেকেন্ডারি হেডেক, যেমন সাইনোসাইটিস, মাসটয়ডাইটিস, গ্লুকোমার, স্ট্রোক, মাথার আঘাতজনিত, মস্তিষ্কের টিউমার ইত্যাদি।

চিকিৎসা ও প্রতিকারমাথাব্যথার ধরন বা কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হয়। এ জন্য প্রথমে প্রয়োজন রোগ নির্ণয় করা।


মাইগ্রেন থেকে রেহাই পাওয়ার কিছু উপায়:

* প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে হবে এবং সেটা হতে হবে পরিমিত।
* অতিরিক্ত বা কম আলোতে কাজ না করা।
* কড়া রোদ বা তীব্র ঠান্ডা পরিহার করতে হবে।

* উচ্চশব্দ ও কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে বেশিক্ষণ না থাকা।
* বেশি সময় ধরে কম্পিউটারের মনিটর ও টিভির সামনে না থাকা।
মাইগ্রেন শুরু হয়ে গেলে, প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা (বিশেষ করে বমি হয়ে থাকলে), বিশ্রাম করা, ঠান্ডা কাপড় মাথায় জড়িয়ে রাখা উচিত।

যেসব খাবার মাইগ্রেনের সমস্যা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে:
* ম্যাগনেশিয়ামসমৃদ্ধ খাবার, যেম: ঢেঁকি ছাঁটা চালের ভাত, আলু ও বার্লি মাইগ্রেন প্রতিরোধক।
* বিভিন্ন ফল বিশেষ করে খেজুর ও ডুমুর ব্যথা উপশম করে।
* সবুজ, হলুদ ও কমলা রঙের শাকসবজি নিয়মিত খেলে উপকার হয়।
* ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি মাইগ্রেন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তিল, আটা ও বিট ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম রয়েছে।
* আদার টুকরো বা রস দিনে দুবার জিঞ্জার পাউডার পানিতে মিশিয়ে খেতে পারেন।

কী ধরনের খাবার এড়িয়ে চলবেন:
* চা, কফি ও কোমলপানীয়
* চকলেট, আইসক্রিম, দই, ডেইরি প্রোডাক্ট (দুধ, মাখন)
* টমেটো ও সাইট্রাস জাতীয় ফল খাবেন না
* গমজাতীয় খাবার, যেমন: রুটি, পাস্তা, ব্রেড ইত্যাদি
* আপেল, কলা ও চিনাবাদাম


যা খেয়াল রাখবেন
তবে ব্যক্তিভেদে ভিন্ন ভিন্ন খাবারে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সবচেয়ে ভালো হয় একটা ডায়েরি রাখা। যাতে আপনি নোট করে রাখতে পারেন কোন কোন খাবার ও কোন কোন পারিপার্শ্বিক ঘটনায় ব্যথা বাড়ছে বা কমছে। এ রকম এক সপ্তাহ নোট করলে আপনি নিজেই নিজের সমাধান পেয়ে যাবেন। তবে ব্যথা বেশি হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।


সাইনোসাইটিসের কারণে মাথাব্যথা
যাদের ঘন ঘন সর্দি-কাশি হয়, তাদের সাইনোসাইটিস থেকে এ ধরনের মাথাব্যথা হয়। তখন গরম পানির ভাপ নিতে পারেন। এভাবে কিছুটা আরাম পাবেন, নাকের বন্ধ ভাবটাও কাটবে বেশ। নাক পরিষ্কার করতে হবে খুব ভালোভাবে। তবে ঘরের চিকিৎসায় কাজ না হলে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টিহিস্টামিন-জাতীয় ওষুধ খেতে হতে পারে। যাঁদের ধুলাবালিতে অ্যালার্জি আছে, তাঁরা ধুলার সংস্পর্শে আসা থেকে বিরত থাকুন। যে কেউ যখনই সর্দির সমস্যায় আক্রান্ত হোন, সব সময় খেয়াল রাখুন যেন নাক সঠিকভাবে পরিষ্কার করা হয়। সাইনোসাইটিসের ব্যথার সঙ্গে খাদ্যাভ্যাসের তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। আলো বা শব্দের কারণে এ ব্যথা বাড়ার কোনো কারণ নেই।


চক্ষুজনিত মাথাব্যথা
শতকরা ৫ ভাগ মাথাব্যথা চক্ষুজনিত। চোখের দৃষ্টিশক্তি কম থাকলে মাথাব্যথা হতে পারে। অনেকক্ষণ পড়াশোনা করা, সেলাই করা, সিনেমা দেখা বা কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে মাথাব্যথা হতে পারে। চোখের কোনো রোগের কারণেও মাথাব্যথা হতে পারে। চক্ষুজনিত মাথাব্যথা সাধারণত চোখে, কপালের দুদিকে বা মাথার পেছনে হয়ে থাকে | চক্ষুজনিত মাথাব্যথায় বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

হরমোনজনিত মাথাব্যথা
মেয়েদের ঋতুচক্রের সময়ে হরমোনের ওঠানামার কারণে মাথাব্যথা হতে পারে। জন্মনিয়ন্ত্রণ ওষুধ খেলেও এমনটা হতে পারে।



ঘরোয়া উপায়ে মাথাব্যথা দূর করার উপায়:
পানি পান করা: পানিশূন্যতার কারণে অনেক সময় মাথাব্যথা হতে পারে। তাই মাথাব্যথা অনুভূত হলে প্রচুর পানি পান করতে হবে। পাশাপাশি তাজা ফলের রস ও পানিসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।


সময়মতো খাবার খান: সঠিক সময় পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার যাঁরা খেয়ে থাকেন তাঁদের অযথা মাথাব্যথা হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। নিয়মমাফিক কাজ চালানোর জন্য মস্তিষ্কের গ্লুকোজ প্রয়োজন হয় আর সময়মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি মস্তিষ্কে সরবরাহ না হলে মাথাব্যথা হয়।
পর্যাপ্ত ঘুম: একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। যদি ঘুমের সমস্যা হয় এবং পর্যাপ্ত সময় ঘুম না হয় তখন মাথাব্যথা হতে পারে
বিশ্রাম করুন: কাজের ফাঁকে চোখ বন্ধ করে কিছু সময় বিশ্রাম করা উচিত। ঘরের আলো কমিয়ে চেয়ার বা বিছানায় হেলান দিয়ে বসে বা শুয়ে কিছু সময় বিশ্রাম নিলে মাথাব্যথা কমে আসবে।


গরম পানি দিয়ে গোসল: মাথাব্যথা হলে কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করলে আরাম পাওয়া যাবে। মাথায়, ঘাড়ে ও কাঁধে কুসুম গরম পানি ঢাললে মাথা ও ঘাড়ের পেশিগুলো শীতল হয় এবং মাথাব্যথা কমে আসে।
হাসুন: হালকা মাথাব্যথা উপশমে হাসি বেশ উপকারী। হাসলে ভালো লাগার অনুভূতি সৃষ্টিকারী হরমোন এন্ড্রোফিন হরমোন মস্তিষ্কে নিঃসৃত হয়। এন্ড্রোফিন মাথাব্যথা কমিয়ে আনতে সাহায্য করে।
প্রাণভরে শ্বাস নিন: বুক ভরে শ্বাস নিলে তা ব্যথা উপশমে সাহায্য করে। বিশুদ্ধ বাতাসে প্রাণ ভরে শ্বাস নিলে তা প্রাকৃতিকভাবে মাথাব্যথা কমিয়ে আনতে সাহায্য করবে।


অবসাদ থেকে ছুটি নিন: যে পরিস্থিতিতে মানসিক চাপ বেড়ে যাচ্ছে বলে মনে হবে সেখান থেকে সরে যান। এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে খোলা কোনো জায়গা থেকে হেঁটে আসতে পারেন অথবা মানসিক চাপ দূর করতে সাহায্য করবে এমন কিছু করতে পারেন।

মানুষ কতবার প্রেমে পড়ে

0 comments
একজন মানুষ জীবনে একই সময়ে একাধিক ব্যক্তির প্রেমে পড়তে পারেন। গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস এই কথাটি বলেছিলেন। প্রেম শাশ্বত, সত্যিকারের প্রেম জীবনে একবারই হয়। এসব নিয়ে নানা তর্কবিতর্ক আছে। গবেষণাও আছে। মানুষের জীবনে কি প্রেম একবার আসে? তাহলে মানুষ একবার সম্পর্ক ভেঙে নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে কেন? প্রয়োজনে, জীবনের বাস্তবতায় নাকি নিজের ইচ্ছায়? বুঝতে পারে না মন আসলে কাকে চায়, কী চায়।



হাফিংটন পোস্ট দুই হাজার নারী-পুরুষের ওপর একটি জরিপ করেছিল গত বছর। সেই জরিপে দেখা গেছে, ৭৩ শতাংশ নারী ও পুরুষ মনে করেন, জীবনে সাতবার প্রেমে পড়ে মানুষ। তবে দুই হাজার জনের এক-তৃতীয়াংশ মনে করে, ‘সত্যিকারের ভালোবাসা’ জীবনে একবারই হয়। একই মানুষের ওপরও একাধিকবার প্রেমে পড়েন কেউ কেউ। পুরুষদের ১৭ শতাংশ বলেছে, তারা একটি প্রেম চলাকালে আরেকটি প্রেমে পড়েছে। দ্বিতীয় সঙ্গীর সঙ্গে তারা বর্তমানে আছে। এক ধরনের ‘আপস’ ধরে নিয়ে ‘সত্যিকারের ভালোবাসা’ বলছে একে। ৪৫ শতাংশ পুরুষ একসঙ্গে একাধিক প্রেম করেছেন। ৩৯ শতাংশ নারী-পুরুষ বলেছেন, তাঁরা জীবনে একবার প্রেমে পড়েছেন। আর ৪৭ শতাংশ মাত্র একবার প্রেমে পড়েছে। সেই প্রেমিককে তারা বিয়ে করেছে।




এই প্রেমের ধরনও ভিন্ন। কোনোটি প্রথম প্রেম, কোনোটি শুধু সময় কাটানোর বা বায়বীয় প্রেম। কোনোটি শুধু রোমাঞ্চের জন্য। কেউ কেউ চূড়ান্ত প্রেম বলছেন সেটিকে, যেটির পরিণতি ঘর বাঁধা। জীবনের সুখ-দুঃখের সময়গুলো কাটাবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেটিকেই বলছেন ‘চূড়ান্ত’। এর মধ্যেও চলে আসতে পারে উঁকি মেরে দেখা প্রেম। সেই প্রেমে বেশির ভাগ নারী-পুরুষ শুরুর দিকে সিরিয়াস থাকেন না। তবে কেউ কেউ পা পিছলে বা অন্য কোনো কারণে দ্বিতীয় সঙ্গীকে বেছে নিচ্ছেন।




বারবার প্রেমে পড়াকে অনেকে মনে করেন ভাগ্যের কারণে হয়। এটি ঠিক নয়। তাঁরা নিজেরাই বেছে নেন আরেকটি প্রেমকে।




তিন হাজার জন মানুষের ওপর দ্য গার্ডিয়ান একটি জরিপ করে। সেখানে দেখা যায়, প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন একসঙ্গে একাধিক প্রেম করছেন। সহকর্মী, বন্ধুর সঙ্গে তাঁরা এটি বেশি করছেন। ব্যক্তিজীবনেও তাঁরা সুখী। সঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্কও ভালো। তবু তাঁরা আরেকজনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন।
তাঁদের মধ্যে ২৫ শতাংশ পাঁচ বছর ধরে একই সঙ্গে আরেকটি প্রেম করছে। ২৯ শতাংশ পুরুষ ও ১৯ শতাংশ নারী দ্বিতীয় প্রেমের কারণে বিয়ে বিচ্ছেদ করেছেন। ৬০ বছর বয়সের পরে এবং ৩০ বছর বয়সে একাধিক প্রেম করার প্রতি আগ্রহ প্রবল দেখা যায়। ভালোবাসা পেয়েও তাঁরা মনে করছেন তাঁরা যা চাইছেন, তা পাচ্ছেন না। জীবনে কোনো কিছু নিয়ে তাঁরা সন্তুষ্ট থাকেন না। সারাক্ষণ মন নতুন কিছু খোঁজে।
রবীন্দ্রনাথের মতো বলতে হয়, আমার মনের জানলাটি আজ হঠাৎ গেল খুলে/ তোমার মনের দিকে।
শুরু করেছিলাম মার্কেস দিয়ে। শেষটাও হোক তাঁরই কথায়। তিনি বলেছিলেন, ‘বিবাহিত জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস সুখ নয়, স্থায়ীত্ব।’

Monday, August 29, 2016

জ্বর হলেই কি প্যারাসিটামল খাওয়া যায়

0 comments
জ্বর রোগ নয়, রোগের উপসর্গ। অনেকে জ্বর হলেই নিজে নিজে প্যারাসিটামল খায়। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৪৮৭তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. প্রদীপ রঞ্জন সাহা। বর্তমানে তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে পরামর্শক হিসেবে কর্মরত আছেন।
প্রশ্ন : জ্বর বলতে আমরা কী বুঝি।
উত্তর : বলা হয়, শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পেলে সেটি জ্বর। তবে স্বাভাবিকটি কী? এটি নির্ভর করে লিঙ্গ কী, বয়স কত, বাইরের তাপমাত্রা কত, শারীরিক অবস্থা কী? এসবের ওপর। তবে আমরা যেটা প্র্যাকটিস করি মুখের তাপমাত্রা যদি ৯৯.৯ বা তার বেশি হয়, আমরা তখন তাকে জ্বর বলি। নয়তো নয়।
অ্যাডাল্ট মেডিসিনের অধিকাংশ লোক এটি বিশ্বাস করে। তবে এটি আদর্শ নয়। যদি বয়স্ক লোক হয়, এটি আরো নিচে নেমে যেতে পারে। ৯৮ দশমিকের কিছু বেশি বা ৯৯ হতে পারে। তবে প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে মুখের তাপমাত্রা যদি ৯৯.৯ হয় সেই ক্ষেত্রে আমরা জ্বর বলছি।
প্রশ্ন : আমাদের মধ্যে একটি প্রবণতা দেখা দেয় যে জ্বর হলেই দেখা যায় প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খেয়ে নিচ্ছে, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই- এ ক্ষেত্রে আপনার কী পরামর্শ।
উত্তর : যদি সাধারণ জ্বর থাকে, জ্বরের সঙ্গে অন্য কোনো বড় ধরনের উপসর্গ নেই, বড় ধরনের খারাপ কোনো লক্ষণ নেই, প্যারাসিটামল আপনি খেতে পারেন। তবে যদি না আপনার আগে থেকে লিভার, কিডনি সংক্রান্ত রোগে না ভোগেন। যদি লিভার সংক্রান্ত রোগে ভোগেন তাহলে প্যারাসিটামলের পরিবর্তে আইবোপ্রোফেন আপনি খেতে পারেন।
প্রশ্ন : জ্বরের ক্ষেত্রে একটি জিনিস দেখা যায়, দু-দিনতিন অপেক্ষা করার পর অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে নিচ্ছে। সেই ক্ষেত্রে আপনার পরামর্শ কী?
উত্তর : সে ক্ষেত্রে আমি বলব রোগীর তরফ থেকে প্যারাসিটামল উনি শুরু করল, কিন্তু অ্যান্টিবায়োটিক শুরু করা তার জন্য ঠিক সমুচিত হবে না। যদি ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পর তিনি এমন কোনো লক্ষণ দেখেন যে ব্যাকটেরিয়া ইনফেকশন হয়েছে বলে চিকিৎসকের কাছে অনুমান হয়েছে, সেখানে চিকিৎসক অ্যান্টিবায়োটিক দিতেই পারে। দেখা যায়, গলায় দুটো টনসিল ফুলে আছে, সেখানে ডাক্তার প্রথম দিনে আপনাকে অ্যান্টিবায়োটিক দিতেই পারে। তবে ডাক্তার যদি এমন কিছু না পান তাহলে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া ঠিক হবে না।
আমার অভিজ্ঞতায় আমরা জিজ্ঞেস করি আপনি কি জ্বর কখনো মেপে দেখেছেন? বলল, আমি দেখিনি। আমাদের চিকিৎসা বিজ্ঞানে অনেক কিছু মাপতে পারি, অনেক কিছু মাপতে পারি না। আবার জ্বর মাপতে পারি, প্রেসার মাপতে পারি, দৃষ্টিশক্তি মাপতে পারি। তবে অনুভূতি মাপার তো কোনো উপায় নেই। এই সমস্ত ক্ষেত্রে আমার যে পরামর্শ জ্বর জ্বর ভাব বলছে, তবে অন্যান্য সিস্টেমিক কোনো বিষয় নেই। সে ক্ষেত্রে আমি যেটি বলি, একটা চার্ট দিয়ে দিই। যে এই সময়ে এই তারিখে জ্বরগুলো দেখে রেকর্ড করে নিয়ে আসেন। তখন আমি এবং আমার রোগী বসে শেয়ার করব কোনটিকে জ্বর বলতে চান? বিশেষ ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় রক্তচাপ হয়তো ভালো নেই। হয়তো সে কোনো কারণে বিরক্ত। অনেক কারণেই আপনার হালকা জ্বর জ্বর ভাব লাগতে পারে। কারো ওপর রেগে গেলেন, তখনো কিন্তু জ্বর জ্বর লাগতে পারে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কোনো কারণ পাওয়া যায় না। এখানে আসলে মানসিক চিকিৎসা প্রয়োজন।
প্রশ্ন : আমরা জানি জ্বর কোনো রোগ নয়, রোগের উপসর্গ। তা হলো জ্বর হলে কি আমরা পরবর্তীকালে বড় কোনো রোগের আশঙ্কা করব?
উত্তর : আসলে তো এখন অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সুযোগ চলে আসছে। আমরা এগুলো ব্যবহার করতে পারি। আমাদের শাস্ত্রে একটি বিষয় আছে, জ্বর কিন্তু কারণ জানি না। অধিকাংশ রোগী ভালো হয়ে যায়। তবে সামান্য কিছু রোগীর ক্ষেত্রে সব পরীক্ষা করার পরও আমরা কারণ নির্ণয় করতে পারি না। সেখানে রোগীর সঙ্গে চিকিৎসকের একটি দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে যায়। এত বড় পণ্ডিত, এত ব্ড় জায়গায় আসলাম। কিন্তু আমার জ্বর তো সারাতে পারছে না। যদি ১০১-এ বেশি জ্বর, তিন সপ্তাহের বেশি, এক সপ্তাহ হাসপাতালে থেকে সব পরীক্ষা করার পরও কারণ নির্ণয় করতে না পারি, ফিবার অব আননোন অরিজিন। মানে জ্বর, তবে এর কারণ জানি না। সেখানে আমাকে প্যারাসিটামল দেওয়া এবং পর্যবেক্ষণ করা ছাড়া আমার কিছু করণীয় নেই। প্রথম পরীক্ষায় হয়তো কিছু আসেনি। দ্বিতীয় বা তৃতীয়বারের পরীক্ষায় হয়তো কিছু আসবে। প্রথমবারে হয়তো কিছু পেলান না, পরে কোনো কিছু আসবেই। তাই অপেক্ষা করতে হবে। তবে চিকিৎসকরা অপেক্ষা করার জন্য প্রস্তুত তবে রোগীরা অপেক্ষা করতে চায় না।
প্রশ্ন : সেই ক্ষেত্রে রোগীদের আপনারা কীভাবে পরামর্শ দেন?

উত্তর : আমি ব্যক্তিগত জীবনে যেটা করি, রোগীদের বসাই, সব পরীক্ষাগুলো নিয়ে বসি, এগুলো দেখিয়ে রোগীকে আমরা যতদূর সম্ভব বোঝানোর চেষ্টা করি। এটা সুখের কথা যে মোটামুটি আমরা সময় দিলে রোগীরা বোঝে। যদি আমি রোগীকে পয়েন্ট টু পয়েন্ট বুঝাই, এখানে দ্বন্দ্ব দেখা দিতেই পারে। তখন চিকিৎসককে দোষারোপ করা স্বাভাবিক। অস্বাভাবিক কিছু নয়। কারণ উনি তো মেডিকেল প্রফেশনের নয়। আমি মনে করি, আমি সময় দিয়ে যদি ওনাকে বোঝাই, অর্থাৎ পয়েন্ট আউট করি, আমার মনে হয় যে উনি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বুঝবেন। দু-এক ক্ষেত্রে তো ব্যতিক্রম হতে পারে।

Wednesday, August 24, 2016

হেঁচকি কমানোর উপায়

0 comments
হেঁচকি বা হিক্কা বেশ প্রচলিত একটি সমস্যা। এটা মাঝে মাঝে আমাদের বেশ অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। তবে কিছু বিষয় খেয়াল রাখলে এবং পালন করলে হেঁচকি দূর করা সম্ভব। ‘ডায়াফ্রাগ্ম’ নামক পেশিটির, যা পেট ও বুককে আলাদা রাখে, অনৈচ্ছিক সংকোচনের কারণে হেঁচকি হয়। এই সংকোচন এক মিনিটে কয়েকবার হয়। ফলে আমরা দ্রুত শ্বাস নিতে বাধ্য হই এবং সেই সঙ্গে আমাদের ‘ভোকাল কর্ড’ বা স্বরতন্ত্রী তাৎক্ষনিকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। আর তখনই হেঁচকি ওঠে।

হেঁচকি কমানোর কয়েকটি ঘরোয়া সমাধান

ঠাণ্ডা পানি: এক গ্লাস ঠাণ্ডা পানি পান করে শরীরকে একটা ঝাঁকি দিতে পারেন। ফলে আপনার শরীর এই ঝটকা সামলাতে ব্যস্ত থাকবে, অপরদিকে হেঁচকি কমে যাবে। ঠাণ্ডা পানি দিয়ে কুলিকুচি কিংবা বরফ মুখে নিয়ে চুষে খেলেও একই উপকার মিলবে।


শ্বাস আটকে রাখা: এই পদ্ধতিতে রক্তে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যায়, মনকে অমনযোগী করে এবং হেঁচকি থেমে যায়। বড় একটা দম নিয়ে যতক্ষণ সম্ভব দম আটকে রাখতে হবে, একটু বাতাস বের হতে দেওয়া যাবে না। চাপ বাড়ানোর জন্য দুই কানে আঙ্গুল দিয়ে বন্ধ করে নিতে পারেন।

চিনি: চিনি খেলে ‘ভেগাস’ নামক স্নায়ু উদ্দীপ্ত হয়, ফলে শরীর হেঁচকির কথা ভুলে যায়। চিনি বা চিনির কিউব মুখ নিয়ে চাবাতে থাকলে ভালো উপকার পাওয়া যাবে। তবে ডায়বেটিস থাকলে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা যাবে না।

পিনাট বাটার: পিনাট বাটারের আঠালো উপাদান শ্বাস-প্রশ্বাসের তাল নষ্ট হয়, ফলে হেঁচকি কমে। তাই পিনাট বাটারের গিলতে পারে। কিংবা এর পরিবর্তে আমন্ড বাটার, টফি ইত্যাদিও ব্যবহার করতে পারেন।


হেঁচকি উঠলে প্রাথমিকভাবে যা করবেন এই বিষয়ে চিকিৎসকদের পরার্মশ :
•    কিছুক্ষণ শ্বাস বন্ধ করে রাখতে পারেন।
•    একটি ছিদ্রহীন ঠোঙ্গা বা কাগজের ব্যাগে মুখ আটকে দম ছাড়ুন। আবার ওটা থেকে দম নিন। খেয়াল রাখতে হবে ঠোঙ্গার ভেতর যেন বাইরের বাতাস না ঢুকে।
•    এক গ্লাস বরফকুচি ঠাণ্ডা পানি খেতে পারেন। স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিও খেতে পারেন। তবে ঠাণ্ডা পানি এ ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে।
•    জিহ্বা সামনের দিকে টেনে ধরে রাখতে পারেন। 
•    হেঁচকি ওঠা ব্যক্তিকে অন্যমনস্ক করে দিলেও কাজে আসতে পারে। যেমন : তাকে উদ্ভট কিছু বলা- তুমি না কি মিথ্যা বলেছ বা তুমি না কি ওই কাজটি করনি ইত্যাদি। 
•    লেবুতে কামড় দেওয়া যেতে পারে বা খাওয়া যেতে পারে।
•    জিহ্বার নিচে আধা চা চামচ চিনি দিয়ে রাখতে পারেন। যতক্ষণ পর্যন্ত চিনি না গলে ততক্ষণ পর্যন্ত রাখতে হবে। এভাবে কয়েকবার দিতে পারেন। 
•    আঙুল দিয়ে জিহ্বার পেছনে শক্ত তালুতে হালকা স্পর্শ করতে হবে। হালকা স্পর্শ করলে এটা কমে যাবে। 


প্রতিরোধ
হেঁচকি প্রতিরোধে ধীরে ধীরে খাবার খেতে হবে। কোমল পানীয় বেশি পান করা যাবে না। ভারি খাবার খাওয়া এড়িয়ে যেতে হবে। এ ছাড়া যদি কোনো ওষুধের কারণে এই সমস্যা হয় তখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সেটা পরিবর্তন করার ব্যবস্থা করতে হবে। 

আমড়ার পুষ্টিগুণ

0 comments
ত্বক, দাঁত ও হাড়ের সুস্থতার জন্য আমড়া বেশ উপকারী।


এটি ভিটামিন সি’র ভালো উৎস। ত্বক উজ্জ্বল করতে ও নানা রকমের ত্বকের সমস্যা যেমন- ব্রণ, ফুস্কুড়ি ইত্যাদি সমাধানে আমড়া বেশ উপকারী।
ঠাণ্ডাজনিত নানা রকমের সমস্যা যেমন, হাঁচি, কাশি, সর্দি ইত্যাদি প্রতিকারে আমরা ওষুধের মতো কাজ করে।

আমড়া আঁশজাতীয় ফল। এটি নিয়মিত খেলে হজমের সমস্যা সমাধান হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। আমড়া রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। ফলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের সম্ভাবনা কমে।

এই ফলে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ ভালো থাকায় এটি দাঁত ও হাড়ের জন্য বিশেষ উপকারী। তাছাড়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভালো উৎস। ক্যান্সারসহ নানা রকমের রোগপ্রতিরোধে এটি সহায়তা করে।

আমড়ায় আয়রনের পরিমাণ বেশি থাকায় এটি রক্তস্বল্পতা কমাতে ও রক্তে হমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
যারা ডায়েট করছেন তাদের জন্য নিয়মিত আমড়া খাওয়া প্রয়োজন, ওজন কমাতেও আমড়া সাহায্য করে।  

Tuesday, August 23, 2016

তাল দিয়ে নানা পদের খাবার

0 comments
ভাদ্র মাসে তাল পাকে। তাই বাজারেও এখন পাকা তাল পাওয়া যায়। তাল দিয়ে তৈরি করতে পারেন বিভিন্ন পদের খাবার।

তালের মাফিন কেক




উপকরণ: মাখন ১০০ গ্রাম, ময়দা ১০০ গ্রাম, ডিম ৩ বা ৪টি, চিনি ১০০ গ্রাম, কেক ইমপ্রোভার ৩ গ্রাম, বেকিং পাউডার ৩-৪ গ্রাম, তালের ক্বাথ ৪০ মিলিলিটার, কর্নফ্লাওয়ার ১০ গ্রাম (তালের সঙ্গে মেশাতে হবে), ঘি ১ চা-চামচ, চিনি সিরাপ ২ চা-চামচ।


প্রণালি: চিনি ও মাখন একসঙ্গে বিট করতে হবে। যখন চিনি গলে আসবে, তখন একটা একটা করে ডিম দিতে হবে। তারপর কেক ইমপ্রোভার দিতে হবে। আবারও বিট করতে হবে। ময়দা আর বেকিং পাউডার একসঙ্গে দিতে হবে। তারপর স্প্যাচুলা (নাড়ানোর জন্য চ্যাপ্টা চামচ) দিয়ে আস্তে করে নাড়তে হবে। এরপর তালের ক্বাথে মিশিয়ে হালকাভাবে নাড়তে হবে। নেড়ে বেকিং ডিশে ঢেলে দিন। প্রি হিট ওভেনে ১৮০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট বেক করুন। মাঝে একটু ছুরি ঢুকিয়ে দেখতে হবে। কেক হয়ে গেলে ওভেন থেকে নামিয়ে চিনি সিরাপ ব্রাশ করে দিন। সবশেষে ঘি দিয়ে ব্রাশ করতে হবে। 

তালের লাচ্ছি


উপকরণ:
জ্বাল দেওয়া তালের ক্বাথ আধা কাপ, মিষ্টিদই ১ কাপ, ভ্যানিলা আইসক্রিম ১ কাপ, তরল দুধ ১ কাপ ও চিনির সিরাপ ২ টেবিল চামচ।
প্রণালি: সবগুলো উপকরণ একসঙ্গে ব্লেন্ড করে গ্লাসে ঢেলে পরিবেশন করুন।

তাল ফুলুরি



উপকরণ: তাল ১টি (তাল থেকে তালের ক্বাথ বের করে নিতে হবে), আতপ চালের গুঁড়া ১০ গ্রাম, ময়দা ৫০ গ্রাম, পাকা কলা ৫টি, নারকেল ১টি (কুরানো), আখের গুড় ৩০০ গ্রাম, চিনি ১০০ গ্রাম ও তেল পরিমাণমতো।

প্রণালি: তালের ক্বাথের সঙ্গে আতপ চাল গুঁড়া, ময়দা, পাকা কলা (চটকানো), কুরানো নারকেল, আখের গুড় ও চিনি ভালো করে মেখে নিতে হবে। এরপর মিশ্রণটি থেকে একটি শক্ত মণ্ড তৈরি করে নিতে হবে। তারপর কড়াইয়ে তেল গরম করে নিয়ে আঙুলের সাহায্যে মিশ্রণটি ছোট ছোট ফুলুরির মতো করে গরম তেলে ছাড়তে হবে। ভাজা হলে তেল থেকে তুলে পরিবেশন করুন।

তালের রসাল পিঠা



উপকরণ: পাকা তাল ১টি, চাল বাটা ২৫০ গ্রাম, নারকেল ১টি (বাটা), কাজু বাদাম ১০০ গ্রাম, কিশমিশ ২৫ গ্রাম, চিনি ২০০ গ্রাম, এলাচি ৪টি (ছোট), সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, আখের গুড় ১০০ গ্রাম ও ময়দা ৫০ গ্রাম।

প্রণালি: প্রথমে পানি আর চিনি দিয়ে রস তৈরি করতে হবে এবং রসের মধ্যে এলাচি দিন। তালের ক্বাথ, নারকেল বাটা, চাল বাটা, কাজু বাদাম, কিশমিশ একসঙ্গে ভালো করে মেশাতে হবে। মিশ্রণের মধ্যে ময়দা আর পানি দিয়ে মাখতে হবে। কড়াইতে তেল গরম করে বড়ার মতো ভেজে চিনির রসে ফেলুন। রস থেকে তুলে কাজু বাদাম ও কিশমিশ ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।

তাল ক্ষীর



উপকরণ: তালের ঘন ক্বাথ ১ কাপ, ঘন দুধ ১ লিটার, নারকেল (কুরানো) ১ কাপ, চিনি ১ কাপ, পেস্তা ও কাজু বাদামের কুচি ২ টেবিল চামচ ও কনডেন্সড মিল্ক ৩ কাপ।

প্রণালি: এক লিটার দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করুন। ননস্টিক প্যানে তালের ক্বাথ দিয়ে মাঝারি আঁচে অনবরত নাড়ুন। দু-একবার ফুটে উঠলে নারকেল কুরানো, ঘন দুধ, চিনি দিয়ে অনবরত নাড়ুন। ঘন হয়ে গেলে ভালো মানের কনডেন্সড মিল্ক দিন। যখন তালের সুগন্ধি বের হবে, তখন চুলা বন্ধ করে দিতে হবে। পরিবেশন পাত্রে ঢেলে পেস্তা, কাজু বাদামের কুচি দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করতে হবে।

তালের বিবিখানা পিঠা



উপকরণ: জ্বাল দেওয়া তালের ঘন রস ২ কাপ। চালের গুঁড়া ২ কাপ। ময়দা আধা কাপ। গুঁড়াদুধ ১ কাপ। কুড়ানো নারিকেল ১ কাপ। ঘন তরল দুধ ১ কাপ। চিনি ২ কাপ। তেল ১ কাপ। ডিম ৪টি। বেইকিং পাউডার ২ চা-চামচ। এলাচগুঁড়া ১ চা-চামচ।

এবার অল্প অল্প করে চালের গুঁড়ার মিশ্রণ খুব ভালোভাবে তালের রসের মিশ্রণে মেশান। খেয়াল রাখবেন যেন চালের গুঁড়া দানা দানা হয়ে না থাকে।

বেইকিং ডিশে তেল ব্রাশ করে শুকনা ময়দা ছিটিয়ে নিয়ে তাতে এই মিশ্রণ ঢেলে দিন। ইলেকট্রিক ওভেন ১৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় প্রিহিট করে নিন।
ওভেনের নিচ থেকে দুই নম্বর তাকে মিশ্রণের ডিশ রাখুন।
প্রথম ৩০ মিনিট ১৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এবং পরের ৩০ মিনিট ১৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বেইক করে নিন। হয়ে গেলে পুরোপুরি ঠাণ্ডা করে প্লেটের ওপর উল্টিয়ে বের করে কোড়ানো নারকেল দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

তালের দুধবড়া

উপকরণ:
বড়ার জন্য- জ্বাল দেওয়া তালের ঘন রস আধা কাপ। চালের গুঁড়া দেড় কাপ। চিনি আধা কাপ। গুঁড়াদুধ ১ কাপ। এলাচগুঁড়া ১ চা-চামচ। লবণ সামান্য। তেল ভাজার জন্য।

তেল ছাড়া বাকি সব উপকরণ একসঙ্গে মাখিয়ে আধা ঘণ্টা রেখে দিন। মাঝারি আঁচে তেল গরম করে, আঁচ কমিয়ে একটা একটা করে বড়া বানিয়ে তেলে ছেড়ে সোনালি করে ভেজে পেপার টাওয়েলের ওপর তুলে রাখুন।

দুধের মিশ্রণের জন্যে- তরল দুধ দেড় লিটার। কনডেন্সড মিল্ক আধা টিন। এলাচ গুঁড়া সামান্য।

পদ্ধতি: দেড় লিটার দুধ জ্বাল করে এক লিটার করে নিন। এবার এতে কনডেন্সড মিল্ক ও এলাচগুঁড়া মেশান। ফুটে উঠলে চুলা থেকে নামিয়ে ভেজে রাখা বড়াগুলো গরম দুধের মিশ্রণে ছেড়ে ঢেকে রাখুন।
ঠাণ্ডা হলে পেস্তা বাদামকুচি দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

স্বাস্থ্যবটিকা :: কোষ্ঠকাঠিন্য

0 comments

কোষ্ঠকাঠিন্যের যন্ত্রণায় অনেকে সারা বছরই ভুগে থাকেন। মাঝেমধ্যে নানা কারণে মল কঠিন হতেই পারে। তার মানেই যে কোনো রোগে ভুগছেন, তা নয়। যদি সপ্তাহে তিনবারের কম মলত্যাগ হয়, তখনই একে কোষ্ঠকাঠিন্য বলে। এ জন্য অনেকে ওষুধ, সিরাপ এবং মলদ্বারে দেওয়ার সাপোজিটরি ওষুধ প্রতিনিয়ত ব্যবহার করে থাকেন, যা মোটেও উচিত নয়। নিয়মিত এসব ওষুধ ব্যবহার করলে সেটা অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়। মলদ্বারের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা ব্যাহত হয়।
তাই চট করে ওষুধ না ব্যবহার করে খাদ্যাভ্যাস পাল্টে দেখুন সমস্যার প্রতিকার হয় কি না।
কী খাবেন?
বেশি করে শাকসবজি ও আঁশযুক্ত খাবার খান। খোসাসহ ফলমূলে আঁশ বেশি। গোটা শস্য, যেমন ভুট্টা বা গমের তৈরি খাবার, ডাল, বীজজাতীয় খাবারেও আঁশ আছে। ইসবগুলের ভুসিও খেতে পারেন। প্রচুর পানি পান করুন।
কী কী খাবার কম খাবেন?
লাল মাংস কম খেতে হবে। চিপস, ভাজাপোড়া খাবার, কফি, চকলেট ইত্যাদি এড়িয়ে চলা ভালো। যেসব খাবার তৈরিতে প্রচুর চিনি ব্যবহৃত হয়, সেসব খাবারও কোষ্ঠকাঠিন্য করে। যেমন বেকারির খাবার—কেক, পেস্ট্রি ইত্যাদি। অনেক সময় কাঁচা কলা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। যাঁরা আয়রন ক্যাপসুল খান, তাঁদের কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া স্বাভাবিক। খাদ্যাভ্যাস পাল্টেও সমস্যার সমাধান না হলে নিজে নিজে ওষুধ না খেয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।



ডা. গোবিন্দ চন্দ্র রায়
মেডিসিন বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

কিডনির সমস্যায় সব ফল খেতে মানা?

0 comments
ডাক্তার বলেছেন, কিডনিতে সামান্য সমস্যা আছে। ক্রিয়েটিনিন নাকি একটু বেশি। আর প্রস্রাবেও আমিষ যাচ্ছে। দীর্ঘদিনের ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের এমন একটা পর্যায় আসেই। ব্যস, অমনি নানান খাবার-দাবারে নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়ে গেল। ডাল ও মাংস নিষেধ, এমনকি খেতে মানা সব ধরনের ফলমূলও। পানিও মেপে খেতে হবে। কিন্তু আসলেই কি তাই?


* ক্রনিক কিডনি ডিজিজ বা দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগ ঠেকাতে প্রথমত চাই রক্তে শর্করা ও রক্তচাপের সুনিয়ন্ত্রণ। এটা না করতে পারলে কেবল খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনে কিডনি ভালো রাখা যাবে না।

* যেসব কিডনি রোগীর শরীরে পানি আসে বা ফুলে যায়, তাদের ক্ষেত্রে দৈনিক পানির পরিমাণ চিকিৎসক মেপে দিতে পারেন। নয়তো পানি নিয়ে ভাবনার কিছু নেই। তবে সেই সঙ্গে কমাতে হবে সোডিয়াম বা রান্নার লবণের পরিমাণও। এটি রক্তচাপ যেমন বাড়ায়, তেমনি পানি জমতেও সাহায্য করে।

* অসুস্থ কিডনি অনেক সময় রক্ত থেকে পটাশিয়াম নিষ্কাশন ঠিকমতো করতে পারে না। এতে রক্তে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেড়ে যায়। মাঝেমধ্যে রক্তে ইলেকট্রোলাইট পরীক্ষা করা হলে বিষয়টা ধরা পড়ে। যাদের এই প্রবণতা আছে তারা উচ্চ পটাশিয়ামযুক্ত ফলমূল এড়িয়ে চলাই ভালো। বেশি পটাশিয়াম আছে কলা, কমলা, ডাব, তরমুজ, টমেটো, কিশমিশ, অ্যাভোকেডো ইত্যাদি ফলে। তবে পটাশিয়ামের পরিমাণ কম এমন ফল যেমন আপেল, আঙুর, আনারস, স্ট্রবেরি ইত্যাদি খেতে বাধা নেই।

* কিডনি সমস্যায় অনেক সময় ফসফরাস বা ফসফেটের পরিমাণও যায় বেড়ে। ভুট্টার তৈরি খাবার, কোলা-জাতীয় পানীয়, কিছু বাদামে ফসফেটের পরিমাণ বেশি। তবে চিকিৎসক চাইলে ফসফেট বাইন্ডার ওষুধের মাধ্যমে ফসফরাস নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।

* কিডনি রোগীদের ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ‘ডি’র অভাব দেখা দেয়, রক্তস্বল্পতা হয়। তাই ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি ও আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।


ডা. মৌসুমী মরিয়ম সুলতানা
মেডিসিন ও কিডনি বিশেষজ্ঞ, ইব্রাহিম জেনারেল হাসপাতাল, মিরপুর, ঢাকা

ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে ৫ পরামর্শ

0 comments

দৈনন্দিন জীবনে ছোট ছোট কিছু অভ্যাস মানুষকে ঠেলে দেয় ক্যানসার নামের প্রাণঘাতী রোগের দিকে। কিছু অভ্যাস ছেড়ে দিলে পরিপাকতন্ত্রের ক্যানসারের ঝুঁকি কমে।

পান, সুপারি, সিগারেটসহ যেকোনো তামাকজাত পণ্য বর্জনীয়।




লবণের সাহায্যে প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং ধোঁয়ায় পুড়িয়ে রান্না করা খাবার (স্মোকড ফুড) ঝুঁকিপূর্ণ। গরু-খাসির মাংস এবং প্রাণিজ চর্বি থেকে তৈরি করা খাবার কম খাওয়া উচিত।



প্রচুর তাজা ফলমূল এবং শাকসবজি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। দুধ বা দুধের তৈরি খাবার রাখুন খাদ্যতালিকায়। মাছের তেলও ভালো। সামুদ্রিক মাছ ও আখরোট খান। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।



ক্যানসার প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে এর চিকিৎসায় ভালো ফল পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। দৈনন্দিন মলত্যাগের অভ্যাসে বড় কোনো পরিবর্তন, কিছুদিন পাতলা পায়খানা আবার কিছুদিন কোষ্ঠকাঠিন্য, মলের সঙ্গে রক্ত, পেটে কোনো চাকা অনুভব করা হতে পারে পরিপাকতন্ত্রের ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণ। হঠাৎ ওজন হ্রাস, হঠাৎ অতি অম্লত্ব, অরুচি বা বমি হলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।



চল্লিশোর্ধ্ব ব্যক্তিদের ঝুঁকি এড়াতে বছরে একবার কিছু পরীক্ষা করানো প্রয়োজন। যেমন-রক্তের হিমোগ্লোবিন, রক্তশূন্যতা থাকলে মলে রক্তের উপস্থিতি, যকৃতের অবস্থা ইত্যাদি। পরিবারের কেউ পরিপাকতন্ত্রের ক্যানসারে আক্রান্ত হলে অন্যদেরও ঝুঁকি থাকতে পারে।



ডা. রাফিয়া আলম
মেডিসিন বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

Saturday, August 13, 2016

বিরিয়ানি

0 comments
বলা হয়, বিরিয়ানিতে কমপক্ষে ১৫ ধরনের মসলার ব্যবহার হয়। আর বিরিয়ানি কীভাবে এলো তা নিয়ে আছে নানা কথা। খাবারটি উপমহাদেশে বিপুল জনপ্রিয়। কিন্তু ইতিহাসবিদরা একমত, খাবারটি উপমহাদেশের বাইরে থেকে এসেছে। আর সবারই চোখ আফগানিস্তান, ইরান ও অন্যান্য আরব এলাকার দিকে।
তবে আসুক না পশ্চিম থেকে। উপমহাদেশের বিখ্যাত মসলায় বিরিয়ানি মেলেছে তার আসল সৌন্দর্য, পেয়েছে ভোজনরসিকদের ভালোবাসা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য বেটার ইন্ডিয়া’ বিরিয়ানির আদি বাড়ির সন্ধান করার চেষ্টা করেছে।
ব্যারাকে জন্ম বিরিয়ানির?
মোগল সম্রাট শাহজাহানের স্ত্রী মমতাজ মহলের শখ হল ব্যারাকে যাবেন। মোগল সেনাদের দেখতে চান তিনি। যেই ভাবা সেই কাজ। গিয়ে তিনি অবাক হলেন। সেনাদের এ কী অবস্থা? মোগল সেনারা দুর্বল আর অপুষ্টিতে ভুগছে। বাবুর্চির সরদারকে ডাক দিলেন মমতাজ। নির্দেশ দিলেন চালের সঙ্গে মাংস মিশিয়ে রান্না করার জন্য। সঙ্গে যেন ঘিও থাকে। ঘিয়ে ভাজা হলো চাল। মেশানো হলো মাংস। আর ওই রান্নায় মিশল বাদামসহ কয়েক ধরনের মসলা। ওই স্বাদ কেবল সেনাদের মুখেই লাগল তা না, পৌঁছাল মোগল দরবার পর্যন্ত।
বিরিয়ানির জন্ম প্রসঙ্গে ইতিহাসবিদদের একটি দল মোগলদের পক্ষে। তাঁদের কয়েকটা যুক্তির মধ্যে মমতাজের ওই কাহিনী একটি।
সেনাদের নিয়েই প্রচলিত আছে বিরিয়ানির আরেকটি কাহিনী। তুর্ক-মোঙ্গল শাসক তৈমুর লং মধ্য এশিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা দখলে নিয়ে নেন। আর তার অন্যতম একটা পথ ছিল ভারত। ১৩৯৮ এর দিকে তৈমুরের নাগালে চলে আসে ভারতের কিছু অংশও। এ এলাকায় সেনাদের খাবারটা কী হবে? সেনাদের তো হৃষ্টপুষ্ট রাখা চাই। যেই ভাবা সেই কাজ। চালের সঙ্গে মিশল মাংস আর মসলা। বিরিয়ানির স্বাদে তৈমুরের বাহিনী সে রকমের মুগ্ধ।
দক্ষিণ ভারতে যে কাহিনীটা প্রচলিত তার সঙ্গেও সেনারা জড়িত। তামিল সাহিত্যে ‘ওন সরু’ নামে একটা খাবারের কথা আছে। খ্রিস্টপূর্ব দুই হাজার বছর আগে ওন সরুর নাম পাওয়া যায়। বলা হয়, তখন যোদ্ধাদের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য চালের সঙ্গে মাংস, ঘি, হলুদ, মরিচসহ বেশ কিছু মসলা মেশানো হয়। আর ওভাবেই তৈরি হয় ওন সরু। ওন সরুই কি বিরিয়ানির আদি রূপ? গবেষণা চলছে। চলবে। তবে দক্ষিণ ভারতে বিরিয়ানি আনার জন্য একপক্ষ আরব ব্যবসায়ীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায়। ওই পক্ষের দাবি মালাবার উপকূলীয় এলাকা দিয়ে আরবরা আসত ব্যবসার জন্য। আর নিয়ে আসে ওই খাবার।
বিরিয়ানির উৎস খুঁজতে গিয়ে আবার ইতিহাসবিদদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ভাষাবিদরাও। এদেরই এক পক্ষ বলছে, বিরিয়ানি শব্দটা এসেছে পার্সি শব্দ ‘বিরিয়ান’ থেকে। যার অর্থ রান্নার আগে ভেজে নেওয়া। আর পার্সি শব্দ ব্রিনিজ মানে হচ্ছে চাল। এ পক্ষের দাবি বিরিয়ানিটা পশ্চিম এশিয়া থেকেই যায় ভারতে।
বিরিয়ানির কথা হবে আর হায়দরাবাদের কথা আসবে না, তা কি হয়। আসে লখনৌর নামও। হায়দরাবাদের নিজাম আর লখনৌর নবাবদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় বিরিয়ানি। আর এ দুই অঞ্চলেই হয় বিরিয়ানি নিয়ে নতুন নতুন কাজ। যা পরে ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র।
বিরিয়ানির বাহার
উত্তর ভারতে বিরিয়ানিতে দেওয়া হয় বাদামি ও লম্বা চাল। যা এখন বাসমতি চাল নামে পরিচিত। দক্ষিণ ভারতে ব্যবহৃত হয় ওই এলাকার চাল-জিরা, কাইমা, জিরাকাশালা ইত্যাদি। এখন বিরিয়ানি রূপ পেয়েছে বিভিন্ন রকমের। তবে ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে কয়েক ধরনের বিরিয়ানির নাম।

মোগলাই বিরিয়ানি
মোগল সম্রাট আর তাদের স্বজনরা বিরিয়ানি পছন্দ করতেন। তবে উনাদের মুখে স্বাদ লাগতে হতো। প্রচুর মাংস থাকত ওই বিরিয়ানিতে। আর কেওড়া জল। গন্ধেই মাতোয়ারা।
হায়দরাবাদি বিরিয়ানি
মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের অধীনে হায়দরাবাদ এলো। তাঁর বাবুর্চি ৫০ ধরনের রান্না করে পরিবেশন করতেন। চিংড়ি, হরিণ এমনকি খরগোশের মাংসও। তবে আওরঙ্গজেবের মুখে লাগে এ এলাকার বিরিয়ানি। বিশেষ করে জাফরানের স্বাদে মুগ্ধ হন সম্রাট। কাচ্চি বিরিয়ানির ধরনটা এখান থেকেই আসে বলে জানা যায়।

ক্যালকাটা বিরিয়ানি
ব্রিটিশরা অযোধ্যা থেকে বের করে দিল নবাব ওয়াজেদ আলী শাহকে। কলকাতায় এলেন তিনি। নিয়ে এলেন পছন্দের খাবার বিরিয়ানি। ক্যালকাটা বিরিয়ানিতে আলু থাকে। আর এ আলুর জন্যই বিরিয়ানির স্বাদ অন্যদের চেয়ে আলাদা। ওয়াজেদ আলী সাহেবের পছন্দ বলে কথা।

Friday, August 12, 2016

তিন গম্বুজ শাহী মসজিদ, রাজশাহী

0 comments
রাজশাহী শহরের কোলাহল ঠেলে চলে যেতে হবে উত্তরের দিশায়। ১৫ কিলোমিটার পথ পেরোলেই পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভার বাগধানী কাচারীপাড়া। আর সেখানেই রয়েছে ২২৩ বছর পুরোনো তিন গম্বুজ বিশিষ্ট ঐতিহাসিক শাহী জামে মসজিদ। এখন পর্যন্ত রাজশাহী জেলার যে ক’টি প্রাচীন নিদর্শন রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম এটি।


মসজিদের একপাশ দিয়ে চলে গেছে সবুজ বেষ্টনীর রাজশাহী-তানোর সড়ক। অন্যপাশ দিয়ে বয়ে চলেছে বারনই নদী। উন্নত যোগাযোগের জন্য এর উপর দিয়ে সংযোগ সেতুও নির্মিত হয়েছে। এমন সতেজ-শ্যামল প্রান্তরে প্রাচীন আমলের দৃষ্টি নন্দন তিন গম্বুজ মসজিদটি আজও দাঁড়িয়ে আছে মাথা উঁচু করে।

ঐতিহ্যবাহী মসজিদটির দৃষ্টিনন্দন নির্মাণ শৈলী যে কোনো পর্যটককে বিমোহিত করবে। মসজিদটির ভেতরে ঢুকতেই সদর দরজার শিলা লিপিতে চোখে পড়বে ফার্সি হরফের লেখা। যেখানে কালো অক্ষরে লেখা আছে মুন্সি মোহাম্মদ এনায়েতুল্লাহ বাংলা ১২শ’ সালে এ মসজিদটি নির্মাণ করেছেন।

যারা নান্দনিক সৌন্দর্যের খোঁজে দেশের আনাচে-কানাচে চষে বেড়ান, তাদের পিপাসা মেটাবে এই মসজিদ। মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৮০ ফুট এবং প্রস্থ ৪০ ফুট। আয়তন হচ্ছে ৩ হাজার ২০০ বর্গফুট।

মসজিদটির চার কোনায় নকশা খচিত গম্বুজ আকৃতির মনোরম পিলার রয়েছে। মসজিদটিতে তিনটি মেহেরাব, তিনটি দরজা, দু’টি জানালা ও একটি মিনার রয়েছে। এছাড়াও মসজিদের চারপাশের দেয়ালের বাইরে ও ভেতরে চিনামাটি খচিত নকশা রয়েছে। যা এক পলকেই ভালো লাগবে পর্যটকদের।

একটা সময় ছিল যখন বারনই নদীই একমাত্র পথ ছিল বাগধানী গ্রামের। তখন এই মসজিদের পাশে ঘাট ছিল। নদী তীরের এই ঘাট ঘেঁষে সপ্তাহে দু’দিন করে হাটও বসতো। এটাই ছিল পবার সবচেয়ে পুরোনো হাট। এখন সেই জমজমাট অবস্থা নেই। তবে শুক্র ও মঙ্গলবার এখনও হাট বসে সেখানে।