রোজকার রান্নার অন্যতম উপকরণ পেঁয়াজ।
ঝাঁঝালো এ মসলা উপাদানটি কাটার সময় চোখ জ্বালা করে, চোখে পানি চলে আসে। না
কেঁদে পেঁয়াজ কাটার কিছু পদ্ধতি রয়েছে। আচ্ছা, তার একটু বলে নেই পেঁয়াজ
কাটার সময় চোখে পানি আসে কেন-
কাটার পর পেঁয়াজের কোষগুলো ভেঙে যায়। ভেতর থেকে নির্গত হতে থাকে সালফেনিক
অ্যাসিড, যা পেঁয়াজের অন্য এনজাইমের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করে। এ কেমিক্যাল
প্রতিক্রিয়া একটি অস্থিতিশীল সালফার গ্যাস তৈরি করে। যা বাতাসের মৃদু
ঝাপটায় আমাদের চোখে এসে পড়ে। সালফেনিক অ্যাসিডের কারণে চোখ জ্বালা করে ওঠে ও
চোখে পানি আসে।
আরও একটি কথা, পেঁয়াজ কাটার পর হাতে এক
প্রকার গন্ধ হয়। তার জন্যও দায়ী এই সালফার উপাদানগুলো। কিন্তু রান্নার সময়
এই এনজাইম নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। ফলে তা আর চোখ জ্বালায় না। এবার আসা যাক কথার
আসল প্রসঙ্গে। জেনে নিন চোখে জল ছাড়াই পেঁয়াজ কাটার সাতটি পদ্ধতি-
• ফ্যানের নিচে বা বাতাস চলাচল করে এমন স্থানে বসে পেঁয়াজ কাটুন। বাতাসে সালফার গ্যাস উড়ে যায়। ফলে চোখের সংস্পর্শে আসে না।
• কাটার ১৫ মিনিট আগে পেঁয়াজ ফ্রিজে রেখে দিন। এতে পেঁয়াজের কেমিকেলের প্রতিক্রিয়া ধীর হয়ে যায় ও রসায়ন পাল্টে যায়। উচ্চ তাপমাত্রা পেঁয়াজের কেমিকেলগুলো সক্রিয় করে তোলে। যার কারণে কাটার সময় চোখ জ্বালা করে। তবে পেঁয়াজ দীর্ঘসময় ফ্রিজে রাখা যাবে না। এতে তা নরম হয়ে যাবে।
• ধারালো ছুরি ব্যবহার করুন। কারণ ধারালো ছুরি পেঁয়াজের কোষগুলোকে কম ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই ঝাঁঝ কম বের হয়।
• পেঁয়াজের বোঁটার অংশে এনজাইম কেন্দ্রীভূত থাকে। কাটার আগে বোঁটার অংশ কেটে ফেলুন।
• জ্বলন্ত চুলা বা মোমবাতির পাশে পেঁয়াজ কাটলে ঝাঁঝ উবে যায়। কারণ আগুনের তাপে সালফার উপাদান নিঃশেষ হয়ে পড়ে।
• পেঁয়াজের খোসা ছাড়িয়ে পানিতে ১৫-২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এতে সালফার যৌগ সংকুচিত হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে যদিও পেঁয়াজের বহিরাবরণ পিচ্ছিল হয়ে যায়। তাই কাটার সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন।
• শেফদের পরামর্শ- পেঁয়াজ দু’ভাগ করে, কাটা অংশ চপিং বোর্ডের উপর রেখে কাটলে গ্যাস সরাসরি চোখের সংস্পর্শে আসতে পারে না।