Wednesday, November 8, 2023

লিপস্টিক তত্ত্ব

0 comments

 যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জুলিয়েট শোর ১৯৯৮ সালে ‘দ্য ওভারস্পেন্ট আমেরিকান’ নামে একটি বই লিখেছিলেন। সেখানে তিনি প্রথম লিপস্টিক তত্ত্ব সামনে নিয়ে আসেন। আর ২০০০ সালে আমেরিকার অর্থনৈতিক মন্দার সময় প্রসাধন সংস্থা এস্টি লডার ‘দ্য লিপস্টিক এফেক্ট’ শব্দটি ব্যবহার করে এ তত্ত্ব জনপ্রিয় করেছিল। আসলে জুলিয়েট শোর দেখিয়েছিলেন, মানুষের আয় যখন কমে যায়, তখন তারা বিলাস পণ্য কেনা বন্ধ বা কমিয়ে দেয়। এর পরিবর্তে মানুষ কম দামি বিলাসী পণ্য কেনার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে। মানুষ তখন দামি ফারের কোট বা দামি ব্যাগ কিনতে পারে না; যেতে পারে না দামি দোকানে, এ কারণে শখ পূরণ করতে কম দামি বিলাস পণ্য কেনে। এতেই বাড়ে লিপস্টিকের বিক্রি।



আবার অর্থনৈতিক মন্দার সময় লিপস্টিক বিক্রি বেড়ে যাওয়ার আরও একটি কারণ আছে। মানুষ তখন নিজের আর্থিক কষ্টের কথা ভুলে থাকতে নিজের প্রতি বেশি যত্নশীল হয়, নিজেকে পরিপাটি রাখার চেষ্টা করে। এ সময় লিপস্টিকের চাহিদা বাড়ে; কারণ সাজগোজ করার জন্য তুলনামূলক সস্তা পণ্য হচ্ছে লিপস্টিক। প্রমাণ হিসেবে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে নাইন–ইলেভেন বা টুইন টাওয়ার ধ্বংসের পরে যে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছিল, তখন লিপস্টিক বিক্রি বেড়েছিল ১১ শতাংশ। প্রসাধন কোম্পানি এস্টি লডারের চেয়ারম্যান লিওনার্দ লডার একই প্রবণতা দেখেছিলেন ২০০৮ সালের মন্দার সময়। ফলে বেশ জোরেশোরেই প্রতিষ্ঠা পায় ‘দ্য লিপস্টিক এফেক্ট’ নামের এ তত্ত্ব। পরবর্তীকালে টেক্সাস ক্রিশ্চিয়ান ইউনিভার্সিটির দুই অধ্যাপক সারাহ হিল ও ক্রিস্টোফার রডেনহেফার এ নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা করে এ তত্ত্ব আরও জোরদার করেছিলেন। ১৯২৯ সালের বিশ্বমন্দার সময় একই ঘটনা ঘটেছিল—সেই হিসাবও অর্থনীতিবিদেরা বের করেছেন। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, মূল্যস্ফীতি সৌন্দর্যচর্চায় যথেষ্ট প্রভাব ফেলে।

0 comments:

Post a Comment