প্রতিবছর ১ মে পালিত হয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস বা পহেলা মে।
এই দিনটি শুধুই একটি তারিখ নয় — এটি শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের ইতিহাস, সংগ্রাম আর সম্মানের প্রতীক।
📜 ইতিহাসের পেছনে রক্ত ও প্রতিরোধ
১৮৮৬ সালের ১ মে, আমেরিকার শিকাগো শহরে হাজার হাজার শ্রমিক দাবি তুলেছিল —
“৮ ঘণ্টা কাজ, ৮ ঘণ্টা বিশ্রাম, ৮ ঘণ্টা নিজস্ব সময়।”
এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন রূপ নেয় হেইমার্কেট আন্দোলনে, যেখানে পুলিশের গুলিতে শ্রমিক নিহত হন।
তাদের আত্মত্যাগের স্মরণে ১৮৮৯ সাল থেকে ১ মে বিশ্বজুড়ে শ্রমিক দিবস হিসেবে পালিত হয়।
🌍 বিশ্বব্যাপী পালনের ধরন
No | দেশ | পালন |
---|---|---|
1 | বাংলাদেশ | সরকারি ছুটি, মিছিল, র্যালি, আলোচনা |
2 | ভারত | রাজ্যভিত্তিক অনুষ্ঠান |
3 | চীন | বিশাল সাংস্কৃতিক প্রোগ্রাম |
4 | যুক্তরাষ্ট্র | ‘Labor Day’ পালিত হয় সেপ্টেম্বরের প্রথম সোমবারে |
5 | ইউরোপ | শ্রমিক সংগঠন ও সোশ্যাল প্রোগ্রাম |
বাংলাদেশে শ্রমিক দিবস 🇧🇩
বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে পহেলা মে পালিত শুরু হয়।
বর্তমানে এটি একটি সরকারি ছুটি এবং শ্রমিক-মজুরদের দাবিদাওয়া তুলে ধরার দিন।
-
গার্মেন্টস শ্রমিকদের অবদান বিশাল
-
নানা সমস্যা: বেতন বৈষম্য, নিরাপত্তাহীনতা, অস্থায়ী নিয়োগ
-
পহেলা মে এসব সমস্যা তুলে ধরার উপলক্ষ
আধুনিক প্রেক্ষাপটে শ্রমিক দিবস 🔧
আগে শ্রমিক মানে কেবল কল-কারখানার মানুষ বোঝাতো। এখন এর মধ্যে যুক্ত হয়েছে —
-
রাইডশেয়ার চালক
-
ডেলিভারি বয়
-
ফ্রিল্যান্সার
-
গৃহকর্মী
-
গিগ ইকোনমির কর্মী
তাদের অধিকারও আজ আলোচনার বিষয়।
শ্রমিকদের প্রধান দাবি 📢
-
ন্যায্য মজুরি
-
নিরাপদ কর্মপরিবেশ
-
নিয়োগপত্র ও চাকরির নিশ্চয়তা
-
শ্রমিক সংগঠনের স্বাধীনতা
-
মাতৃত্বকালীন ছুটি ও স্বাস্থ্যসেবা
এবারের থিম (২০২৫ 🌟)
"টেকসই উন্নয়নে শ্রমের সম্মান"
AI ও অটোমেশনের যুগে শ্রমিকদের প্রযুক্তি শেখার সুযোগ, সম্মানজনক কাজ এবং সামাজিক নিরাপত্তা সবচেয়ে জরুরি বিষয়।
উপসংহার 🧭
পহেলা মে শুধু অতীতের স্মরণ নয় — এটি একটি আন্দোলন চলমান রাখার দিন।
আজও বিশ্বজুড়ে কোটি শ্রমিক কাজ করছেন মজুরির আশায়, সম্মানের আশায়, মানবিক ব্যবস্থার আশায়।
আমরা যেন তাদের কণ্ঠস্বর হই, তাদের পাশে থাকি। কারণ—
কোনো কাজই ছোট নয়, শ্রমই সভ্যতার ভিত্তি।
0 comments:
Post a Comment