Saturday, July 19, 2025

দ্রুজ জনগোষ্ঠী

0 comments

দ্রুজরা মধ্যপ্রাচ্যের একটি বড় উপজাতি। যা ১১ শতকে গড়ে উঠেছিল। এরা মূলত মধ্যপ্রাচ্যের পাহাড়ী এলাকায় বাস করে।

Druze People

তারা আরবি ভাষী। যারা সিরিয়া, লেবানন, ইসরায়েল এবং ইসরায়েল-অধিকৃত গোলান মালভূমিতে বসবাস করে। 

তাদের ধর্ম বিশ্বাস শিয়া ইসলামের একটি শাখা হলেও, এতে রয়েছে নিজস্ব পরিচয় ও বিশ্বাস। 

এতে ইসলাম ছাড়াও নানা দর্শনের সংমিশ্রণ রয়েছে; ধর্মবিশ্বাসে রয়েছে একেশ্বরবাদ, পুনর্জন্ম ও সত্যের অনুসন্ধানের ওপর জোর। মূলত দ্রুজদের ধর্ম বিধানে ইব্রাহিমীর ধর্মসমূহের পাশাপাশি নিওপ্লাতিনিক ও পিথাগোরীয় মতবাদের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। দ্রুজদের সামাজিক রীতিনীতি মুসলিম, ইহুদি ও খ্রিস্টানদের থেকে ভিন্ন। এই ধর্মীয় বিশ্বাসের আচার-অনুষ্ঠান তারা গোপনে পালন করে। দ্রুজগণ নিজেদেরকে “আহলে তাওহীদ” (একেশ্ববাদী মানুষ বা একতাবদ্ধ মানুষ) বা “আল-মুয়াহিদুন” বলে পরিচয় দেয়।

দ্রুজদের ধর্মগ্রন্থের নাম "কিতাব আল-হিকমাহ" বা "রাসাইল হিকমাহ" ।

৫০-৫৫% দ্রুজ সিরিয়ায়, ৪০% লেবাননে, ৬-৭% ইসরাইলে এবং ১-২% জর্দানে বাস করে।

মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইউরোপ, লাতিন আমেরিকা, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ আফ্রিকায় দ্রুজ অনুসারীগণ উল্লেখযোগ্য হারে বাস করে। দ্রুজগণ আরবিতে কথা বলে ও প্রাচ্যীয় ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের সামাজিক রীতিনীতি অনুসরণ করেন। পৃথিবীতে দ্রুজ অনুসারীগণের সংখ্যা দশ লাখেরও বেশি। যার অর্ধেকই সিরিয়ায় বাস করে। তারা সিরিয়ার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩ শতাংশ। সিরিয়ায় মূলত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জর্ডান সীমান্তবর্তী সুইদা ও অধিকৃত গোলানের কুনেইত্রা প্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় তাদের বাস।  তাছাড়া রাজধানী দামেস্কের শহরতলি জারামানায় বাস করে দ্রুজরা।

ইসরায়েলের পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েল (উত্তরাঞ্চল) ও গোলান মালভূমিতে প্রায় ১ লাখ ৫২ হাজার দ্রুজ বাস করে। ইসরায়েলে বাস করা দ্রুজরা বেশিরভাগই ইসরায়েল রাষ্ট্রের অনুগত বলেই মনে করা হয়। সেখানে দ্রুজদের অনেকে সেনাবাহিনীতে কাজ করেন। তাই স্বাভাবিকভাবেই তারা ইসরায়েল-সমর্থক হিসেবে গণ্য হন।

লেবাননে দ্রুজরা চুফ, আলেই ও দক্ষিণের হাসবায়ার মতো পাহাড়ি অঞ্চলে ছড়িয়ে আছে।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হলেও দ্রুজরা যেসব দেশে থাকে, সেইসব দেশের রাজনীতিতে প্রায়ই বড় ধরনের ভূমিকা রেখে আসছে।

ইসরায়েলে দ্রুজ জনগোষ্ঠীর সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ। তারা ইসরায়েলের ফিলিস্তিনি আরব নাগরিকদের মতো নয়। বরং ইসরায়েলের অনেক আরব দ্রুজ দেশটির সামরিক বাহিনী ও পুলিশে কাজ করেন।

কেউ কেউ গাজা যুদ্ধেও অংশ নিয়েছেন এবং উচ্চ পদেও পৌঁছেছেন। ফলে ইসরায়েলের রাজনৈতিক নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে তাদের কণ্ঠ উপেক্ষা করা কঠিন।

ইসরায়েলে বাস করা বেশিরভাগ দ্রুজ নিজেদেরকে ইসরায়েলি নাগরিক বলেই পরিচয় দেয়। আবার অধিকৃত গোলান মালভূমিতে বাস করা ২০ হাজারের বেশি দ্রুজ এখনও নিজেদের সিরীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দেয় এবং সীমান্তের ওপারের আত্মীয়দের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

ইসরায়েলি দ্রুজদের কাছ থেকে সিরীয় দ্রুজদের রক্ষা করার আহ্বানের মুখেই ইসরায়েলের নেতারা তাদেরকে রক্ষা করার কারণ দেখিয়ে এবছর বারবার সিরিয়ায় হামলা চালিয়েছেন।

সিরিয়ায় দ্রুজ সম্প্রদায় ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরুর সময় বিক্ষোভে অংশ নিলেও সরকার তাদের সঙ্গে তেমন সংঘাতে জড়ায়নি।

তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইসরায়েল আসলে সিরিয়ার দক্ষিণ সীমান্তকে একটি "নিরস্ত্রকরণ এলাকা" বানাতে চায়, যাতে ইসলামপন্থী যোদ্ধারা সেখানে শক্তিশালী না হতে পারে।


درزي

دروز

דרוזים


0 comments:

Post a Comment