দাঁত ভালো রাখতে আমরা সাধারণত টুথপেস্ট, মাজন বা মাউথওয়াশ ব্যবহার করি। কিন্তু আপনি কি জানেন? একটা সময় ছিল যখন মানুষ দাঁত চকচকে করতে ব্যবহার করত মদ বা ওয়াইন! শুনতে অদ্ভুত লাগলেও, ইতিহাসের পাতায় এই রীতির প্রমাণ মেলে।
আজকের ব্লগে আমরা জানবো প্রাচীন মানুষের এই অদ্ভুত অভ্যাস এবং এর পেছনের বৈজ্ঞানিক কারণ সম্পর্কে।
প্রাচীন ভারত ও ইউরোপের সেই অদ্ভুত রীতি
ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, প্রাচীন ভারত এবং মধ্যযুগীয় ইউরোপের গ্রামীণ অঞ্চলে এই পদ্ধতির বেশ প্রচলন ছিল। তখন টুথপেস্ট বা আধুনিক মাউথওয়াশ ছিল না। মানুষ লক্ষ্য করেছিল, সাধারণ পানির বদলে ঝাঁঝালো পানীয় বা মদ দিয়ে দাঁত মাজলে বা কুলকুচি করলে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয় এবং দাঁত সাদা হয়।
বিশেষ করে অভিজাত পরিবারগুলোতে এটি ছিল দৈনন্দিন সকালের রুটিনের অংশ। তারা বিশ্বাস করত, এটি দাঁতের গোড়া শক্ত করে এবং মাড়িকে সুস্থ রাখে।
বিজ্ঞান কী বলে? এটা কি আসলেই কাজ করে?
প্রাচীন মানুষের এই পর্যবেক্ষণকে আধুনিক বিজ্ঞান পুরোপুরি ফেলে দেয়নি। আমরা জানি, অ্যালকোহল বা মদের একটি প্রধান গুণ হলো এটি অ্যান্টিসেপটিক (Antiseptic)।
ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে: অ্যালকোহল মুখের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলতে সক্ষম।
মাউথওয়াশের উপাদান: খেয়াল করলে দেখবেন, বর্তমান যুগের অনেক নামীদামী মাউথওয়াশেও অ্যালকোহল ব্যবহার করা হয় জীবাণুনাশক হিসেবে।
তাই প্রাচীনরা অজান্তেই জীবাণু ধ্বংসের একটি কার্যকর পদ্ধতি বেছে নিয়েছিল।
আজকের দিনে কি এটি ব্যবহার করা উচিত?
একেবারেই না! প্রাচীন পদ্ধতিটি বিজ্ঞানসম্মত হলেও, সরাসরি মদ দিয়ে দাঁত মাজা দাঁতের এনামেলের ক্ষতি করতে পারে এবং মাড়ির জন্য রুক্ষ হতে পারে। আধুনিক টুথপেস্ট এবং মাউথওয়াশ অনেক বেশি নিরাপদ এবং কার্যকর।
শেষ কথা
ইতিহাস আমাদের শেখায় যে, মানুষ সব যুগেই নিজেকে সুস্থ ও সুন্দর রাখতে প্রকৃতির নানা উপাদান ব্যবহার করেছে। মদ দিয়ে দাঁত ধোয়ার বিষয়টি হয়তো আজ আমাদের কাছে হাস্যকর বা অদ্ভুত মনে হতে পারে, কিন্তু সেই পর্যবেক্ষণের ওপর ভিত্তি করেই আজকের ওরাল হাইজিন বা মুখগহ্বর পরিষ্কারের বিজ্ঞান অনেক দূর এগিয়ে গেছে।
কিউয়ার্ডস (Keywords): প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি, দাঁত সাদা করার উপায়, মাউথওয়াশের ইতিহাস, অ্যালকোহলের ব্যবহার, Oral hygiene history, Teeth cleaning with wine.







